আইয়ুব বাচ্চুর গান আর গিটার সংরক্ষণের উদ্যোগ
কণ্ঠশিল্পী, সুরকার, সংগীতপরিচালক, গীতিকার ও গিটার শিল্পী প্রতিটি পরিচয়ে অনন্য ছিলেন কিংবদন্তি রক আইকন আইয়ুব বাচ্চু। তার অনবদ্য সব সৃষ্টি মৃত্যুর পরও অমর করে রেখেছেন এই শিল্পীকে।
আইয়ুব বাচ্চু আরও বহুকাল বেঁচে থাকবেন তার সৃষ্টির মধ্য দিয়ে- এ কথা অনেকেই বিশ্বাস করেন। তবু অনুযোগ, কেন অমর এই শিল্পীর একটি পূর্ণাঙ্গ প্লে লিস্ট তৈরি হলো না।
যদিও অনলাইনে ‘আইয়ুব বাচ্চু: এবি কিচেন’ নামে একটি গানের প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, সেখানে তার একক ও ব্যান্ড এলআরবির অ্যালবামের পাশাপাশি বিভিন্ন মিশ্র ও দ্বৈত অ্যালবামের গানগুলো শোনার সুযোগ পাচ্ছেন। তবে সেখানেও তার সৃষ্টির শতভাগ তুলে আনা যায়নি।
এ প্রসঙ্গে আইয়ুব বাচ্চুর স্ত্রী ফেরদৌস আক্তার চন্দনা গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এ প্রশ্ন অনেকের, যা থেকে স্পষ্ট আইয়ুব বাচ্চুর প্রতি তাদের ভালোবাসা কত খানি। তাই চেষ্টা করে যাচ্ছি আইয়ুব বাচ্চুর সমস্ত সৃষ্টি আর্কাইভ করে রাখার। এ বিষয়ে এলআরবির আবদুল্লাহ মাসুদ, গীতিকার নিয়াজ আহমেদ অংশু, শিল্পী জুয়েল মোর্শেদ এবং শুভ সব রকম সহযোগিতার পাশাপাশি নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। কপিরাইট ইস্যু নিয়ে কিছু জটিলতা ছিল। ব্যারিস্টার খালিদ হামিদ চৌধুরীর সহযোগিতায় তারও কিছুটা সমাধান হয়েছে। এ ছাড়াও ক্যাসেট, সিডির যুগে যেসব প্রকাশকরা আইয়ুব বাচ্চু ও এলআরবির অ্যালবাম প্রকাশ করেছিলেন, তাদের সঙ্গে এ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এ সবকিছুর পর শ্রোতাদের এই আশ্বাস দিতে পারি, আর কিছুদিন অপেক্ষা করুন, শিগগিরই আপনাদের প্রত্যাশা পূরণ করব আমরা। ‘এবি কিচেন’ ইউটিউব চ্যানেলেই আইয়ুব বাচ্চুর সব অ্যালবাম ও গান শোনার সুযোগ পাবেন।’
শুধু গান নয়, আইয়ুব বাচ্চুর গিটার থেকে শুরু করে নানান স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য গঠন করা হয়েছে ‘এবি ফাউন্ডেশন’। যাদের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশের বৃহৎ বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক। এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকতা ও অভিনেতা ইরেশ যাকের বলেন, এবি ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে আমরা বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। যার মাধ্যমে স্মৃতি জাদুঘর থেকে শুরু করে আইয়ুব বাচ্চু স্মরণে কনসার্ট ও সম্মাননা প্রদান এবং এই রক আইকনের ২০০টি গান প্রকাশের পাশাপাশি আর বেশ কিছু আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এ নিয়ে আমরা পুরোদমে কাজ শুরু করব। আমাদের চাওয়া একটাই, আইয়ুব বাচ্চু যে ভালোবাসা দিয়ে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন, সেই ভালোবাসার দাবি পূরণের মধ্য দিয়ে তাকে চিরকাল মাঝে বাঁচিয়ে রাখা।’
ইরেশ যাকেরের মতো একই রকম ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন আইয়ুব বাচ্চুর দুই সন্তান ফাইরুজ সাফরা আইয়ুব ও আহনাফ তাযওয়ার আইয়ুব। শ্রোতাদের জন্য এটা খুশির খবর তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আইয়ুব বাচ্চুর কালজয়ী গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘সেই তুমি কেন এত অচেনা হলে’, ‘রূপালী গিটার’, ‘হাসতে দেখ’, ‘এখন অনেক রাত’, ‘ঘুম ভাঙা শহরে’, ‘মাধবী’, ‘বাংলাদেশ’, ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘উড়াল দেব আকাশে’, ‘এক আকাশ তারা’, ‘মেয়ে’, ‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’, ‘একা’, ‘এই জগৎ সংসারে’, ‘বাবা তোমায় মনে পড়ে’, ‘সময়’, ‘একটি সত্য’, ‘ঘুমন্ত শহরে’, ‘নীল বেদনা’, ‘নীরবে’, ‘মন চাইলে মন পাবে’, ‘স্মৃতি নিয়ে’, ‘জন্মহীন নক্ষত্র’ প্রভৃতি।