কেউ কেউ ত্রাণ বিক্রিও করে দিয়েছে: চমক
ছোটপর্দার অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক কয়েক মাস ধরে টানা আলোচনায় রয়েছেন। অভিনয় দিয়ে যতোটা আলোচনায় আসতে পেরেছিলেন, তাকে নিয়ে তার চেয়ে বেশি কথা হয় ছোটপর্দার অভিনেতা আরশ খানের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ আনার পর।
এরপর চমক আলোচনায় আসেন হুট করে বিয়ে করে। গোপনে বাগদান ও বিয়ে, ৯০০ টাকার শাড়ি পরে বিয়ে, কাবিননামা ছাড়াই বিয়েসহ বরের একাধিক বিয়ের খবর প্রকাশ- এমন নানা কারণে চমক সে সময় আলোচনায় ছিলেন।
এরপর তিনি আলোচনায় আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজপথে নেমে। আর সর্বশেষ তাকে নিয়ে কথা হচ্ছে বন্যা কবলিতদের সাহয্য করতে স্বশরিরে পৌঁছে যাওয়া নিয়ে।
মোটকথা ভালো-মন্দ মিলিয়েই আলোচনায় এই অভিনেত্রী। আলোচনায় থাকতেই কি তিনি এসব করছেন? নাকি অন্য কারণ আছে, তা না সময়ই বলে দেবে। তবে চমক তার মানবিক কাজের যাত্রা আপাতত থামাতে চান না।
সে কথাই জানা গেলো আজ তার একটি ভিডিও ইন্টারভিউতে। চমক জানান, আপাতত বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল। পানি নামতে শুরু করেছে। তাই এখন তিনি কাজ করবেন বন্যা কবলিত মানুষের পুর্নবাসন নিয়ে।
অনেকেই জানেন, চমক অভিনেত্রী হওয়ার আগেই মেডিকেলে পড়াশুনা শেষ করেছেন। তাই বন্যার্তদের পুর্নবাসনে তিনি কাজ করবেন একদল মেডিকেল টিমের সঙ্গে। নিজের পরিকল্পনা জানালেন গণমাধ্যমকে, ‘এই সময়ে প্রথমেই বন্যা কবলিতদের স্বাস্থ্যসেবা দরকার। তাই এই কাজটিই আমরা সর্বপ্রথমে শুরু করেছি। মেডিকেল ইকুইপমেন্ট সাপ্লাই এরইমধ্যে হয়ে গেছে। এবার আমার পরিচিত যে ডাক্তারা স্বেচ্ছায় চিকিৎসা সেবা দিতে ফিল্ডে যেতে ইচ্ছুক তাদের নিয়ে কাজটি করব। চার জন ডাক্তারের এক একটি টিম করেছি। বেশ কয়েকটি টিম আমরা স্বাস্থ্যসেবা দেব।’
চমক জানালেন তার একক পরিকল্পনার কথাও, ‘আমার খুব খারাপ লেগেছে যে বন্যায় অনেক মানুষের গবাদি পশু মারা গেছে। আসলে কাউকে দোষও দেওয়া যাবে না। কারণ ওই পরিস্থিতিতে মানুষকে বাঁচানোটাই ছিলো প্রধান কাজ। ফলে অনেক পশু পাখিকে বাঁচানো যায়নি। তবে এটাও ঠিক যে অনেক মানুষ ওইসব গবাদি পশুর ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু এখন তারা সেটি পারছেন না। অনেকের বাড়ি ঘর তলিয়ে গেছে। আমি চেষ্টা করবো যতোটুকু পারি কিছু মানুষকে ঘর বাড়ি তৈরি করে দিতে আর কিছু মানুষকে গবাদি পশু কিনে দিতে। যাতে তারা আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।’
বন্যার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে চমক বলেন, ‘এবারের বন্যার মতো ভয়াবহ অবস্থা তো আমরা কোনদিন দেখিনি। তাই যে অভিজ্ঞতাই হয়েছে সবটাই নতুন। আমার দেখে খুব ভালো লেগেছে যেভাবে মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। লাইন দিয়ে বন্যার্তদের জন্য টাকা-পয়সা, খাদ্য, বস্ত্রসহ যে যা পেরেছে দিয়েছে। কিন্তু কিছু খারাপ অভিজ্ঞতাও হয়েছে। ভিলেজ পলিটিকস এখানেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। কেউ যদি স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে ত্রাণ দিয়ে থাকে তাহলে তারা বুঝবে, অনেক জায়গায় ওই স্থানীয়রা নিজেদের পছন্দের মানুষের বাড়িতেই ত্রাণ দিয়েছে। যাদের সঙ্গে ঝামেলা রয়েছে তাদের কিছুই দেয়নি। কেউ কেউ ত্রাণ বিক্রিও করে দিয়েছে। এমনও দেখেছি কিছু স্থানীয় ব্যবসায়ী ঢাকার চেয়ে বেশি দামে পানি বিক্রি করেছে।’