মানুষের পেশা হওয়া উচিত ইচ্ছার পরিপ্রেক্ষিতেই: শামীম

  • বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শামীম হাসান সরকার

শামীম হাসান সরকার

৫ বছরে ১ মিলিয়ন মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়েছে দেশের জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেলে ‘ম্যাংগো স্কোয়াড’। সেই সঙ্গে এই সময়ে ইউটিউবার থেকে পুরোদস্তুর অভিনেতা হয়ে উঠেছেন চ্যানেলটির স্কোয়াড লিডার শামীম হাসান সরকার। ৫ বছরের চলার পথটা কেমন ছিল, সেই সঙ্গে আগামীর পরিকল্পনা; এসব বিষয় নিয়ে বার্তা২৪.কমের মুখোমুখি হয়েছেন শামীম হাসান সরকার। শামীমের সঙ্গে আলাপচারিতা চালিয়েছেন কৌশিক।

বার্তা ২৪: ইউটিউবের চিন্তা কিভাবে মাথায় আসলো?

বিজ্ঞাপন

শামীম হাসান সরকার: আমার পড়াশোনাটা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত দেশের গণ্ডিতেই ছিলো। ২০১৪ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য চলে আসি মালয়েশিয়ায়। সেখানে গিয়েই লক্ষ্য করি, সেখানে ইন্টারনেট বিনোদনের জনপ্রিয় মাধ্যম। আশেপাশের সবাইকেই দেখতাম ইউটিউব দেখে সময় কাটাতো। তাদের ন্যায় আমার বেশিরভাগ সময়টা পার হতো ইউটিউবের ওয়েবসাইটেই। তবে ইউটিউবে দেখলাম বাংলা ভিডিও এর অনুপস্থিতি। ইউটিউব জুড়ে থাকতো ভিনদেশী ভাষার উপস্থিতিটা। আমার ভাবনাটা এলো এভাবেই। সব আগ্রহের জেরেই ইউটিউবে বাংলাদেশি হিসেবে প্রথম বাংলায় ভিডিও প্রকাশ করি আমি। ইউটিউবে বাংলা ভাষায় ভিডিও যুক্ত করার আগ্রহ থেকেই ‘ম্যাংগো স্কোয়াড’ নাম দিয়ে চ্যানেলটি শুরু করি। ধীরে ধীরে নিজেকে এই পেশায় জড়িয়ে ফেলি। চাকরী ছেড়ে মিডিয়াতে চলে আসি। আমি মনে করি মানুষের পেশা হওয়া উচিত ইচ্ছার পরিপ্রেক্ষিতেই।

বার্তা ২৪: নামটা ‘ম্যাংগো স্কোয়াড’ কেন রাখতে হল?

বিজ্ঞাপন

শামীম হাসান সরকার: ব্যাপারটা অনেকেরই জিজ্ঞেস করে। সবাই ভাবে আমের সাথে আমার কি সম্পর্ক? ব্যাপারটা আসলে একটু ভিন্ন। একটু লক্ষ্য করলেই দেখবেন আমাদের চ্যানেলের বেশির ভাগই আমজনতা কেন্দ্রিক ভিডিও। আমাদের দৈনন্দিন দিনের নানান ঘটনা কিংবা সমস্যাকে নিয়ে মজা করে বানানো প্রতিটি ভিডিওতেই আমজনতার নানান ঘটনাকে তুলে ধরছি। হাস্যরসিক কিংবা মজার ছলেই আমরা প্রতিটি ঘটনা প্রকাশ করছি। আমজনতার কথা তুলে ধরছি সেই চিন্তাতেই চ্যানেলটির নামকরণ করেছি। আমি চাই এই চ্যানেলের প্রতিটি ভিডিওতেই আমজনতার কথা শোভা পাক।

বন্ধুদের সঙ্গে ১০ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার উদযাপন অনুষ্ঠান

বার্তা ২৪: ৫ বছর পেরিয়ে, ১০ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার। প্রথম ভিডিওটির কথা মনে পড়ে?

শামীম হাসান সরকার: প্রথম ভিডিওটি অবশ্যই আমার জন্য একটি দারুণ স্মৃতি। চ্যানেল খোলার পর ২০১৪ সালের ১৯ অক্টোবর চ্যানেলের প্রথম ভিডিওটি আপলোড করেছিলাম। প্রথম ভিডিওটি একটু বিশেষভাবে বানাতে চেয়েছিলাম। আমার দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেটের নানান ব্যবহার নিয়ে মজার ছলে বানানো এই ভিডিওটির নাম ছিলো ‘ই-স্মার্টনেস’। বেশ কয়েকজন বন্ধুবান্ধবদের সহায়তায় এই ভিডিওর মাধ্যমে ইউটিউব জগতে নিজের যাত্রাটা শুরু করি। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের নানান ঘটনাসহ নানান দিক এই ভিডিওতে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছিলাম।

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শামীম হাসান সরকার 

বার্তা ২৪: ইঞ্জিনিয়ানিং ছেড়ে অভিনেতা হলেন, পরিবারের বক্তব্য...

শামীম হাসান সরকার: যখন ইউটিউবে ভিডিও বানানো শুরু করি, পরিবারে জানিয়েছিলাম। প্রথমে তারা ব্যাপারটি বুঝতে পারেনি। তবে কিছু বলেননি। আমার আব্বু একজন আর্মি অফিসার, স্বাভাবিকভাবেই আমাদের পরিবার একটি নিয়মের মধ্যে চলতো। ধীরে ধীরে আব্বু আম্মু বিষয়টি বুঝতে শুরু করে। আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিবার থেকে কখনোই চাপ দেওয়া হয়নি। আমার আব্বু আমাকে সবসময় বলতেন, যে পেশায় নিজেকে গড়ে তুলি না কেনো তার একটাই শর্ত একজন ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা। তারা প্রতিটি সময় আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়ে গিয়েছেন এবং যাচ্ছেন। আমি মনে করি পরিবারের সমর্থনই সবচেয়ে বড় সমর্থন। এটি সাথে থাকলেই আপনি শত বাধাকেও অতিক্রম করতে সক্ষম হবেন।

বার্তা ২৪: ‘ম্যাংগো স্কোয়াড’ আগামীর লক্ষ্য...

শামীম হাসান সরকার: নিয়মিত ভিডিওর পাশাপাশি স্বল্পদৈর্ঘ্য নাটকও আগামীতে উপহার দিয়ে যেতে চাই। আগামীতে মহৎ উদ্যোগে অংশীদার হতে চাই। সমাজের সুবিধা বঞ্চিতদের জন্যও নানান উদ্যোগ নিয়ে তাদের পাশে থাকতে চাই। ম্যাংগো স্কোয়াড যেমনি আমজনতার কথা বলে তেমনি আমজনতার জন্যও কাজ করে যেতে চাই সবসময়।

‘ম্যাংগো স্কোয়াড’র শুটিংয়ের সময়

বার্তা ২৪: যে ১ মিলিয়ন মানুষ ভালবাসা দিলো ‘ম্যাংগো স্কোয়াড’কে। তাদের উদ্দেশ্যে...

শামীম হাসান সরকার: আপনাদের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা আরও অনেক পরিমাণে বৃদ্ধি পেলো। এই ৫ বছরে আমরা ১ মিলিয়নের সদস্যের একটি বিরাট পরিবার। প্রতিটি দর্শকই এই অর্জনের অংশীদার। আপনাদের ভালোবাসা কিংবা সমর্থন ছাড়া এই অর্জন সম্ভব ছিলোনা। স্কোয়াড লিডার হিসেবে ম্যাংগো স্কোয়াডের প্রতিটি দর্শকের প্রতি কৃতজ্ঞতা, আজ এই চ্যানেলকে এ পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য। আশা করি পূর্বের মতো এভাবেই প্রতিটি মানুষ আমাদের সমর্থন দিয়ে যাবেন, পাশে থাকবেন। দোয়া করবেন যেনো আমরাও এভাবেই আপনাদের আনন্দ দিয়ে যেতে পারি।