হাসান ইমাম ৮৫ নট আউট

  • বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সৈয়দ হাসান ইমাম ,ছবি: সংগৃহীত

সৈয়দ হাসান ইমাম ,ছবি: সংগৃহীত

সৈয়দ হাসান ইমাম; যিনি একাধিক পরিচয়ে পরিচিত। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক, অভিনেতা, আবৃত্তিকার ও পরিচালক। এছাড়াও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক এবং স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব।

আজ বাংলাদেশের এই সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের ৮৫ তম জন্মদিন।

বিজ্ঞাপন

১৯৩৫ সালের আজকের দিনে ভারতের বর্ধমানে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ছেলেবেলা কেটেছে পশ্চিমবঙ্গে। বাবা সৈয়দ সোলেমান আলী আয়কর কর্মকর্তা ছিলেন। তবে হাসান ইমাম মাত্র দুই বছর বয়সে তাঁর বাবাকে হারান। সৈয়দ হাসান ইমামের শিক্ষাজীবন শুরু হয় বর্ধমান টাউন স্কুলে। তারপর তিনি অধ্যয়ন করেন ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত রাজ কলেজ ও ১৯৫৪ সালে থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত টেকনিক্যাল কলেজে। তিনি ১৯৫৭ সালে পূর্ব পাকিস্তানে আসেন। সে বছরই প্রথমে দর্শনার চিনিকলে এবং পরে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানে যোগ দেন।

সৈয়দ হাসান ইমাম ,ছবি: সংগৃহীত 

১৯৬০ সাল থেকে ইমামের অভিনয় জীবন শুরু হয়। ১৯৬১ সালে প্রতিকূল পরিস্থিতি প্রতিবাদী শিল্পী সমাজের নেতৃত্বে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করেন। ১৯৬০ সাল থেকে তিনি চলচ্চিত্রে এবং ১৯৬৪ সাল থেকে টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন। তাঁর প্রথম দিকের সিনেমার মধ্যে ‘রাজা এলো শহরে’, ‘শীত বিকেল’, ‘জানাজানি’, ‘ধারাপাত’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১৯৬৫ সালে সমগ্র পাকিস্তানের চলচ্চিত্র উৎসবে হাসান ইমাম শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান লাভ করেন খান আতাউর রহমানের ‘অনেক দিনের চেনা’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য।

বিজ্ঞাপন

১৯৭১ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে হাসান ইমামকে আহ্বায়ক করে গঠিত হয় শিল্পীদের প্রতিবাদী সংগঠন বিক্ষুব্ধ শিল্পী সমাজ যারা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে পাকিস্তান বেতার ও টেলিভিশনের অনুষ্ঠান বর্জন করেন। গণআন্দোলনের চাপে পাকিস্তানী সরকার ৮ মার্চ থেকে বেতার টেলিভিশনের দায়িত্ব বিক্ষুব্ধ শিল্পী সমাজের হাতে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ২৫ মার্চের পর হাসান ইমাম মুজিব নগরের চলে যান এবং মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে ১৯৭১-এ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নাট্য বিভাগের প্রধানের দায়িত্বে নিযুক্ত হন। সৈয়দ হাসান ইমাম মুজিবনগর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে সালেহ আহমেদ নামে বাংলা সংবাদ পাঠ করতেন। হাসান ইমাম ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত সংবাদ পাঠ এবং নাট্য বিভাগের দায়িত্বভার বহন করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় জহির রায়হানকে সভাপতি ও হাসান ইমামকে সাধারণ সম্পাদক করে মুজিব নগরে চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশলী সমিতি গঠন করা হয় যাদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র দলিল ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ নির্মিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী প্রতিষ্ঠায় হাসান ইমাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

সৈয়দ হাসান ইমাম ,ছবি: সংগৃহীত 

সৈয়দ হাসান ইমাম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার পান। মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ অবদানের জন্য সিকোয়েন্স পুরস্কার লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদকসহ বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ২০১৬ সালে তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার ২০১৬ লাভ করেন।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট