কী মর্মান্তিক! কী হৃদয়বিদারক!



আনিসুর বুলবুল
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনা আক্রান্ত হয়ে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে মারা গেলেন বাবা-ছেলে

ঘটনাটি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় পশ্চিম গোমদণ্ডী ইউনিয়নের। গত ২২ জুলাই করোনা আক্রান্ত মো. আলমগীরকে (৩৫) চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ভর্তি করা হয় তার বাবা আবু সৈয়দ চৌধুরীকে (৮০)। হাসপাতালে একদিন পরে ভর্তি করা হলেও মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দিবাগত রাত ৯টার দিকে মারা যান আবু সৈয়দ চৌধুরী এবং ১২ ঘণ্টা পর (বুধবার) মারা যান তার ছেলে মো. আলমগীর।

ছেলে করোনা আক্রান্ত শুনে মায়ের মৃত্যু, পরে ছেলের মৃত্যু খবর পেয়ে মারা গেলেন বাবাও!

ঘটনাটি সিরাজগঞ্জ সদরের সয়দাবাদ ইউনিয়নের সদান্দনপুর গ্রামের। গত সপ্তাহে করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হন সেনাবাহিনীর সাবেক ল্যান্স করপোরাল হাজী শহিদুল ইসলাম স্বপন (৬৫)। সেখানে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়ে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পরে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। এ খবর শুনে ঈদের দিন (২১ জুলাই) স্ট্রোকে তার মা রাবেয়া বেগমের (৯৫) মৃত‌্যু হয়। হাসপাতালে হাজী শহিদুল ইসলাম স্বপনের অবস্থার অবনতি হলে শনিবার (২৪ জুলাই) ভোরে তার মৃত‌্যু হয়। এদিকে এ সংবাদ শোনার পর দুপুরের দিকে স্বপনের বাবা হাজী আব্দুল মান্নান সিদ্দিকীও (১০৫) স্ট্রোকে মারা যান।

মুমূর্ষ মায়ের আইসিইউ বেড ছেলেকে ছেড়ে দেয়ার পর শ্বাসকষ্টে মায়ের মৃত্যু!

গত ১৫ জুলাই বয়সী কানন প্রভা পাল (৬৫) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে ভর্তি হন। এর কয়েকদিন পর তার ছেলে শিমুল পালও (৪৩) করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন একই হাসপাতালে। মায়ের অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তাকে ২২ জুলাই আইসিইউ বেডে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে ছেলের জন্যও আইসিইউ সাপোর্ট জরুরি হয়ে পড়ে। কিন্তু হাসপাতালে আইসিইউ কোনোটিই খালি না থাকায় স্বজনরা লিখিতভাবে আবেদন করে মায়ের পরিবর্তে ছেলেকে আইসিইউতে নেওয়ার জন্য। এরপর ২৭ জুলাই মাকে আইসিইউ থেকে আইসোলেশনে স্থানান্তর করা হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মা প্রাণ হারান। ঘটনাটি চট্টগ্রাম শহরের সিএমপি কলোনির।

সকালে কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়ে বিকালে করোনায় মায়ের মৃত্যু

সন্তানসম্ভবা অবস্থায় করোনা আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ৭১ টিভির নারী সাংবাদিক রিফাত সুলতানা (৩২)। প্রথমে তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় পরে সেখান থেকে মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে উত্তরার কেসি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখান থেকে তাকে ইম্পালস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গত ১৬ এপ্রিল সকালে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেখানেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বিকাল তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। এরপর বিকাল পাঁচটার দিকে তার মৃত্যু হয়।

ফুটফুটে কন্যা শিশুর জন্ম দিয়ে করোনায় মারা গেলেন মা

ঘটনাটি মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ডেফলউরা গ্রামের। সন্তানসম্ভাবা লিমা আক্তারকে (২১) ঈদের আগে মৌলভীবাজারের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। এ সময় তার করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে গাইনি ডাক্তার করোনা টেস্ট করানোর জন্য বলেন এবং সেখান থেকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। নমুনা দেয়ার তিন দিন পর তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। সেখানের ডাক্তাররা তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে সিলেট রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজে নিয়ে গিয়ে সিজারে ঈদের দিন (২১ জুলাই) ফুটফুটে কন্যা শিশুর জন্ম দেন তিনি। এরপর ২৭ জুলাই দিবাগত রাত ৯টায় সিলেটের নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় করোনায় মারা গেলেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট

ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সানিয়া আক্তার (২৮) সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। গত ১২ জুলাই র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করিয়ে করোনা পজিটিভ নিশ্চিত হন তিনি। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় ওই দিনই সানিয়া আক্তারকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১৬ জুলাই তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় তার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ছিল কম। তার প্রচুর শ্বাসকষ্ট ছিল। হাই-ফ্লো নেজাল ক্যানোলা দিয়ে তার শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ২৮ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

করোনার ভয়াল থাবায় বিপর্যস্ত দেশ। কী মর্মান্তিক! কী হৃদয়বিদারক! সব ঘটনা ঘটে চলেছে দেশে। সন্তান পৃথিবীর মুখ দেখার আগেই অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় করোনায় কেড়ে নিচ্ছে কারো প্রাণ; কেউ ফুটফুটে কন্যা শিশুর জন্ম দিয়ে বুকের দুধও খাওয়াতে পারেননি; কেউ আবার সকালে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন আর বিকালেই ঢলে পড়েছেন মৃত্যুর কোলে; কোথাও আবার মুমূর্ষ মায়ের আইসিইউ বেড ছেলেকে ছেড়ে দেয়ার পর শ্বাসকষ্টে মায়ের মৃত্যু ঘটেছে! কোথাও ছেলের করোনা আক্রান্ত শুনে মায়ের মৃত্যু হয়েছে, পরে ছেলের মৃত্যু খবর পেয়ে মারা গেছেন বাবাও! আবার কোথাও ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে মারা গেছেন বাবা-ছেলেও!

দিন দিন দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। সংক্রমণও ঊর্ধ্বমুখী। শুধু শহর নয়, জেলা-উপজেলা এমনকি প্রত্যন্ত এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসটি। রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরেও বেশিরভাগ হাসপাতালে ফাঁকা নেই আইসিইউ শয্যা। রোগীর স্বজনরা এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটে বেড়াচ্ছেন। শুধু আইসিইউ নয়, সাধারণ শয্যা পেতেও বেগ পেতে হচ্ছে অনেককে। রোগীর চাপে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লকডাউন দিয়ে রাখলেও সংক্রমণ ও মৃত্যু কোনোটিই কমছে না। হাসপাতালগুলোর ফটকে, আঙিনায়, করিডরে, বারান্দায় রোগীর স্বজনেরা উৎকণ্ঠা নিয়ে ছোটাছুটি করছেন। একটু পরপর রোগী আসছেন, নিয়মিত বিরতিতে মানুষের লাশ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স বেরিয়ে যাচ্ছে। মানুষকে বাঁচাতে চিকিৎসক–নার্সদের আপ্রাণ চেষ্টা আছে। আবার কোথাও কোথাও অবহেলার অভিযোগও আছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এত কম জনবল দিয়ে কি এত রোগী সামলানো যায়!

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যত দ্রুত বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা করা যাবে, তত সংক্রমণের সঠিক চিত্র পাওয়া যাবে। আর রোগী শনাক্ত করা গেলে নিয়ন্ত্রণকাজ আরো সহজ হবে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে অনেকে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরও পরীক্ষা না করানোয় বুঝতে পারে না। বাড়িতে থেকে অবস্থা যখন জটিল হয় তখন হাসপাতালে ছোটে, কিন্তু তখন আর কিছু করার থাকে না। তারা বলছেন, মৃত্যু কমাতে হলে সবার আগে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর টিকা নিশ্চিত করতে হবে।

দেশে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২০ হাজার ২৫৫ জন মানুষ। এরমধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ৭৫০ জন এবং মহিলা ৬ হাজার ৫০৫ জন। যা অদ্যবধি শতকরা হিসেবে যথাক্রমে ৬৭.৮৮ শতাংশ ও ৩২.১২ শতাংশ।

করোনা আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে ৯ হাজার ৩৪৯ জন। এরপর চট্টগ্রামে ৩ হাজার ৭৫৩ জন, খুলনায় ২ হাজার ৬৯০ জন, রাজশাহীতে ১ হাজার ৫৬১ জন, রংপুরে ১ হাজার জন, সিলেটে ৭৩৬ জন, বরিশালে ৬৩৫ জন এবং ময়মনসিংহে ৫৩১ জন।

বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত ০ থেকে ১০ বছরের মধ্যে মারা গেছেন ৫৮ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের ১৩২ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৪৪৭ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১ হাজার ১৮০ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ২ হাজার ৪৩৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৪ হাজার ৮২৮ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের ৬ হাজার ২৯৫ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের ৩ হাজার ৫২৭ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের ১ হাজার ১১০ জন, ৯১ থেকে ১০০ বছরের ২১৯ জন এবং ১০০ বছরের উর্ধ্বে ২৪ জন।

এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৭ হাজার ৭৬৪ জন, বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১ হাজার ৯৩১ জন, বাসায় মারা গেছেন ৫৩৭ জন এবং হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এনেছেন ২৩ জন।

এছাড়া দেশে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ২৬ হাজার ২৫৩ জন। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগের বাসিন্দাই ৭ লাখ ৪২ হাজার ৩৭৬ জন। এরপর চট্টগ্রামে ১ লাখ ৭৩ হাজার ১৩৪ জন, খুলনায় ৯১ হাজার ৪০০ জন, রাজশাহীতে ৮১ হাজার ৪৩৯ জন, রংপুরে ৪৩ হাজার ৯ জন, সিলেটে ৩৭ হাজার ৮২৮ জন, বরিশালে ৩২ হাজার ১২৫ জন এবং ময়মনসিংহে ২৪ হাজার ৯৪২ জন।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুশতাক হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, বড় সমস্যাটি হয়েছে দুই ঈদে মানুষের চলাচল ও অসতর্ক থাকার প্রবণতা। বিশেষ করে যারা পজিটিভ হয়ে বাসায় থাকছে তাদের ঠিকমতো মনিটর করা হচ্ছে না। কম উপসর্গধারীরা বাইরে ঘুরে বেড়ায়, যাদের মাধ্যমে সংক্রমণ বিস্তার ঘটছে।

তিনি বলেন, পরীক্ষা না করেও উপসর্গ নিয়ে অনেকেই বাড়িতে থাকছে। জটিল অবস্থায় শেষ সময়ে হাসপাতালে দৌড়ঝাঁপ করছে। এটাও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। সরকারের উচিত যত পজিটিভ রোগী হয় প্রত্যেককে মনিটর করা। এর মাধ্যমেই বোঝা যাবে কাকে কখন হাসপাতালে যেতে হবে।

আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেছেন, মৃত্যু কমাতে হলে সবার আগে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর টিকা নিশ্চিত করতে হবে। যেখানেই বয়স্কদের টিকা আগে নিশ্চিত হয়েছে সেখানেই মৃত্যু কমেছে। এখন দেখা যাচ্ছে, এক পরিবারে একজন আক্রান্ত হলে সবাই আক্রান্ত হচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে পারিবারিকভাবে আইসোলেশনের ব্যাপারে মানুষ সতর্ক নয়।

তিনি বলেন, যারাই পজিটিভ হয় সবাইকেই আইসোলেশনের পাশাপাশি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার। এ ছাড়া বয়স্ক ও যাদের আগে থেকে কোনো রকম জটিলতা আছে তাদের পজিটিভ হলেই হাসপাতালে যেতে হবে।

করোনা মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেছেন, সামনে কঠিন অবস্থা আসছে। এখন শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত এক দিনে আরও ২৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সংক্রমণ ধরা পড়েছে ১৫ হাজার ২৭১ জনের মধ্যে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ২১ শতাংশ। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছিল ২৩৭ জনের। ওই সময় রোগী শনাক্ত হয়েছিল ১৬ হাজার ২৩০ জন। রোগী শনাক্তের হার ছিল ৩০ দশমিক ১২ শতাংশ।

   

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?



কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

  • Font increase
  • Font Decrease

‘পথের কেনারে পাতা দোলাইয়া করে সদা সঙ্কেত/ সবুজে হদুদে সোহাগ ঢুলায়ে আমার ধানের ক্ষেত/ ছড়ায় ছড়ায় জড়াজড়ি করি বাতাসে ঢলিয়া পড়ে/ ঝাঁকে আর ঝাঁকে টিয়ে পাখিগুলে শুয়েছে মাঠের পরে/ কৃষাণ কনের বিয়ে হবে, তার হলদি কোটার শাড়ী/ হলুদে ছোপায় হেমন্ত রোজ কটি রোদ রেখা নাড়ি/ কলমী লতার গহনা তাহার গড়ার প্রতীক্ষায়/ ভিনদেশী বর আসা যাওয়া করে প্রভাত সাঁঝের নায়।’ পল্লীকবি জসীম উদদীনের ‘ধান ক্ষেত’ কবিতার অপূর্ব চিত্রায়ন কৃষকের শ্রম-ঘাম আর প্রকৃতির তরফে। কাব্যে-পঙক্তির বিমূর্ত চিত্র মূর্ত হয়েছে বিস্তীর্ণ মাঠে। কিষান-কিষানির বুক ভরা আশার সার্থক রূপায়ন হতে চলেছে এ-মৌসুমে।

এখন ভরা বৈশাখ। এ-সময়টা বোরো ধানের। বোরো ধান দেশের খাদ্যচাহিদার অন্তত ৫৫ শতাংশ মিটিয়ে থাকে। দেশের হাওরভুক্ত ৭টি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরে এই বোরোর চাষ বেশি হয়ে থাকে। এই ধান অতিবৃষ্টি, বন্যা ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে দেশের খাদ্যচাহিদায় ঘাটতি পড়ে না। তাই এই ধান চাষ থেকে শুরু করে ঘরে ফসল তোলা পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া, বিশেষ করে রোদের উপস্থিতি অতি জরুরি। বর্তমানে সে পরিস্থিতি চলছে।

সিলেট অঞ্চলের মানুষ বলে এই অঞ্চলের মানুষের চাওয়া-পাওয়া, হতাশা-উচ্চাশার সঙ্গে আমি পরিচিত। তাদেরকে উদাহরণ হিসেবে টানছি। তাদের সঙ্গে থেকে জেনেছি, বোরো মৌসুমে নির্বিঘ্নে ঘরে ফসল তোলা কতটা জরুরি। গবাদি পশুর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে জরুরি খড় সংরক্ষণও। তীব্র রোদ এখানে সমস্যার নয়, এটা বরং আনন্দের। কারণ এই রোদ গা পোড়ালেও বুক ভরা আশার সার্থক বাস্তবায়নের পথ দেখায়। দেশের যে খাদ্যচাহিদা, যে খাদ্যনিরাপত্তা সেটা এই বোরো ধানের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাই চাষ থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে দরকার হয় প্রকৃতির সহায়তা। এবার এখন পর্যন্ত সে সহায়তা আছে, যদিও এ মাসের শুরুর দিকে একবার ঝড়বৃষ্টিসহ শঙ্কার কালমেঘ হাতছানি দিয়েছিল। সেটা আপাতত দূরে সরেছে।

কিষান-কিষানির দরকার এখন তীব্র রোদ। তারা এটা পাচ্ছে। দেশে তীব্র তাপদাহ। এখানেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবু তারা এই রোদের প্রার্থনায় রয়েছে। বৃষ্টি এখন তাদের কাছে দুর্যোগ-সম। কারণ এই বৃষ্টি এবং অতি-বৃষ্টিসৃষ্ট বন্যা তাদের স্বপ্নসাধ গুঁড়িয়ে ভাসিয়ে নিতে পারে সব। ২০১৭ সালের দুঃসহ স্মৃতি এখনও বিস্মৃত হয়নি সুনামগঞ্জের কৃষকেরা। সে বছর সুনামগঞ্জের ছোট-বড় ১৩৭ হাওরের ফসল বন্যায় এবার ভেসে গিয়েছিল। গতবার কৃষক নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলেছেন। এরআগের বছর অন্তত ২০টি হাওরের ফসলহানি হয়েছিল বন্যায়।

প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল ক্ষেতের ফসল, দেশের খাদ্যনিরাপত্তা। এখানে প্রচণ্ড তাপদাহ তাই প্রভাব ফেলে সামান্যই। রোদে পুড়ে, প্রয়োজনে ছাতা মাথায় দিয়ে কিষান-কিষানিরা স্বপ্ন তোলেন ঘরে। তারা বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা না করে বরং রোদ আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখার প্রার্থনায় বসেন। কৃষকেরা পরিমিত বৃষ্টি চায় চৈত্র মাসে, বৈশাখে চায় খাঁ খাঁ রোদ্দুর, কারণ এই রোদে সোনালী ধান ঘরে ওঠে। লোককথার প্রচলিত, ধান তোলার মৌসুমে ঝড়বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য হাওরবাসীরা তন্ত্রসাধক বা ‘হিরাল’ ও ‘হিরালি’-দের আমন্ত্রণ জানাতেন। তারা এসে মন্ত্রপাঠ করে ঝড়বৃষ্টি থামানোর জন্য চেষ্টা করতেন। লোকায়ত বিশ্বাস থেকে আগেকার মানুষজন এমন আচার পালন করতেন। এসবে সত্যি কাজ হতো কিনা সেটা বিতর্ক এবং ব্যক্তি-বিশ্বাসসাপেক্ষ, তবে এই হিরাল-হিরালিদের আমন্ত্রণ বলে বৈশাখে একদম বৃষ্টি চায় না হাওরের কৃষক।

হাওরপারের মানুষেরা যখন রোদ অব্যাহত থাকার প্রার্থনায়, তখন দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহে পুড়তে থাকা মানুষেরা আছেন বৃষ্টিপ্রার্থনায়। দেশের জায়গায়-জায়গায় বৃষ্টি প্রার্থনায় ইস্তিস্কার নামাজ পড়া হচ্ছে, গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ আসছে এর। কোথাও প্রবল বিশ্বাসে কেউ কেউ ‘ব্যাঙের বিয়ে’ দিচ্ছেন, এটাও বৃষ্টি প্রার্থনায়। সামাজিক মাধ্যমে গরমের তীব্রতার আঁচ মিলছে, বৃষ্টি নাকি ধান—কোনটা জরুরি এই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। কেবল তাই নয়, বাংলাদেশের প্রচণ্ড তাপদাহ নিয়ে বিশ্বমিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে দেশের মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া। গণমাধ্যমগুলো বলছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে টানা দ্বিতীয় বছর বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের ঘোষণাও এসেছে। বৃষ্টি-প্রার্থনায় নামাজের আয়োজনের কথাও এসেছে বিশ্বমিডিয়ায়।

একদিকে প্রচণ্ড তাপদাহ, অন্যদিকে খাদ্যনিরাপত্তার প্রধান উপকরণ ধান ঘরে তোলার অনিশ্চয়তা—তবু অনেকের কাছে সাময়িক স্বস্তিই যেন মুখ্য। অথচ আর দিন দশেক বেরো আবাদ-এলাকায় বৃষ্টি না নামলে ধানগুলো ঘরে ওঠত কৃষকের। নিশ্চিত হতো খাদ্যনিরাপত্তার।

প্রকৃতির ওপর আমাদের হাত নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই; তবু মনে করি আমাদের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশে কৃষকদের গুরুত্ব থাকা উচিত। আমাদের চাওয়ায় হয়তো প্রকৃতির রীতি বদলাবে না, তুমুল রোদ্দুরের দেশে হঠাৎ বৃষ্টি নামবে না, তবে ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত রোদ্দুর কামনায় কৃষক স্বস্তি পাবে; ভাবতে পারবে এই দেশ আছে তাদের সঙ্গে।

কৃষকের জয় হোক। অন্তত বোরো-এলাকায় প্রকৃতি কৃষকের সঙ্গে থাকুক।

;

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;