শেক্সপিয়ারের জন্মভিটায় এক মোহনীয় সন্ধ্যা



সাঈদ চৌধুরী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শনিবার বিকেল সাতটা। আলো ঝলমল গোধূলি বেলায় সূর্যরশ্মি দিগন্ত বিস্তৃত। এভন নদীর তীরে সরিষার হলুদ হাসি আর স্নিগ্ধ হাওয়ায় সন্ধ্যাকে করেছে মোহনীয়। অনেকটা লাল বর্ণের স্ট্যাচু চোখে পড়তেই মনে হল ঠিক জায়গায় পা রেখেছি। পাশেই বিশ্বনন্দিত মহাকবি উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের জন্মভিটা। অনুভূতির রংটা অদ্ভুত ভাবে পালটে যায় সূর্যরশ্মির মত। মনটা আনন্দে ভরে ওঠে।  

বৃটেনের ওয়ারউইকশায়ারের একটি ছোট শহর স্ট্র্যাটফোর্ড-আপন-এভন (STRATFORD-UPON-AVON)। উইলিয়াম শেক্সপিয়ার (WILLIAM SHAKESPEARE) যে শহরে বড় হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ প্রতিবছর শেক্সপিয়ারের জন্মস্থান পরিদর্শন করেন। তার শৈশবের বাড়িটি আজো কাব্য ও নাট্য প্রেমিদের হৃদয়ে স্মৃতি হয়ে আছে।  


উইলিয়াম শেক্সপিয়ার ছিলেন একজন বিখ্যাত ইংরেজ কবি, নাট্যকার এবং অভিনেতা। ট্র্যাজেডি, কমেডি ও ইতিহাস নির্ভর নাটকে তিনি ভুবন বিখ্যাত। পৃথিবীর আশিটি ভাষায় তা অনূদিত ও চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। পন্ডিতেরা তাকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ নাট্যকার বলেই মনে করেন। 

শেক্সপিয়ার বিশ্ব সাহিত্যে অনন্য অবস্থান দখল করে আছেন। কবি হোমার ও দান্তে এবং উপন্যাসিক লিও টলস্টয় ও চার্লস ডিকেন্স সহ বহু বিশ্বমানের লেখকের সাথে তুলনা করা হয়। কিন্তু কোন লেখকের জীবন্ত খ্যাতি শেক্সপিয়ারের সাথে তুলনা হয়না। তিনি বুদ্ধিবৃত্তিক দ্রুততা, উপলব্ধি এবং কাব্যশক্তি সম্পন্ন মহান লেখক। বিস্ময়কর ভাবে শব্দ এবং চিত্রের ব্যবহারে শেক্সপিয়ার অবিস্মরণীয়।


ব্রিটিশ থিয়েটারের এলিজাবেথান এবং জ্যাকোবিয়ান যুগে শেক্সপিয়ার ছিলেন একজন খ্যাতিমান লেখক। যে সময়কে ইংরেজ রেনেসাঁ বা প্রারম্ভিক আধুনিক যুগ বলা হয়। শেক্সপিয়ারের নাটক ও কবিতাগুলি আজও ব্যাপক জনপ্রিয়। হেমলেট (THE TRAGEDY OF HAMLET), ওথেলো (THE TRAGEDY OF OTHELLO), ম্যাকবেথ (THE TRAGEDY OF MACBETH), কিং লেয়ার (KING LEAR), রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট (ROMEO AND JULIET) ইত্যাদি তার সবচেয়ে জনপ্রিয় নাটক। ইংরেজি ভাষায় তিনি বহু নতুন শব্দ ও প্রবাদ বাক্য তৈরি করেছেন। ‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার’ (ALL'S WELL THAT ENDS WELL) প্রবাদবাক্য হিসেবে আজও বিভিন্ন ভাষায় ব্যবহৃত হয়। 

উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের বাবা জন শেক্সপিয়ার 'স্ট্র্যাটফোর্ড-আপন-এভন' এলাকার হেনলি স্ট্রিটে বসবাস করতেন। এর একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এটি ইউনেস্কো মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারের মাধ্যমে স্বীকৃতি পেয়েছে। শেক্সপিয়ার বার্থপ্লেস ট্রাস্টের তত্বাবধানে রয়েছে শেক্সপিয়ারের জীবনের প্রত্যক্ষ প্রামাণ্য দলিল। ট্রিনিটি প্যারিশ রেজিস্টারে তার জন্ম এবং দাফন, তার সম্পূর্ণ রচনাগুলির প্রথম ফোলিওর অনুলিপি এখানে রয়েছে। একটি সিগনেট রিং আছে, যা শেক্সপিয়ারের ব্যবহৃত বলে বিশ্বাস করা হয়। শেক্সপিয়ারের প্রযোজনা সম্পর্কিত ছবি, প্রম্পট বই, রেকর্ডিং এবং মুদ্রিত সামগ্রীও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।  

শেক্সপিয়ারের জন্মস্থান হিসাবে এভন বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত। জন শেক্সপিয়ার ১৫৫৭ সালে এখানেই মেরি আর্ডেনকে বিয়ে করেন এবং ১৫৬৪ সালে ২৩ এপ্রিল উইলিয়াম শেক্সপিয়ার জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আট ভাই ও বোনের মধ্যে তিনি হলেন তৃতীয়। ১৫৬৮ সালে জন শেক্সপিয়ার স্ট্র্যাটফোর্ডের মেয়র হন। শহরের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ ‘মেয়র’ হিসেবে বাবার মর্যাদার কারণেই উইলিয়াম তার শিক্ষা লাভের জন্য গ্রামার স্কুলে যোগদানের সুবিধা পেয়েছিলেন।

১৫৮২ সালে ১৮ বছর বয়সে, উইলিয়াম শেক্সপিয়ার অ্যান হ্যাথওয়েকে বিয়ে করেছিলেন। যিনি ছাব্বিশ বছর বয়সী ছিলেন। তরুণ দম্পতি জন্মস্থানে তার পিতামাতার সাথে বসবাস করতেন। এখানেই তাদের সন্তান সুসানা, জুডিথ এবং হ্যামনেটের (SUSANNA, JUDITH AND HAMNET) জন্ম হয়েছিল। জুডিথ এবং হ্যামনেট যমজ ছিলেন। মাত্র ১১ বছর বয়সে হ্যামনেট মারা যান। শেক্সপিয়ারের অনেক লেখায় পুত্র শোকের ছায়া লক্ষ্য করা যায়। 


জন শেক্সপিয়ার ১৬০১ সালে ইহত্যাগ করেন এবং জ্যেষ্ঠ জীবিত পুত্র হওয়ায় উইলিয়াম শেক্সপিয়ার বাড়ির উত্তরাধিকারি হন। উইলিয়াম তার বোন জোয়ান হার্টকে মূল বাড়ি সংলগ্ন ছোট দুই রুমে থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন। বাড়ির অবশিষ্ট অংশ ইজারা দেয়া হয়েছিল। যেটি সরাইখানা হয়ে উঠেছিল, যাকে মেডেনহেড বলা হয়। পরবর্তীতে নামকরণ করা হয় ‘সোয়ান এন্ড মেডেনহেড ইন’। ১৮৪৭ সাল পর্যন্ত এটি চালু ছিল। 

১৬১৬ সালে উইলিয়াম শেক্সপিয়ার মৃত্যুকালে তার বড় মেয়ে সুসানার কাছে এই সম্পত্তি রেখে যান। আর  সুসানা যখন মারা যান, তিনি একমাত্র সন্তান এলিজাবেথের কাছে তা হস্তান্তর করেন। এলিজাবেথ দু'বার বিয়ে করেছিলেন, কিন্তু কোনও সন্তান ছিল না। ১৬৭০ সালে যখন তিনি মারা যান তখন বাড়িটি জন হার্টের বংশধরদের কাছে চলে যায়। হার্ট পরিবার ১৮০৬ সাল পর্যন্ত সম্পত্তির মালিক ছিল। পরে তা থমাস কোর্টের জিম্মায় চলে যায়। ১৮৪৬ সালে এক কসাই কোর্টের কাছ থেকে তা ক্রয় করেছিল।

শেক্সপিয়ারের জন্মস্থান বিক্রির বিষয়টি জনমনে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তখন স্থানীয় উদ্যোগে উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের স্মৃতি বিজড়িত ভবনটি অধিগ্রহণ ও সংরক্ষণের জন্য একটি ট্রাস্ট গঠন করা হয়। শুরু হয় সর্বজনীন প্রচারণা। চার্লস ডিকেন্স সমর্থিত প্রচারণা দ্রুত সফল হয়। ১৮৪৭ সালে ‘শেক্সপিয়ার বার্থপ্লেস ট্রাস্ট’ ৩০ হাজার পাউন্ডে এই সম্পত্তি ক্রয় করে। 


শেক্সপিয়ার বার্থপ্লেস ট্রাস্ট হল একটি স্বাধীন দাতব্য প্রতিষ্ঠান যা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ঐতিহ্যবাহী স্ট্র্যাটফোর্ড-আপন-এভনে শেক্সপিয়ার ব্যবহৃত দ্রব্য ও স্থানগুলির যত্ন নেয়। সারা বিশ্ব জুড়ে তার জীবন ও কর্ম সম্পর্কে প্রচার এবং আগ্রহীদের মধ্যে সে সময়ের আনন্দ উপভোগ করতে সহায়তা করে। এই  ট্রাস্টের মাধ্যমে শেক্সপিয়ারের জীবনের গল্প জানার ব্যবস্থা রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লেখক ও গবেষকেরা এসে আবিষ্কার করেন, কীভাবে অসাধারণ এই কবি ও নাট্যকার আমাদের জীবনকে নান্দনিক রূপ দিয়েছেন। ট্রাস্টের বিশ্বমানের সংগ্রহে রয়েছে শেক্সপিয়ারের লেখা সমূহ এবং তাকে নিয়ে লেখা অসংখ্য কবিতা, প্রবন্ধ ও স্মৃতিচারণ। 

শেক্সপিয়ারের জন্মভূমির ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়, রোমানরা স্ট্র্যাটফোর্ডের একটি রাস্তা তৈরি করেছিল, তবে প্রাচীন শহর হিসেবে তখনো প্রতিষ্ঠা লাভ করেনি। একটি জার্মান উপজাতি ‘অ্যাংলিয়ান ট্রাইব হুইক্কাস’ (THE HWICCAS) রোমানদের পরে বসতি স্থাপন করেছিল। তারা ছিল প্রথম স্ট্র্যাটফোর্ডিয়ান। তাদের বসতির মাধ্যমে ষষ্ঠ শতাব্দীর কাছাকাছি সময়ে অ্যাঞ্জেলো-স্যাক্সন রাজ্য (ANGELO-SAXON KINGDOM) প্রতিষ্ঠিত হয়। 

শহরটির নামকরণ হয় 'এইট-স্ট্র্যাটফোর্ড দ্য আইলস অব দ্য ফোর্ড' (AET-STRATFORD THE ISLES OF THE FORD)। ৬৯৩ থেকে ৭১৭ সালের লিখিত রেফারেন্স সমূহে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। মাত্র ২০টি পরিবার তখন বসতি স্থাপন করেছিল। সেখানে একটি ট্রিনিটি চার্চ প্রতিষ্ঠার ফলে দূর অঞ্চলের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। গির্জা, মঠ  এবং ওয়াটারমিল সহ সামাজিক ও ব্যবসায়িক কর্মকান্ড ধীরে ধীরে সম্প্রসারিত হয়েছে।

১০১৫ সালে স্ট্র্যাটফোর্ডবাসীর জীবনে ভয়ঙ্কর দূর্ভাগ্য নেমে আসে। ড্যানিশ আক্রমণকারীরা ওয়ারউইকশায়ারের প্রতিটি বাড়িঘর ও গির্জা পুড়িয়ে দেয়। এতে প্রথম যুগের স্ট্র্যাটফোর্ডিয়ানদের সামান্যই বেঁচে ছিলেন। উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের লেখায় ইংল্যান্ডে গৃহযুদ্ধের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন সময়ে স্ট্র্যাটফোর্ড লুটপাটের শিকার হয়েছিল। প্রতিবেশী প্যারিশগুলি থেকে সংঘর্ষ এবং স্থানীয় বিভাজন অতিক্রম করলেও বহু হিংসাত্মক ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছে। 


একাদশ শতাব্দীতে নরম্যান বিজয় (NORMAN CONQUEST) সত্ত্বেও শহরবাসীর জীবন তুলনামূলক ভাবে শান্তিপূর্ণ ছিল। গির্জাটি পাথরে পুনর্নির্মাণ করা হয়। ব্যবসা-বাণিজ্যেরও বিকাশ ঘটে। দ্বাদশ, ত্রয়োদশ এবং চৌদ্দ শতক অবশ্য স্ট্র্যাটফোর্ডের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। তখনই জনবসতি বাড়তে থাকে। সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় একটি 'পরিকল্পিত শহর' হয়ে ওঠে।

১২৬৯ সালে গিল্ড অফ দ্য হলি ক্রস পৌরসভার দায়িত্ব গ্রহণ করে। বেশ যত্ন ও যোগ্যতার সাথে ১৫৪৭ সাল পর্যন্ত পরিচালনা করে। এই সময়ে সে এলাকার জন ডি স্ট্র্যাটফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ১৩১১ সালে স্নাতক ডিগ্রী  করেন। তিনি স্ট্র্যাটফোর্ডের উন্নয়নে একজন মহান ব্যক্তিত্ব হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তারই প্রচেষ্টায় এলাকাটি আধুনিক শহরে পরিনত হয়। প্রশস্ত রাস্তার ধারে গাছপালা ও খেলার মাঠ সন্নিবেশ করা হয়।

১৪১৫ সালে রাজা হেনরি পঞ্চম (KING HENRY V) দ্বারা স্ট্র্যাটফোর্ডের আরো উন্নয়ন হয়েছে। পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষের দিকে স্যার হিউ ক্লপটন (SIR HUGH CLOPTON) বেশ কয়েকটি ল্যান্ডমার্ক তৈরি করেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে এভন জুড়ে বিশাল সেতু। এভনকে কটসওয়াল্ডস এবং ফেল্ডনের সাথে সেতুটি সংযুক্ত করে। ফলে বাণিজ্য সমৃদ্ধ শহরে পরিনত হয়। এতে ভেড়া শিল্পের উন্নয়নে সহায়ক হয়। পশম বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটে।

জন শেক্সপিয়ার (JOHN SHAKESPEARE) সহ স্ট্র্যাটফোর্ডের মানুষের জীবনে ভেড়া পালন একটি ইতিবাচক ব্যবসা ছিল। কটসভোল্ডের কাছাকাছি অবস্থিত স্ট্র্যাটফোর্ড ছিল ভেড়া পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণন এবং বিতরণের একটি প্রধান কেন্দ্র। ১৫৬৪ সালে উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের (WILLIAM SHAKESPEARE) জন্মের সময় স্ট্র্যাটফোর্ড ছিল পশম বাণিজ্যে সফল একটি শহর। আস্তে আস্তে ক্লপটন ব্রিজ কারিগরি ও অন্যান্য ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে আকৃষ্ট করে এবং ক্রমবর্ধমান বাজার শহর হিসেবে খ্যাতি অর্জনে অবদান রাখে। 

ষোড়শ শতাব্দীতে ক্লপটন ব্রিজের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পুণরায় মেরামত করা হয়। তবে বৃহত্তম নতুন উন্নয়ন সাধিত হয়েছে জন পেটন (JOHN PAYTON) দ্বারা। পেটনের সময় পুরাতন শহরের উত্তর দিকে সম্প্রসারণ ও বেশ কয়েকটি নতুন রাস্তা তৈরি হয়। তবে স্ট্র্যাটফোর্ডের প্রায় হাজার বছরের পুরনো লেআউট আজো সংরক্ষিত আছে। 


লন্ডনে শেক্সপিয়ার

উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের কর্মজীবন লন্ডনে শুরু হয়েছিল। কিন্তু তিনি কখন লন্ডন এসেছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। শেক্সপিয়ারের যমজরা ১৫৮৫ সালে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন। কিন্তু ১৫৯২ সালে লন্ডনে তার খ্যাতি বা পরিচিতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ফলে মধ্যবর্তী বছরগুলি রহস্যময় হিসেবে বিবেচিত হয়। পণ্ডিতেরা সাধারণত এই বছরগুলিকে 'দ্য লস্ট ইয়ারস' বলে উল্লেখ করেন।

লন্ডনের সময়কালে শেক্সপিয়ারের প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। দুটি দীর্ঘ কবিতা 'ভেনাস অ্যান্ড অ্যাডোনিস' (VENUS AND ADONIS, 1593) এবং 'দ্য রেপ অব লুক্রেস' (THE RAPE OF LUCRECE, 1594)। এসময়  শেক্সপিয়ার একটি কোম্পানির নিয়মিত নাট্যকার ছিলেন। প্রায় বিশ বছর ধরে বছরে গড়ে দুটি নাটক নির্মাণ করেছিলেন। এই কোম্পানিতে থাকাকালীন ১৬০৩ সালে জেমস প্রথম (KING JAMES I)  এর পৃষ্ঠপোষকতায় দ্য কিংস ম্যানে পরিণত হয়েছিলেন।

তখন শেক্সপিয়ার বিখ্যাত ট্র্যাজেডি বিষয়ক কিং লিয়ার এবং ম্যাকবেথের (KING LEAR AND MACBETH) পাশাপাশি দ্য উইন্টারস টেল এবং দ্য টেম্পেস্টের (WINTER’S TALE AND THE TEMPEST) মতো দুর্দান্ত রোম্যান্স লিখেছিলেন। সে সময়ে তিনি অভিনেতাদের সংস্থা দ্য লর্ড চেম্বারলাইনস মেন (THE LORD CHAMBERLAIN’S MEN) এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়েছিলেন।

শেক্সপিয়ারের কাজ 

উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের রচনার মধ্যে রয়েছে ৩৮টি নাটক, ২টি বর্ণনামূলক কবিতা, ১৫৪টি সনেট এবং বিভিন্ন ধরনের কবিতা। শেক্সপিয়ারের নাটকের কোনো মূল পাণ্ডুলিপি আজও পাওয়া যায়নি। তার কোম্পানির অভিনেতাদের একটি গ্রুপকে ধন্যবাদ দেয়া হয়, যাদের মাধ্যমে অধিকাংশ নাটক সংরক্ষিত রয়েছে। শেক্সপিয়ারের মৃত্যুর পর তারা নাটকগুলো সংরক্ষণ ও প্রকাশের জন্য সংগ্রহ করেছিলেন। এই লেখাগুলি একত্রিত করা হয়েছিল যা প্রথম ফোলিও (FIRST FOLIO ) নামে পরিচিত। 'ফোলিও' ব্যবহৃত কাগজের আকারকে বোঝায়। এতে তার ৩৬টি নাটক ছিল।

শেক্সপিয়ারের লিগেসি বা উত্তরাধিকার খুবই সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময়। তার নাটকগুলি একাধিক ঘরানা এবং সংস্কৃতি জুড়ে অগণিত অভিযোজন তৈরি করেছে। তার নাটক মঞ্চ ও চলচ্চিত্রে স্থায়ী উপস্থিতি পেয়েছে। উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের সম্পূর্ণ কাজ (THE COMPLETE WORKS OF WILLIAM SHAKESPEARE) বিভিন্ন ভাবে সংকলিত হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে তার সমস্ত নাটক, সনেট এবং অন্যান্য কবিতা।


এভনের নতুন বাড়ি

লন্ডন প্রেক্ষাগৃহে শেক্সপিয়ারের সাফল্য তাকে যথেষ্ট ধনী করে তোলে। ১৫৯৭ সালে তিনি 'স্ট্র্যাটফোর্ড-আপন-এভনের সবচেয়ে বড় বাড়ি কিনতে সক্ষম হন। যদিও তার পেশাগত কর্মজীবন লন্ডনে কাটিয়েছেন। তবুও তিনি জন্মস্থানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন।

শেক্সপিয়ার মারা যাওয়ার পর ১৭৫৯ সালে বাড়িটি ভেঙে সংস্কার করা হয়। সেখানে একটি বাগানও তৈরি করা হয়েছে। বিশাল সাইট জুড়ে নিযুক্ত শিল্পকর্মগুলি শেক্সপিয়ারের রচনাবলী ও পারিবারিক জীবনের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। যেখানে শেক্সপিয়ারের গুরুত্ব স্মরণ করতে এবং দর্শনার্থীদের ব্যক্তিগত সংযোগ তৈরির জন্য সাজানো হয়েছে। পাশেই রয়েছে কিং এডওয়ার্ড ষষ্ঠ স্কুল এবং গিল্ড চ্যাপেল। দুটোই তরুণ উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের বেড়ে ওঠার সাথে সম্পৃক্ত।

শেক্সপিয়ারের সাইটে আবিষ্কৃত সাম্প্রতিক প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণে দেখায়, শেক্সপিয়ার লন্ডনে সাময়িক বাসিন্দা ছিলেন। তার সময় স্ট্র্যাটফোর্ড এবং লন্ডনের মধ্যে ভাগ করেছেন। তবে অধিক সময় তিনি জন্মস্থানে কাটিয়েছেন।

অ্যান হ্যাথওয়ের কটেজ

উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের স্ত্রী অ্যান হ্যাথওয়ের কটেজ একটি দর্শনীয় স্থান। এই কটেজ ছিল মূলত একটি খামারবাড়ি। এটি ১৪৬৩ সালে নির্মিত হয়েছিল। মাত্র তিনটি কক্ষ নিয়ে গঠিত। এরমধ্যে দুটি রান্নাঘর এবং পার্লার। কটেজে বসবাসকারী প্রথম হ্যাথওয়ে ছিলেন অ্যানের দাদা জন হ্যাথওয়ে। যিনি ছিলেন ভেড়া চাষি। শেক্সপিয়ারের স্ত্রী অ্যান ১৫৫৬ সালে এই কটেজে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। খামার হিসেবে এটি 'হিউল্যান্ডস' নামে পরিচিত ছিল এবং হ্যাথওয়ে পরিবার ছিল সফল ভেড়া চাষি। যেখানে গবাদি পশু এবং শাক-সবজি চাষের জায়গা ছিল।

এখানেই অ্যানের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। যেখানে তরুণ শেক্সপিয়ার তাদের সম্পর্কের প্রথম অংশে তাকে দেখতে যেতেন। ১৩ প্রজন্ম ধরে যেখানে বসবাসকারী পরিবারের পাঁচ শতাব্দীর গল্প উন্মোচিত হয়। ৫০০ বছরেরও বেশি আগে নির্মিত এবং বছরের পর বছর ধরে প্রসারিত বাড়ির বেশিরভাগ অংশই টিকে আছে। হ্যাথওয়ে বিছানা সহ আসল আসবাবপত্র আজো সংরক্ষিত রয়েছে। কয়েক একর জায়গা জুড়ে সুন্দর ফুল এবং ফলের বাগানে ঘুরে মানুষ শেক্সপিয়ারের নাটক দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়।

অ্যান হ্যাথওয়ের কবর

স্থানীয় হলি ট্রিনিটি চার্চে স্বামীর বাম দিকে অ্যান হ্যাথওয়ের কবর। শেক্সপিয়ারের স্মৃতি স্তম্ভের মধ্যে তাকে সমাহিত করা হয়েছে। অ্যানের কবরটি ল্যাটিন ভাষায় একটি সুন্দর এপিটাফ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে। সম্ভবত ১৬৩৪ সালে কন্যা সুসানার লেখা। অ্যানকে একজন ধার্মিক মহিলা এবং একজন ভাল মা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই এপিটাফ একটি পিতলের ফলকে সংরক্ষিত। 

স্ট্যাচু অব শেক্সপিয়ার

স্ট্যাচু অব শেক্সপিয়ার দাঁড়িয়ে আছে স্টার্টফোর্ড-আপন-এভনের রয়াল শেক্সপিয়ার থিয়েটারের সামনে। শেক্সপিয়ারের সাহিত্যের উপাদান তুলে ধরার জন্য এর স্তম্ভমূলে আরো চারটি ছোট মূর্তি রয়েছে। প্যারিসে বুলেভার্দ মন্টপানাসের স্টুডিওতে এটি ডিজাইন করেছেন ভাস্কর্য লর্ড রোনাল্ড গোয়ার।

রাশিয়ার প্রথম নাটক

১৭৮৬ সালে রাশিয়ার সম্রাজ্ঞী ক্যাথেরিন দ্য গ্রেট দ্য মেরি ওয়াইভস অব উইন্ডসোর নামের শেক্সপিয়ারের একটি নাটক অনুবাদ করেন। তিনি নেভা নদীর পাশে হারমিটেজ থিয়েটার নির্মাণ করেন। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় তার অনুবাদকৃত নাটক। এটাই রাশিয়ার প্রথম নাটক যার অনুপ্রেরণা ছিলেন শেক্সপিয়ার।

দ্য কিংস মেন

১৬০৩ সালে রানি এলিজাবেথ মারা গেলে পরবর্তী রাজা জেইমস দ্য ফার্স্ট শেক্সপিয়ারের নাট্য দলকে রাজার একান্ত দল হিসেবে গ্রহণ করেন। তখনই দলটির নাম পরিবর্তিত হলো ‘দ্য কিংস মেন’ হিসেবে।

লেখক: লন্ডন প্রবাসী। কবি ও কথাশিল্পী। অতীত চিত্র ও তথ্য সূত্র: শেক্সপিয়ার বার্থপ্লেস ট্রাস্ট

   

চাকরি ছেড়ে বসের সামনেই ঢোল বাজিয়ে নাচলেন যুবক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নিত্যদিনের অফিসের কর্মপরিবেশে অনেকের মধ্যেই 'বিরক্তি' চলে আসে। তবুও ধৈয্য নিয়ে সব সহ্য করে টিকে থাকার জন্য চালিয়ে যান লড়াই। তবে এ যাত্রায় সকলের দ্বারা টিকে থাকা সম্ভব হয় না। অফিসের 'বিষাক্ত' কর্মপরিবেশে অনেকেই ভোগেন মানসিক সমস্যায় কিংবা ব্যক্তিজীবনে। এমন পরিবেশ থেকে বাঁচতে একেক জন একেক পন্থা অবলম্বন করে থাকেন।

তবে অনিকেত নামের এক যুবক এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে যা করেছেন নেট দুনিয়ায় তা রীতিমতো ভাইরাল। এসব থেকে মুক্তি পেতে চাকরিটাই ছেড়ে দিয়েছেন এই যুবক। এতেই ক্ষান্ত হননি তিনি, বসের সামনেই ঢাকঢোল বাজিয়ে নেচে উদযাপন করেছেন এমন মুহূর্তের।

ঘটনাটি ভারতের পুনে রাজ্যের। অনিকেত নামের ওই যুবক বিক্রয় সহযোগী হিসেবে চাকরি করতেন।

তার এমন উদযাপনের একটি ভিডিও ইন্সটাগ্রাম শেয়ার করেছেন অনীশ ভগত।

ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, গত তিন বছর ধরে এই কোম্পানির সাথে কাজ করেও বেতন খুব একটা বাড়েনি। এছাড়াও অফিসের বসের দ্বারাও তাকে বিভিন্ন সময়ে অপমানিত হতে হয়েছে।

তাই তার কাজের শেষ দিনে বন্ধুরা অফিসের বাইরে ঢোল নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন এবং নেচেছিলেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, এ ঘটনায় তার বস অনেক উত্তেজিত হয়েছেন। পাশাপাশি তার বস লোকজনকে ধাক্কা দিয়েছেন এবং চিৎকারও করেছেন।

ভিডিওটির ক্যাপশনে ভগত লিখেছেন, আমি মনে করি আপনারা অনেকেই এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারবেন। আজকাল বিষাক্ত কাজের সংস্কৃতি খুব বেশি দেখা যায়। সম্মান এবং অধিকারের অভাব খুবই সাধারণ। অনিকেত তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। আমি আশা করি এই গল্প মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।

পোস্ট করা ভিডিওটি এক মিলিয়নেরও (১০ লাখের বেশি) বেশি ভিউ পেয়েছে। পোস্টটিতে অসংখ্য লাইক ও কমেন্টও রয়েছে।

একজন ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি জানি না কেন এটি আমাকে এত সন্তুষ্ট করেছে।'

আরেকজন লিখেছেন, 'নাচটি আমাকে অন্য মাত্রার তৃপ্তি দিয়েছে।'

'আপনি সত্যিই আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ইতিবাচক এবং উত্সাহী ব্যক্তি'- তৃতীয় একজন ঠিক এভাবেই নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস 

;

অভয়ারণ্যে মানুষ যখন বন্দিখাঁচায়



প্রমা কোয়েল, ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চিড়িয়াখানা, নানানরকম পশুপাখি ও প্রাণীর বন্দিশালা। কেবল রং-বেরঙের চিড়িয়াই নয়; বাঘ, সিংহ, ভালুক, বানর, গণ্ডারসহ কত বন্যপ্রাণীই না খাঁচায় বন্দি থাকে!

চিড়িয়াখানায় রাখতে বন্য প্রাণীদের প্রকৃতির স্বাধীন জীবন থেকে ছিনিয়ে আনা হয়। তাদের খাঁচায় বন্দি করা হয় যেন, মানুষ তাদের দেখে আনন্দ পায়। অনেক প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি খাঁচাতেই কেটে যায়।

ছোট থেকে বড় সব বয়সের মানুষই চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। শিশুরা না হয় অবুঝ! তবে যারা প্রাপ্তবয়স্ক তারাও চিড়িয়াখানায় এই বন্দি প্রাণীদের জীবনকে গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারেন না।

এশিয়ার বড় দেশ চীনে রয়েছে, এক অদ্ভুত চিড়িয়াখানা। চংকিংয়ে অবস্থিত সেই চিড়িয়াখানার নাম ‘লেহে লেদু বন্যপ্রাণী চিড়িয়াখানা’। একে ‘রিভার্স জু’ (বিপরীত চিড়িয়াখানা) বলেও ডাকা হয়।

এখানেও মানুষ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে পশু দেখতে আসেন। তবে একেবারেই ভিন্ন উপায়ে। মূলত, একটি খাঁচা রয়েছে, যেখানে মানুষদের সেই খাঁচায় পুরা হয়। তারপর সেই খাঁচাবন্দি মানুষদের নিয়ে রাখা হয়, অভয়ারণ্যে। সেখানে বন্য প্রাণীরা মানুষের খাঁচার চারপাশে অবাধে ঘুরতে থাকে। চিড়িয়াখানায় বন্দি প্রাণীদের বন্দিজীবনের এক প্রতীকী দৃশ্য!

অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের জন্য এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা!

অভয়ারণ্যে খাঁচায় বন্দি মানুষ, ছবি-সংগৃহীত

খুব কাছে থেকে হিংস্র বন্যপ্রাণীদের মুক্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যেমন লোমহর্ষক, ঠিক তেমনই আতঙ্কজনকও হতে পারে। বিপরীতধর্মী এই চিড়িয়াখানাটি সবার জন্য প্রথম উন্মুক্ত করা হয়, ২০১৫ সালে। তখন বিশ্বের সংবদমাধ্যমের শিরোনাম কেড়েছিল এ চিড়িয়াখানাটি।

একটি শক্ত লোহার খাঁচাবেষ্টিত দর্শনার্থীদের একটি ট্রাকে তুলে অভয়ারণ্যে রেখে দেওয়া হয়। সেখানে তাদের ঘিরে ধরে ঘুরতে থাকে বাঘ, ভালুক, সিংহ ইত্যাদি হিংস্র প্রাণী।

এ বিষয়ে চিড়িয়াখানার প্রধান চ্যান লিয়াং বলেন, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। খাঁচার ফাঁকা অংশ দিয়ে হাতের আঙুলও বের না করার নির্দেশনা দেওয়া থাকে।

তবে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই চিড়িয়াখানাটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে অনেক। এর নৈতিকতা নিয়ে অনেকে প্রশ্নও তুলেছেন।

অনেকে মনে করেন, এরকম ব্যবস্থাপনায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। কারণ, শিকারী প্রাণীগুলো প্রচণ্ড হিংস্র। তাই, সে কারণে যে কোনো সময় বিপজ্জনক ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

আবার এরকম চিন্তাভাবনার প্রশংসাও করেছেন অপর একটি পক্ষ। তাদের বক্তব্য, পৃথিবীটা কেবল মানুষদের নয়। প্রকৃতিতে সব প্রাণীদের একটা ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। তাদের বন্দি করে রাখা মানুষের উচিত নয়। কারণ, মুক্ত প্রকৃতিতে বিরাজ করার অধিকার সব প্রাণীরই রয়েছে।

তাদের মন্তব্য, আমরা প্রাণীদের আবাসস্থল বনজঙ্গল সব উজাড় করেছি। সে কারণে তাপমাত্রাও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। আবার প্রাণীদের বন্দি রেখে তাদের জীবন চরম দুর্বিষহ করে তুলি।

চাইলে এবং সুযোগ পেলে এই ধরনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে চিড়িয়াখানাটি ঘুরে আসতে পারেন বৈকি!

তথ্যসূত্র: এনিমেল অ্যারাউন্ড দ্য গ্লোব

;

৫ বছরের শিশুর বিস্ময়কর প্রতিভা!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বয়স সবে ৫ কিংবা ৬। এই বয়সেই তার প্রতিভা দেখে অবাক হবে যে-কেউ!

গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভিডিওটি ১ মিলিয়নের (১০ লাখের বেশি) বেশি মানুষ দেখেছেন। খবর এনডিটিভি। 

ভিডিওতে রিলি নামের ওই শিশুটিকে প্রথমে শ্বাস নিতে দেখা যায়। তারপর সে একটি শক্তিশালী গর্জন দিয়ে শ্বাস ছাড়ে। ওই গর্জনটি হুবুহ সিংহের গর্জনের অনুরূপ।

রিলির মা অ্যামি ভিডিওটি এক্সে শেয়ারের পরই তা ভাইরাল হয়ে যায়। শিশুটির এমন নিখুত দক্ষতা দেখে মুগ্ধ দর্শকরা। ভিডিওটিতে অনেকেই নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, এত অল্প বয়সে এমন বাস্তবসম্মত গর্জন তৈরি করার রিলির ক্ষমতার বিস্ময় প্রকাশ করে।

আরেকজন লিখেছেন, শিশুরা খুব দ্রুত শিখে। তার এমন প্রতিভা সত্যিই অবাক করার মতো।

;

বান্টি গ্রাম: উড়ছে রং-বেরঙের কাপড়



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বান্টি গ্রামের মাঠে শুকাতে দিচ্ছেন বাটিকের রং করা কাপড়/ছবি: নূর এ আলম

বান্টি গ্রামের মাঠে শুকাতে দিচ্ছেন বাটিকের রং করা কাপড়/ছবি: নূর এ আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশেই বান্টি গ্রাম। বাটিকের গ্রাম বলেই এর পরিচিতি। এখানে ঘরে ঘরে বাটিক-ব্লকের কাজ চলে। গ্রামজুড়ে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০০ কারখানা। এই গ্রামে দিনরাত কাজ করেন হাজারো শ্রমিক। এই কাজে তাদের সংসার চলে। বান্টি গ্রামের কর্মময় জীবন চিত্র তুলে এনেছেন বার্তা২৪.কম এর ফটো এডিটর নূর এ আলম। 

বান্টি গ্রামে থ্রিপিস, ওড়না, সালোয়ার, কামিজ, বিছানার চাদর ও বালিশের কাভারে বাটিকের কাজ করা হয়/ছবি: নূর এ আলম


 

দূরদূরান্ত থেকে পাইকাররা এসব কিনতে আসেন। তাদের হাত ধরেই এসব কাপড় চলে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে


কাপড় রং করার আগে প্রতিটি কারখানায় গরম পানিতে রং প্রস্তুত করা হয়/ছবি: নূর এ আলম

 

কাপড়ের রং পাকা করতে সেদ্ধ করা হচ্ছে।/ছবি: নূর এ আলম


কয়েক ধাপে চলে কাপড়ে বাটিকের করার কাজ/ছবি: নূর এ আলম


রং মেশানোর প্রক্রিয়াটা ঠিক আছে কিনা হাত দিয়ে দেখছেন একজন/ছবি: নূর এ আলম


গ্রামে কাপড়ে রঙ মেশানোর কাজ ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলে/ছবি: নূর এ আলম


বাটিকের গ্রামের অনেক বাড়িতে বসানো হয়েছে লুম মেশিন। এই মেশিন দিয়ে নানান ধরনের নকশা করা হয়/ছবি: নূর এ আলম


লুম মেশিনে চলছে কাপড় বুননের কাপড়/ছবি: নূর এ আলম


কাপড়ে রঙ করা শেষে শুকাতে দেওয়ার আগে পানি ঝরিয়ে ফেলা হয়/ছবি: নূর এ আলম


রং করা কাপড় শুকাতে দিচ্ছেন এক নারী শ্রমিক/ছবি: নূর এ আলম


বান্টি গ্রামের নারী পুরুষ সবাই ব্লক বাটিক ও প্রিন্টের সঙ্গে জড়িত/ছবি: নূর এ আলম

রং করা কাপড় ছাদে ও মাঠে শুকাতে দেওয়া হয়/ছবি: নূর এ আলম


কড়া রোদে শুকানোর পর তা কারখানায় নিয়ে আসেন শ্রমিকরা।/ছবি: নূর এ আলম


প্রচন্ড তাপদাহে বাটিকের চাহিদা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। /ছবি: নূর এ আলম


;