ব্যাংককের অদূরে ভাসমান বাজার ক্ষলং লাট মায়োম

  • মাজেদুল নয়ন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

ব্যাংকক থেকে: চা ফ্রায়া নদীর উত্তর দিক পেরিয়ে আরও প্রায় ৪০ কিলোমিটার পেরোলে দেখা মেলে ভাসমান বাজার ক্ষলং লাট মায়োমের। ব্যাংককে আরও দুটি ভাসমান বাজার রয়েছে তালিং চান এবং ওয়াট সাপহান। তবে এখানকার স্থানীয় সাংবাদিক বন্ধু প্যাং এবং ম্যাক্সের আমন্ত্রণে আমরা যাই ক্ষলং লাট মায়োমে।

শহর থেকে বেরোলে থনবুরির পাশে তালিং চান জেলার বাং রামাত উপজেলায় এই ভাসমান বাজারের অবস্থান। স্থানীয় কৃষক চুয়ান চুচান গ্রামবাসীকে নিয়ে এই প্রকল্প গড়ে তোলেন। যেখানে গাছ রোপণ এবং একটি বাজার তৈরি করার পরিকল্পনা থাকে। পরে ২০০৪ সালের নভেম্বরে এটি পর্যটন এবং ঘোরার স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়।

বিজ্ঞাপন
 ভাসমান বাজার ক্ষলং লাট মায়োম

থাই ভাষায় ক্ষলংয়ের বাংলা খাল। আমরা যখন লাট মায়োমে পৌঁছালাম তখন মাথার ওপর সূর্য। এখন পর্যটক অনেকটাই কম। অল্প কিছু শ্বেতাঙ্গ ছাড়া আর সকলেই দেশি পর্যটক। তাই আগের তুলনায় খরচটাও একটু কম। আমরা দুপুরের খাবার শেষ করে একটা নৌকায় উঠলাম। এখন অবশ্য দামাদামি করার সুযোগও রয়েছে। যেমন আমাদের কাছে ১০০ বাথ চাইলেও, শেষে প্রতিজনের জন্য ৮০ বাথে নৌকা পেলাম।

এখানে নৌকার ওপর কিছু শাকসবজির দোকান রয়েছে। এখানে স্থানীয় কাঁচাবাজারের তুলনায় দাম কিছুটা কমই মনে হলো। আর খালের পাশের বাজারে রয়েছে থাই খাবারের পশরা। যেখানে আমাদের দেশের ‍মুড়ির মোয়া পর্যন্ত আছে, তেমনি রয়েছে হরেক ধরনের গ্রিলড সি-ফুড। রয়েছে কাই ইয়াং (থাই গ্রিলড চিকেন), সম তাম (পেঁপের ঝাল টক সালাদ), লার্ব (লাও মিট সালাদ), পর্ক সাতায়, বারবিকিউ পর্ক রিবস এবং থাইল্যান্ডের হরেক ধরনের মিষ্টি।

বিজ্ঞাপন
এই ভাসমান বাজারে পাওয়া যায় হরেক রকমের পণ্য

কিছুটা অপ্রচলিত মিষ্টিও রয়েছে এখানে। যেমন খানম খাই প্লা (মাছের মিষ্টি ঝোল), খানম কো (দক্ষিণ থাইয়ের মিষ্টি), খানকম নিম নুয়ান (রায়ংয়ের স্থানীয় মিষ্টি) ইত্যাদি। আমরা পুরো একটা গ্রিল করা হাঁস কিনে নিলাম। সঙ্গে স্টিকি রাইস। এখানে ঝামেলা এড়াতে মানুষ এই আঠালো ভাত গ্রহণ করে। মাংসে এক কামড় দিয়ে আবার প্লাস্টিকের ভেতর থেকে কেক এর মতো ভাতে এক কামড় বসানো। খালের পাড়ে একটি টেবিল নিয়ে বসে পড়লাম আমরা।

এখানে খাবারের জন্য রয়েছে ৬টি ভিন্ন জোন বা এলাকা। এক এক জোনের খাবারের বৈচিত্র্যতা এক এক ধরনের। খাবারের দোকান ছাড়াও রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, কাপড়ের দোকান, হস্তশিল্পের দোকান, স্থানীয় পণ্য, শিশুদের খেলনা, বাসা সাজানোর সরঞ্জাম, অর্কিড ও ক্যাকটাস, তাজা ফল। এখানে মাছের স্পা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে অল্প খরচে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান

এই লাট মায়োম খাল যেয়ে মিশেছে চা ফ্রায়া নদীতে। এছাড়াও এই খাল দিয়ে ব্যাংককের অন্য দুটো ভাসমান বাজারেও যাওয়া যায়। সপ্তাহে শনি এবং রোববার ও অন্যান্য ছুটির দিন খোলা থাকে এই ভাসমান বাজার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।

আমরা নৌকায় উঠে ওয়াট সা প্যাগোডা আর অর্কিড ঘুরে আসলাম। তবে এই সরু খালে এতো বড় ইঞ্জিনের নৌকা চালাতে আসলেই প্রয়োজন বাড়তি দক্ষতা।