কোচবিহার: জনস্মৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য



ড. রূপ কুমার বর্মণ
কোচবিহার: জনস্মৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য

কোচবিহার: জনস্মৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য

  • Font increase
  • Font Decrease

পূর্বতন দেশীয় রাজ্য ‘কোচবিহার’ বাংলাদেশ সংলগ্ন বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা। একসময় সমগ্র তিস্তা-ব্রহ্মপুত্র অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত ছিল এই রাজ্য। সূচনালগ্ন (ষোড়শ শতক) থেকে ভারতের সঙ্গে সংযুক্তির সময় পর্যন্ত (আগস্ট ২৮, ১৯৪৯), ‘কোচবিহার’ ছিল এই রাজ্যের প্রধান কেন্দ্র।

খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রায় পাঁচশ বছর ধরে চলতে থাকা কোচবিহার রাজ্য সম্পর্কে এখানকার জনমানসে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু পৌরাণিক কাহিনী, উপাখ্যান ও কিংদন্তি। রাজ-আমলে নির্মিত এখানকার রাজবাড়ি (The Cooch Behar Palace), বিভিন্ন সৌধ, মন্দির ও প্রতিষ্ঠান; সামাজিক রীতিনীতি ও সংস্কৃতির ধারা কোচবিহারবাসীর (কোচবিহারি) কাছে পরম শ্রদ্ধা ও গর্বের বিষয়। কোচবিহারিগণ এখনও কোচবিহার রাজ্যের ((The Cooch Behar State) ইতিহাসকে বিশেষ মর্যাদার চোখেই দেখেন। স্বাভাবিকভাবেই  কোচবিহারের ইতিহাস ও ঐতিহ্য বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের অন্যান্য শহরের থেকে অনেকটাই ভিন্ন। এখানে ইতিহাস ও জনস্মৃতি এবং ভাষার বর্ণালী অনেক বেশি জীবন্ত।

সাধারণভাবে কোচবিহারের আদি রাজনৈতিক ইতিহাস ‘প্রাগজ্যোতিষ-কামরূপের’ (পশ্চিম আসাম এবং বাংলার উত্তর অংশ) সঙ্গে যুক্ত করে আলোচনা করা হয়। পুরাণ-বর্ণিত নরক, ভগদত্ত ও বাণাসুরের প্রসঙ্গও চলে আসে কোচবিহারের ইতিহাসচর্চায়। তবে কোচবিহারের রাজনৈতিক ইতিহাসের প্রামাণ্য যুগের সুচনালগ্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে কামরূপের বর্মণ রাজবংশের উত্থানকে। খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতকে সৃষ্ট বর্মণ রাজবংশ, ভাস্করবর্মণের (আ: ৬০০-৬৫০ খ্রিস্টাব্দ) রাজত্বকালে, গৌড়ের রাজা শশাঙ্কের (আ:৬০০-৬৩৬) সঙ্গে সংঘাত ও উত্তর ভারতের রাজা  হর্ষবর্ধনের (৫৯০-৬৪৭) সঙ্গে মিত্রতার ফলে সমগ্র ভারতের ইতিহাসে গুরুত্ব অর্জন করেছিল।

বর্মণদের পতনের পর, সপ্তম শতকের দ্বিতীয়ার্ধে শালস্থম্ভ নামে একজন উপজাতি-প্রধান (ম্লেচ্ছ) কামরূপে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ম্লেচ্ছ রাজ্যের (যা নবম শতক পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল)।  দশম শতকের শেষের দিকে কামরূপে প্রতিষ্ঠিত হয় পাল রাজাদের শাসন। তিস্তা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় আদিবাসী গোষ্ঠী-প্রধানদের নেতৃত্বে বেশ কিছু  রাজনৈতিক সত্তার জন্ম হয় পালদের পতনের পর। ত্রয়োদশ শতকে কামরূপের রাজনৈতিক কেন্দ্র স্থানান্তরিত হয় ‘কামতা’ (অর্থাৎ কামরূপের পশ্চিম অংশে) অঞ্চলে। এখানে আমরা খুঁজে পাই পৃথু এবং সন্ধ্যার মতো দুই জন স্থানীয় রাজার নাম [যারা তাঁদের রাজধানী কামরূপ থেকে কামতাপুরে (বর্তমানে কোচবিহার জেলায় অবস্থিত) স্থানান্তরিত করেছিলেন]। এরপর থেকে এই অঞ্চলের শাসককে ‘কামেশ্বর’ বা ‘কামতেশ্বর’ (কামতার প্রভু) হিসাবে বর্ণনা করা শুরু হয়। তবে কামতাপুরে তখন কোন একজন রাজার একছত্র আধিপত্য ছিল না। তৎকালীন ঐতিহাসিক উপাদানগুলিতে কামতাপুরের বেশ কিছু রাজার নাম উল্লিখিত হয়েছে। এদের মধ্যে সিংহধ্বজ (আ: ১৩০০-১৩০৫), দুর্লভ নারায়ণ (আ: ১৩৩০-১৩৫০), অরিমত্ত (১৩৬৫-১৩৮৫),  গজাঙ্ক (১৩৮৫-১৪০০), শুক্রাঙ্ক (১৪০০-১৪১৫), এবং মৃগাঙ্ক (১৪১৫-১৪৪০) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তবে তাঁদের রাজ্যের আঞ্চলিক বিস্তৃতি সীমাবদ্ধ ছিল কামতার পশ্চিম অংশের মধ্যেই ।

পঞ্চদশ শতকের গোড়ায় খেনবংশীয় নীলধ্বজ (আ: ১৪৪০-১৪৬০) কামতায় একটি নতুন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁর উত্তরসূরি চক্রধ্বজ (১৪৬০-১৪৮০) কামতা রাজ্যের সীমা করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরেও সম্প্রসারণ করেছিলেন। কিন্তু পঞ্চদশ শতকের শেষ লগ্নে  বাংলার সুলতান হুসেন শাহ (১৪৯৩-১৫১৯) কামতাপুর দুর্গ আক্রমণ করেন। কামতাপুরের রাজা নীলাম্বর (১৪৮০-১৪৯৮) পরাজিত হলে, হুসেন শাহ কামতাপুর দুর্গ ধ্বংস করেন (১৪৯৮-১৪৯৯)। তবে কামতাপুরে হুসেন শাহের শাসন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কামতার স্থানীয় গোষ্ঠিপ্রধানেরা (রূপনারায়ণ, মাল কানওয়ার, লক্ষ্মীনারায়ণ, প্রমুখ) এই অঞ্চল থেকে হুসেন শাহের শাসনকে উৎখাত করেছিলেন। ষোড়শ শতকের প্রথম দিকের এমন একটি পটভূমিতে পশ্চিম আসামের পার্বত্য অঞ্চলের মেচ ও কোচ জনজাতি তাঁদের গোষ্ঠী-প্রধান, হারিয়া মেচের (মন্ডল) নেতৃত্বে একটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক সত্তা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল।


হারিয়া মন্ডলের পুত্র বিশ্বসিংহ ও শিষ্যসিংহ পশ্চিম কামরূপ ও হিমালয়-সংলগ্ন বাংলায় জন্ম দেন কোচ রাজ্যের। মহারাজা নরনারায়ণ (১৫৪০-১৫৮৭) এবং তাঁর মহাসেনাপতি চিলারায়ের নেতৃত্বে এই রাজ্য সমগ্র নিম্ন-আসাম ও হিমালায়-সংলগ্ন বাংলায় সম্প্রসারিত হয়েছিল। কিন্তু কোচ রাজ্য বেশিদিন ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারেনি। ১৫৮১ খ্রিস্টাব্দে এই রাজ্যটি রঘুদেব নারায়ণ (চিলারায়ের পুত্র) এবং নরনারায়ণের মধ্যে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। দুই শাখার মধ্যে অবিরাম সংঘাত, কোচ-রাজ্যকে মুঘলদের আজ্ঞাবহ শক্তিতে পরিণত করে। তবে প্রাণ নারায়ণের (১৬৩২-১৬৬৫) সিংহাসনে আরোহনের সঙ্গে সঙ্গে কোচরা তাঁদের হারানো অঞ্চল এবং রাজনৈতিক প্রাধান্য ফিরে পায়। মীর জুমলার সেনাপতিত্বে ১৬৬১ খ্রিস্টাব্দে মুঘলরা কোচবিহার আক্রমণ করলেও কোচবিহারের স্বাধীন স্বত্তার বিনাশ ঘটেনি।

প্রাণ নারায়ণের মৃত্যুর (১৬৬৫) পর রাজদরবারের অন্তর্কলহ ও দক্ষিণ দিক থেকে মুঘলদের আক্রমণ কোচবিহারে ভুটানের আধিপত্য বিস্তারের সহায়ক হয়। অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগে কোচবিহারের উপর ভুটানের প্রভাব এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছিল যে ভুটানি সেনাদের বিতাড়নের জন্য কোচবিহার, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির (The East India Company)  স্মরণাপন্ন হয়। ১৭৭৩ সালে স্বাক্ষরিত হয় The Anglo-Cooch Behar Treaty (1773)।

১৭৭৩ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত ব্রিটিশ-ভারতীয় সরকারের করদমিত্র হিসেবে কোচবিহার তার অস্তিত্ব বজায় রেখেছিল। ব্রিটিশ-শাসকদের তত্বাবধানে আধুনিক শাসনব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গে কোচবিহারে বিকাশ ঘটেছে পাশ্চাত্য শিক্ষার। পাঁচটি মহকুমায় (কোচবিহার সদর, তুফানগঞ্জ, দিনহাটা, মাথাভাঙ্গা ও মেখলিগঞ্জ) বিভক্ত কোচবিহার রাজ্যের ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা, শাসক-শাসিত সম্পর্ক, রাজনৈতিক চেতনা ও সমাজব্যবস্থা বাংলার অন্যান্য অঞ্চল থেকে অনেকটাই ভিন্ন ছিল। কোচবিহারের নির্মিত বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান (দেবীবাড়ি, মদনমোহন মন্দির, ব্রাহ্মমন্দির, বানেশ্বর শিবমন্দির, জল্পেশ মন্দির, বড় মহাদেব মন্দির, ইত্যাদি); দীঘি (সাগর দীঘি, রাজমাতা দীঘি, বৈরাগী দীঘি, ইত্যাদি), শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (জেঙ্কিন্স স্কুল, সুনীতি একাডেমি, ইন্দিরাদেবী স্কুল, নৃপেন্দ্রনারায়ণ স্কুল, ইত্যাদি), মহারাজা জীতেন্দ্রনারায়ণ হাসপাতাল ও কোচবিহার বিমানবন্দর; নারায়ণী সেনা, চিলারায় ব্যারাক ও বিভিন্ন ধরনের উৎসব ও সাংস্কৃতিক-পরম্পরা কোচবিহারের প্রজাদের রাজভক্তির ধারাকে সচল রেখেছিল। রাজা ও রাজপরিবারের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ব্যাক্তির নামাঙ্কিত রাস্তা ও তাঁদের মূর্তি কোচবিহারের ভারত-ভূক্তির পরও রাজ-আমলের স্মৃতিকে সজীব রেখেছে।

ভারতের স্বাধীনতার পর কোচবিহারের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে বিশাল পরিবর্তন এসেছে। পাল্টে গেছে তাঁর জনবৈচিত্র ও প্রথাগত উৎপাদন-ব্যাবস্থা। সামাজিক ক্ষেত্রেও তৈরি হয়েছে বিভিন্ন ধরণের টেনশন। স্বাভাবিকভাবেই রাজ-আমল ও ভারতভূক্তির-পরবর্তী কোচবিহারের তুলানামূলক আলোচনা মাঝে মঝেই প্রাসঙ্গিকতা অর্জন করে। এই প্রাসঙ্গিকতাই কোচবিহারের ইতিহাসকে কোচবিহারিদের কাছে জীবন্ত করে রেখেছে।

রাজপরিবার ছাড়াও কোচবিহারের কয়েকজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব এই জেলার জনস্মৃতির মধ্যে ভীষণভাবে প্রবাহমান। এক্ষেত্রে যাঁদের কথা বারবার উঠে আসে তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন রায়সাহেব পঞ্চানন বর্মা (১৮৬৬-১৯৩৫), উপেন্দ্রনাথ বর্মণ (১৮৯৮-১৯৮৮) ও পল্লীগীতি সম্রাট আব্বাসউদ্দিন আহমদ (১৯০১-১৯৬০)। পঞ্চানন বর্মার নেতৃত্বে ক্ষত্রিয় আন্দোলন, সমাজসংস্কার ও শিক্ষা-আন্দোলন এবং পরবর্তীকালের নির্বাচনী-রাজনীতি উত্তরবঙ্গের রাজবংশীদের একটি শক্তিশালী সম্প্রদায়ে পরিণত করেছে। উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলার মতো কোচবিহারের মানুষও পঞ্চানন বর্মাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে চলেছেন। কোচবিহারের বিভিন্ন স্থানে (মাথাভাঙ্গা, কোচবিহার, হরিপুর,  ইত্যাদি) স্থাপিত হয়েছে বেশ কয়েকটি মূর্তি । পঞ্চানন বর্মার নামে নামাঙ্কিত হয়েছে কোচবিহারের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তা ও সেতু। ফলে রাজপরিবারের চিলারায় ও আরোও অনেকের সঙ্গে পঞ্চানন বর্মা জনপ্রিয় ঐতিহাসিক ব্যাক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন।     অন্যদিকে ভাওয়াইয়া সঙ্গীতের শিল্পী হিসাবে আব্বাসউদ্দিন আহমদও কোচবিহারের জনস্মৃতির পাশাপাশি বৃহৎ বঙ্গে অমর হয়ে আছেন।

ড. রূপ কুমার বর্মণ কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ও আম্বেদকর চর্চা কেন্দ্রের সমন্বয়ক।

   

১৭ মার্চ : ইতিহাসে আজকের এই দিনে



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইতিহাস মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। আজ রোববার, ১৭ মার্চ ২০২৪। একনজরে দেখে নিন ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

ঘটনাবলি:

০৬৩৬ - রোমানদের পরাজয়ের পর মুসলমানরা বায়তুল মোকাদ্দাস জয় করে।

১০৯৭ - খৃষ্টানরা বায়তুল মোকাদ্দাস দখলের জন্য ক্রুসেডের যুদ্ধ শুরু করে।

১৭৬৯ - বাংলার তাঁত ও মসলিন শিল্প ধ্বংসের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ রাজের নির্দেশে বাংলার তাঁতিদের হাতের বুড়ো আঙ্গুল কাটা শুরু হয় ।

১৯৪৪ - মার্কিন বিমান বাহিনী ভিয়েনায় বোমাবর্ষণ করে।

১৯৪৮ - ব্রিটেন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, হল্যান্ড ও লুক্সেমবার্গের প্রতিনিধিরা বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করে।

১৯৯০ - ইংল্যান্ডের ইয়র্কে ৫ শতাধিক ইহুদীকে গণহত্যা করা হয়।

১৯৯২ - দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদ অবসানের জন্য শ্বেতাঙ্গ ভোটাররা সংস্কারের পক্ষে গণভোট দেয়।

১৯৯৪ - এল সালভাদরে গৃহযুদ্ধের খবর সংগ্রহ কালে ৪ জন ডাচ সংবাদিক নিহত হয়।

১৯৯৪ - মিশরে ৯ জন ইসলমাপন্থীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।

২০০০ - উগান্ডায় গীর্জায় অগ্নিকান্ডে ৫৩০ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত হয় এবং পরবতীতে আরো ৩৯৪টি মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

২০০১ - চীনে বোমা বিস্ফোরণে ৪টি হোটেল বিধ্বস্ত হয়; এতে ১০৮ জন নিহত হয়।

২০০৪ - কসোভোতে সার্ব ও আলবেনীয়দের জাতীগত দাঙ্গায় ২২ জন নিহত এবং ৫০০ জন আহত হয়।

জন্ম

৭৬৩ - হারুনুর রশিদ, আব্বাসীয় খলিফা।

১০৭৮ - আব্দুল কাদের জিলানী, ইসলাম ধর্মে অন্যতম প্রধান আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ত্ব ও ধর্মপ্রচারক।

১৪৭৩ - চতুর্থ জেমস, স্কটল্যান্ডের রাজা।

১৮৩৪ - গোটলিব ডেইমলার, জার্মান মোটর গাড়ির পুরোধা।

১৮৫৬ - মিখাইল ভ্রুবেল, রাশিয়ান চিত্রশিল্পী।

১৮৭৩ - মার্গারেট বন্ডফিল্ড, ইংল্যান্ডের প্রথম নারী কেবিনেট মন্ত্রী।

১৮৮১ - ওয়াল্টার রুডলফ হেস, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সুইস শারীরবিজ্ঞানী।

১৯১২ - মনোহর আইচ, ভারতীয় বাঙালি বডি বিল্ডার।

১৯২০ - শেখ মুজিবুর রহমান, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও প্রথম রাষ্ট্রপতি।

১৯৩৮ - রুডলফ নুরেয়েভ, রাশিয়ান বংশোদ্ভূত ফরাসি নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার।

১৯৪২ - সঙ্গীতশিল্পী পূরবী দত্ত, ভারতীয় বাঙালি নজরুলগীতি বিশেষজ্ঞা।

১৯৪৫ - এলিস রেজিনা, ব্রাজিলিয়ান গায়িকা।

১৯৫৫ - গ্যারি অ্যালান সিনিস, মার্কিন অভিনেতা, পরিচালক ও খাদ প্লেয়ার।

১৯৬২ - কল্পনা চাওলা, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন প্রকৌশলী ও মহাকাশচারী।

১৯৭৫ - পুনীত রাজকুমার, ভারতীয় অভিনেতা, গায়ক ও প্রযোজক।

১৯৭৬ - আলভারো রেকোবা, সাবেক উরুগুয়ের ফুটবলার।

মৃত্যু

০১৮০ - মার্কাস অরেলিয়াসের, রোমান সম্রাট।

১০৪০ - হ্যারল্ড হারেফোট, ইংরেজি রাজা।

১৭৮২ - দানিয়েল বার্নুয়ি, ডাচ সুইস গণিতবিদ ও পদার্থবিজ্ঞানী।

১৮৪৬ - ফ্রিডরিশ ভিলহেল্ম বেসেল, জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং গণিতবিদ।

১৯৩৭ - অস্টিন চেম্বারলেইন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজ রাজনীতিবিদ।

১৯৫৬ - আইরিন জোলিও-কুরি, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি পদার্থবিদ।

১৯৫৭ - রামোন ম্যাগসেসে, ফিলিপিনো জেনারেল, রাজনীতিবিদ ও ৭ম প্রেসিডেন্ট।

১৯৮৩ - হ্যাল্ডান কেফার হার্টলাইন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন শারীরবিজ্ঞানী।

১৯৯৩ - হেলেন হায়েজ, মার্কিন অভিনেত্রী।

দিবস

জাতীয় শিশু ‍দিবস। 

;

'বহে না সুবাতাস'



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
'বহে না সুবাতাস'

'বহে না সুবাতাস'

  • Font increase
  • Font Decrease

চৈত্র মাস শুরু হয়েছে। শুষ্ক বাতাস। প্রকৃতিতে দাবদাহ। দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা লাফ দিয়ে উঠছে চৈত্রের শুরুতেই। বাকী দিনগুলো তাপদহনে রুক্ষ হবে, আন্দাজ করা যায়।

ঢাকার বাতাস ধারাবাহিকভাবে 'অস্বাস্থ্যকর' তকমা পাচ্ছে। আসন্ন গরমকালে রাজধানীর বায়ুমানের আরো অবনতি অনিবার্য।

গরমের সূচনাতে প্রতিদিনই একাধিক অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে। সড়কে মৃত্যুর মতো আগুনে হতাহতের ঘটনা নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হচ্ছে।

এরই মাঝে চলছে কৃচ্ছ্রসাধনার মাস রমজান। তাপ, দুষিত বায়ু, যানজটের সঙ্গে বাজারের অগ্নিমূল্যে নাকাল হচ্ছে রোজাদার সাধারণ মানুষ। কোনোক্রমেই বাজারের অগ্নিমূর্তি শীতল হচ্ছে না। নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল করা যাচ্ছেনা নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েও।

এসবের সঙ্গে আরেক দুঃসংবাদ হলো, জলদস্যু কবলিত বাংলাদেশের জাহাজের অনিশ্চিত ভাগ্য। আফ্রিকার উপকূলে জিম্মি হয়ে নাবিকরা জীবন ও মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

এদিকে, গাজায় চলছেই ইসরাইলি গণহত্যা। ত্রাণ পাচ্ছে না বিপন্ন ফিলিস্তিনিরা। যুদ্ধবিরতির শত আবেদনেও কর্ণপাত করছে না জায়নবাদী ইসরায়েল।

চলমান রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই রাশিয়ায় নির্বাচনে যুদ্ধবাজ পুতিন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। পোপ যুদ্ধবিরতির পক্ষে কথা বলে যুদ্ধংদেহী নেতাদের দ্বারা সমালোচিত হয়েছে।

চারিদিকে শুধু উগ্র, তপ্ত, সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি। কোথাও 'বহে না সুবাতাস'। না প্রকৃতি, না সমাজ, কোথাও সুবাতাস ও সুখবরের স্বল্পতা প্রকট। বিপন্নতা, আহাজারি, চাপাকান্না, মানবিকতার আর্তনাদ কাউকে আর্দ্র করে না। কোনো বিপর্যয়ের মনুষ্যত্বে তীব্র হুঙ্কার সঞ্চারিত হতে কমই দেখা যায়।

সামগ্রিক পরিস্থিতির দমবন্ধ ও গুমোট পটভূমিতে উপমা হিসাবে লাগসই মনে হয়, 'বহে না সুবাতাস' শব্দবন্ধ। সত্তর দশকের শেষপ্রান্তে কৈশোরকালে কিশোরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরিতে পড়ে ছিলাম 'বহে না সুবাতাস' নামে একটি গল্পগ্রন্থ। ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত বইয়ের লেখক কথাশিল্পী জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত।

জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত কলেজের বার্ষিকীতে জীবনের প্রথম গল্প চর্চা শুরু করেন। এরপর জীবনযাপনের বিচিত্র নিয়মে অবিরাম লিখে যাওয়াই তাঁর নিয়তি। একের পর এক গল্পে তিনি বাংলাদেশের কথাসাহিত্যের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছেন। যেজন্য তাঁকে ভিন্নভাবে মূল্যায়ন করা হয়।

একেবারে শুরু থেকে তাঁর গল্পে উচ্চারিত হয়েছে। ভিন্ন স্বর। ষাটের দশকে যে কজন গল্পকার তাদের গল্পের মধ্যে জনজীবনের বঞ্চনা, শােষণ, শ্রেণি সংগ্রাম, নিরন্ন মানুষদের জীবনচিত্র তুলে ধরেছেন তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম।

'বহে না সুবাতাস'-এর আটটি গল্পে জীবনের অপার দুঃখকষ্ট আর আনন্দ বেদনার দীর্ঘশ্বাস খুঁজে পাওয়া যায়। পাঠক এই বইয়ের গল্প পাঠে সন্ধান পাবেন অন্য এক জীবনের, অন্য এক ভুবনের, যা কিনা পুনরাবৃত্তির চক্রে অর্ধ শতক পরে পুনরায় ফিরে এসেছে আজকের বাস্তবতায়।

;

আজকের ইতিহাস: মহাকাশ বিজ্ঞানে যুক্তরাজ্যের রেকর্ড



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মহাকাশ বিজ্ঞানে যুক্তরাজ্যের রেকর্ড

মহাকাশ বিজ্ঞানে যুক্তরাজ্যের রেকর্ড

  • Font increase
  • Font Decrease

বছর পেরিয়ে আসে নতুন বছর। তবে তারিখগুলো থাকে আগের মতোই। সময়ের আবর্তনে পার হয় যুগ, পরিবর্তন হয় প্রজন্ম। ফিরে আসা তারিখ গুলো মনে করিয়ে দেয়, পূর্ব প্রজন্মের স্মৃতিগুলো। 

আজ ১৪ মার্চ, ২০২৪। অঅজকের এই তারিখে অতীতে ঘটে গেছে নানান ঐতিহাসিক ঘটনা। জেনে নেওয়া যাক সেসব!   

১৯৬০ সালে রেডিও টেলিস্কোপ মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে বিশেষ অর্জন করে। যুক্তরাজ্যের চেশায়ারের জোড্রেল ব্যাঙ্কের রেডিও টেলিস্কোপ ৪ লাখ ৭ হাজার মাইল দূর থেকে আমেরিকান  পাইওনিয়ার ভি স্যাটেলাইটের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে সামর্থ্য হয়। এর আগে ২ লাখ ৯০ হাজার মাইল দূরত্বের রেকর্ড ছিল সোভিয়াত ইউনিয়নের লুনিক-৩ স্যাটেলাইটের।  

টেক্সাসের প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির হত্যাকারীকে খুন করেছিলেন জ্যাক রুবি। লি হার্ভে অসওয়াল্ড প্রেসিডেন্ট কেনেডির হত্যার দায়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। তবে আদালতে বিচারকের সামনে তাকে নেওয়ার আগেই জ্যাক রুবি তাকে হত্যা করেন। সেই অপরাধেই তার শাস্তি হয়। ১৯৬৪ সালে জ্যাককে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। 

২০১৮ সালে বিখ্যাত মহাকাশ বিজ্ঞানী এবং বিগব্যাঙ তত্ত্বের জনক স্টিফেন হকিং ৭৬ বছর বয়সে দেহত্যাগ করেন।

রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২ বারের মতো ক্ষমতায় আসেন ২০০৪ সালে। সেই থেকে এখনো অবধি ক্ষমতায় আছেন তিনি।  এর আগে ১ম বারের মতো ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় এসেছিলেন তিনি।   

১৯৮৪ সালে ‍সিন ফেইনের প্রধান গেরি অ্যাডামসের উপর হামলা করা হয়।  ততার গাড়িতে ২০ টি গুলি ছোড়া হয় এবং তার ঘাড়ে ও হাতে গুলি লাগে। সেন্ট্রাল বেলফাস্টের রাস্তায় কিছু সন্ত্রাসীর সেই হামলায় তার গাড়িতে থাকা আরও ৩ জন আহত হয়েছিল। একজন অক্ষত ছিলেন তবে কেউ নিহত হননি।

 

;

চকবাজারের রমরমা ইফতার বাজার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম

ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রোজার প্রথম দিন থেকেই রমরমা পুরান ঢাকার ইফতার বাজার! শাহী মসজিদের সামনের রাস্তায় প্রতিবছরের মতো এবারও আড়ম্বরভাবে শুরু হয়েছে ইফতার বাজার।

ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম
ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম


জানা যায়, ১৯৪৫ সালে শাহী মসজিদ চত্বরে এক বিক্রেতা প্রথম এখানে খাবার বিক্রি শুরু করেন। ধীরে ধীরে তা বিশাল আকার ধারণ করে।

ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম


এখানে বংশ পরম্পরায় অনেকেই ইফতার বিক্রি করে থাকেন। তাদের মধ্যে মন্টু মিয়া, মো.হারুনসহ অনেকেই রয়েছেন।

ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম


মন্টু মিয়ার পরিবার তিন প্রজন্ম ধরে এখানে ইফতার তৈরি করে তা বিক্রি আসছেন।

ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম


৩২ বছর বয়েসি মন্টু মিয়া এখানে ১০ বছর বয়স থেকে ইফতার বিক্রি করছেন তার বাবার হাত ধরে।

ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম


বাজারের বিশেষ আকর্ষণ

চকবাজারের সবচেয় বড় আকর্ষণ ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙায় ভইরা লইয়া যায়’ নামে বিশেষ ইফতার।

ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম


এ ইফতার তৈরিতে মাংস, সুতি কাবাব, মাংসের কিমা, ডাবলি, বুটের ডাল, ডিম, মগজ, আলু, ঘি, কাঁচা ও শুকনো মরিচসহ নানান পদসহ মসশা ব্যবহার করা হয়। এবার ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙা ভইরা লইয়া যায়’ ইফতার প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম


যে সব ইফতার পাওয়া যায় শাহী মসজিদের রাস্তায়

চকবাজারে যে সব ইফতার পাওয়া যায়, তাহলো- চিকেন আইটেমের মধ্যে চিকেন মোমো, চিকেন সাসলিক, চিকেন চাপ, চিকেন কারি, আস্ত চিকেন গ্রিল, চিকেন পরোটা, চিকেন রোল, চিকেন বটি কাবাব, চিকেন লেগ পিস, চিকেন তন্দুরি, চিকেন আচারী, চিকেন কাটলেট, চিকেন বন, চিকেন ফ্রাই, আস্ত মুরগির রোস্ট ইত্যাদি।

ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম


এছাড়া আরো পাওয়া যায়, বাকনাবা, কিমা পরোটা, টান পরোটা, কোয়েল পাখির রোস্ট

ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম


জালি টিক্কা, অ্যারাবিয়ান কাবাব, মুঠি কাবাব, আস্ত চীনা হাঁস রোস্ট, আস্ত, আস্ত পাতি হাঁস, বিফ কারি, শাহী সাদা পরোটা, সুতি কাবাব, কবুতর রোস্ট, খাসির লেগ রোস্ট, গরুর সুতি কাবাব, বিফ পরোটা

ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম


কাশ্মীরি বটি কাবাব, গরুর কোপ্তা, শাহী তন্দুরী, বটি কাবাব, দই বড়া, শাহী জিলাপি, সাধারণ জিলাপি, ঘুগনি, ঘিয়ে ভাজা জিলাপি, কেশোয়ারি, গরুর কাবাব, খাসির জালি, ডিম চপ, আলু পরোটা, কিমা পরটা, ছোট পিজ্জা, সবজি নান, হালিম ইত্যাদি।

ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম


পানীয়

পানীয়ের মধ্যে পাওয়া যায়, বোরহানি, পেস্তা বাদামের শরবত, মাঠা, লাবাং, শরবত-ই মোহাব্বত, গোড ইত্যাদি।

ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম


মিষ্টিজাতীয় ইফতার

মিষ্টি জাতীয় খাবারের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে- মালপোয়া, পাটিসাপ্টা, ফালুদা, ফিরনি, জর্দা ইত্যাদি।

ছবি: নূর এ আলম / বার্তা২৪.কম


ইফতার বাজার ঘুরে ছবিগুলি তুলেছেন বার্তা২৪.কমের ফটো এডিটর নূর এ আলম

;