সামালবং: এক পাহাড়ি গ্রামে



সম্প্রীতি চক্রবর্তী
সামালবং: এক পাহাড়ি গ্রামে। বার্তা২৪.কম

সামালবং: এক পাহাড়ি গ্রামে। বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাঙালির পাহাড় ভ্রমণের শখ মেটেনা আর আমরা কলকাতার মানুষ পাহাড় বলতে বুঝি রাতটা কোনমতে ট্রেনে কাটিয়ে দিয়ে ভোরের দিকে দার্জিলিং-কালিম্পং। সেবার উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর 'দার্জিলিং' বইটা হাতে পেয়েছিলাম। এবারও ওটি খোঁজার ইচ্ছা ছিল, তবে কিভাবে জানি না হাতে এসে গেলো পরিমল ভট্টাচার্য্য এর লেখা 'দার্জিলিং'।

বইটি কিছুটা গোগ্রাসে গিলে বোঝা গেলো, এই লেখা পড়ে আর যাই হোক টুরিস্ট হিসেবে পাহাড়ে যাওয়া যায় না। বইটির আদ্যপান্ত জুড়ে পাহাড়ি মানুষ, তাদের জীবনশৈলী নিয়ে কথা; একবার একটি পাহাড়ি ছেলে লেখককে নিয়ে গেছিলেন তার নিজের গ্রামে, সেখানে আধুনিক সভ্যতা বলতে নাকি কেবল প্লাস্টিকের দ্রব্য পৌঁছেছে, মানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, জলের জোগান বা পরিমিত বিদ্যুৎ, এ সবের আগে যেটা তারা হাতে পেলো, তা রং বেরং-এর প্লাস্টিকের পাত্র, বাটি, গেলাস।

ছেলেটির সঙ্গে লেখকের সেভাবে আর পরে যোগাযোগ হয়নি, তবে উনি জানতে পারেন পুনেতে একটি ওষুধের কোম্পানিতে ছেলেটি কর্মরত, পাহাড় থেকে অনেক দূরে, কাজের চাহিদায় সে সমতলের মানুষ হয়ে উঠেছে, অন্তত হওয়ার চেষ্টা করেছে হয়তো।

বই-এর কিছুটা পড়ে আর সময় দেওয়া গেলো না, কারণ এবার রওনা দিতে হবে। মনে মনে ছবি আঁকছি পাহাড়ের আর সাথে ভাবছি এই আমাদের মতো হামলে পরা টুরিস্টদের কথা। মাঝরাতে জলপাইগুড়ি পৌঁছলাম, চারটে বাজতে না বাজতেই পাহাড়ের রাস্তা ধরা হলো। বিভীষিকা কাকে বলে! অন্ধকার পথ, বিশাল চাঁদ আর গাড়িটা সটাং উঠে যাচ্ছে ঢালে আবার কোনো সতর্কবার্তা ছাড়াই হুস করে নামছে। আলো থাকলে তাও সামনেটুকু দেখা যেত। তবে এই ভীষণ ওঠা-পরার মধ্যেও যেটা একমাত্র পাওনা, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক আর পূর্ণিমার চাঁদ, যা পাহাড়ের বাকে বাকে হঠাৎ দেখা দিয়ে অদৃশ্য হচ্ছে আর কি ভীষণ নীল আভা ছড়িয়ে দিচ্ছে চারিদিকে। রাতের পাহাড় একদিকে যেমন বীভৎস আবার খুব আত্মবিশ্বাসী। প্রচুর উঁচুনিচুর মধ্যেও কেমন যেন জেদ চেপে যায়, রাস্তা শেষ হবেই, গন্তব্য আসবে, সে যতই চড়াই-উৎরাই থাকুক না কেনো।

দার্জিলিং কয়েকদিন কাটিয়ে আমরা গেলাম ছোট পাহাড়ি গ্রাম সামালবং-এ। কালিম্পং পৌঁছে ঘণ্টা দুই আরও লাগে গাড়িতে। যেহেতু একটু রিমোট এরিয়া তাই গাড়িতে আমরা বাদে আর সকলেই গ্রামের বাসিন্দা। পাহাড়ের সরু রাস্তা বেয়ে গাড়ি গিয়ে থামলো একেবারে নির্জন স্থানে। হোটেল বলতে একটাই, আর আশেপাশে দুটো দোকান, ব্যস।

দুপুরে খাওয়াদাওয়া করে আমরা বেরোলাম একটু হাঁটতে। ক্রমশ সন্ধ্যে হয়ে আসছে, টর্চের আলোয় খুব বেশি দূর দেখা যায় না। নির্জন সন্ধ্যাবেলা, পাহাড়ি চুড়ো, শনশনে হাওয়ায় আমরা দু কাপ চা নিয়ে বসলাম। সময়ের অস্তিত্ব বোঝা কঠিন এখানে, আকাশের একফালি চাঁদ আর অনেক নিচে একটা নদী বয়ে যাওয়ার হালকা শব্দ ছাড়া আর কিছুই বোধগম্য হচ্ছে না। দোকানি একটা চেয়ার বাড়িয়ে দিলেন, সেটা নিয়ে পাহাড়ের ধারে বসার রীতি আছে। বিশেষ কিছু দৃশ্য উপভোগ করছি তা নয়, তবে রাতের পাহাড়, তার সমস্ত রহস্য নিয়ে জানান দিচ্ছে তার উপস্থিতি।

দোকানি গল্প জুড়লেন, গ্রামের প্রচুর জমির মালিক উনি নিজেই। আগে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন, এখন voluntary retirement নিয়ে গ্রামেই থাকেন। স্ত্রীর সঙ্গে দোকান দেখাশোনা ও চাষবাস করেন। বাংলা, হিন্দি দুটোতেই সড়গড়, বললেন আরও অনেক ভাষা জানেন, ভাষা শেখা ওনার অন্যতম শখ। এই গ্রামেই জন্ম, বড় হওয়া, এখান থেকে মূল শহর প্রায় দুঘণ্টার পথ। আশেপাশের জমিতে ধানচাষ হয়, বর্ষাকালে ভাতের জোগানে অসুবিধা হয় না, তবে বাকি রসদে টান পড়ে। ভীষণ বৃষ্টিতে মূল শহর থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কিছুদিনের জন্য, এটাই সমস্যা।

এরপর এক এক করে ছেলেবেলার গল্প, গ্রামের ইতিহাস, মানুষজন আসতে লাগলো কথাবার্তায়। তিরিশ, চল্লিশ বছর আগেকার সামালবং, পাহাড় ডিঙিয়ে যাতায়াত করতেন ওনারা জোয়ান বয়সে, পায়ে হেঁটে, নদী পেরিয়ে। এখনকার ছেলেমেয়েরা যদিও স্কুটি বা সাইকেল ব্যবহার করে।

পাহাড়ের ধারে বসে গল্প করছি, ইতিমধ্যে মেঘের গর্জন শোনা যাচ্ছে। অদূরে সোনালী রঙের আলো, পাহাড়ের গায়ে, ভাঁজে ভাঁজে। আলোর দিকে তাক করে বললেন ওগুলো দাবানল। সারা রাত হয়তো জ্বলবে, গ্রামের লোকালয় গুলোতে গাছপালা কেটে দেওয়া হয় যাতে নিশুতি রাতে আগুন হানা না দিতে পারে। ধিকিধিকি আগুনের পোড়া গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে আমরা যেখানে বসে আছি।

এর মধ্যেই বৃষ্টি নামলো। তাড়াতাড়ি ছুটলাম হোটেলের দিকে। ঘরের বিছানায় বসে বৃষ্টি দেখছি নীল পাহাড়ে, চা আর মোমো আছে সাথে। বিদ্যুৎ না থাকায় বেয়ারা এসে মোমবাতি দিয়ে গেলো। কেমন যেন নীল আভা চারিদিকে, বুঝলাম পাহাড়ে বৃষ্টির আওয়াজ অন্যরকম। কেমন সময়ের চাকা থেমে যায়। চা, বৃষ্টি, পাহাড়, প্রথম দিনটা একবারে মন মতো কাটলো। ইতিমধ্যে হোটেলের দুই পোষ্য আমাদের ঘরের সামনে এসে আশ্রয় নিয়েছে। রাত প্রায় হয়ে এলো, আগুন নিভলো কিনা ভাবছি।

পরেরদিন সকালবেলা উঠে জায়গাটা ঘুরে দেখাই একমাত্র কাজ। কালিম্পং জেলার এই গ্রামটি এতটাই প্রত্যন্ত যে খুবই স্বল্প মানুষ বসবাস করেন এখানে। আমরা হেঁটে পাহাড়ের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছলাম, একেবারে ধারে যেতে ভয় করে, যেন পৃথিবীর শেষ সীমানা, ভয়ঙ্কর সুন্দর, কাছে যেতে মন চায় আবার পরক্ষণেই পা হরকানোর ভয় চেপে ধরে।

সামালবং এর এই view point এ দাঁড়িয়ে কালিম্পং শহরটাকে পুরো দেখা যায়। পাশেই চায়ের দোকান, আমাদের বয়সী এক দম্পতি ও তার ছোট মেয়ে রয়েছে টিনের ছাউনি দেওয়া দোকানে, পাশেই তাদের বাড়ি ও খামার। লাল চা নেওয়া হলো, অসম্ভব ভালো খেতে, অজানা কোনো মশলা দিয়েছে নিশ্চয়ই, কি ভীষণ সুবাস তার। তিন কাপ পরপর চললো, সাথে অমলেট। ছেলেটির সঙ্গে কথাবার্তায় জানা গেলো তাদের দোকানটি গ্রামের সদাই হিসেবে পরিচালিত হয়। টুরিস্ট-এর রমরমা নেই বলে গ্রামের লোকেরাই বিকেল করে আসেন দোকানে, চা খায়, আড্ডা দেয়। দূর থেকে দেখেছি সেই পাহাড়ি আড্ডা। শাল গায়ে দিয়ে প্রাপ্তবয়স্কের দল টিমটিমে আলোয় বসে আছে। হাসি ঠাট্টা মস্করা চলছে তাদের নিজস্ব ভাষায়।

পরের দিন আবার গেলাম সেই ভিউ পয়েন্টে। দোকানি দম্পতি জানালেন তারা মশলা, রান্নার সামগ্রী বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করেন। ওটাই তাদের আয়ের মূল উৎস। তাদের ছোট মেয়েটিকে আগের দিন দেখেছিলাম। সে সবে স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে, মা তাকে রোজ সকালে পৌঁছে দেন পাহাড়ি পথ হেঁটে। আর বাবা সকাল থেকে মুরগি, সবজি কেটে, বাসন ধুইয়ে দোকান খোলায় ব্যস্ত থাকেন। আমরা চা খাচ্ছি, মহিলা ইতিমধ্যে চলে এসেছেন মেয়েকে স্কুলে দিয়ে। গল্প করতে করতেই দেখলাম ভদ্রলোক বাসন ধুতে প্রায় পাহাড়ের খাদ বরাবর নামছে। কেন বুঝলাম না, মনে হলো আরে, একটু ওপরেও তো কাজটি করা যায়!
জিজ্ঞেস করলাম ভয় লাগে না আপনাদের এইভাবে নেমে যেতে? তার স্ত্রী বললেন, অনেকবার পড়ে গেছে, একেবারে নিচে গড়ানোর অবকাশ নেই, আবার পাহাড় বেয়ে উঠে আসতে পারবে, অসুবিধা নেই। মানে আমাদের কার্নিশ থেকে বল তোলবার মতো ব্যাপার, ভারী অদ্ভুত বিষয়।

কথা হচ্ছিলো গ্রামে জল সরবরাহ নিয়ে, আগে অনেক দূর থেকে জল বয়ে আনতে হতো, এখন দূরের ড্রাম থেকে পাইপ দিয়ে এক একটা স্থানে জল পৌঁছে যায়, কিন্তু প্রত্যেক বাড়ির আলাদা সময় বাঁধাধরা আছে। দোকানি দম্পতির রাতের বেলা স্লট, তাই অনেক ভোরে উঠতে হলেও রাতে জলের জন্য কিছুটা সময় দিতেই হয়।

পারিবারিক বিষয়ও কথা হচ্ছিল। ছেলেটির বাড়ি সিকিমে, আগে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে কাজ করতেন, আপাতত সামালবং, তার শ্বশুরবাড়ি, সেই দোকানেই কাজ করেন স্ত্রী কন্যার সাথে। কথায় কথায় আমাদের ফোন নম্বর নিলেন, কখনো কলকাতায় আসলে যোগাযোগ করতে বললাম। বাচ্চা মেয়েটি খুব হাসিখুশি, কোনো জড়তা নেই, আমাদের দেখে লজ্জা না পেয়ে নিজের মনে খেলা করে।

সামালবং খুব ভালো লাগলো, নির্জন গ্রাম, সকলে মন খুলে কথা বলে, পাহাড়ে বেঁচে থাকার গল্প, জল, খাবার জোগান, নিজেদের খামারে মুরগি, ছাগল পুষে কিভাবে জীবন চলে তাদের। আমরা বিকেলের দিকে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম এক পরিত্যক্ত বাড়িতে, মনে হলো কোনোদিন হয়তো স্কুল ছিলো, এখন কোনো কারণে বন্ধ, পাহাড়ের চূড়ায় বেঞ্চি পাতা, তাতে বসে গল্প করছি, সারা শহরটা দেখা যাচ্ছে নিচে। সামনের রাস্তা দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর গ্রামের লোক হেঁটে যাচ্ছে, দু একটা গাড়িও চলছে। এক মহিলা তার ছোট মেয়েকে কাঁধে নিয়ে আসছেন, পাহাড়ি বাঁকে কোনো জড়তা নেই তাদের। মহিলা তার মেয়েকে ইংলিশ অ্যালফাবেট শেখাচ্ছেন, একটা করে পা ফেলা আর B for বলে থেমে গেলে মেয়ে উত্তর দেয় Bat.

সন্ধ্যে হয়ে আসছে, এবার হোটেলের পথে ফিরবো, ভাবছি কাল এই সময় শহরে ঢুকে গেছি। এমন শান্তির বিকেল কতদিন কাটাইনি, হালকা ঠান্ডা, শনশনে হাওয়া, আর পাহাড়ের স্তব্ধতায় একঘেয়ে লাগলে গ্রামবাসীদের সাথে দু-চার কথা বলে নেওয়ার মুগ্ধতা, আজীবনের মহার্ঘ্য সঞ্চয়।

সম্প্রীতি চক্রবর্তী, ইতিহাস বিষয়ক গবেষক, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ।

   

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;