নিউইয়র্কের দিনলিপি-৩



আমান-উদ-দৌলা
নিউইয়র্কের দিনলিপি-৩

নিউইয়র্কের দিনলিপি-৩

  • Font increase
  • Font Decrease

১. 'সাটেনিক ভার্সেস' গ্রন্থের প্রখ্যাত লেখক সালমান রুশদীকে (৭৫) গত শুক্রবার নিউইয়র্ক রাজ্যের বাফেলোতে এক সভায় বক্তৃতা করার সময় তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তার একটি চোখ, হাত ও পেটে কিডনী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।

তাকে আঘাতকারী নিউজার্সির অধিবাসী হাদি মাতারকে তাৎক্ষণিক গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্ত চলছে।

ঘটনার পর পরই হেলিকপটারে করে নিয়ে যাওয়া হয় পেনসিলভেনিয়ার একটি হাসপাতালে। তিনি শনিবার দুপুর পর্যন্ত অজ্ঞান অবস্থায় ভেন্টিলেশনে আছেন। তার অবস্থা খুব ভাল নয় বলে জানা গেছে।

এদিকে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়ার সরকার প্রধানসহ অনেকেই এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে ও তার প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

২. ১৩ থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত আগাম প্রাইমারী ইলেকশন নিউইয়র্ক স্টেটে। আগামী ২৩ আগস্ট ভোটের দিন। এর ভিত্তিতে সাধারণ নির্বাচন আগামী ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। সমগ্র নিউইয়র্ক রাজ্য প্রায় বাংলাদেশের সমান। ৫৪ হাজার ৫৫৫ বর্গমাইল। এর মধ্যেই নিউইয়র্ক সিটি অবস্থিত।

বর্তমান ডেমোক্রেট গভর্নর ক্যাথী হকুলের সংগে রিপাবলিকান প্রার্থী এন্ড্রু জুলিয়ানীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবার সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য এন্ড্রুর বাবা রুডি জুলিয়ানী একসময় নিউইয়র্ক সিটির মেয়র ছিলেন। পরে তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন।

৩. কংগ্রেসের সিনেটে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হলো। ডেমোক্রেট সিনেটরদের ৫১ ভোটে পাশ হলো। ইকনোমিক বিল এর নাম। এতে জলবায়ু সমস্যার কার্বন অপসারনের ৪০ ভাগ সমাধান, সব পেট্রল চালিত গাড়ি ইলেক্ট্রিক গাড়িতে রুপান্তর, প্রত্যেক বাড়িতে সোলার প্য্যনেল দিয়ে গ্যাস-বিদ্যুত- পানির বিকল্প ব্যবস্থা। বড় লোকেরা ১৫ পার্সেন্ট ট্যাক্স দেয়ার ব্যবস্থা। আরও অনেক ব্যবস্থা চালু হবে। সব মিলে প্রায় ৩৬৯ বিলিয়ন ডলারের বিল পাশ হলো সোমবার ভোরে। সারারাত লবিং করে ভোরে ভোট করে পাশ করেছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইতিমধ্যে কংগ্রেসের উভয় কক্ষে পাশ হওয়া এই বিলে সই করে আইনে পরিনত করেছেন।

৪. অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে যাত্রী হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ ফ্লাইট বাতিল করতে হচ্ছে। এতো যাত্রী যে তার জন্য যত ফ্লাইট চালু করতে হবে। তার জন্য প্লেন নাই। প্লেন আছে তো পাইলট নাই এবং স্টুয়ার্ড নাই। পেন্ডামিকে সব কলেজ-ইউনিভার্সিটি বন্ধ ছিল। পাইলট ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে লোক আসেনি। স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়েছে। এখন এই সামারে যখন অনেকে প্লেনে বেড়াতে যেতে চাইছে। তখনই অজস্র ফ্লাইট বাতিলের খবর আসছে।

৫. শুধু কি ফ্লাইটে পাইলট সংকট? অনেক স্কুল ও কলেজে মাস্টার নাই। সবাই নতুন শিক্ষক হায়ার করতে চাচ্ছে। কিন্তু যত চাহিদা তত নেই। সর্বত্র এই ক্রাইসিস। ঠিক হতে কয়েক বছর লাগবে।

৬. ১৫ আগস্ট শোক দিবসে সবচেয়ে বড় কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাংলাদেশি অরাজনৈতিক সংগঠন জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী। তারা ৫ হাজার লোকের মধ্যে তবারক বিতরণ করবে। এতে থাকবে সাদা ভাত, গরুর মাংসের তরকারি, পানি ও ড্রিংস। নিউইয়র্কের যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগও কর্মসূচি নিয়েছে। একটি পার্টি হলে দিনটি পালন করবে। এছাড়া বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্কের কন্সুলেট অফিস ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনেও বঙ্গবন্ধুর সপরিবারে হত্যার শোক দিবস পালন করবে।

৭. প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে আসছেন। জাতিসংঘের ৭৭তম অধিবেশনে তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর বাংলায় ভাষণ দেবেন। তার আগে সেপ্টেম্বরের ১৮ তারিখে নিউইয়র্ক পৌঁছাবেন। সময় এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের একটি সূত্র প্রধানমন্ত্রীর এ সফর কনফার্ম করেছেন।

৮. সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পের ফ্লোরিডায় রাষ্ট্রের দেয়া বাড়ি অবস্থিত। মার-এ-লাগো নামের এই বাড়ি থেকে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই তল্লাশি চালিয়ে ১৫ বাক্স কাগজপত্র নিয়ে এসেছে। দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় হোয়াইট হাউজের এই জিনিসপত্র আর্কাইভে রাখার নিয়ম। যদি তা প্রমাণ হয় তাহলে আগামি নির্বাচনে তিনি দাড়াতে পারবেন না। ট্রাম্প এক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এটা 'অসদাচরণ' তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঠেকাতে 'বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে'।

৯. ৪৯ জন কংগ্রেসমেন বিল উত্থাপন করেছে। এতে বাংলাদেশি সহ ৮০ লাখ কাগজপত্রহীন গ্রীনকার্ড পেতে যাচ্ছে। 'দ্য রিনিউইং ইমিগ্রেশন প্রভিশন অফ দ্য ইমিগ্রেশন এক্ট অফ ১৯২৯' নামের বিলটি পাশ হলে তারা গ্রীনকার্ড পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ১৯২৯ সালের ৯৩ বছর পর ১৯৭০ সালে এবং ১৯৮৬ সালে লাখ লাখ লোককে গ্রীনকার্ড দেয়া হয়। বিভিন্ন প্রেসিডেন্টের আমলে এরপর কিছু কিছু করে দেয়া হলেও এবার ৮০ লাখ লোককে আবারও গ্রীন কার্ড দেয়ার প্রচেষ্টা চলছে। যারা কোনো অপরাধে দণ্ডিত হন নি। বিভিন্ন কাজে নিরলস কাজ করে আসছেন। তারাই পাবেন গ্রীনকার্ড।

(bbc, nytimes, cnn, ws,j apnews এইসব সহ প্রধান প্রধান অনলাইন পত্রিকা ও নিউজ এজেন্সি থেকে গত ৭ দিনের রিপোর্ট দেখে, তা সংক্ষিপ্ত আকারে 'নিউইয়র্কের দিনলিপি'তে বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য পরিবেশন করা হচ্ছে।)

* আমান-উদ-দৌলা, সিনিয়র সাংবাদিক। সাবেক সম্পাদক-বাংলা বিভাগ, রেডিও ফ্রি এশিয়া, ওয়াশিংটন ডিসি ( ২০১৪-১৬)। সাবেক কূটনৈতিক রিপোর্টার-দৈনিক জনকন্ঠ ( ১৯৯৪-২০০০) One of the founders and First GS of DCAB in 1998. ( Dilpomatic Correspondent Association, Bangladesh)

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;