মায়াবী দ্বীপ, মনপুরা



মনিরুল ইসলাম
সমুদ্রে যাওয়ার জন্য অপেক্ষারত ট্রলার, ছবি: লেখক

সমুদ্রে যাওয়ার জন্য অপেক্ষারত ট্রলার, ছবি: লেখক

  • Font increase
  • Font Decrease

১২ নভেম্বর ১৯৭০ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে হামলে পরলো ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার গতিবেগের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় গোর্কি। উপদ্রত এলাকা ঘুরে এসে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন আঁকলেন বিখ্যাত এক ছবি “মনপুরা ৭০”। লোক চক্ষুর অন্তরালে থাকা এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হঠাৎ করেই খবরে চলে এলো ক্ষয়ক্ষতির ভয়াবহতা বিবেচনায়। হাল আমলে মনপুরা নামটি পরিচিত হয়ে উঠেছে গিয়াস উদ্দিন সেলিমের “মনপুরা” সিনেমার কল্যাণে। নানাকাজে দক্ষিণবঙ্গে যাত্রা কালে দূর থেকে অনেকবার দেখলেও কখনো ঘুরে দেখা হয়নি মনপুরা, জানা হয়নি দ্বীপটা আসলে কেমন?

মনপুরা যেতে খুব একটা বেগ পেতে হয় না। বেতুয়া বা হাতিয়াগামী যেকোনো লঞ্চে উঠলেই , সূর্য উঠার আগেই মনপুরা পৌঁছে দেয়। যদিও এযাত্রায় আমাকে কিছুই করতে হবে না। এবার যাচ্ছি অপু নজরুলের সঙ্গে, উনিই  সব ব্যবস্থা করে রাখবেন। অন্যের উপর ভর দিয়ে নিজে নির্ভার হয়ে ভ্রমণ করতে কেমন লাগে এরকম চিন্তা থেকেই উনার সাথে যাওয়া । দক্ষিণবঙ্গের সব যাত্রাই শুরু হয় সদরঘাট থেকে, মনপুরাও এর ব্যতিক্রম নয়। জ্যামের কথা চিন্তা করে সদরঘাটের নাম শুনলেই আগে মুখের মানচিত্র পরিবর্তন হয়ে যেত। তবে আমার বর্তমান অফিস পুরানো ঢাকায় হওয়াতে এযাত্রা ছিলাম চিন্তামুক্ত। রিক্সা করে হাওয়া খেতে খেতে অনুমিত সময়ের আগেই পৌঁছে গেলাম সদরঘাটে।

সদরঘাটের উল্টো দিকে

অনেক লঞ্চের ভিড়ে আমাদের জন্য নির্ধারিত লঞ্চ ফারহান-৩ খুঁজে পেতে সমস্যা হল না। সদর ঘাট আসলে মানুষ দেখে ভিরমি খেয়ে যেতে হয়, সবসময় হাটবার হাটবার ভাব বিরাজমান থাকে। নানা রকমের উদ্দেশ্য নিয়ে মানুষ এখানে আসে। কেউ বা প্রিয়জনের সাথে মিলত হবার উৎকণ্ঠা নিয়ে দৌড় বেড়াচ্ছে, কেউ  এসেছে ব্যবসা কিংবা ভিক্ষা করতে, এমনকি অন্যের টাকা পয়সা হাতিয়ে  নেবার ধান্দায় আসা লোকের সংখ্যায় নেহাত কম হবার কথা না। যথা সময়ে নোঙর তুলে ভেঁপু বাজিয়ে চলতে শুরু করলো আমাদের লঞ্চ । ইতিমধ্যে এক ঝাঁক নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হল, চলল আড্ডাবাজি, একসঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে যার যার নির্ধারিত রুমে চলে গেলাম। প্লটুনে লঞ্চের ধাক্কায় যখন ঘুম ভাঙলো বাইরে তখন রামনেওয়াজ ঘাট। তখনও সূর্যের আলো পৃথিবীতে এস পৌঁছায়নি, তারপরও আমাদেরকে নেমে যেতে হলো কারণ লঞ্চের শেষ গন্তব্য হাতিয়ার তমরুদ্দিন ঘাট। মনপুরার প্রধান বাহন মোটর বাইক হলেও আমরা ব্যাটারি চালিত রিক্সা ধরে হাজির হাটে হাজিরা দিলাম। হাজির হাট হল মনপুরার প্রাণ কেন্দ্র। মনপুরা নামটার সঙ্গে কি মনের কোন সম্পর্ক আছে? কিভাবেই বা নামটা এলো?

যেকোনো স্থানের নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন মত চালু থাকবে সেটাই স্বাভাবিক তার মধ্য থেকে গ্রহণযোগ্য বা সর্বাধিক প্রচলিত একটিকে বেছে নিতে হয়। কেউ কেউ বলে থাকেন মনগাজী নামের এক ব্যাক্তি ছিলেন যে কিনা বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছিলেন তার নামানুসরনে এই নাম। মনগাজী নামটা ঠিক থাকলেও ঐতিহাসিক বেভারিজ লিখেছেন অন্য কথা “ অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে, মনগাজী নামের এক ব্যাক্তি সেই সময়ের জমিদারি থেকে মনপুরা চর লীজ নেন । পরবর্তী সময়ে তার নামানুসারে এই দ্বীপটির নামকরণ করা হয় মনপুরা”। প্রায় আটশত বছরেরে পুরানো এই দ্বীপটিকে একসময় আরাকানী, মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুরা তাদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যাবহার করত। কোম্পানি শাসনামলের বহু পূর্বেই পর্তুগিজদের আগমন ঘটে এই অঞ্চলে এবং পূর্বে সন্দীপ ও পশ্চিমে বাকলার মাঝখানে নিরাপদ বিবেচনায় তারা এখানে অবস্থান করত। মোগল আমলে সুবেদার শাহবাজ খান এই জলদস্যুদের বিদায় না করা পর্যন্ত তারা হামলা ও লুটতরাজ চালিয়ে যেতে পেরেছিল। যদিও পর্তুগিজ আমলের কোন স্থাপনার এখন আর কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। হয়তো জলোচ্ছ্বাস অথবা ঘূর্ণিঝড়ে সব নদীবক্ষে বিলীন হয়ে গিয়েছে। তবে পর্তুগিজ বংশোদ্ভূত বড় লোময়ালা কুকুর এখনো দেখা যায়।

লবণ সহিষ্ণু ধান ক্ষেত

আমরা যখন হাজিরহাটে এসে পৌঁছলাম তখনও ভোরের আলো তার আলস্য ভাঙেনি। হোটেলে না ঢুকে চলে গেলাম মনপুরার আইকনিক ল্যান্ডিং স্টেশনে। দীর্ঘ জেটিটি মেঘনার বুক চিড়ে বেশ খানিকটা ভেতরে গিয়ে শেষ হয়েছে। এমনিতেই উত্তাল মেঘনা তার উপর নড়বড়ে এই জেটিটি ঢেউয়ের সাথে বুড়ো মানুষের দাঁতের মত এদিক সেদিক দুলছে। সেই দুলুনির সাথে সমান তালে বুকও কেঁপে উঠে। দৃষ্টিসীমা যতদূরে যায় শুধু পানি আর পানি । মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিল আমি যেন নদীর মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছি। জেটিটি ব্যস্ত হয়ে উঠার আগেই আমরা ফিরে এলাম আমাদের হোটেলে ।

সকালের ল্যান্ডিং স্টেশন

আজকাল মনপুরাতে অনেক পর্যটক আসলেও থাকার জায়গার তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। আমাদের একটা গ্রুপ উঠেছিলো হানিফ আবাসিক হোটেলে অন্য গ্রুপ উন্নয়ন সহযোগী কারিতাসের গেস্ট হাউসে। সবাই মিলে দুপরের পর রওয়ানা হলাম সাকুচিয়া সমুদ্র সৈকত যার কেতাবি নাম “দখিনা হাওয়া ”। অবারিত ধান ক্ষেতের মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে পথ , আর পথের দুধারে বাবালা গাছের সাড়ি। ধাগাছগুলো  অবাক করার মত হলুদ, মাঝে মাঝে সরিষা বলে মনে হলে, মনকে দোষ দেওয়া যাবে না কারণ গাছের রঙটাই এরকম। সহজ সরল মানুষের ভালবাসা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু নিজের মত করে গড়তে চেয়েছিলেন দ্বীপটিকে। তাই অবকাশকালীন সময়ে চিত্তবিনোদন ও শান্তির জন্য মনপুরাতে চিন্তানিবাস স্থাপনের পরিকল্পনা করেছিলেন। বর্তমান সরকার জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নের উদ্যেগ নিলেও তার খুব একটা অগ্রগতি হয়নি। রামনেওয়াজ বাজার সংলগ্ন বড় দীঘির পাশে বঙ্গবন্ধু চিন্তানিবাসের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিলো। যদিও সেই ভিত্তি প্রস্তরেরে কোন অস্তিত্ব এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না। বর্তমান ভুঁইয়া হাট সংলগ্ন ব্রিজের পাশের স্থানটিতে চিন্তানিবাশ করার চিন্তা ভাবনা করছে সরকার।

দখিনা হাওয়া সমুদ্র সৈকত

সন্ধ্যার দিকে স্থানীয় বাজার দেখতে বের হলাম। ছোট কিন্ত আলোকিত এক বাজার।  জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ এখানে নেই তবে এক মেগাওয়াটের একটি জেনারেটর দিয়ে পুরো বাজার আলোকিত করা হয়েছে। এই অঞ্চলে মহিষের দুধের দই পাওয়া যায়। মজার ব্যপার হল সারা বাজার খুঁজেও মহিষের দুধের দই পেলাম না। যা পেলাম সবই গরুর দুধের। ঢাকা থেকে আসার পথে লঞ্চযাত্রায় ঘুম আসছিলনা। শত চেষ্টা করেও যখন কাজ হচ্ছিল না, তখন পরিস্থিতির কাছে আত্মসমর্পণ করে নিদ্রাবিহীন রাত কাটিয়ে দিয়েছিলাম। তাই আজ একটু আগে ভাগেই রাত্রিবাসের ঠিকানার দিকে ফিরলাম। ফিরতেই রাতের খাবারের ডাক পরলো।

সম্মলিত প্রস্তাবের কারনে রাতের খাবারের পর আবার সবাই মিলে গেলাম ল্যান্ডিং স্টেশনে। বেশ বড় সাইজের একটি চাঁদ আকাশের সঙ্গে ঝুলে আছে। এখন কি পূর্ণিমা? নাকি দ্বীপের চাঁদ একটু বড়ই হয়?  কল্পনাতীত জ্যোৎস্নায় আলোকিত নদী বক্ষ। নদীতে তখন জোয়ার চলছে সম্ভবত। বড় ঢেউ নেই কিন্ত স্রোত আছে। বড় বড় ঢেউয়ের শব্দ নেই কিন্ত পানি বয়ে চলার নান্দনিক ছন্দ আছে। জেটির উপর গোল হয়ে সবাই বসে থাকলেও কারো মুখে কোন কথা নেই। চুপ করে থেকে সবাই যেন অন্যের অস্তিত্ব কে অস্বীকার করতে চাইছে। খানিকটা অনেক মানুষের ভিতরে থেকেও একাকীত্ব উপভোগ করা, যেন এখানে শুধু আমি আর কেউ নেই। সম্বিৎ ফিরে এলো বেরসিক এক ট্রলারের শব্দে। খানিকক্ষণ বাদে নিশিতে পাওয়া মানুষের মত নিঃশব্দে রওয়ানা হলাম মাথা গোজার ঠাইয়ের দিকে।

ভোর ৬ টায় বের হবো তাই রাতেই এক চাচাকে বলে রেখেছিলাম, যাতে করে পরিবাহনের সমস্যায় পরতে না হয়। হোটেলে থেকে বের হয়ে দেখি চাচা যথারীতি অপেক্ষা করে আছে। তখনও খাবার হোটেলগুলো খোলেনি , অগ্যতা নাস্তা না করেই ব্যাটারি চালিত রিক্সায় চেপে বসলাম আনন্দ বাজার ব্রিজের উদ্দেশ্য। ব্রিজের দুই পাশে অনেকগুলো সমুদ্রগামী ট্রলার সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পরার আগে বিশ্রাম নিচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যে চলে যাবে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে তাই শেষ বেলার গোছগাছ চলছে। গ্যাসের সিলিন্ডার, বাজার সদাই ,খাবার পানি এমনকি মাছ ধরার জালের মেরামতির কাজও চলছে সমানতালে।

তুলাতলির চর

৭-৮ দিন পর ট্রলার ভর্তি রুপালী মাছ নিয়ে তীরে এসে নোঙর ফেলবে। মনপুরার মানুষ শুধু মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে তা কিন্তু নয়। সরকারের তথ্য বাতায়নের মতে উপজেলার ৬০ শতাংশ মানুষ মাছ ব্যবসার সাথে জড়িত। আবার এমনও তথ্যও দেয়া আছে যে ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষিজীবী। লবণ সহিষ্ণু ধানের চাষ হওয়াতে কৃষি কাজে আগের চেয়ে বেশী মানুষ মনযোগী হয়েছে। লবণ সহিষ্ণু ধানের কারণেই পুরো উপকূল সোনালী হয়ে আছে।

মনপুরাকে কেন যে রুপালী দ্বীপ বলা হয়? এর উত্তর খুঁজে পায়নি। মনপুরা বা চর ফ্যাশন এই দিকটায় নদী দেখে যতটা ভয় লাগে সমুদ্র দেখলেও এতটা ভয় লাগে না আমার। ঠিক সেই ভয়াল দর্শন মেঘনার দেখা পেলাম তুলাতলির চরে এসে। আর একটু সামনে এগিয়েই মেঘনা তার সমস্ত রাগ-অনুরাগ নিয়ে সমুদ্রের বিলীন হয়েছে। জলরাশির ভয়ঙ্কর শব্দাবলী আর ঢেউয়ের উপর সূর্যের আলোর রুপালী ঝিলিক নিরাশ হতে দেয়নি। যতদূরে চোখ যায় শুধু জলরাশি। বেরিবাধের পাশে দুএকটা মাছ ধরা নৌকা বাধা। অদুরে ছোট একটা চায়ের দোকান আর দুটো বাড়ি। কতদিন ধরে আছেন এই বাড়িতে?

“বাজান বেশিদিন হয়নি।আর কতদিন বাস করতে পারবো তাও জানিনা” জিজ্ঞাসা করাতে শংকিত মনের উত্তর পেলাম কোনো এক নদীভাঙ্গা মানুষের।

এরকমই এদের জীবন,কতবার যে ভিটে পরিবর্তন করতে হয় দ্বীপের বাসিন্দাদের তার ইয়ত্তা নেই।একই বাড়িতে কতদিন বসবাস করতে পারবে এর বাসিন্দারাও জানে না। মেঘনা যতদিন চাইবে ততদিন!

   

চাকরি ছেড়ে বসের সামনেই ঢোল বাজিয়ে নাচলেন যুবক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নিত্যদিনের অফিসের কর্মপরিবেশে অনেকের মধ্যেই 'বিরক্তি' চলে আসে। তবুও ধৈয্য নিয়ে সব সহ্য করে টিকে থাকার জন্য চালিয়ে যান লড়াই। তবে এ যাত্রায় সকলের দ্বারা টিকে থাকা সম্ভব হয় না। অফিসের 'বিষাক্ত' কর্মপরিবেশে অনেকেই ভোগেন মানসিক সমস্যায় কিংবা ব্যক্তিজীবনে। এমন পরিবেশ থেকে বাঁচতে একেক জন একেক পন্থা অবলম্বন করে থাকেন।

তবে অনিকেত নামের এক যুবক এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে যা করেছেন নেট দুনিয়ায় তা রীতিমতো ভাইরাল। এসব থেকে মুক্তি পেতে চাকরিটাই ছেড়ে দিয়েছেন এই যুবক। এতেই ক্ষান্ত হননি তিনি, বসের সামনেই ঢাকঢোল বাজিয়ে নেচে উদযাপন করেছেন এমন মুহূর্তের।

ঘটনাটি ভারতের পুনে রাজ্যের। অনিকেত নামের ওই যুবক বিক্রয় সহযোগী হিসেবে চাকরি করতেন।

তার এমন উদযাপনের একটি ভিডিও ইন্সটাগ্রাম শেয়ার করেছেন অনীশ ভগত।

ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, গত তিন বছর ধরে এই কোম্পানির সাথে কাজ করেও বেতন খুব একটা বাড়েনি। এছাড়াও অফিসের বসের দ্বারাও তাকে বিভিন্ন সময়ে অপমানিত হতে হয়েছে।

তাই তার কাজের শেষ দিনে বন্ধুরা অফিসের বাইরে ঢোল নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন এবং নেচেছিলেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, এ ঘটনায় তার বস অনেক উত্তেজিত হয়েছেন। পাশাপাশি তার বস লোকজনকে ধাক্কা দিয়েছেন এবং চিৎকারও করেছেন।

ভিডিওটির ক্যাপশনে ভগত লিখেছেন, আমি মনে করি আপনারা অনেকেই এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারবেন। আজকাল বিষাক্ত কাজের সংস্কৃতি খুব বেশি দেখা যায়। সম্মান এবং অধিকারের অভাব খুবই সাধারণ। অনিকেত তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। আমি আশা করি এই গল্প মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।

পোস্ট করা ভিডিওটি এক মিলিয়নেরও (১০ লাখের বেশি) বেশি ভিউ পেয়েছে। পোস্টটিতে অসংখ্য লাইক ও কমেন্টও রয়েছে।

একজন ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি জানি না কেন এটি আমাকে এত সন্তুষ্ট করেছে।'

আরেকজন লিখেছেন, 'নাচটি আমাকে অন্য মাত্রার তৃপ্তি দিয়েছে।'

'আপনি সত্যিই আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ইতিবাচক এবং উত্সাহী ব্যক্তি'- তৃতীয় একজন ঠিক এভাবেই নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস 

;

অভয়ারণ্যে মানুষ যখন বন্দিখাঁচায়



প্রমা কোয়েল, ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চিড়িয়াখানা, নানানরকম পশুপাখি ও প্রাণীর বন্দিশালা। কেবল রং-বেরঙের চিড়িয়াই নয়; বাঘ, সিংহ, ভালুক, বানর, গণ্ডারসহ কত বন্যপ্রাণীই না খাঁচায় বন্দি থাকে!

চিড়িয়াখানায় রাখতে বন্য প্রাণীদের প্রকৃতির স্বাধীন জীবন থেকে ছিনিয়ে আনা হয়। তাদের খাঁচায় বন্দি করা হয় যেন, মানুষ তাদের দেখে আনন্দ পায়। অনেক প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি খাঁচাতেই কেটে যায়।

ছোট থেকে বড় সব বয়সের মানুষই চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। শিশুরা না হয় অবুঝ! তবে যারা প্রাপ্তবয়স্ক তারাও চিড়িয়াখানায় এই বন্দি প্রাণীদের জীবনকে গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারেন না।

এশিয়ার বড় দেশ চীনে রয়েছে, এক অদ্ভুত চিড়িয়াখানা। চংকিংয়ে অবস্থিত সেই চিড়িয়াখানার নাম ‘লেহে লেদু বন্যপ্রাণী চিড়িয়াখানা’। একে ‘রিভার্স জু’ (বিপরীত চিড়িয়াখানা) বলেও ডাকা হয়।

এখানেও মানুষ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে পশু দেখতে আসেন। তবে একেবারেই ভিন্ন উপায়ে। মূলত, একটি খাঁচা রয়েছে, যেখানে মানুষদের সেই খাঁচায় পুরা হয়। তারপর সেই খাঁচাবন্দি মানুষদের নিয়ে রাখা হয়, অভয়ারণ্যে। সেখানে বন্য প্রাণীরা মানুষের খাঁচার চারপাশে অবাধে ঘুরতে থাকে। চিড়িয়াখানায় বন্দি প্রাণীদের বন্দিজীবনের এক প্রতীকী দৃশ্য!

অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের জন্য এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা!

অভয়ারণ্যে খাঁচায় বন্দি মানুষ, ছবি-সংগৃহীত

খুব কাছে থেকে হিংস্র বন্যপ্রাণীদের মুক্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যেমন লোমহর্ষক, ঠিক তেমনই আতঙ্কজনকও হতে পারে। বিপরীতধর্মী এই চিড়িয়াখানাটি সবার জন্য প্রথম উন্মুক্ত করা হয়, ২০১৫ সালে। তখন বিশ্বের সংবদমাধ্যমের শিরোনাম কেড়েছিল এ চিড়িয়াখানাটি।

একটি শক্ত লোহার খাঁচাবেষ্টিত দর্শনার্থীদের একটি ট্রাকে তুলে অভয়ারণ্যে রেখে দেওয়া হয়। সেখানে তাদের ঘিরে ধরে ঘুরতে থাকে বাঘ, ভালুক, সিংহ ইত্যাদি হিংস্র প্রাণী।

এ বিষয়ে চিড়িয়াখানার প্রধান চ্যান লিয়াং বলেন, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। খাঁচার ফাঁকা অংশ দিয়ে হাতের আঙুলও বের না করার নির্দেশনা দেওয়া থাকে।

তবে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই চিড়িয়াখানাটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে অনেক। এর নৈতিকতা নিয়ে অনেকে প্রশ্নও তুলেছেন।

অনেকে মনে করেন, এরকম ব্যবস্থাপনায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। কারণ, শিকারী প্রাণীগুলো প্রচণ্ড হিংস্র। তাই, সে কারণে যে কোনো সময় বিপজ্জনক ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

আবার এরকম চিন্তাভাবনার প্রশংসাও করেছেন অপর একটি পক্ষ। তাদের বক্তব্য, পৃথিবীটা কেবল মানুষদের নয়। প্রকৃতিতে সব প্রাণীদের একটা ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। তাদের বন্দি করে রাখা মানুষের উচিত নয়। কারণ, মুক্ত প্রকৃতিতে বিরাজ করার অধিকার সব প্রাণীরই রয়েছে।

তাদের মন্তব্য, আমরা প্রাণীদের আবাসস্থল বনজঙ্গল সব উজাড় করেছি। সে কারণে তাপমাত্রাও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। আবার প্রাণীদের বন্দি রেখে তাদের জীবন চরম দুর্বিষহ করে তুলি।

চাইলে এবং সুযোগ পেলে এই ধরনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে চিড়িয়াখানাটি ঘুরে আসতে পারেন বৈকি!

তথ্যসূত্র: এনিমেল অ্যারাউন্ড দ্য গ্লোব

;

৫ বছরের শিশুর বিস্ময়কর প্রতিভা!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বয়স সবে ৫ কিংবা ৬। এই বয়সেই তার প্রতিভা দেখে অবাক হবে যে-কেউ!

গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভিডিওটি ১ মিলিয়নের (১০ লাখের বেশি) বেশি মানুষ দেখেছেন। খবর এনডিটিভি। 

ভিডিওতে রিলি নামের ওই শিশুটিকে প্রথমে শ্বাস নিতে দেখা যায়। তারপর সে একটি শক্তিশালী গর্জন দিয়ে শ্বাস ছাড়ে। ওই গর্জনটি হুবুহ সিংহের গর্জনের অনুরূপ।

রিলির মা অ্যামি ভিডিওটি এক্সে শেয়ারের পরই তা ভাইরাল হয়ে যায়। শিশুটির এমন নিখুত দক্ষতা দেখে মুগ্ধ দর্শকরা। ভিডিওটিতে অনেকেই নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, এত অল্প বয়সে এমন বাস্তবসম্মত গর্জন তৈরি করার রিলির ক্ষমতার বিস্ময় প্রকাশ করে।

আরেকজন লিখেছেন, শিশুরা খুব দ্রুত শিখে। তার এমন প্রতিভা সত্যিই অবাক করার মতো।

;

বান্টি গ্রাম: উড়ছে রং-বেরঙের কাপড়



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বান্টি গ্রামের মাঠে শুকাতে দিচ্ছেন বাটিকের রং করা কাপড়/ছবি: নূর এ আলম

বান্টি গ্রামের মাঠে শুকাতে দিচ্ছেন বাটিকের রং করা কাপড়/ছবি: নূর এ আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশেই বান্টি গ্রাম। বাটিকের গ্রাম বলেই এর পরিচিতি। এখানে ঘরে ঘরে বাটিক-ব্লকের কাজ চলে। গ্রামজুড়ে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০০ কারখানা। এই গ্রামে দিনরাত কাজ করেন হাজারো শ্রমিক। এই কাজে তাদের সংসার চলে। বান্টি গ্রামের কর্মময় জীবন চিত্র তুলে এনেছেন বার্তা২৪.কম এর ফটো এডিটর নূর এ আলম। 

বান্টি গ্রামে থ্রিপিস, ওড়না, সালোয়ার, কামিজ, বিছানার চাদর ও বালিশের কাভারে বাটিকের কাজ করা হয়/ছবি: নূর এ আলম


 

দূরদূরান্ত থেকে পাইকাররা এসব কিনতে আসেন। তাদের হাত ধরেই এসব কাপড় চলে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে


কাপড় রং করার আগে প্রতিটি কারখানায় গরম পানিতে রং প্রস্তুত করা হয়/ছবি: নূর এ আলম

 

কাপড়ের রং পাকা করতে সেদ্ধ করা হচ্ছে।/ছবি: নূর এ আলম


কয়েক ধাপে চলে কাপড়ে বাটিকের করার কাজ/ছবি: নূর এ আলম


রং মেশানোর প্রক্রিয়াটা ঠিক আছে কিনা হাত দিয়ে দেখছেন একজন/ছবি: নূর এ আলম


গ্রামে কাপড়ে রঙ মেশানোর কাজ ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলে/ছবি: নূর এ আলম


বাটিকের গ্রামের অনেক বাড়িতে বসানো হয়েছে লুম মেশিন। এই মেশিন দিয়ে নানান ধরনের নকশা করা হয়/ছবি: নূর এ আলম


লুম মেশিনে চলছে কাপড় বুননের কাপড়/ছবি: নূর এ আলম


কাপড়ে রঙ করা শেষে শুকাতে দেওয়ার আগে পানি ঝরিয়ে ফেলা হয়/ছবি: নূর এ আলম


রং করা কাপড় শুকাতে দিচ্ছেন এক নারী শ্রমিক/ছবি: নূর এ আলম


বান্টি গ্রামের নারী পুরুষ সবাই ব্লক বাটিক ও প্রিন্টের সঙ্গে জড়িত/ছবি: নূর এ আলম

রং করা কাপড় ছাদে ও মাঠে শুকাতে দেওয়া হয়/ছবি: নূর এ আলম


কড়া রোদে শুকানোর পর তা কারখানায় নিয়ে আসেন শ্রমিকরা।/ছবি: নূর এ আলম


প্রচন্ড তাপদাহে বাটিকের চাহিদা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। /ছবি: নূর এ আলম


;