বিপদ টের পেলে ঝোপের মাঝে লুকিয়ে পড়ে ‘বাংলা কুবো’

  • বিভোর, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলা কুবোর উড়ন্ত সৌন্দর্য। ছবি: এবি সিদ্দিক

বাংলা কুবোর উড়ন্ত সৌন্দর্য। ছবি: এবি সিদ্দিক

বিপদের টের পেলে পাখিটি ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে পড়ে। কখনো ছোট দূরত্বে উড়ে গিয়ে লুকিয়ে পড়ে বাঁশবনে। তখন আর কেউ তাকে দেখতে পায় না।

বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মধ্যে অন্যতম এক পাখি ‘বাংলা কুবো’। বিভিন্ন বন-জঙ্গল তথা শালবন এবং চা বাগানে এদের বসবাস। অঞ্চলভেদে এ পাখির নাম কুবো, কুক্কা নামেও পরিচিত।

বিজ্ঞাপন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কমরুল হাসান বলেন, এই পাখিটির নাম অন্যান্য বাংলা নামগুলো হলো কানকুয়া, কুক্কা, ছোট কোকা, কুক্কাল বা কানাকুক্কা। ইংরেজিতে একে Lesser Coucal বলে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Centropus bengalensis। কুবো মাঝারি গড়নের ভূচর পাখি। এদের লম্বা ও শক্তিশালী পা এবং লম্বা লেজ থাকে। এরা উড়তে পটু নয়। ছেলে ও মেয়েপাখি দেখতে একই রকম। বড় কুবো কালো ও তামাটে রঙের লম্বা লেজওয়ালা পাখি। দেহের দৈর্ঘ্য ৪০ সেমি, ওজন ২৫০ গ্রাম। পিঠ তামাটে ও দেহতল চকচকে কালো। এ রকম দুটো প্রজাতি আমাদের দেশে পাওয়া যায়, একটি হলো বাংলা কুবো অপরটি বড় কুবো।

পাতার আড়ালে বাংলা কুবো। ছবি: এবি সিদ্দিক

পাখিটির স্বভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, ভূচর এ পাখি ওড়ার চেয়ে দৌঁড়াতে বেশ পটু। বাঁশঝাড়ে বসে থাকে চুপ করে। নিজেকে সবার থেকে আড়ালে রাখতে পছন্দ করে। এরা একটু লুকিয়ে থাকতে পছন্দ করে। প্রয়োজনে এরা মাটিতে নেমে লাফিয়ে লাফিয়ে ঘুরে বেড়ায়। ঘন ঝোপ, বাঁশবন ও খেজুরগাছের আগায় পেয়ালার মতো বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা, সংখ্যায় তিন-চারটি। বনপ্রান্তে ও গ্রামাঞ্চলে এদের ঢের দেখা যায়। উঁচু ঝোপের মধ্য অগোছালোভাবে বাসা তৈরি করতে পছন্দ করে।

বিজ্ঞাপন

শারীরিক গঠন সম্পর্কে তিনি বলেন, উজ্জ্বল তামাটে কাঁধ-ঢাকনি ও ডানা ছাড়া পুরো দেহই কালো। চোখ লাল, ঠোঁট, পা, পায়ের পাতা ও নখর কালো। সাধারণত একা বা জোড়ায় বিচরণ করে। মাটিতে ধীরে ধীরে হেঁটে শিকার খোঁজে। ঝোপের তলায় তলায় ঘুরে ওরা যখন খাবার খোঁজে, তখন দীর্ঘ পুচ্ছটি প্রায় মাটি ছুঁয়ে থাকে।

বেশ গভীর ও সুরেলা কণ্ঠে ধীরে ধীরে উক...উক... শব্দে ডাকে। অন্য রকম একটি ডাকও শোনা যায়। খুব দ্রুত সংগীতের ঝংকারের মতো কুপ..কুপ..কুপ করে ছয়-সাতবার ডাকে। গরমের দিনে বহুদূর থেকে ওদের ডাক শোনা যায় বলে জানান এ বন্যপ্রাণ গবেষক।