জুবায়ের সিদ্দিকী ছিলেন সিলেটে শিক্ষাবিপ্লবের সমর নায়ক



সাঈদ চৌধুরী
জুবায়ের সিদ্দিকী

জুবায়ের সিদ্দিকী

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুবায়ের সিদ্দিকী (অব.) ছিলেন সিলেটে এক নীরব শিক্ষা বিপ্লবের মহানায়ক। শিক্ষা আনে চেতনা, চেতনা আনে বিপ্লব। অন্তঃকরণে এই একটাই ভাবনা ছিল। স্কলার্স হোম ছিল তার স্বপ্নপূরণের গন্তব্য। তার অন্তঃকরণ কল্পনাতীত ভাবেই উদার ও সুপ্রশস্ত ছিল।

জুবায়ের সিদ্দিকী মূলত একজন অকুতোভয় সৈনিক, সফল শিক্ষাবিদ ও খ্যাতিমান লেখক। নিয়মানুবর্তী এই মানুষটার সাথে পরিচয়ের পর থেকেই হৃদয়ের কোণে জমে আছে অফুরান ভালোবাসা ও গভীর শ্রদ্ধা। তার নতুন দুটি মাইলফলক অর্জন, একজন সমর নায়ক থেকে শিক্ষক ও লেখক হিসেবে সফল উত্তরণ আমাদের চোখের সামনেই। প্রায় ত্রিশ বছর ধরে তাকে কাছে থেকে দেখেছি। তাই দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে পারি, এই বহুমুখী শিল্প সাধকের অনেকগুলো উত্তম গুণ আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় বিরল। তিনি ছিলেন নিভৃতচারী, নির্লোভ ও নিরহংকার জীবনের অধিকারী।

হঠাৎ এই আলোর প্রদীপ নিভে যাবে তা ভাবতে পারিনি। ইন্তেকালের কিছুদিন আগে তার শিক্ষা বিপ্লব নিয়ে কথা হয়েছিল। এক্ষেত্রে তিনি আমাকে প্রেরণা সঞ্চারকারী ভাবতেন। সিলেটে ইংরেজি মাধ্যমে খাজাঞ্চীবাড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের যাত্রা আগে শুরু হলেও আমাদের বৃটিশ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলকে (বিবিআইএস) তিনি নতুন মাত্রা হিসেবে বিবেচনা করতেন। ফলে তার শিক্ষা কার্যক্রম ও ক্যাম্পাস বৃদ্ধির সর্বশেষ অগ্রগতি শেয়ার করতেন। এ নিয়ে কিছু লেখার আগ্রহ প্রকাশ করলে তিনি খুব খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু লেখার আগেই তিনি চলে গেলেন তার শেষ ঠিকানায়, মহান মাবুদের কাছে।

২০২০ সালের ৯ মার্চ বাহাত্তর বছরে পা রাখেন প্রবীণ এই কৃতি ব্যক্তিত্ব। বয়সের কারণে তাকে প্রবীণ বললেও এক উজ্জল তারুণ্য তার মাঝে ছিল বিদ্যমান। সৈনিক জীবন থেকে অবসরে এলেও কর্মজীবনে কোন বিরতি গ্রহণ করেননি। তার সর্বশেষ সাধনার ক্ষেত্র ছিল হাফিজ মজুমদার ট্রাস্টের শিক্ষা প্রকল্প ‘স্কলার্স হোম’।

১৯৯৭ সালে আমরা বৃটিশ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (বিবিআইএস) প্রতিষ্ঠার পর সিলেট অঞ্চলে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার যে প্রয়াস পরিলক্ষিত হয়, এরই ধারাবাহিকতায় ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় স্কলার্স হোম স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বর্তমানে এর ছয়টি শাখা রয়েছে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। সেখানে হাজার হাজার কোমলমতি শিশু-কিশোরদের জীবন গড়ার প্রধান কারিগর এই জুবায়ের সিদ্দিকী। সিলেটে এক নিরব শিক্ষা বিপ্লবের তিনি ছিলেন সমর নায়ক।

কথায় আছে, রতনে রতন চেনে। মানব কল্যাণে জীবন উৎসর্গকারী হাফিজ মজুমদার ঠিকই চিনতে পেরেছেন সিলেটের দুই রত্নকে। একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুবায়ের সিদ্দিকী (অব.) আর অন্যজন হলেন বৃটেনে সাড়া জাগানো মেইনস্ট্রিম পলিটিশিয়ান ও শিক্ষাবিদ ড. কবীর চৌধুরী। এই কৃতি ব্যক্তিত্বরা সিলেট অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে রেখেছেন অপরিমেয় অবদান। এ এক বিরাট জাগরণ।

স্কলার্স হোম যেন খুলে দিয়েছে রূপকথার দরজা৷ জুবায়ের সিদ্দিকী বুঝতে পেরেছিলেন, আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে কত পিস মিগ বিমান এল তার চেয়ে কতটা ছেলে-মেয়ে প্রকৃত অর্থে শিক্ষিত হল তা অনেক বেশি গুরুত্বপর্ণ। উন্নত বিশ্বের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করতেন তিনি। আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিচ্ছি, সেখানে আধুনিক শিক্ষার উপরে যে থিসিস হয়েছে তা জানতে গিয়ে তার আগ্রহ আমাকে মুগ্ধ করেছে। তিনি মনে করতেন, সিলেটে বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে কী হবে, যদি সেখানে স্থানীয় শিক্ষার্থী ভর্তি হতে না পারে! স্কলার্স হোমকে তিনি সে ঘাটতি পূরণের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত করতে পেরেছেন। আরও বিশাল মহীরূহে পরিণত করার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছিলেন।

জুবায়ের সিদ্দিকী সৈনিক জীবন থেকে সিভিলিয়ান জীবনে ফিরে এলেও সময় নষ্ট করার মত সাধারণ্যে তিনি ফিরে আসেননি। এজন্য পরিচিত মহলেও তার কিছুটা দূরত্ব ছিল। এটা তিনি সহজভাবে স্বীকার করতেন। সংকীর্ণতা, হীনমন্যতা ও দলাদলির এই দেশে অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে জুবায়ের সিদ্দিকী সামাজিক ও রাজনৈতিক বেড়াজাল থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পেরেছিলেন। তিনি কখনও কোনো দল বা মতের পক্ষে কথা বলেননি।

সৈনিক জীবনে অনেক দক্ষ ও সাহসী ভূমিকার ফলে পর্যায়ক্রমে জুবায়ের সিদ্দিকী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে উন্নীত হন। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও কুয়েতের স্বাধীনতা রক্ষায় তার ভূমিকা প্রশংসনীয়। ১৯৯০ সালে ইরাক অতর্কিতে কুয়েত দখল করলে আমেরিকা সেখানে যৌথবাহিনী পাঠায়। বাংলাদেশ থেকেও আড়াই হাজার সৈন্য অংশ নেয়। বাংলাদেশ কন্টিনজেন্টের ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন জুবায়ের সিদ্দিকী।

কর্মজীবনে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবেও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। জুবায়ের সিদ্দিকী ১৯৬৭ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৯৯ সালে ৩২ বছরের সেনাবাহিনী জীবনের ইতি টানেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুবায়ের সিদ্দিকী (অব.)’র আত্মজীবনিমুলক বই ‘আমার জীবন আমার যুদ্ধ’ পড়লে মুগ্ধ হতে হয়। এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রখ্যাত কবি, সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত মোফাজ্জল করিম বলেছিলেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুবায়ের সিদ্দিকীরা সংগ্রাম করে দেশ স্বাধীন করেছেন। জীবন যুদ্ধে জয়লাভ করেই মহাপুরুষে পরিণত হয়েছেন। দেশকে সুন্দর করতে সমৃদ্ধ করতে সোনালী ভবিষ্যতের জন্যে প্রয়োজন তারমত দেশপ্রেমিক নিষ্কলুষ মানুষের।

সিলেটে এক সময় আমার সহযোদ্ধা দাপুটে সাংবাদিক ও বাম রাজনীতিক শামীম সিদ্দিকীর বড় ভাই আমাদের প্রিয় জুবায়ের সিদ্দিকী ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বুধবার ভোরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। ২৪ মার্চ তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হলে প্রথমে তাকে সিলেটের হার্ট ফাউন্ডেশনে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই দিন বিকেলে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি মারা যান।

জুবায়ের সিদ্দিকী স্মরণে দেশে ও প্রবাসে অনেক অনুষ্ঠান হয়। গত বুধবার (২২ মার্চ) সকালে স্কলার্সহোম শাহী ঈদগাহ ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে অধ্যক্ষ লে. কর্নেল মুনীর আহমেদ কাদেরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জুবায়ের সিদ্দিকী বৃত্তি প্রদান ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ইয়াসমিন সিদ্দিকী, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, ট্রাস্টের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ছয়ফুল করিম চৌধুরী হায়াত।

ফারজানা মুর্শেদের সঞ্চালনায় এসময় আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন হাফিজ মজুমদার ট্রাস্টের যুগ্ম সচিব খায়রল আলম, মদনীবাগ ক্যাম্পাসের অধ্যক্ষ আক্তারী বেগম,পাঠানটুলা (প্রাথমিক) ক্যাম্পাসের ইনচার্জ জেবুন্নেছা জীবন, মেজরটিলা ক্যাম্পাসের নাহিদা খান, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফ উদ্দিন। কবিতা আবৃত্তি করেন গণিত বিভাগের প্রভাষক বাপ্পি কুমার মজুমদার, দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাওদুরা রহমান আরিশা। জুবায়ের সিদ্দিকীর মহৎকর্ম নিয়ে ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করেন আইসিটি বিভাগের প্রভাষক জাহিদুল ইসলাম।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুবায়ের সিদ্দিকী (অব.) ট্রাস্টের পক্ষ থেকে এবছর বিভিন্ন শ্রেণির ১৫ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা এই মহতি মানুষের অবদান স্মরণ করে নতুন প্রজন্মকে সেভাবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। আমীন।

লেখক: লন্ডন প্রবাসী। সাংবাদিক, কবি ও কথাসাহিত্যিক।

   

চোখের ড্রপ ভেবে সুপারগ্লু দিয়ে ফেলছে!



ফিচার ডেস্ক বার্তা২৪.কম
জেনিফার এভারসোল। ছবি: সংগৃহীত

জেনিফার এভারসোল। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইন্টারনেট হল একটি অদ্ভুত জায়গা, যেখানে তথ্য অবাধে প্রবাহিত হয়। এর মাধ্যমে বিশ্বের সব প্রান্তের মানুষকে সংযুক্ত করা যায় মুহুর্তের মধ্যেই।। তবুও, এই বিশাল বিস্তৃতির মধ্যে, আপনি অদ্ভুত এবং অপ্রত্যাশিত বিষয়বস্তু পাবেন। বিশেষ করে কিছু ভিডিও আপনাকে অবাক করে দিবে! এমনই একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) ভাইরাল হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জেনিফার এভারসোল নামে এক নারী চোখের ড্রপ ভেবে ভুল করে দিয়ে ফেলছে সুপারগ্লু। ভিডিওটি শেয়ারের পর রাতারাতী ভাইরাল হয়ে যায়। বেশ কিছু গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এমন খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় গনমাধ্যম এনডিটিভি। 

পিপল ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনাটি চলতি বছরের জুন মাসে ঘটেছে। ক্লিপটি প্রথমে এক্স-এ ভাইরাল হওয়ার পর অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমেও ভাইরাল হয়।

জেনিফার এভারসোল জানান, আমার চোখের ড্রপগুলো সুপারগ্লুর পাশেই ছিল এবং এগুলোর আকার একই ছিল। আমি মনোযোগ না দেয়াতে চোখের ড্রপ ভেবে ভুল করে সুপারগ্লু দিয়ে ফেলি। 

মিসেস এভারসোল আরও জানান, সুপারগ্লু দেওয়ার পর আমি চোখে গরম অনুভব করি। তারপর তীব্র জ্বালাপোড়া শুরু করে। এতে আমার চোখ বন্ধ হয়ে যায়।

এ ঘটনার পর দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে হাসপাতালে পৌঁছাই। তারপর একজন চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে দেখা করার পর এখন চোখ খুলতে পারছি। 

ভিডিওটি টিকটকে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রায় তিন লাখ মানুষ এটা দেখেছে। 

;

আন্দিজ পর্বতমালার আলু বাঁচানোর চেষ্টা গবেষকদের



ফিচার ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জনপ্রিয় খাবারগুলোর মধ্যে আলু অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর আন্দিজ পর্বতমালা আলু উৎপাদন বেশ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। পরিবর্তিত আবহাওয়ায় আলু চাষে ঝুঁকি মোকাবিলা করে কিভাবে এ জাতের আলু চাষ করা যায় তা নিয়ে গবেষণা করছে আলু বীজ গবেষকরা।

স্থানীয় স্টার্চ জাতীয় খাদ্য সমূহের প্রধান উৎস হলো এ পর্বতমালার আলু। পেরুর একটি অলাভজনক সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন অব আন্দাজের নির্বাহী সহকারী ট্যামি স্টেনার বলেছেন, আন্দিজ পর্বত মালার আলু অনেকটা গোলাপের মতো। দেখতেও অনেক সুন্দর।

তিনি বলেন, মায়েরা যখন ছেলের জন্য মেয়ে দেখতে যায় তখন তাকে এ আলুর খোসা ছাড়িয়ে দিতে বলেন। এ সময় খুব যত্নসহকারে আলুর খোসা ছাড়াতে হয় যাতে তার আকৃতি নষ্ট না হয়। 

সমুদ্রপৃষ্ঠের ৩২০০ মিটার থেকে৫০০০ মিটার উপরে আন্দিজ পর্বতমালায় ১৩০০ টিরও বেশি জাতের আলু জন্মায়। এগুলো ফ্যাকাশে নয় যা ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুপারমার্কেট গুলোতে পাওয়া যায়। এ পর্বতের আলু সাধারণত বেগুনি, গোলাপী, লাল এবং কালো, সেইসাথে সাদা এবং হলুদ হয়ে থাকে।

এ আলু প্রক্রিয়াজাত করতে বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। কিছু আছে ফ্রিজে শুকিয়ে নিতে হয়। কিছু যা শুধুমাত্র পুরো রান্না করা যায়, যেগুলি রান্নার জন্য খোসা ছাড়িয়ে কাটা যায়।

স্বতন্ত্র আলুর জাতগুলোর প্রায়শই বর্ণনামূলক নাম থাকে যা তাদের আকৃতি বর্ণনা করে। জাতগুলোর মধ্যে অন্যতম হল পুমার পাঞ্জা, লামার নাক।

পেরুর শহর পিসাকের কাছে ছয়টি আদিবাসী সম্প্রদায় ২০০২ সালে আলু পার্ক গড়ে তোলে। এই অঞ্চলে জন্মানো আলুর জিনগত বৈচিত্র্য এবং সেইসাথে তাদের চাষ করা লোকেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

অন্যান্য স্থানীয় আন্দিয়ান ফসল ভুট্টা থেকে কুইনোয়াও এখানে জন্মায়। পার্কে ব্যবহৃত কৃষি পদ্ধতিগুলো হাজার বছর ধরে বিকশিত হয়েছে। কৃষকরা প্রায় ১০,০০০ হেক্টর (৩৮ বর্গ মাইল) জমিতে সারা বছরই একাধিকবার ফসল উৎপন্ন হয়।

অনেক জাতের আলুর মধ্যে যেগুলো হারিয়ে যেতে পারে এবং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খায়িতে নিতে পারবে স্থানীয় কৃষক ও গবেষকরা সেগুলো সংরক্ষণ করেছে।

স্টেনার বলেন, আলুগুলো প্রায় ৮ হাজার বছর আগে থেকে আন্দিজ পর্বতমালায় জন্মানো শুরু করে। তাই আলু কীভাবে চাষ করা হয় সে সম্পর্কে অনেক ইতিহাস ও পরীক্ষালব্ধ জ্ঞান রয়েছে। আলু পার্কে যে কাজটি চলছে তা বিশ্বজুড়ে মূল্যবান খাদ্য গাছপালা সংরক্ষণ এবং পরিবর্তিত জলবায়ুতে খাদ্য অভিযোজনের উপায় খুঁজে বের করার একটি বড় প্রচেষ্টার অংশ।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বীজ সংরক্ষক সংস্থাগুলো গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। স্বালবার্ড গ্লোবাল সিড ভল্ট ২০১৭ সালে পটেটো পার্কের প্রতিনিধিসহ সারা বিশ্ব থেকে আলু বীজে সংস্করণ করে।

এই ধরনের সংস্থাগুলো মূল্যবান ফসল হারানোর বিরুদ্ধে একটি অত্যাবশ্যক রক্ষাকবচ হতে পারে। এগুলো বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কের একটি অংশে পরিণত হলে কৃষকর খাদ্যের জিনগত বৈচিত্র্য রক্ষা করতে পারবে।

ছোট চাষীরা হাজার হাজার বিরল এবং অস্বাভাবিক ফসলের জাতগুলো বাগানে, খামারে চাষ করে বীজ সংরক্ষণের মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখে। প্রকৃতপক্ষে, গবেষণায় দেখা গেছে যে বৈশ্বিক বীজ বৈচিত্র্যের সিংহভাগই জিন ব্যাঙ্কের পরিবর্তে বিশ্বের ২.৫ বিলিয়ন ক্ষুদ্র ধারকদের হাতে রয়েছে।

পূর্বে কৃষিতে একটি নির্দিষ্ট ফসলের বৈচিত্র্যময় পরিসর বৃদ্ধি করা হত। যখন বিজ্ঞানীরা ভুট্টা এবং গমের মতো প্রধান ফসলের "উন্নত" জাতের প্রজনন শুরু করে তখন অনেক কৃষক এগুলোকে গ্রহণ করেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া টেকের প্রযুক্তির ইতিহাসের অধ্যাপক হেলেন অ্যান কারি বলেছেন, "কৃষিতে গভীর রূপান্তর ঘটেছে, অনেক ফসল স্থানান্তর হয়েছে। এতে নতুন ফসল চাষ হচ্ছে।

বীজ ব্যাংক যা জিনব্যাঙ্ক নামেও পরিচিত। তারা কয়েক দশক ধরে বীজ এবং অন্যান্য উদ্ভিদ সামগ্রী সঞ্চয়ে রাখে। কিন্তু যেখানে জমিতে চাষের মাধ্যমে ফসল সংরক্ষণ করতে হয় সেটা করতে পারছে না তারা। প্রকৃতপক্ষে, বীজ সংরক্ষণ করতে এবং ভবিষ্যতের জন্য বিভিন্ন ধরণের ফসলের স্টুয়ার্ড করার জন্য একজন কৃষক না হয়েও তা সংরক্ষন করা যায়।

বীজ সংরক্ষণের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি অলাভজনক সংস্থা সিড সেভারস এক্সচেঞ্জ আইওয়া, তাদের জিন ব্যাঙ্কে বীজের দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণ এবং কৃষকদের সাথে তাদের বীজ ভাগ করে নিয়ে জমিতে চাষের মাধ্যমে সংরক্ষণ করছে।

আলু পার্কে কৃষকদের গবেষণায় দেখা গেছে যে, বিভিন্ন আলুর জাতগুলোর জন্য গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে তারা পাহাড়ের অনেক উচ্চতায় চলে যাচ্ছে।

স্টেনার বলেছেন, "তারা ইতিমধ্যেই অনেক উঁচুতে রয়েছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আরো উঁচুতে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ সম্প্রদায়ের একজন প্রবীণ কৃষক বলেছেন: "আপনি আকাশে আলু চাষ করতে পারবেন না। তাই, কৃষকরা পরিবর্তে কম উচ্চতায় পুনরায় আলু চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

;

৭৪ বছর ছুটিহীন কর্মজীবন!



ফিচার ডেস্ক বার্তা২৪.কম
মেলবা মেবানের বিদায়ী অনুষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত

মেলবা মেবানের বিদায়ী অনুষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ছুটি ছাড়া আপনি কতদিন চাকরি করতে পারবেন? এমন প্রশ্নের উত্তর একেক জনের কাছে একেক রকম হলেও, কেউই দীর্ঘ সময় ছুটিহীন চাকরি করবেন এমন উত্তর আশা করা যায় না। কিন্তু, অসুস্থ হলে যে সবারই ছুটি প্রয়োজন হবে সেটা নিশ্চিত। তবে এই কথাটি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের মেলবা মেবানের (৯০) জন্য প্রযোজ্য নয়। কারণ, এই নারী তাঁর ৭৪ বছরের কর্মজীবনে কখনও ছুটি কাটাননি আরও অবাক করার বিষয় হচ্ছে অসুস্থ হলেও সে হাসিমুখে তাঁর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে গেছেন। মার্কিন গনমাধ্যম ফক্স নিউজের বরাত দিয়ে এমন খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম ডেইলি মেইল।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, মেলবা মেবানে ১৯৪৯ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে মেয়ার এন্ড স্মিথ ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে ‘লিফট গার্ল’ হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৬ সালে এটি অধিগ্রহণ করে নেয় ডিলার্ড। মেয়ার পরবর্তী বছরগুলোতে পুরুষদের পোশাক এবং কসমেটোলজিতে কাজ শুরু করেন ধরে তিনি এখানেই কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘ ৭৪ বছর কর্মজীবনে তিনি কখনও ছুটি নেননি এমনকি অসুস্থ হলেও না। 

মেলবার সম্পর্কে টাইলারের ডিলার্ডের স্টোর ম্যানেজার জেমস সায়েঞ্জ ফক্স নিউজকে বলেন, তিনি শুধু একজন বিক্রয়কর্মী নন। তিনি একজন মা। তিনি গাইড করেন। তিনি জীবন সম্পর্কে উপদেশ দেন। তিনি বহু গুণের অধিকারী। 

তিনি আরও জানান, মেলবা তাঁর মুখে হাসি নিয়ে প্রতিদিন কাজ শুরু করতেন।

তিনি বিক্রয়ে পারদর্শী ছিলেন এবং এমন কোন গ্রাহক বা সহকর্মী ছিল না যে তাকে ভালোবাসে না। তার পরে যারা এখানে কাজ শুরু করেছে তাদের সবাইকে খুব সুন্দরভাবে প্রশিক্ষন দিয়েছেন এবং শিখিয়েছেন। 

মেবানে জানান, কর্মস্থলে কখনো বিরক্ত হতেন না তিনি। সেখানকার সবাইকে ভালোবাসতেন এবং প্রতিদিন কাজে যেতে পছন্দ করতেন। অবসর নেওয়ার পর এখন বিশ্রাম, ভ্রমণ এবং ভালো খাবার খেয়ে দিনযাপন করতে চান তিনি। 

মেবানের কয়েক দশকের কাজ এবং নিষ্ঠার প্রতি সম্মান জানাতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে তাঁকে স্টোরের দীর্ঘতম কর্মক্ষম কর্মচারী হওয়ার জন্য ‘সার্টিফিকেট অব এক্সিলেন্স’ পুরস্কার প্রদান করা হয়। 

;

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়াল 'ব্ল্যাকি', সম্পদ ৩ কোটি ডলার



ফিচার ডেস্ক বার্তা২৪.কম
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়াল 'ব্ল্যাকি'। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়াল 'ব্ল্যাকি'। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাধারণত যখন কেউ মারা যায় তখন তাঁর সম্পদের অংশ পরিবারের সদস্যদের কাছে রেখে যান। কেউ কেউ আবার বিভিন্ন দাতব্য সংস্থায়ও দান করে থাকেন। তবে, যুক্তরাজ্যের বাকিংহ্যামশায়ারের বাসিন্দা বেন রিয়া যা করেছেন তা বিরল! স্রেফ ভালোবাসা থেকেই তাঁর সম্পদের বড় একটি অংশ প্রিয় পোষা বিড়াল ‘ব্ল্যাকির’ জন্য দিয়ে যান। আর এতেই বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়াল হয়ে উঠে ‘ব্ল্যাকি’। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ওয়েবসাইট থেকে এমন তথ্য পাওয়া যায়।

রেকর্ড সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ১৯৮৮ সালে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়াল হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ব্ল্যাকির নাম উঠেছে। সেই নাম ৩৫ বছর ধরে এখনো বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়াল হিসেবে গিনেসের পাতায় বিড়ালটির এই স্বীকৃতি অক্ষুণ্ন রয়েছে। 

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সবচেয়ে ধনী বিড়ালটির সম্পদের পরিমাণ আসলে কত?

গিনেস ওয়ার্ল্ড বলছে, যখন ব্ল্যাকি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়ালের স্বীকৃতি পেয়েছিল, তখন সম্পদের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ডলার। বর্তমানে যা ৩ কোটি ২০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

গিনেস ওয়ার্ল্ডের তথ্য মতে, ‘ব্ল্যাকির’ মালিক বেন রিয়া প্রাচীন জিনিসপত্র ক্রয় এবং বিক্রি করে কোটি ডলারের মালিক হন। ১৯৮৮ সালে এই ধনকুব মারা গেলে সম্পদের বিশাল একটি অংশ বিড়ালের নামে দিয়ে যান। তবে বেনের পরিবার ছিল কিন্তু সে একাই বসবাস করতো।  

তার বেশিরভাগ অর্থই তিনটি দাতব্য সংস্থার মধ্যে উইল করে যান। যেই সংস্থাগুলো পোষা প্রাণীদের দেখভাল ও সুরক্ষা দিয়ে থাকে। উইলে তিনি উল্লেখ করেন, যতদিন ব্ল্যাকি বেঁচে থাকবে ততদিন প্রাণীটির দেখভাল করতে হবে। 

তবে বেনের প্রিয় ব্ল্যাকি কত দিন বেঁচে ছিল কিংবা বেনের মৃত্যুর পর ব্ল্যাকির ভাগ্যে কী জুটেছিল, সেই বিষয়ে গিনেসের ওয়েবসাইটে কিছু না জানালেও এই রেকর্ড এখন পর্যন্ত কেউ ভাঙতে পারেনি সেটি নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি ।

;