ইউরোপের সবচে সুন্দর ও পুরনো গ্রাম হলস্ট্যাট



জাভেদ পীরজাদা, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
আশ্চর্য গ্রাম হলস্ট্যাট

আশ্চর্য গ্রাম হলস্ট্যাট

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রিয়া। দেশটির ৬০ ভাগ জুড়ে আছে আল্পস পর্বতমালা। এবং দক্ষিণ থেকে পূর্বে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার পথে বয়ে চলছে ঐতিহাসিক দানিউব নদী। সারা বছর পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে দেশটিতে। কেউ আসেন আল্পস পর্বতমালার সৌন্দর্য উপভোগ করতে। শীতকালে প্রবল তুষারপাত অস্ট্রিয়াকে সাদা চাদরে মুড়ে দেয়। গ্রীষ্মে বরফ গলে গেলে, শ্বাসরোধকারী সৌন্দর্য নিয়ে জেগে ওঠে ইউরোপের সবচেয়ে পুরনো গ্রাম। বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর জনপদ। উত্তর অস্ট্রিয়ার সালসকামার্গাট লেক জেলার পাহাড়ের কোলে লুকিয়ে আছে এই ছোট্ট গ্রামটি।

◤ হলস্ট্যাট গ্রামের স্থানীয় পাড়া ◢


৩৫০০ বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বুকে নিয়ে বাঁচছে হলস্ট্যাট ভিলেজ। যেতে হলে ভিয়েনা-সালসবার্গ লাইনের ট্রেনে উঠে নামতে হবে Attnang-Puchheim স্টেশন। সেখান থেকে Bad Ischl-Obertraun লাইনের ট্রেন ধরে হলস্ট্যাট স্টেশনে। Hallstättersee হ্রদের পূর্ব তীরে এই স্টেশন। স্টেশন থেকে বেরিয়ে ঢালু রাস্তা দিয়ে নেমে একটু এগিয়ে গেলে হ্রদের ধার।

◤ হলস্ট্যাট রেলওয়ে স্টেশন ◢


এখান থেকে হলস্ট্যাট যাওয়ার বোট ছাড়ে। দুদিকে পাহাড়, তাদের মধ্যে দিয়ে বহুদূর পর্যন্ত চলে গেছে ৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের হ্রদটি। লেকের ওপারে আশ্চর্য গ্রাম হলস্ট্যাট।

◤ হলস্ট্যাট যাওয়ার বোট ◢


কেউ বলেন, বিশ্বের সুন্দরতম গ্রাম। কেউ বলেন ‘হিমবাহের বাগান শহর’। কেউ বলেন ‘অস্ট্রিয়ার মুক্তো’, কেউ বলেন ছবি তোলার শ্রেষ্ঠ গ্রামের নাম হলস্ট্যাট। Hallstättersee হ্রদের চারিদিক জুড়ে সবুজ পাহাড়। পাহাড়দের বলা হয় Guardian of the Hallstättersee বা হ্রদের অভিভাবক।

◤ হ্রদ ও হ্রদের অভিভাবক পাহাড় ◢


পাহাড়ের ধাপে ধাপে ‘বারোক’ শৈলির আঙ্গিকে গড়ে তোলা হয়েছে গ্রামের বাড়িগুলি। এখানকার প্রতিটি বাড়ি, দোকান, ক্যাফে, রেস্তোরাঁগুলো সবুজ অর্কিড আর নানা রঙের মরশুমি ফুলে মুড়ে রাখা হয়। দেখলে মনে হবে সেগুলি যেন ফুলেরই দোকান। হ্রদের পাড় থেকে আঁকাবাঁকা গলি পথ উঠে গেছে পাহাড়ের উপর দিকে। রাস্তার দুপাশে শত শত বছরের পুরনো বাড়ি। কিন্তু এতটাই সুন্দর অবস্থায় সাজিয়ে রাখা, যেন কয়েক মিনিট আগে বাড়িগুলোতে গৃহপ্রবেশ হয়েছে।

◤ বাসিন্দাদের নান্দনিক দৃষ্টিভঙ্গিই হলস্ট্যাটের সৌন্দর্যের গোপন রহস্য ◢


শুধুমাত্র অর্থ থাকলেই আস্ত একটা পাহাড়ি গ্রামকে ছবির মতো সাজিয়ে রাখা যায় না। এখানকার বাসিন্দাদের উন্নতমানের নান্দনিক দৃষ্টিভঙ্গিই হলস্ট্যাটের সৌন্দর্যের গোপন রহস্য। শীতকালে বরফে সাদা হয়ে যায় এ গ্রাম। হ্রদ, পাহাড়, গ্রামের রাস্তাঘাট, বাড়ির ছাদ, পুরু বরফের চাদরে মোড়া থাকে।

◤ এই গ্রামে বিত্তবান পর্যটকরাই রাত কাটাবার সামর্থ্য রাখেন ◢


২০০১ সালের জনগণনার হিসাবে হলস্ট্যাটে থাকেন ৮৫৯ জন গ্রামবাসী। আধুনিক জীবনের সব উপকরণ নিয়ে। বাসিন্দারা সবাই অবস্থাপন্ন। তাই এখানে থাকার খরচও বেশ চড়া। সাধারণত বিত্তবান পর্যটকরাই রাত কাটাবার সামর্থ্য রাখেন। বাকিরা সালসবার্গ থেকে এসে দিনে দিনে ঘুরে নেন হলস্ট্যাট।

◤ ১৯৯৭ সালে হলস্ট্যাটকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ঘোষণা করে UNESCO ◢


১৯৯৭ সালে হলস্ট্যাট এবং ডাশ্চটেইন সালসকামার্গাট অঞ্চলকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট বলে ঘোষণা করে UNESCO. তারপর থেকে যেন পর্যটকদের ঢল নেমেছে এই কয়েকশো লোকের গ্রামটিতে। অস্ট্রিয়ার অন্যতম ট্যুরিস্ট আকর্ষণ আজ হলস্ট্যাট।

◤ অস্ট্রিয়ার অন্যতম ট্যুরিস্ট আকর্ষণ আজ হলস্ট্যাট ◢


১৮৪৬ থেকে ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত এই এলাকায় খনন চালিয়েছিলেন একদল প্রত্নতাত্ত্বিক। আবিষ্কৃত হয়েছিল এক অজানা সভ্যতা ও সংস্কৃতি। জানা গিয়েছিল আল্পসের প্রত্যন্তে লুকিয়ে থাকা এই এলাকাটিতেই ব্রোঞ্জ যুগের সমাপ্তি ও লৌহ যুগের সূত্রপাত ঘটেছিল। তাই, ব্রোঞ্জ ও প্রাথমিক লৌহ যুগের সংস্কৃতির নাম হলস্ট্যাট সংস্কৃতি। মধ্য ইউরোপে বিস্তার করা এই অন্যতম শ্রেষ্ঠ সভ্যতার উন্মেষ ও বিকাশ হয়েছিল এই এলাকাটি থেকেই।

◤ ব্রোঞ্জ ও প্রাথমিক লৌহ যুগের সংস্কৃতির নাম হলস্ট্যাট সংস্কৃতি ◢


চাষের ওপর ভিত্তি করে সভ্যতাটি গড়ে উঠলেও, ধাতু শিল্পে যথেষ্ট উন্নত ছিল এলাকাটি। ইউরোপের সেল্টিক এবং প্রোটো-সেল্টিক মানুষেরা এখানে বাস করতেন। দীর্ঘ এলাকা জুড়ে বাণিজ্য চালাতেন তাঁরা। ভূমধ্যসাগরীয় সংস্কৃতির সঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে যোগাযোগ ছিল হলস্ট্যাট সংস্কৃতির মানুষদের।

◤ ব্রোঞ্জ ও প্রাথমিক লৌহ যুগের উদ্ধারকৃত গহনা ◢


এলাকাটিতে আছে এক প্রাগৈতিহাসিক প্রাকৃতিক লবণ খনি। যা বিশ্বের প্রথম লবণ খনি হিসেবে পরিচিত। তখনকার দিনে লবণ ছিল একটি মূল্যবান সম্পদ। তাই সেই খনি থেকে লবণ সংগ্রহের অর্থনীতি, হাজার হাজার বছর আগে জন্ম দিয়েছিল এক জনপদের। তার নাম ছিল হলস্ট্যাট। তার নামেই এখানকার সংস্কৃতির নাম।

◤ প্রাচীন হলস্ট্যাট সংস্কৃতির তৈজসপত্র ◢


প্রত্নতাত্ত্বিকরা এলাকাটির বিভিন্ন জায়গায় খনন করে ব্রোঞ্জ এবং লোহার তৈরি প্রচুর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পেয়েছিলেন। লবণের খনির পাশেই তাঁরা আবিষ্কার করেছিলেন প্রায় ২০০০ মানুষের সমাধি। সমাধিগুলিকে সময়ের বিচারে দুটি স্তরে ভাগ করেছিলেন। প্রথম স্তরটি খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ থেকে ৮০০ সাল এবং দ্বিতীয় স্তরের সমাধিগুলি খ্রিস্টপূর্ব ৮০০ থেকে ৪৫০ সাল জুড়ে বিস্তৃত ছিল।

(সূত্র: দ্য ওয়াল)

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;