ঘুমের, অন্ধত্বের, পাখিদের আত্মহত্যার ও এক বাসিন্দার চার অদ্ভুত গ্রাম



জাভেদ পীরজাদা, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
এমন চারটি গ্রামের গল্প শোনা যাক

এমন চারটি গ্রামের গল্প শোনা যাক

  • Font increase
  • Font Decrease

বিচিত্র এ জগত। রহস্যময় দুনিয়ায় এমনও চারটি গ্রাম রয়েছে যেখানে কোনো গ্রামে বাসিন্দারা হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়ে। কোনো গ্রামে অন্ধ হতে হয়। কোনোবা গ্রামে পাখিদের যেন আত্মহত্যা করাই নিয়তি। আর কোনো একটা গ্রামে মাত্র একজনই এখন বাস করছেন। এমন চারটি গ্রামের গল্প শোনা যাক।

ঘুমের গ্রাম
কাজাখস্তানের এক আজব গ্রাম কালাচি। এই গ্রামের বাসিন্দারা হঠাৎ করেই ঘুমিয়ে পড়েন। সেই ঘুম একদিন, দুইদিন এমনকি কারো কারো এক সপ্তাহ পরে গিয়েও ভাঙে। শিশু থেকে বুড়ো সকলের মধ্যেই একই প্রবণতা দেখা যায়। কেউ কাজ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ছেন, কেউবা কথা বলতে বলতে! আর ঘুম থেকে ওঠার পর কারোই কিছু মনেও থাকে না। তারা সব ভুলে যান। শুধু মানুষ নয়, ওই গ্রামের পশু-পাখিরাও নাকি দীর্ঘ ঘুমে তলিয়ে যায়। গবেষকদের প্রাথমিক ধারণা, নিকটস্থ ইউরেনিয়াম খনির প্রভাব পড়ছে গ্রামবাসীদের ওপর। প্রচুর পরিমাণে কার্বন মনোক্সাইড সৃষ্টি হওয়ার ফলে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এ কারণেই যখন তখন ঘুমিয়ে পড়েন কালাচি গ্রামের বাসিন্দারা।

যখন তখন ঘুমিয়ে পড়েন কালাচি গ্রামের বাসিন্দারা

অন্ধদের গ্রাম
মধ্য আমেরিকার দেশ মেক্সিকোর বিচিত্র একটি গ্রাম টিলটেপেক। গ্রামটিতে জাপোটেক নামের একটি জাতির তিন শতাধিক মানুষ বাস করে, যাদের প্রত্যেকেই অন্ধ। মানুষ নয় গ্রামের গৃহপালিত পশুগুলোও অন্ধ। বিষয়টি এমন নয় যে, গ্রামের অধিবাসীরা সবাই জন্মগত অন্ধ। এই গ্রামে জন্ম নেওয়া নবজাতকরা আর পাঁচটা নবজাতকের মতোই সুস্থ-সবল অবস্থাতেই জন্মায়। কিন্তু এক সপ্তাহ পরই দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে তারা। ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেল এ খবর দিয়েছে। এ খবর গণমাধ্যমে আসার পর নড়েচড়ে বসেছে মেক্সিকোর প্রশাসন ও বিজ্ঞানীরা। কারণ অনুসন্ধানে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে গবেষকদের হাতে। যে ঘন অরণ্য গ্রামটিকে ঘিরে রেখেছে সেখানে বসবাস রয়েছে ‘ব্ল্যাক ফ্লাই’ নামের এক প্রজাতির বিষাক্ত মাছি। টিলটেপেক গ্রামে এই মাছির অবাধ বিচরণ রয়েছে। এই বিষাক্ত মাছির কামড়ে জীবাণু শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলেই শিশু থেকে বুড়ো এবং পশুরাও ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে। আবার আরেকদল বিজ্ঞানী বলছেন, লাবজুয়েলা নামে একটি গাছই তাদের এই অন্ধত্বের পেছনে দায়ী। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, ওই লাবজুয়েলা গাছই তাদের দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেয়। লাবজুয়েলা গাছটি নিয়ে ইতোমধ্যে গবেষণা করেছেন বিজ্ঞানীরা।

টিলটেপেক গ্রামের বাসিন্দারা প্রায় সবাই অন্ধ

কিন্তু অদ্ভুত কারণে টিলটেপেক গ্রাম ছেড়ে কোথাও যেতে রাজি হচ্ছেন না গ্রামবাসী। এক মায়ার জাদুতে অন্ধত্বকেই বরণ করে নিতে রাজি তারা। তাছাড়া মাছির কামড়ে তারা অন্ধ হয়ে যাচ্ছেন বিষয়টিও মেনে নিচ্ছেন না গ্রামবাসীর অনেকেই। তবে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নিতে মেক্সিকো সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

পাখিদের আত্মহত্যার গ্রাম
ভারতের আসামের ডিমা হাসাও জেলার হাফলং থেকে ২০ কিঃমিঃ দূরে আছে জাটিঙ্গা নামের গ্রাম। প্রতি বছর আগস্ট থেকে জানুয়ারি মাসের কোনো কোনো রাতে এই গ্রামে পাখিরা এসে ঝাঁকে ঝাঁকে আত্মহত্যা করে। এ মাসটি চলছে আত্মহত্যার শেষ মাস। সূত্র জিনিউজ ও দ্য ওয়াল।

ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা এসে এই গ্রামে আত্মহত্যা করে

১৯০৫ সালে জাটিঙ্গা গ্রামে বর্ষা শেষে সেই রাতে নাগারাই দেখেছিল পাখিরা আত্মহত্যা করছে। সেই শুরু। কিন্তু বিশ্ববাসী জানত না ১৯৫৭ সাল অব্দি। ব্রিটিশ চা ব্যবসায়ী ও পক্ষীবিশারদ E.P.Gee ঘটনাটি জানতে পেরে এসেছিলেন জাটিঙ্গাতে। তিনি বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন। ১৯৫৭ সালে প্রকাশিত গি সাহেবের বই The Wildlife of India থেকে বিশ্ব জানতে পারে জাটিঙ্গা রহস্যের কথা। এরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিজ্ঞানীরা আসেন। এখনো চলছে গবেষণা। গত বছরের ডিসেম্বরে ব্রিটিশ পাখি বিজ্ঞানী ফিলিপ গ্র্যান গবেষণা শেষে সুধীন সেনগুপ্তের সঙ্গে সহমত হয়েছেন। জুলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার পক্ষীবিশেষজ্ঞ ডঃ সুধীন সেনগুপ্ত দাবি করেন, এর পেছনে রয়েছে—আবহাওয়া ও বায়ুচাপের আকস্মিক পরিবর্তন, ভূ-চুম্বক, মাধ্যাকর্ষণ টান ও উপত্যকার বায়ুমণ্ডলের বৈদ্যুতিক গোলযোগ। তার মতে, জাটিঙ্গা গিরিশিরার পাথরে থাকা উচ্চ চুম্বকশক্তিযুক্ত খনিজ পদার্থ, উপত্যকার নিচে বর্ষার পর মাটিতে বেড়ে যাওয়া জলের স্তর, এই বৈশিষ্ট্য একত্রিত হয়ে এলাকাটির মাধ্যাকর্ষণ ও চুম্বকশক্তির অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটায়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় গিরিশিরার অত্যন্ত খামখেয়ালি আবহাওয়া। এ সবের প্রভাব পড়ে পাখিদের স্নায়ুতন্ত্রর ওপর। ফলে পাখিরা আত্মহত্যা করে।

এক গ্রাম এক মানুষ
নেব্রাস্কার বয়েড কাউন্টির ছোট্ট গ্রাম মনোউই। ০.২১ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। গ্রামের বাসিন্দা মাত্র একজন। ৮৬ বছর বয়সী বৃদ্ধা এলসি এইলার। ১৯০২ সালে গড়ে ওঠা এই গ্রামটি একটা সময় বেশ সমৃদ্ধ ছিল। ১৯৩০-এর লোক গণনায় গ্রামের বাসিন্দা ছিলো ১৫০ জন। কিন্তু গ্রামের যুব সম্প্রদায় একে একে গ্রাম ছেড়ে শহরে পাড়ি দেয়।

মনোউই গ্রামের একমাত্র বাসিন্দা এইলার

পরে ২০০০ সাল নাগাদ দেখা যায়, গ্রামে মাত্র দুজন পড়ে রয়েছেন—এইলার ও তার স্বামী রুডি। ২০০৪-এ রুডি মারা যাওয়ার পর গ্রামে একাই বসবাস করছেন এইলার। স্বামীর মৃত্যুর পর একটা লাইব্রেরি আর রেস্তোরাঁ খোলেন তিনি। এই লাইব্রেরির দুর্মূল্য বইয়ের টানে ১০০ কিলোমিটার দূর থেকেও বইপ্রেমীরা ছুটে আসেন এখানে।

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;