কিশোরগঞ্জ শহরের 'কচি ভাই' 



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
কিশোরগঞ্জ শহরের 'কচি ভাই', সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জ শহরের 'কচি ভাই', সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গেল বছরের শেষ দিনে একটি মৃত্যুর ঘটনায় স্মৃতিকাতর হতে হয়েছিল আমাকে। আমার জন্মস্থান ও শৈশব-কৈশোরের কিশোরগঞ্জ শহরের 'কচি ভাই' সেদিন মৃত্যুবরণ করেন। কিছু কিছু মানুষ আছেন, যারা সমাজে নিজের নামটিকে 'ব্র্যান্ডনেম'-এ পরিণত করতে পারেন, কিশোরগঞ্জের 'কচি ভাই' তেমনই একজন।  

'কচি ভাই' তার সত্তর বছরস্পর্শী বয়সেও ছিলেন 'কচি' এবং সকলের 'ভাই'। কোনও কোনও নামের ক্ষেত্রে বিশেষ্য বা বিশেষণের ফারাক করা যায় না। 'কচি ভাই' শহরের নাগরিকদের কাছে সেরকম চরিত্রের একজন হয়েছিলেন।  

কিশোরগঞ্জ শহরের কেন্দ্রস্থলের ঈশা খাঁ সড়কের রথখোলা নিবাসী মরহুম মাহবুবুল হক সাহেবের বড় সন্তান ছিলেন মাহমুদু্ল হাসান 'কচি ভাই'। ৩১ ডিসেম্বর বিকাল ৪ টা ৫০ মিনিটে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন তিনি। মৃত্যুকালে তিনি ছোট তিন ভাই, দুই বোন, স্বজন, বন্ধুবান্ধব, প্রিয়জন সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাদের আদিবাড়ি ছিল জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলায়। কিন্তু জন্মগত কারণে তিনি ও তার ভাইবোনরা ছিলেন শহরবাসী।  

সত্তর দশকের শুরুতে আমরা যখন ধীর পায়ে বাড়ির বাইরে এসে বৃহত্তর জগতকে দেখছি, তখনই তিনি সবার 'কচি ভাই'। খেলাধুলা, সামাজিক বিচার-আচার ইত্যাদিতে মশগুল একজন হয়ে পাড়ায় তরুণ সমাজের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তিনি। মোটেও ভালো ছাত্র না হয়েও সাহস, স্পষ্টবাদিতা, এডভেঞ্চার-প্রিয়তার জন্য তিনি ছিলেন সবার মনোযোগের কেন্দ্রে। পরে শরৎচন্দ্রের 'শ্রীকান্ত' উপন্যাস পড়ে তাকে 'নাগরিক ইন্দ্রনাথ' রূপে শনাক্ত করতে কষ্ট হয়নি।

'ইন্দ্রনাথ' যেমন, তিনিও তেমনি মোটেও আদর্শস্থানীয় ও অনুকরণীয় চরিত্র ছিলেন না। কিন্তু সেকালের ইন্দ্রনাথের মতো একধরণের 'নৈতিকতা' ছিল তার। নিজে ভালো ছাত্র নন, দিনভর আড্ডা দেন, রাতের শহরে ঘুরেন, কিন্তু পাড়ার জুনিয়ররা এসব করলে বরদাস্ত করতেন না। অন্য পাড়ার কেউ মারলে জুনিয়রদের মারপিট করতে দিতেন না। নিজে গিয়ে বা ডেকে এনে ধমকে দিয়ে বিচার করে দিতেন। কেউ সন্ধ্যার পর বাইরে থাকলে হুঙ্কার দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিতেন।   

স্বাধীনতার পর পরই বাংলাদেশের  সামাজিক প্রেক্ষাপটটি তখন ছিল অন্য রকম। উশৃংখলতার পাশাপাশি নৈতিকতার একটি বোধ ক্ষীণকায় হলেও বিরাজমান ছিল। বখে যাওয়া বা ডানপিটে তরুণরা তখনও ছিলেন। কিন্তু তারা অন্যদেরকে দলে ভিড়িয়ে নিতেন না। নিজেদের মতো আলাদা থাকতেন। নজর রাখতেন সবার প্রতি। ইজ টিজিং বা আপত্তিকর কিছু নিজেরা করতেন না, অন্য কাউকে করতে দিতেন না। সবাই তাদের ভয়ের চোখে দেখতেন। নিজেদের শত দোষ থাকলেও তারা ছিলেন সমাজের 'নৈতিক পুলিশ'-এর মতো।

এক ধরনের গুণ্ডামি তাদের মধ্যে ছিল। কিন্তু সেটা নারী অপহরণ, জমি দখল ইত্যাদিতে কলুষিত ছিলনা। সমাজের সিনিয়রদের দেখলে তারা ঠিকই সম্মান ও সমীহ করতেন। যেমন চাইতেন, জুনিয়ররা পড়াশোনা ও নিয়ম-কানুন মেনে চলুক।

সে সময় শহরে পাড়ায় পাড়ায় মারপিট হতো। তারা সেসবে নেতৃত্ব দিয়ে এলাকার সম্মান বাড়াতেন। আমরা বাড়ির জানলা দিয়ে সেসব দেখতে পেলেও তাতে অংশগ্রহণের অধিকার পেতাম না। সে কাজ করার জন্য  'কচি ভাই'দের আলাদা লোকবল ছিল। আমরা রথখোলার মাঠে ক্রিকেট ও ভলিবল খেলার চেয়ে বেশি সুযোগ পেতাম না।  

মাস্তানি গোছের কোনও শিরোনাম না পেলেও পুলিশের খাতায় 'কচি ভাই'র নাম ছিল। একবার পুলিশ তাকে ধরতে এসে গুলি পর্যন্ত করেছিল। আমাদের চোখের সামনে রথখোলার বিরাজমোহন বাবুর বিরাট পুকুরে ডুব সাঁতার দিয়ে তিনি পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে গেলেন। তারপর আত্মীয়-স্বজনের চাপ ও নিজের উদ্যোগে চলে গেলেন ইংল্যান্ডে।

সে আমলে বিদেশে পাড়ি দেওয়া কঠিন কাজ ছিলনা। শহরের অনেকেই জার্মানি, আমেরিকা, ইংল্যান্ডে চলে গিয়েছিলেন। ভাগ্যান্বেষে নয়, বিরূপ পরিস্থিতির হাত থেকে বাঁচতে বিদেশযাত্রা ছিল সে আমলের সহজ পথ।

অনেকে বিদেশে স্থায়ী হলেও 'কচি ভাই' বছর দশেক পর দেশে ফিরে আসেন। তারপর সেই কিশোরগঞ্জ শহর, নরসুন্দা তীর, রথখোলার মধ্যে আবর্তিত হতে থাকে তার জীবন। বিশেষ কোনও ব্যবসা বা রাজনীতি নয়, সামাজিক নানা বিষয়ে মশগুল হয়ে তিনি জীবন কাটাতে থাকেন তার প্রিয়তম শহরে।

বছর খানেক আগে তার সঙ্গে শেষ দেখা পুরান থানা এলাকায়। কিশোরগঞ্জ শহরে 'কচি ভাই'র মতো আরেক চরিত্র খাইরুল ইসলাম চৌধুরীর মৃত্যুতে শোকার্ত মানুষের মধ্যে তার সঙ্গে কথা হয়। কিছুদিন আগে তার ভাই, নিউইয়র্ক প্রবাসী মাহফুজুল হাসান টুপনের সঙ্গে ফোনে আলাপ হয়। তিনি আমেরিকার কিশোরগঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। তাদের সংকলন 'হাওর'-এর জন্য আমার একটি লেখা চান তিনি। তখনও শৈশব-কৈশোরের বহু কথা চলে আসে আলাপে আলাপে।

'কচি ভাই'র মৃত্যুতে প্রলম্বিত অতীতের অনেক স্মৃতিময় ঘটনা মনে পড়তে থাকে। টের পাই, আমাদের দেখা অনেক বিচিত্র চরিত্রের মানুষ ধীরে ধীরে বিদায় নিচ্ছেন। মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে আজকের প্রজন্মের রগচটা, মারমুখী তরুণ-যুবকদের সঙ্গে তাদের গুণগত পার্থক্য বুঝতেও অসুবিধা হয় না।

কোনও সমাজের কাঠামো, নাগরিক বিন্যাস, শক্তি ও ক্ষমতার ব্যবস্থাপনা, মূল্যবোধের পরিমাপ সে সমাজের মানুষগুলোকে সামনে রেখেই করতে হয়। সমাজতাত্ত্বিক বিবেচনায় মফস্বলের গতানুগতিক, শ্লথ, গড়পড়তা জীবনে আর দশটা একই মাপের সাধারণ মানুষের বাইরে বিশেষভাবে কাউকে চিহ্নিত করাও দুষ্কর। কিছু প্রাচীন ধারা, গোত্রবাদ, গোষ্ঠীচর্চা ইত্যাদি আঞ্চলিক প্রপঞ্চে আকীর্ণ মফস্বলের মানুষের মধ্যে মৌলিক মেধা, বিশেষ দক্ষতা, সৃজনী শক্তি ও মননের প্রভা দেখানোর সুযোগ অতি সামান্য। কেন্দ্রীকরণ প্রবণতায় অগ্রসররা কাজ ও বিকাশের স্বার্থে ঢাকা, চট্টগ্রাম ইত্যাদি কসমোপলিটানে চলে যাওয়ায় মফস্বল স্থবির হয়ে পড়ে থাকে মেডিওক্রেসির আবর্তে।

তেমনই কোনও কোনও মফস্বলে কখনও কখনও একজন চিকিৎসক, অধ্যাপক, লেখক, কবি, শিল্পী, সাংবাদিককে পুরো এলাকা, এমনকি, পুরো দেশ চিনতে পারে। এমন ঘটনা মফস্বলের সাধারণের মিছিলে কালেভদ্রে ঘটে, যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সংখ্যায় অতি সামান্য।   

বিশেষ কোনও গুণবাচক কারণে না হলেও, মানুষের সঙ্গে নিবিড় সংশ্লিষ্টতার গভীর তাৎপর্যে একটানা কয়েক দশক শহরের সমগ্র মানবগোষ্ঠীর সামনে 'কচি ভাই' নামে সামাজিক প্রভাব ও পরিচিতি বজায় রাখাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এতোটুকু কৃতিত্বও মফস্বলের আটপৌরে সমাজপ্রবাহের নাগরিক জীবনে অনেকের পক্ষে দেখানো সম্ভব হয়না। তার সকল সমালোচনা ও সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও 'কচি ভাই' সেটা সম্ভব করেছেন। 

যদিও তার পক্ষে সমাজের বিশেষ কোনও দিকে আলো ফেলে আলোচিত হওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি নিজের ভালোমন্দ অভিজ্ঞতা ও বিশেষ কোনও দক্ষতা পরবর্তী-প্রজন্মে ইতিবাচকভাবে প্রবাহিত করার দক্ষতার সঙ্গেও হয়তো পরিচিত ছিলেন না । মফস্বলের নাগরিক-সংস্কৃতি ও সমাজ-কাঠামোতে এক ধরনের গা-ছাড়া জীবন-যাপনের ধারায় তেমন কোনও প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক কিছু করাও যোগ্য উদ্যোক্তা ও উৎসাহী ভোক্তার অভাবের কারণে দুরূহতম। তদুপরি, তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব ছাড়াই সকলের 'কচি ভাই' হয়ে আলোচনায়-সমালোচনায় সুদীর্ঘকাল জনমানসে বিরাজমান থাকাও মফস্বলের স্বীকৃতি-কৃপণ পরিস্থিতিতে কম কথা নয়। 

জীবনভর কিশোরগঞ্জ শহরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে থেকে 'কচি ভাই' সেই সামাজিক স্বীকৃতি আদায় করেছেন। জীবনের লম্বা সময় পেরিয়ে আরও অনেক দিন কিশোরগঞ্জ শহরের 'কচি ভাই' পরিচিতিতে তিনি জাগরিত থাকবেন।

   

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;

নওগাঁয় কালের সাক্ষী কয়েক শ বছরের পুরোনো বটগাছ



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের মেল বন্ধন প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময়ের। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে রহস্যময় এই বট গাছটি। প্রায় ৫ থেকে ৬ একর জমির ওপরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এই পুরাতন বটগাছটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বট ও পাকুর মিলে বিশাল জায়গাজুড়ে কাল্পনিক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। বট গাছের কাণ্ড থেকে কাণ্ড শাখা থেকে প্রশাখা মাটিয়ে লুটে পড়ে আরেক বটগাছের জন্ম দিয়েছে। কাণ্ডগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটির মূল শাখা কোনটি। লতা থেকে মাটিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি বটগাছ এভাবে অনেকটা জায়গাজুড়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে স্থানটি। বটগাছের নিচে ও পাশে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালি মন্দির যেখানে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন তারা।

মুরাদপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা ( ৫০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এই গাছটির সঠিক বয়স কত সেটি আমরা কেউ জানিনা। আমার বাবা-দাদা তারাও এখানে পূজা করতেন তবে তারা আমাদেকে সঠিক বয়স বলতে পারেনি। আমার দাদার মুখে শুনেছি উনার ছোটবেলাতে সেখানে গিয়ে খেলাধুলা করতেন সে সময় গাছটি ঠিক এমন-ই ছিল। তবে অনুমান করা যায়, এই গাছের বয়স প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের অধিক হতে পারে।

একই গ্রামের গৃহবধূ লাইলী বেগম ( ৫৫) বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর হলো আর তখন থেকেই এই গাছটি দেখে আসছি। বাড়ি কাছে হওয়ায় প্রতিদিন আশেপাশে আসতে হয় বিভিন্ন কাজে। মূল গাছটি আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। একটা গাছ থেকে এতগুলো গাছের সৃষ্টি হয়েছে দেখতে ভালোই লাগে। তবে যদি এটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো কয়েকশ বছর টিকবে বলে মনে করি।

হালঘোষপাড়া থেকে আসা রায়হান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, শুনেছিলাম এখানে অনেক পুরাতন বটগাছ আছে আজকে দেখতে আসলাম। চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এমন বটগাছ আমাদের এলাকায় নেই। দেখে খুব ভালো লাগছে এখন থেকে মাঝেমধ্যেই আসব।


কল্পনা রানী ( ৪৮) বলেন, আমার স্বামীর বাবার মুখ থেকে শুনেছি এটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরের অধিক। কিছুদিন পর পর এখানে পূজা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে পূজা দেয়। এমন সুন্দর বটগাছ আমি কোনোদিন দেখিনি।

বিমল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিদিন আমরা এখানে এসে ক্রিকেট খেলি। এতো পুরাতন একটি বটের গাছ দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে একেকটা উদ্ভিদের আয়ু একেক রকম হয়ে থাকে সেরকম বটগাছ দীর্ঘজীবি উদ্ভিদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গায় ৫০০ বছর বা অধিক সময়ের বেশি বেঁচে থাকে। এই উদ্ভিদগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি ও পরিবেশের সাথে এদের খাপখাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে এরা মোকাবিলা করতে সক্ষম। বটগাছ গুলো বেশি পানি না পেলেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে আবার খুব বেশি তাপমাত্রা বা তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও এ ধরনের উদ্ভিদ সে সময় টিকে থাকতে পারে সেজন্য অনেক সময় বিল্ডিং বাড়ির দেয়ালেও এদের বিস্তার দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, বট গাছগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হলো ওপরের দিকে একটু বেড়ে অনেকদিকে বিস্তার লাভ করে বেশ বড় জায়গা দখল করে তখন এই উদ্ভিদগুলোর ওপরের অংশের ভার বহন করার জন্য ঠেসমূল গঠন করে তারা। মূল কাণ্ড থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে ঠেসমূল নেমে আসে তখন ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। মূল যে কাণ্ডটা তার থেকে বয়সের সাথে সাথে আরো তৈরি হয় যাতে গাছের ভার বহন করতে সক্ষম হয় এবং এভাবে বিশাল জায়গাজুড়ে একে একে বিস্তার লাভ করে কাণ্ডগুলো। বটগাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায় কিন্তু পাকুড় জাতীয় গাছে কম লক্ষ্য করা যায়।

;