স্মৃতির বৈশাখ



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বছরে দুইবার পুরো বাড়ির চেহারা আমূল বদলের গিয়ে ঝকঝকে-তকতকে হওয়ার স্মৃতি ৫০ বছর পরেও জ্বলজ্বল করে। একবার ঈদে, আরেকবার বৈশাখে, শুধু আমাদেরই নয়, পুরো পাড়ার ঘরবাড়িগুলোর অবয়ব বদলে যেতো । পুরনো বাড়িকে মনে হতো নতুন। বাইরের পৃথিবীকেও মনে হতো নতুনত্বর।

স্মৃতির বৈশাখ পুরনো দিনগুলোর ভাঁজে লুকিয়ে থাকা সেইসব অমলিন, নতুন দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। মনে করিয়ে দেয় বিগত শতাব্দীর ৭০ দশকের শৈশব আর ছোট্ট মফস্বল শহর কিশোরগঞ্জকে, যার মাঝখান দিয়ে বয়ে চলতো নরসুন্দা নদী।

চৈত্রের শেষ দিনে শুরু করে বৈশাখের প্রথম প্রহরের মধ্যে সারাবাড়িতে নতুন আমেজ নিয়ে আসতেন মা। ভোল বদলে দিতেন সবকিছুর। ঘুম ভেঙে দেখি, সব নতুন, তকতকে, নতুন বছরের নতুন আলোর মতো। পহেলা বৈশাখের নতুন রোদ ঘরে এসে আমাদের ছুঁয়ে যেতো নতুন আবেগে। আমরা টের পেতাম নতুন বছরের রোমাঞ্চ ও উষ্ণতা।

নববর্ষের প্রত্যুষে দেখা পেতাম, ঝেড়ে মুছে বাড়ির চতুর্দিকের সবকিছু তখন ঝাঁ চকচকে করে রেখেছেন মা। জানলায়, দরজায় নতুন পর্দা, বিছানায় নতুন চাদর। চারদিকেই কেমন একটা নতুন নতুন গন্ধে ভেসে আমাদের শৈশবে এসে হাজির হতো পহেলা বৈশাখ।

শুরুর মতোই পুরো দিনটাও বদলে যেতো। স্কুল নেই, নিষেধ নেই, শাসন নেই, আছে শুধুই উচ্ছ্বসিত আনন্দ। পুরো শহরকেও মনে হতো অন্য রকম। সম্ভাষণ ও প্রীতির ভাষায় নিজেদের মধ্যে কথা বলতেন নাগরিকগণ। তখন শুভেচ্ছা কার্ডের প্রচলন ছিলনা। আমরা বন্ধুদের বাড়িতে ঘুরে ঘুরে কাটাতাম পহেলা বৈশাখের সকাল বেলা।

দুপুরের আগে আগে আব্বার সঙ্গে যেতে হতো শহরের বড়বাজারে। এটি ছিল একেবারেই ধরাবাঁধা নিয়মের মতো। আব্বার কয়েকজন ভাড়াটিয়া ও রোগী বড় ব্যবসায়ী, তাদের দোকানে হালখাতা অনুষ্ঠানের সরগরম আয়োজন আর সেখানে এন্তার মিষ্টি খাওয়া চলতো বেশ অনেকক্ষণ সময় ধরে।

পহেলা বৈশাখে দুপুর বেলার খাবারে মাছ, সবজির সঙ্গে কয়েকটি মিষ্টান্ন রাখতেনই মা। এদিনে সবাই একসাথে খেতে বসার রেওয়াজ ছিল। বছরের অন্য দিন আব্বা চেম্বারে রোগীদের দেখে সুযোগ মতো খেতে আসতেন। ভাইবোনরা স্কুল, কলেজের ফাঁকে এসে খেয়ে নিতো। পহেলা বৈশাখে সবাই একসাথে খাওয়ার রীতি মানতেই হতো।

বিকেলের দিকে ছুটে যেতাম রথখোলার মাঠে, সেখানে বৈশাখী মেলা। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট করে সাজানো মেলা হয়, একেবারেই আদি ও অকৃত্রিম। কুমার তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মৃৎপাত্র ও তৈজসপত্র নিয়ে হাজির। ছিল মাটির তৈরি হরেক রকমের খেলনা। কুটিরশিল্প সামগ্রীর ছড়াছড়ি। ঘুড়িওয়ালার অস্থায়ী দোকানে বাহারি ঘুড়ি, সুতা, লাটাই। মিঠাই, মণ্ডা ভেজে বিক্রি করা হচ্ছে চোখের সামনে। কখনো নাগরদোলা, সার্কাস বা পুতুলনাচ নিয়ে চলে আসতেন কোনো কোনো দল। বাঁদর নাচ, সাপের খেলা চলতো মানুষের ভিড়ের মধ্যে।

বাঁশি, সানাই বানিয়ে এনে বিক্রি করতেন গ্রাম্য কারিকর। টান দিতের সুরেলা বাঁশিতে মরমী কোনো গান। একজন চারণ কবি সুর তুলে প্রেমের আখ্যান শোনাতেন। বিকেল আর সন্ধ্যাটি জমজমাট হয়ে থাকতো মানুষের শব্দে, গানে, কোলাহলে। পহেলা বৈশাখে প্রাণবন্ত এক জীবন্ত শহর এসে দাঁড়াত আমাদের শৈশবের আঙিনায়।

রাতে কুপিবাতি, হ্যাজাক লাইট, হারিকেন বা লণ্ঠনের রহস্যময় আলো-আঁধার ঘিরে থাকতো পুরো আয়োজনকে কেন্দ্র করে। শহর আর পাশের গ্রামের মানুষের চলাচল অবিরাম চলতো অনেক রাত অবধি। মধ্যরাত পর্যন্ত মাইকে শোনা যেতো যাত্রাপালার কোনো গান বা সংলাপ। আমরা অবশ্য তার আগেই দুই হাত ভরে নানা জিনিস কিনে বাড়িতে ফিরে আসি।

পহেলা বৈশাখের দিনেই আমাদের নববর্ষের আমেজ শেষ হয়ে যেতো না। আমাদের যেতে হতো গ্রামের বাড়িতে। কুলিয়ারচরের দাদাবাড়ি আর কটিয়াদির নানাবাড়ি নিয়ে যেতে লোক আসতেন। তাদের সঙ্গে আমরা কয়েক দিনের জন্য চলে যেতাম। সেখানে মেলা ও উৎসব লেগেই থাকতো। কুঁড়িগাই নামের একটি জায়গা ছিল দাদা ও নানা বাড়ির মাঝামাঝি দূরত্বে। কয়েকশত বছরের প্রাচীন মেলা চলতো সেখানে মাজার ও পুরনো স্থাপনাকে ঘিরে। সে এক এলাহি কারবার। লোকজন, আউল-বাউল, জিনিসপত্রের বিশাল সম্ভারে ভরপুর আয়োজন।

তখন সুপার শপ ছিলনা, ইচ্ছে হলেই সব সময় হাতের কাছে কাজের জিনিসটি পাওয়া যেতো না। এইসব বড় বড় গ্রামীণ মেলা ছিল মোবাইল সুপার শপ। মা তার সারা বছরের অনেক জিনিসপত্র কিনে নিতেন মেলা থেকেই। সুন্দর নকশিকাঁথা, দা, বটি, কাঠের আসবাব, পুঁতির মালা এমন অনেক কিছুই বাড়ির জন্য কেনা হতো।

বৈশাখে গ্রামের বিকালগুলো ছিল অনেক লম্বা আর অফুরন্ত। ষাঁড়ের লড়াই, হাডুডু খেলায় ব্রহ্মপুত্রের তীরের দীর্ঘ চরভূমিতে মানুষের মেলা জমতো। আমাদের আদি বাড়িতে তখন দেখা পেতাম শহর থেকে গ্রামে আসা অনেক পরিবারের। ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রামের গল্প শোনা যেতো মা-খালাদের আসরে।

অতি শৈশবের কিশোরগঞ্জ শহরে বা গ্রামের বাড়িতে পহেলা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষকে পেয়েছি একেবারেই চিরায়ত রূপে। কোনো আনুষ্ঠানিক আয়োজন ছাড়াই প্রাত্যহিক জীবনের অঙ্গ হিসেবে পালিত হতো দিনগুলো। আশির দশকে নববর্ষে নাগরিক অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে। বিভিন্ন ক্লাব, সংস্থার ব্যানারে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে নানা আয়োজন। শহুরে জীবনে গ্রামীণ ছোঁয়া নিয়ে প্রচলিত হয় পান্তা-ইলিশ।

স্মৃতির নিরিখে পহেলা বৈশাখকে রূপান্তরের ভেতর দিয়ে পেয়েছি। চলমানতার স্রোতে আমাদেরকে সঙ্গে করে নিয়ে চলেছে পহেলা বৈশাখ। জীবনের পর্বে পর্বে নববর্ষের আলোয় আলোকিত হয়েছে যাপিত জীবন।

শৈশবে আদি গ্রামীণ আয়োজন থেকে শহরের সংস্কৃতিতে বিকশিত হতে দেখেছি যে বর্ষবরণকে, তা আমাদের ছোটবেলার মফস্বলের জীবনের মতোই নান্দনিকতার স্পর্শ নিয়ে জড়িয়ে আছে স্মৃতির চাদরে । তারপর ঢাকা বা চট্টগ্রামের আবহে বাংলা নববর্ষে পহেলা বৈশাখ এসেছে বহুমাত্রিক মুগ্ধতা আর জাতীয় সাংস্কৃতিক জাগরণের সমান্তরালে। বাংলার, বাঙালির শাশ্বত আত্মার অন্তর্নিহিত মর্মরধ্বনিতে আমাদের জীবনে চির মাধুর্যের সুরে ও তালে সতত বহমান বাংলা নববর্ষ, পহেলা বৈশাখ।

   

বরিশালের শত বছরের ঐতিহ্যের স্মারক শীতলপাটি



এস এল টি তুহিন, করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের পাটিকররা তাদের নিপুণ হাতের তৈরি শীতলপাটির জন্য বিখ্যাত।

উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের কাজলাকাঠী গ্রাম, রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া, রাজাপুর গ্রাম ও গারুড়িয়া ইউনিয়নের সুখী নীলগঞ্জ ও হেলেঞ্চা গ্রামে এখনো তৈরি হয়, ঐতিহ্যের অনন্য স্মারক দেশ বিখ্যাত শীতলপাটি।

এই উপজেলায় এখন এক হাজারের বেশি পরিবার শীতলপাটি তৈরি করে সংসার চালাচ্ছে।

উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে প্রবেশ করে যতদূর দু’চোখ যায়, দেখা মেলে পাইত্রাগাছের বাগান। গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে দেখা মেলে বড় বড় পাইত্রা বা মোর্তাগাছের ঝোপ। বাড়ির আঙিনা, পরিত্যক্ত ফসলি জমি, পুকুর পাড়, সব জায়গাতেই বর্ষজীবী উদ্ভিদ তরতাজা পাইত্রাগাছ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে। গ্রামীণ জনপদের আভিজাত্যের স্মারক শীতলপাটি তৈরি হয়, এই পাইত্রাগাছের বেতি দিয়ে।

জানা গেছে, এসব গ্রামে পাইত্রাগাছের আবাদ হয়ে আসছে শত শত বছর ধরে। পাটিকরদের পূর্বপুরুষেরা যে পেশায় নিয়োজিত ছিলেন, আজও সেই পেশা ধরে রেখেছেন বাকেরগঞ্জের পাটিকররা।

এখনো এই সব গ্রামে ‘পাটিকর’ পেশায় টিকে আছে প্রায় এক হাজার পরিবার। আর তাদের সবার পেশাই শীতলপাটি বুনন। ফলে, উপজেলার এসব গ্রাম এখন ‘পাটিকর গ্রাম’ নামে পরিচিত।

সরেজমিন দেখা যায়, কাঁঠালিয়া, রাজাপুর ও গারুড়িয়া ইউনিয়নের সুখী নীলগঞ্জ ও হেলেঞ্চা গ্রামে এখনো গ্রামীণ সড়ক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই ছোট ছোট টিনশেড ও আধাপাকা ঘরগুলোর বারান্দায় নারী-পুরুষ ও শিশুরা মিলে নানান রঙের শীতলপাটি বুনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কাঁঠালিয়া গ্রামের সবিতা রানীর পরিবারের সবাই মিলে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটান শীতলপাটি তৈরি করতে। একটু সামনে এগুতেই কথা হয়, প্রিয়লাল পাটিকরের সঙ্গে।

তিনি বলেন, পরিবারের পাঁচ সদস্য মিলে একটি পাটি তৈরি করতে কয়েকদিন চলে যায়। প্রতিজনের দৈনিক মজুরি ১০০ টাকা করেও আসে না। তারপরেও কিছু করার নেই। বাপ-দাদার পেশা হিসেবে এখনো শীতল পাটি বুনে যাচ্ছি। একদিকে, এখন গরম বেড়েছে, অপরদিকে, বৈশাখ মাস চলছে। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বৈশাখী মেলায় শীতলপাটির চাহিদা থাকে। তাই, পাইকাররা এসে আমাদের এলাকা থেকে পাটি কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করেন।

স্থানীয় পাটিকররা জানান, এখানকার তৈরি শীতলপাটি আন্তর্জাতিক মানের। কিন্তু প্লাস্টিক পাটির কারণে বাজারে শীতলপাটির চাহিদা কমে গেছে। সে কারণে সরকারিভাবে বিদেশে শীতলপাটি রফতানির কোনো ব্যবস্থা করা হলে পাটিকরদের জীবন-জীবিকা ভালো চলতো।

পাশাপাশি শীতলপাটি টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তারা। নয়ত এই পেশায় টিকে থাকা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসন, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাসহ জাইকা সংস্থার মাধ্যমে উপজেলার পাটিকরদের মধ্যে বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। ফলে, নতুন নতুন ডিজাইনের শীতলপাটি তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি আমরা তাদের সরকারি বিভিন্ন রকম সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

;

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;