'জীবন এত ছোট কেনে, এ ভুবনে?'



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারির কারণে অকাতরে মানুষ আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছেন। সুস্থ হয়ে ফিরে আসছেন অনেকে। জীবন ও মৃত্যুর এই চরম সন্ধিক্ষণে মানুষ গভীরভাবে উপলব্ধি করছে নিজেকে ও নিজের পারিপার্শ্বিকতাকে। খুব কাছে থেকে অনুভব করছেন জীবন আর মৃত্যুকে।

চলমান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের মৃত্যুর মিছিলে অজস্র অচেনাদের মতো চেনাজানা অনেকেই আছেন। করোনাকালে অনেকেই আবার অন্যবিধ কারণেও স্বাভাবিক নিয়মে মারা যাচ্ছেন, যাদের মধ্যে পাড়াপড়শি, সহকর্মী, ছোটবড়, চেনাজানা বহুজনেই রয়েছেন।

কর্ম ও পেশাজীবনে সবাই কম-বেশি সফল ছিলেন। জীবনকে টেনে টেনে একটি কাঙ্ক্ষিত পরিণতি পর্যন্ত নিতে পেরেছেন। কিছু সম্পত্তি ও সন্তান তাদের জীবনের প্রলম্বিত পরিধিকে উজ্জ্বল করেছে ৫০, ৬০, ৭০, ৮০ ইত্যাদি বয়সের আয়ুতে।     

স্বাভাবিক সময়ে পরিচিতদের যেসব মৃত্য স্বাভাবিক মনে হতো, তা এই সামাজিক দূরত্ব ও সঙ্গরোধের নিথর পরিস্থিতিতে তীব্রভাবে নাড়া দেন। মনে হয় চোখের সামনে দিয়ে যেন দেখতে দেখতে একেকটি জীবনের যবনিকাপাত ঘটছে। কিছু শোক ও স্মরণ মিশিয়ে সেইসব চিরবিদায়কে পারিবারিক ও সামাজিকগণ আলোচনা করেন এবং তারপর সব শেষ, সব বিস্মৃতির অতলে।

মানুষ, ঘটনা, প্রপঞ্চ এভাবেই হারিয়ে যায়। হিমালয় থেকে গলিত বরফের মতো নদীস্রোতে মিশে মিশে সাগরে হারিয়ে যাওয়াই যেন জীবনের চূড়ান্ত উপসংহার। আর তখনই মনে পড়ে তারাশঙ্করের 'কবি' উপন্যাসে কথা এবং চোর-ডাকাত থেকে কবি হয়ে মূল চরিত্র ধারণকারী নিতাইয়ের  বিখ্যাত উক্তি, 'জীবন এত ছোট কেনে'।

বহুল উচ্চারিত ও উদ্ধৃত কথাটি যেন মৃত্যুর মুখোমুখি করোনাকালে নবরূপে ফিরে এসেছে প্রতিটি স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর পটভূমিতে:

''নিতাইয়ের সঙ্গে আসনের কাপড়ের খুঁট বাঁধা ছিল। এই গিঁট অটুট মনে করেছিল দুজন। মনে করেছিল, কেবল মরণই পারে তাদের ভিন্ন করতে। আর তা-ই হয়েছিল। বসনকে ভালোবেসে নিতাই জীবনের অনিত্যতা ও ক্ষুদ্রতার তাপে ও আঁচে গেয়েছিল, 'জীবন এত ছোট কেনে'। বসনের জন্য তার গান হয়ে উঠল-

এই খেদ মোর মনে,

ভালোবেসে মিটল না আশ কুলাল না এ জীবনে।

হায়! জীবন এত ছোট কেনে,

এ ভুবনে?''

কবি নিয়ে বা কবিকে প্রধান চরিত্র বা উপজীব্য করে রচিত গল্প, উপন্যাস সম্পর্কে তথ্য-পরিসংখ্যান কেউ কখনো পেশ করেননি। বাংলা সাহিত্যের গবেষকরা সে নিরীক্ষার কাজটি নিশ্চয় করবেন। কিন্তু আমাদের সামনে তিনটি 'কবি' জ্বাজ্জল্যমান। তারাশঙ্করের 'কবি', হুমায়ূন আহমেদের 'কবি' এবং হুমায়ূন আজাদের 'কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ'।

প্রতিটি লেখকের রচিত 'কবি' নানা দিক থেকে বিশিষ্ট হলেও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধায়ের 'কবি' জীবনদর্শনের রসে জারিত। কারণ, সাহিত্যজীবনে ৬৫টি উপন্যাস, ৫৩টি গল্পগ্রন্থ, ১২টি নাটক, ৪টি প্রবন্ধগ্রন্থ, ৪টি আত্মজীবনী এবং ২টি ভ্রমণ কাহিনী তিনি রচনা করেছেন বাস্তব অভিজ্ঞতার রূপায়নের নিরিখে। ফলে জীবনঘনিষ্ঠ আখ্যানের মাধ্যমে তিনি যে দার্শনিক বক্তব্য উপস্থাপন করেন, তা প্রতিটি হৃদয়কে ছুঁয়ে যায় এবং আত্মজিজ্ঞাসায় তাড়িত করে। আমরা নিজেদের জীবন ও স্বজন-পরিচিতদের চলে যাওয়া জীবনের দিকে তাকাই। তারপর অস্ফুটে বলি: 'জীবন এত ছোট কেনে, এ ভুবনে?'

ঠিক, জীবন আসলেই ছোট, দেখতে দেখতে শেষ হয়ে যায়। তবু, জীবন এতো ছোট হওয়া সত্ত্বেও তাতেই অনেক বড় বড় কাজ সম্পন্ন করেছেন বহুজন। বিশ্বের সৃষ্টি, নির্মাণ, বিজয়, অর্জন, আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের গৌবরময় ইতিহাসে মিশে আসে সেইসব বড় আর মহৎ কীর্তি, যা ছোট বা স্বাভাবিক জীবনের পরিসরেই সম্পন্ন করেছেন বড় মাপের মানুষেরা।  

জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ ও সর্বাঙ্গে সফল করতে সঙ্কুল-সঙ্কটেও ঝাঁপিয়ে পড়েছেন কিছু কিছু বৈশিষ্ট্যময় মানুষ। এমনকি ন্যায়ের জন্য যুদ্ধেও অবতীর্ণ হয়েছেন তারা। যাদের মধ্যে মননশীল কবি আর সৃষ্টিশীল লেখকের সংখ্যাও কম নয়। জীবন বড় না ছোট, সফল না ব্যর্থ, এই দিকে না তাকিয়ে 'কর্মই ধর্ম' মন্ত্রে তারা অবিরাম কাজ করেছেন। ফলাফলের দিকে তাকানোর প্রয়োজন বোধ করেননি তারা। বরং ফলাফল তাদের পিছুপিছু এসে যথাসময়ে হাজির হয়েছে।

‘দি ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’-র লেখক আর্নেস্ট হেমিংওয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ইটালিতে অ্যাম্বুলেন্স চালিয়েছিলেন। ‘লরেন্স অফ অ্যারেবিয়া’-র লেখকও যোগ দিয়েছিলেন সেনাবাহিনীতে। উইলফ্রেড আওয়েন অমর হয়ে আছেন যুদ্ধ নিয়ে লেখা তাঁর ‘স্প্রিং অফেনসিভ’ কবিতায়।

এমনকী, কোয়েসলার থেকে অরওয়েল বা আর্থার সি ক্লার্ক, সকলকেই কোনও না-কোনও ভূমিকায় যুদ্ধক্ষেত্রে পাওয়া যায়। যদিও সে হিসেবে আমাদের দেশে সরাসরি অভিজ্ঞতায়  যুদ্ধ নিয়ে রচিত সাহিত্য নেই বললেই চলে। কবি-সাহিত্যিকরা যুদ্ধকে দেখেছেন দূর থেকে।

ব্যতিক্রম কেবল কাজী নজরুল ইসলাম। চে গুয়েভারা যেমন গেরিলা যুদ্ধের অবসরে গ্যেটে পড়তেন, বাংলাদেশের জাতীয় কবি তেমনই প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সুদূর দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার রণাঙ্গণের রক্ত, মৃত্যু, বুলেট ছুঁয়ে অনেক রণসঙ্গীত ও দামামার পাশাপাশি কিউবান টিউনে সৃষ্টি করেছিলেন ‘দূর দ্বীপবাসিনী’ শীর্ষক মনমোহিনী গান।

করোনাকালে অধিকাংশ লেখকই রণ থেকে সরে গিয়ে দূরের নিরাপদ দ্বীপ ভালোবেসেছেন। সাধারণ মানুষ গৃহবন্দী হয়েছেন। সামাজিক দূরত্ব ও সঙ্গরোধের নিঃসঙ্গ-আতঙ্কিত প্রহরে করোনার আঘাতে ছোট্ট জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে মর্মে বিলাপ করছেন।

আর যারা ছোট্ট জীবনকে বড় করতে চান, তারা প্রলাপে-বিলাপে নয়, কাজ করে চলেছেন একনিষ্ঠতায়, নিমগ্নতায় ও নিরবতায়। করোনার বিরুদ্ধে বিজ্ঞানীরা, বিদ্যমান পরিস্থিতি ও পরিবর্তনের বহুমাত্রিক দিকগুলো চিত্রিতকরণে ব্যস্ত লেখক, গবেষকরা এবং স্ব স্ব ক্ষেত্র আরো অনেক মানুষ ছোট জীবনের পরিসরে বড় বড় কাজ করে চলেছেন এই ঘোরতর প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস কবলিত পরিস্থিতিতেও।   

সত্যিই, অন্য সবার মতো বা হতাশা ব্যক্তকারীদের মতো, তাদের জীবনও ছোট, যারা কাজ করেন। তবে পার্থক্য হলো, যারা কাজ করেন, ছোট জীবন নিয়েও তাদের আফসোস নেই। আছে বড় ও মহত্তম কাজ করার অপরিসীম তৃপ্তি এবং পরিশেষে সাফল্যের হাসিতে উদ্ভাসিত মুখচ্ছবি, ইতিহাস যা ধারণ করে রাখে নিজের বুকে।

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;