তৃতীয় বর্ষে বাংলার, বাঙালির সংবাদ সারথি বার্তা২৪.কম



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
গ্রাফিক্স: বার্তা২৪.কম

গ্রাফিক্স: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সৃজনে ও মননে প্রতিক্ষণ নব-নব আয়োজনের দীপ্তিতে তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করলো বাংলার, বাঙালির সংবাদ সারথি বার্তা২৪.কম। টোটাল, সার্বক্ষণিক অনলাইন-মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতার প্রাজ্ঞ অভিব্যক্তির সঙ্গে দীপ্ত-যৌবনের তুঙ্গ-তরঙ্গে সূচিত হয়েছিল বার্তা২৪.কম'র সম্মিলিত পথচলা। মাত্র দুই বছরেই বাংলা ভাষায় প্রতিমুহূর্তের আস্থাভাজন-নির্ভরযোগ্য মিডিয়ার মর্যাদায় অভিসিক্ত বার্তা২৪.কম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভক্ষণে লক্ষ-কোটি পাঠককে জানাচ্ছে প্রাণঢালা অভিনন্দন। ঘোষণা করছে প্রতিনিয়ত উত্তরণের প্রতীতি ও প্রত্যয়। 

বাংলাদেশের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার যুগসন্ধিতে গতানুগতিক-পুরনোকে পিছে ফেলে চিন্তা ও প্রযুক্তির নতুন ও উদীয়মান প্রত্যাশাকে সবার আগে ধারণ করে 'নতুন মিডিয়া যুগের বার্তাবাহক' রূপে শুরু হয়েছিল বার্তা২৪.কম'র শুভযাত্রা। বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসে সঙ্ঘাত-সঙ্কুল-পালাবদলে আকীর্ণ একটি প্রকৃত সন্ধিক্ষণে বার্তা২৪.কম-এর আত্মপ্রকাশ এবং পথচলা। প্রথাগত ও পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ-প্রবাহের দুর্বলতা, নতজানু মনোভাব ও মনোপলি ভেঙে স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রকৃত পথ-প্রদর্শকের মতো আগমন ঘটে বার্তা২৪.কম'র।

প্রতিষ্ঠালগ্নেই বার্তা২৪.কম'র ত্যাগী ও আত্মনিবেদিত সংবাদকর্মীগণ উচ্চারণ করেছিলেন সততা, নিরপেক্ষতার পাশাপাশি অগ্রসর প্রযুক্তির অভিযোজনে পেশাগত নৈপূণ্য ও দায়িত্বশীলতার শাণিত শপথ  আর চলমান সময়ের প্রতিটি স্পন্দনের ঘটমানতাকে পাঠকের সামনে তুলে ধরার চ্যালেঞ্জ। প্রাজ্ঞ নেতৃত্বের সঙ্গে তারুণ্য-যৌবনের লেলিহান জনশক্তির বার্তা২৪.কম  ‘বাঙালির সংবাদ সারথি’র দায় ও দায়িত্ব থেকে ঘোষণা করেছিল ‘বাসি খবরের মৃত্যুঘণ্টা বাজানো’র নিনাদ; সময়ের ভগ্নাংশকে অঙ্কন করার পেশাগত উচ্চাশা এবং অক্ষরে ও সচল ছবিতে চলমান ঘটনাকে একনিষ্ঠ দ্রুততায় এবং প্রাযুক্তিক শ্রেষ্ঠত্বে ধারণ ও পরিবেশনের পেশাদারিত্ব।

আনন্দঘন পরিবেশে বার্তা পরিবার, ছবি: বার্তা২৪.কম


 

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর মাহেন্দ্রক্ষণ বার্তা২৪.কম বিঘোষিত অঙ্গীকারকে বাংলাভাষী অগণিত পাঠক-শ্রোতার প্রতি দায়বদ্ধতায় পুনরায় উচ্চারণ করছে। উচ্চকিত করছে  সঙ্কুল আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক-পরিবেশগত প্রতিকূলতায় ভরা বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যে স্বাধীন-নিরপেক্ষতায় সত্যান্বেষণের নিত্য লড়াইয়ের সঙ্কল্প; জাতীয় স্বার্থ আর গণমানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের পক্ষে সোচ্চার থাকার অঙ্গীকার এবং সর্বস্থরের পাঠকের তথ্য ও সংবাদের অগ্রণী ও অনিবার্য সংযোগ সূত্র হিসাবে নিত্য-সচল থাকার ঐতিহ্য।

বার্তা২৪.কম চিন্তায়, চেতনায়, কর্মে পরিবর্তিত বিশ্ব ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যা কিছু সত্য, সুন্দর, ভালো, মানবিক, গণতান্ত্রিক, মহৎ ও কল্যাণকর এবং  দেশ ও জনগণের জন্য ইতিবাচক, সেসবের সঙ্গে সামঞ্জস্য ও সমন্বয় বিধানের কঠিন কাজটি সফলভাবে করে চলবে আগামী দিনগুলোতেও।  অতিক্রান্ত বছরগুলোর অর্জিত অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশের প্রধান ও একমাত্র মাল্টিমিডিয়া-নিউজপোর্টালের কর্তব্যের প্রতি নিষ্ঠায় বার্তা২৪.কম নিজেকে উন্নীত করবে  বিশ্বব্যাপী ৪০ কোটি বাংলাভাষী মানুষের আন্তর্জাতিক তথ্যবলয়ে। বার্তা২৪.কম তিনশ পয়ষট্টি দিনের প্রতিটি দিন; দিনের চব্বিশ ঘণ্টার প্রতিটি ক্ষণ ও মুহূর্ত থাকবে বাংলার, বাঙালির সংবাদ সারথি হয়ে।

প্রাযুক্তিক শ্রেষ্ঠত্ব, পেশাগত দায়বদ্ধতা, দক্ষতা, নিষ্ঠা, সততা, কমিটমেন্ট ও প্রাগ্রসরতায় বার্তা২৪.কম বাংলাদেশ ও পৃথিবীর প্রসারিত রূপ, আলো ও অন্ধকার, ভালো ও মন্দ, আশা ও হতাশার দিকগুলোকে সত্যনিষ্ঠভাবে তুলে ধরে হতে চায়। হতে চায় বাঙালির সংবাদ তথা চিন্তা ও বোধের নান্দনিক সহযাত্রী; তথ্যের নির্ভরশীল সঙ্গী এবং বৈশ্বিক বাংলাভাষী মানবগোষ্ঠীর অপরিহার্য্য তথ্যবান্ধব।

একবিংশ শতকের দ্রুতলয় পৃথিবীতে মানবজীবনের লাইভিহুড বা সর্বব্যাপী জীবনচর্চার জন্য প্রয়োজনীয়-কাঙ্ক্ষিত রূপান্তর বার্তা২৪.কম প্রতিটি অক্ষরে-ভিডিওতে অঙ্কন করতে সতত সচেষ্ট। বিনাশে, সঙ্কটে, সমস্যায় বাতা২৪.কম আশা-জাগানিয়া তথ্যপ্রবাহের নিত্যতা ও স্পন্দনে মানুষকে পথের দিশা দিতে সদা উন্মুখ। প্রতিদিন প্রতিটি মুহূর্তে পাঠকের সামনে তথ্যের অধিকার নিয়ে চিন্তার সহযাত্রী হয়ে নিবিড় নৈকট্যে থাকতে আগ্রহী বার্তা২৪.কম।

কুসংস্কার ও কূপমণ্ডূকতামুক্ত বহুত্ববাদী সমাজের ধর্ম-বর্ণ-ভাষা-নৃতাত্ত্বিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক পরিচিতি, গণতান্ত্রিক সুশাসন ও স্বাতন্ত্র্য, নারীমুক্তি, নেশা-মাদক-সন্ত্রাসের অবসান, গণতান্ত্রিক সহনশীলতা, পরমতসহিষ্ণুতা, শান্তি, সৌহার্দ্য, সংলাপ, সমঝোতা, আশা, উন্নয়ন, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সুশাসন, অংশগ্রহণ, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, দায়বদ্ধতা এবং সর্বপরি মুক্তিযুদ্ধের মহান চেতনায় নির্মিত বাংলাদেশের অপার অর্থনৈতিক সুযোগ ও সম্ভাবনা, প্রাকৃতিক বৈচিত্র এবং জনজীবনের বিশালতাকে অনুঘটকের মতো প্রতিনিয়ত ইতিবাচকতার অভিমুখে উৎসাহিত করতে বার্তা২৪.কম বদ্ধপরিকর।


অভিজ্ঞ, সৎ, নির্লোভ, দক্ষ, পেশাদার এক ঝাঁক তরুণ-মেধাবী কর্মীকে নিয়ে স্বাপ্নিক-প্রতিষ্ঠাতা আলমগীর হোসেনের নেতৃত্ব, প্রচেষ্টা ও  উদ্যোগে বিদ্যমান গতানুগতিক, শ্লথ ও ধীরগতির মিডিয়া পরিস্থিতির পরিবর্তন সাধনের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বার্তা২৪.কম। প্রযুক্তি ও মানবিক উৎকর্ষতায়  সার্বক্ষণিক-জীবন্ত-মূলধারার তথ্যপ্রবাহের  উন্মেষের সেই রোমাঞ্চকর ঘটনা আজ ইতিহাসের অংশ। বার্তা২৪.কম নামের মিডিয়া জ্যোতিষ্কের উদ্ভাসনের পূর্বে বাংলাদেশের অনলাইন সাংবাদিকতার পথিকৃৎ-পুরুষ আলমগীর হোসেন পেছনে ফেলে আসেন সাফল্য কাহিনির বহু আখ্যান এবং বাংলাদেশের অনলাইন মিডিয়ার একাধিক পোর্টালের জন্মবৃত্তান্ত । বাস্তব ও প্রায়োগিক অভিজ্ঞতায় মহীরুহসম ব্যক্তিত্বময় প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক আলমগীর হোসেনের আদি ও অকৃত্রিম সহযাত্রী প্রাজ্ঞ-প্রবীণ ও নবীন-তুকী-তরুণেরা বার্তা২৪.কম'র প্রদীপ্ত প্রথম-প্রকাশের মাধ্যমে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের গতানুগতিক পাটাতন।

অত্যল্প সময়েই সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও প্রকাশভঙ্গি, প্রাঞ্জল লেখা ও উন্নত ভিডিও কনটেন্ট, নিরপেক্ষ সংবাদ চয়নের নৈব্যক্তিক অভিলাষ এবং দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থকে ঊর্ধে তুলে ধরার সাহসের কারণে বার্তা২৪.কম পরিণত হয়েছে একবিংশের বাংলার, বাঙালির চিরন্তন-ধ্বনিপুঞ্জে। তথ্যময় বিশ্বায়নের দুনিয়ায় বার্তা২৪.কম বাঙালির প্রধানতম-দ্রুততম সংবাদ-সঙ্গী; জ্ঞান, তথ্যময়তা ও অগ্রসরতার বিশ্বস্ত সারথি।

বার্তা২৪.কম'র অগ্রযাত্রার মূল শক্তিস্থল প্রতিটি পাঠক, দর্শক, শ্রোতা ও শুভানুধ্যায়ীর প্রতি প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

   

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?



কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

  • Font increase
  • Font Decrease

‘পথের কেনারে পাতা দোলাইয়া করে সদা সঙ্কেত/ সবুজে হদুদে সোহাগ ঢুলায়ে আমার ধানের ক্ষেত/ ছড়ায় ছড়ায় জড়াজড়ি করি বাতাসে ঢলিয়া পড়ে/ ঝাঁকে আর ঝাঁকে টিয়ে পাখিগুলে শুয়েছে মাঠের পরে/ কৃষাণ কনের বিয়ে হবে, তার হলদি কোটার শাড়ী/ হলুদে ছোপায় হেমন্ত রোজ কটি রোদ রেখা নাড়ি/ কলমী লতার গহনা তাহার গড়ার প্রতীক্ষায়/ ভিনদেশী বর আসা যাওয়া করে প্রভাত সাঁঝের নায়।’ পল্লীকবি জসীম উদদীনের ‘ধান ক্ষেত’ কবিতার অপূর্ব চিত্রায়ন কৃষকের শ্রম-ঘাম আর প্রকৃতির তরফে। কাব্যে-পঙক্তির বিমূর্ত চিত্র মূর্ত হয়েছে বিস্তীর্ণ মাঠে। কিষান-কিষানির বুক ভরা আশার সার্থক রূপায়ন হতে চলেছে এ-মৌসুমে।

এখন ভরা বৈশাখ। এ-সময়টা বোরো ধানের। বোরো ধান দেশের খাদ্যচাহিদার অন্তত ৫৫ শতাংশ মিটিয়ে থাকে। দেশের হাওরভুক্ত ৭টি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরে এই বোরোর চাষ বেশি হয়ে থাকে। এই ধান অতিবৃষ্টি, বন্যা ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে দেশের খাদ্যচাহিদায় ঘাটতি পড়ে না। তাই এই ধান চাষ থেকে শুরু করে ঘরে ফসল তোলা পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া, বিশেষ করে রোদের উপস্থিতি অতি জরুরি। বর্তমানে সে পরিস্থিতি চলছে।

সিলেট অঞ্চলের মানুষ বলে এই অঞ্চলের মানুষের চাওয়া-পাওয়া, হতাশা-উচ্চাশার সঙ্গে আমি পরিচিত। তাদেরকে উদাহরণ হিসেবে টানছি। তাদের সঙ্গে থেকে জেনেছি, বোরো মৌসুমে নির্বিঘ্নে ঘরে ফসল তোলা কতটা জরুরি। গবাদি পশুর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে জরুরি খড় সংরক্ষণও। তীব্র রোদ এখানে সমস্যার নয়, এটা বরং আনন্দের। কারণ এই রোদ গা পোড়ালেও বুক ভরা আশার সার্থক বাস্তবায়নের পথ দেখায়। দেশের যে খাদ্যচাহিদা, যে খাদ্যনিরাপত্তা সেটা এই বোরো ধানের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাই চাষ থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে দরকার হয় প্রকৃতির সহায়তা। এবার এখন পর্যন্ত সে সহায়তা আছে, যদিও এ মাসের শুরুর দিকে একবার ঝড়বৃষ্টিসহ শঙ্কার কালমেঘ হাতছানি দিয়েছিল। সেটা আপাতত দূরে সরেছে।

কিষান-কিষানির দরকার এখন তীব্র রোদ। তারা এটা পাচ্ছে। দেশে তীব্র তাপদাহ। এখানেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবু তারা এই রোদের প্রার্থনায় রয়েছে। বৃষ্টি এখন তাদের কাছে দুর্যোগ-সম। কারণ এই বৃষ্টি এবং অতি-বৃষ্টিসৃষ্ট বন্যা তাদের স্বপ্নসাধ গুঁড়িয়ে ভাসিয়ে নিতে পারে সব। ২০১৭ সালের দুঃসহ স্মৃতি এখনও বিস্মৃত হয়নি সুনামগঞ্জের কৃষকেরা। সে বছর সুনামগঞ্জের ছোট-বড় ১৩৭ হাওরের ফসল বন্যায় এবার ভেসে গিয়েছিল। গতবার কৃষক নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলেছেন। এরআগের বছর অন্তত ২০টি হাওরের ফসলহানি হয়েছিল বন্যায়।

প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল ক্ষেতের ফসল, দেশের খাদ্যনিরাপত্তা। এখানে প্রচণ্ড তাপদাহ তাই প্রভাব ফেলে সামান্যই। রোদে পুড়ে, প্রয়োজনে ছাতা মাথায় দিয়ে কিষান-কিষানিরা স্বপ্ন তোলেন ঘরে। তারা বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা না করে বরং রোদ আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখার প্রার্থনায় বসেন। কৃষকেরা পরিমিত বৃষ্টি চায় চৈত্র মাসে, বৈশাখে চায় খাঁ খাঁ রোদ্দুর, কারণ এই রোদে সোনালী ধান ঘরে ওঠে। লোককথার প্রচলিত, ধান তোলার মৌসুমে ঝড়বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য হাওরবাসীরা তন্ত্রসাধক বা ‘হিরাল’ ও ‘হিরালি’-দের আমন্ত্রণ জানাতেন। তারা এসে মন্ত্রপাঠ করে ঝড়বৃষ্টি থামানোর জন্য চেষ্টা করতেন। লোকায়ত বিশ্বাস থেকে আগেকার মানুষজন এমন আচার পালন করতেন। এসবে সত্যি কাজ হতো কিনা সেটা বিতর্ক এবং ব্যক্তি-বিশ্বাসসাপেক্ষ, তবে এই হিরাল-হিরালিদের আমন্ত্রণ বলে বৈশাখে একদম বৃষ্টি চায় না হাওরের কৃষক।

হাওরপারের মানুষেরা যখন রোদ অব্যাহত থাকার প্রার্থনায়, তখন দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহে পুড়তে থাকা মানুষেরা আছেন বৃষ্টিপ্রার্থনায়। দেশের জায়গায়-জায়গায় বৃষ্টি প্রার্থনায় ইস্তিস্কার নামাজ পড়া হচ্ছে, গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ আসছে এর। কোথাও প্রবল বিশ্বাসে কেউ কেউ ‘ব্যাঙের বিয়ে’ দিচ্ছেন, এটাও বৃষ্টি প্রার্থনায়। সামাজিক মাধ্যমে গরমের তীব্রতার আঁচ মিলছে, বৃষ্টি নাকি ধান—কোনটা জরুরি এই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। কেবল তাই নয়, বাংলাদেশের প্রচণ্ড তাপদাহ নিয়ে বিশ্বমিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে দেশের মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া। গণমাধ্যমগুলো বলছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে টানা দ্বিতীয় বছর বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের ঘোষণাও এসেছে। বৃষ্টি-প্রার্থনায় নামাজের আয়োজনের কথাও এসেছে বিশ্বমিডিয়ায়।

একদিকে প্রচণ্ড তাপদাহ, অন্যদিকে খাদ্যনিরাপত্তার প্রধান উপকরণ ধান ঘরে তোলার অনিশ্চয়তা—তবু অনেকের কাছে সাময়িক স্বস্তিই যেন মুখ্য। অথচ আর দিন দশেক বেরো আবাদ-এলাকায় বৃষ্টি না নামলে ধানগুলো ঘরে ওঠত কৃষকের। নিশ্চিত হতো খাদ্যনিরাপত্তার।

প্রকৃতির ওপর আমাদের হাত নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই; তবু মনে করি আমাদের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশে কৃষকদের গুরুত্ব থাকা উচিত। আমাদের চাওয়ায় হয়তো প্রকৃতির রীতি বদলাবে না, তুমুল রোদ্দুরের দেশে হঠাৎ বৃষ্টি নামবে না, তবে ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত রোদ্দুর কামনায় কৃষক স্বস্তি পাবে; ভাবতে পারবে এই দেশ আছে তাদের সঙ্গে।

কৃষকের জয় হোক। অন্তত বোরো-এলাকায় প্রকৃতি কৃষকের সঙ্গে থাকুক।

;

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;