ঢালচরে ইলিশ ট্রলার কোথায় ভিড়বে?



রফিকুল ইসলাম মন্টু, স্পেশালিস্ট রাইটার, বার্তা২৪.কম ঢাকা
ঝুঁকিতে ট্রলার নোঙর/ ছবি: র, ই, মন্টু

ঝুঁকিতে ট্রলার নোঙর/ ছবি: র, ই, মন্টু

  • Font increase
  • Font Decrease

স্রোতের প্রবল তোড়। পানি প্রবাহ ভাসিয়ে নিচ্ছে বাড়িঘর, ফসলি জমি। শেকড়শুদ্ধ উপড়ে পড়ছে গাছ। ঘরের খুঁটি পড়ে থাকছে ভাঙন পাড়ের ভিটেয়। মানুষগুলো ছুটছে। বসতির চিন্তার সঙ্গে যোগ হয়েছে রোজগারের চিন্তা। ধ্বসে পড়া ঘর ঠিক করবে, নাকি ইলিশ মৌসুমের প্রস্তুতিটা ঠিক করবে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রলয়ে সবকিছু এলোমেলো। মৌসুম আসার আগে থেকেই একটি খালের অভাবে দ্বীপের মানুষ দিশেহারা।

এটা ঢালচরের গল্প। সমুদ্রের মোহনার যে দ্বীপকে পানির তলায় ডুবিয়ে দিয়ে গিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় আম্পান। এ জনপদের পুরানো সংকট যেন আরও বাড়িয়ে দিয়ে গেছে আম্পান। দ্বীপের ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে চলা পরির খাল, ঢালচর খাল, টাওয়ার বাজার খাল, আমিন মিয়ার খাল- সেই কবেই হারিয়ে গেছে। দ্বীপবাসীর প্রশ্ন, ঢালচরে এবার ইলিশ ট্রলার কোথায় ভিড়বে?          

‘জাল-নৌকা তৈরি করেছি। ইলিশ ধরতে যাবো। কিন্তু ট্রলার ভিড়বে কোথায়। আমাদের সব খাল মিলে গেছে নদীতে। অনেকবার ঘাট বদল করেছি। এখন আর এখানে মাছ ঘাট করার কোন জায়গা নেই।’ কথাগুলো বলতে গিয়ে নুরুদ্দিন মাঝির গলায় করুণ আর্তি। জাল-নৌকা নিয়ে মাছ ধরেই যাদের জীবিকা চলে; তারা এবার ট্রলার বাঁধার ঘাটই হারিয়ে ফেললো! এবার তাদের দুঃশ্চিন্তার শেষ নেই। ধারদেনা, টানাটানির সংসার; কীভাবে চলবে সামনের দিনগুলো! নুরুদ্দিনের মত একই কথা বললেন ঢালচরের তৈয়ব আলী মাঝি, সাহাবুদ্দিন মাঝিসহ আরও অনেকে। সবারই যেন এক সংকট। ইলিশ ধরতে যাওয়ার এই সংকটকে বাড়িয়ে তুলেছে আম্পান।

ট্রলারের নোঙর/ ছবি: র, ই, মন্টু

নদনদী আর খালবিলের দেশে উপকূলীয় কোন দ্বীপে একটা খালের অভাব; একটা খালের জন্য কান্না; এটা ভাবা যায়! ঢালচরের সমস্যাটা এবার এখানেই এসে ঠেকেছে। দ্বীপ জেলা ভোলার সর্বদক্ষিণে চরফ্যাশন উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন এই ঢালচর। সমুদ্রের মোহনায় ছোট্ট এক ভূখণ্ড। ইলিশ মৌসুমে বর্ষার তিন মাসে এখান থেকে আহরিত হয় প্রায় ২০০ কোটি টাকার ইলিশ। মৌসুমে অন্তত ৫ হাজার ট্রলারের ভিড় জমে এখানে। আর এর সঙ্গে থাকে ৪০-৫০ হাজার জেলে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মাছ ধরা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যবসার জন্য এখানে বহু মানুষ আসে। ইলিশ বেচাকেনা ছাড়াও সমুদ্রে মাছ ধরারত অন্যান্য এলাকার ট্রলার ঝড়ের কবলে পড়লে আশ্রয়স্থল কিন্তু এই ঢালচর। এবার ঢালচরের নিজেরই তো আশ্রয়ের জায়গা নেই; অন্যকে আশ্রয় দিবে কীভাবে?   

ঢালচরের প্রায় ষাট বছরের পুরানো ইলিশ ব্যবসায় এবার চরম সংকটের মুখে পড়েছে, বললেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যে দ্বীপ থেকে প্রতিবছর বর্ষায় প্রায় ২০০ কোটি টাকার ইলিশ শহরে যায়; সে দ্বীপের মাছ ঘাট উন্নয়নে সরকারের তরফে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ভাঙনের কারণে মাছঘাট পিছিয়েছে অনেকবার। এবার নতুন করে ঘাট করার মত কোন খালই আর অবশিষ্ট নেই। অথচ ইলিশ মৌসুমটার অপেক্ষায় ছিলেন হাজার হাজার ব্যবসায়ী, জেলে এবং তাদের পরিবার। ইলিশের নিষেধাজ্ঞার সময়কালের বেশিরভাগ সময়টা চলে গেছে করোনার আতংকে। এই সময়ে জেলেদের রোজগার ছিল শূন্যে। অধিক কষ্টে তারা সময় পার করেছে। ধারদেনা করে ইলিশ মৌসুমের আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু এখন দুঃশ্চিন্তা বেড়েছে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে ঢালচরে বসতি স্থাপনের পর থেকেই এখানে মাছ ধরা শুরু হয়। স্থানীয় পর্যায়ের ৯৫ শতাংশ মানুষ মাছধরার সঙ্গে সম্পৃক্ত। ইলিশ মৌসুমে বাইরে থেকেও বহু মানুষ এ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়। সমুদ্র ও আশাপাশের সমুদ্র মোহনা থেকে জেলেরা সহজেই ট্রলার নিয়ে এখানে আসতে পারে বলে ঢালচর ইলিশ ধরার জন্যে প্রসিদ্ধ স্থানে পরিণত হয়। আশপাশের অন্যান্য ঘাটগুলোর তূলনায় এখান থেকে ইলিশ আহরণের পরিমাণ বেশি। ইলিশ ব্যবসার শুরু থেকেই ঢালচরে দুটো ইলিশঘাট ছিল। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নামে থাকলেও কালের পরিক্রমায় একটি হাওলাদার বাজার ঘাট অপরটি টাওয়ার বাজার ঘাট নামে পরিচিতি পায়। ইলিশ মৌসুমে এই ঘাট দুটি জেগে উঠতো হাজারো জেলের পদচারণায়। বহু দোকানপাট, মাছের আড়ত, বেচাকেনা, অধিক রাত পর্যন্ত আলোর ঝলকানি; সে এক অন্যরকম উৎসবমূখর পরিবেশ। সারাবছর ঘুমিয়ে থাকা ঢালচর একমাত্র ইলিশের কারণেই জেগে উঠতো বর্ষায়। কিন্তু এবার সংকট যেন ঘিরে ধরেছে। ভরা যৌবনা ঢালচর যেন বার্ধক্যে ন্যূয়ে পড়েছে। 

 ঢালচরের বিপন্ন রূপ/ ছবি: র,ই মন্টু

ইলিশ মৌসুম আসার আগেই এবার বিলীন হয়ে গেছে টাওয়ার বাজার মাছ ঘাট। প্রবল নদীর ভাঙনের কারণে বিগত ১৫ বছরে এই ঘাটটি অন্তত নয়বার বদল করেছিল। প্রথমে এ ঘাটটি ছিল ইউনুস বেপারির বাড়ির দরজায়। এরপর আসে সলেমান মাঝির বাড়ির দরজায়। ঘাট বদল হয়ে এরপরে আসে শাহজাহান সওদাগরের জমি লাগোয়া খালে। এরপর ঘাট চলে যায় আইয়ূব পাটোয়ারির জমিতে। এরপরে ঘাট বদল করা হয় চাঁনমিয়া বেপারির জমিতে। এরপর ঘাট যায় আবদুল আলীর জমিতে। এর পরের বার ঘাট স্থানান্তর করে নেওয়া হয় মধুর বাপের জমিতে। এরপর স্থানান্তর করা হয় নান্নু মাতব্ববের জমিতে। সবশেষে স্থানান্তর করা হয়েছিল নূর ইসলাম পাটোয়ারির জমিতে। এবার সে ঘাটও বিলীন। এ বর্ষায় আপাতত সেখানে কোন মাছ ঘাট নেই।

অন্যদিকে হাওলাদার বাজার মাছঘাটও স্থানান্তরিত হয়েছে বেশ কয়েকবার। বর্তমানে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে ঘাটটি। প্রথমে এ ঘাট ছিল আবদুর রব সিকদার বাড়ির কাছে খালে। এরপর স্থানান্তরিত হয় এয়াসিন আহমেদের বাড়ির কাছের খালে। এরপর মাছঘাট সরিয়ে নেওয়া হয় ইসমাইল হাজির বাড়ির জমিতে। এরপর মাছঘাট স্থানান্তরিত হয় আবদুস সালাম হাওলাদারের জমিতে। সেখান থেকে মাছঘাট আসে আলী হোসেন মিয়ার বাড়ির জমিতে। এ ঘাট এবার পুরো বর্ষায় এখানে থাকতে পারবে কীনা; সে আশংকা এলাকাবাসীর। জেলে আড়তদারসহ সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ইলিশ ট্রলার বা জেলেদের আশ্রয়স্থল না থাকলে ইলিশের জন্য বিখ্যাত ঢালচরের ব্যবসায় ধ্বস নামবে। আর এর প্রভাব পড়বে জেলে, আড়তদারসহ ইলিশ ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট সকলের ওপর।

গত কয়েক বছর ধরে মেঘনার ক্রমাগত ভাঙনের কারণেই মূলত এবার ঢালচরে ইলিশ জেলে ও ইলিশ ব্যবসায়ীদের এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় এখানকার বহু পরিবার এ দ্বীপ থেকে বাড়িঘর সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। সম্পদশালী বহু পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। ভাঙন রোধে কোন ধরণের ব্যবস্থা না নেওয়ায় দ্বীপ ক্রমেই ছোট হয়ে যাচ্ছে। তলিয়ে গেছে বহু স্থাপনা। ইলিশ ধরার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপের খালগুলো একে একে নদীর সঙ্গে মিশে গেছে। দ্বীপের অভ্যন্তরে মাছঘাট করার মত কোন খাল এখন আর নেই। ভাঙনের কারণে এখানকার মানুষের জীবনধারা বদলে গেছে। আর এখানকার প্রতিটি পরিবারের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মাছধরা। ফলে ভাঙন যেমন মাছ ব্যবসার সমস্যা, আবার ভাঙন জনজীবনেরও প্রধান সমস্যা।

এবার বর্ষা আসার আগেই ঢালচরে খালের অভাব তীব্র আকার ধারণ করেছে। নৌকা ও ট্রলার সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেই। এরফলে নদীর কিনারে রাখা নৌকা ও ট্রলার ঢেউয়ে ভেঙে যাচ্ছে। অনেকের নৌকা ট্রলার ভাসিয়ে নিয়ে গেছে স্রোতে। নুরুদ্দিন মাঝি বলেন, ট্রলারখানাই জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন। ট্রলার চালু রাখতে প্রতিবছর এমনিতেই অনেক খরচ হয়। এখন তো ট্রলার রাখার জায়গাই নাই। নদীর কিনারে রাখলে প্রবল স্রোতে ট্রলারের ক্ষতি হয়। বনের ভেতরের খালটি মাছ ঘাট হিসাবে ব্যবহারের সুযোগ দিলে আমরা উপকৃত হতাম। তৈয়ব মাঝি বলেন, আমাগো নদীর ব্যবসা। নদীতে মাছ ধরে খাই। পরিবার চলে এটার ওপরে। ইলিশ পাবো কীনা, সেটা পরের কথা। এখন দেখছি ট্রলারই টিকাইয়া রাখতে পারছি না।   

ঢালচর হাওলাদার বাজার মাছঘাটের আড়তদার শাহজাহান সওদাগর বলেন, ইলিশ মৌসুমটাই ঢালচরের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রধান মৌসুম। এ মৌসুমের জন্য সকল প্রস্তুতি নেওয়া বিনিয়োগ করা হয়। ব্যবসায়ী, জেলে সকলেই এই মৌসুমের ওপর নির্ভরশীল। ভাঙনের কারণে এবার মাছের ঘাট নিয়েই আমরা সমস্যায় আছি। ট্রলার ভিড়াতে হলে খাল তো লাগবেই। জেলেরা মাছ ধরে এসে ট্রলার কোথায় ভিড়াবে? মাছ ঘাটে বর্তমানে যে খালটি আছে; সেটি বর্ষার শেষ অবধি টিকবে কীনা সন্দেহ। ফলে আমরা খুবই চিন্তিত ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে। আরেকজন আড়তদার আলহাজ্জ মোস্তফা মিয়াও একই কথা বলেন।

তিনি বলেন, মাছের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে আমাদের জীবন। জীবনের সকল বিনিয়োগ এখানে। অনেকেই ধারদেনা করে বিনিয়োগ করে। এক একজন আড়তদারের সঙ্গে আবার জড়িত রয়েছে ২০০ থেকে ৪০০ জেলে। ব্যবসার ওপরেই এদের আয় রোজগার নির্ভর করে। এবার আমরা খাল নিয়েই সংকটে আছি। ঢালচরের মাছ ব্যবসা টিকেয়ে রাখার স্বার্থে বনের খালটিতে মাছ ঘাট করার অনুমতি দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাই।       

মাছ ঘাটসহ ঢালচরের নিঃস্ব মানুষের বসতির সমস্যা সমাধানে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়নে রয়েছে বাধা। মাঝের চরের খালটি খনন করে মাছঘাট করার উপযোগী করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিল ইউনিয়ন পরিষদ। পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তাবটি অনুমোদন করে ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্দও দিয়েছিল। খালটি খনন হলে জেলেরা এখানে ট্রলার ভিড়াতে পারতো। অন্যদিকে ঢালচরের ঘরহারা মানুষেরা বসতি স্থাপন করতে পারতো পাশে পড়ে থাকা জমিতে। কিন্তু এতে বাধা দেয় বনবিভাগ। খালটি বনের আওতায় দাবি করে তারা এটি খনন করতে দেয়নি। অন্যদিকে এর পাশে পড়ে থাকা প্রায় তিন হাজার একর খাসজমিও বন বিভাগ ছাড়তে নারাজ। উপর মহল থেকে খাসজমিতে স্থানীয় ঘরহারা বাসিন্দাদের বসতি স্থাপনের অনুমতির আশ্বাস পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদ এলাকাবাসীর কাছ থেকে জমি বন্দোবস্তের আবেদনও নিয়েছিল। তারই আলোকে কিছু ঘর সেখানে নির্মাণও করা হয়েছিল। কিন্তু এ খাসজমি নিজেদের দাবি করে ঘরগুলো ভেঙে দেয় বনবিভাগ। এখন মানুষগুলো পড়েছে চরম বিপাকে। 

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুস সালাম হাওলাদার বলেন, নদীর ভাঙন ঢালচরের মানুষের জীবন ওলটপালট করে দিয়েছে। এর ওপর বয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। সবকিছুই তছনছ। মানুষগুলো ঘর গোছাবে, নাকি ইলিশ ধরতে নামবে?

তিনি বলেন, এবারের বর্ষায় এখানে দুটোই প্রধান সমস্যা। নদীর ভাঙনের কারণে মানুষজন নিঃস্ব হয়েছে। আবার ভাঙনেই নিয়ে গেছে মাছঘাট। এই মাছঘাটের সঙ্গে এখানকার মানুষের জীবন জড়িত। এখানে মানুষের টিকে থাকতে হলে মাছঘাট লাগবে। আবার মানুষের টিকে থাকার জন্য মাথা গোঁজার স্থানটাও লাগবে। দুটো বিষয় একত্রিত করেই পরিষদ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বনের এই খালে ট্রলার ভিড়াতে পারলে এবং পাশের খাসজমিতে মানুষের বসতি করার অনুমতি দিলে সমস্যার সমাধান হতো। আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে অনুরোধ জানাই, ঢালচরের এই সমস্যার সমাধানে মানবিক বিবেচনায় খালটি ব্যবহারের অনুমতি দিন এবং খাসজমিতে বসতি স্থাপনের সুযোগ দিন।

   

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?



কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

  • Font increase
  • Font Decrease

‘পথের কেনারে পাতা দোলাইয়া করে সদা সঙ্কেত/ সবুজে হদুদে সোহাগ ঢুলায়ে আমার ধানের ক্ষেত/ ছড়ায় ছড়ায় জড়াজড়ি করি বাতাসে ঢলিয়া পড়ে/ ঝাঁকে আর ঝাঁকে টিয়ে পাখিগুলে শুয়েছে মাঠের পরে/ কৃষাণ কনের বিয়ে হবে, তার হলদি কোটার শাড়ী/ হলুদে ছোপায় হেমন্ত রোজ কটি রোদ রেখা নাড়ি/ কলমী লতার গহনা তাহার গড়ার প্রতীক্ষায়/ ভিনদেশী বর আসা যাওয়া করে প্রভাত সাঁঝের নায়।’ পল্লীকবি জসীম উদদীনের ‘ধান ক্ষেত’ কবিতার অপূর্ব চিত্রায়ন কৃষকের শ্রম-ঘাম আর প্রকৃতির তরফে। কাব্যে-পঙক্তির বিমূর্ত চিত্র মূর্ত হয়েছে বিস্তীর্ণ মাঠে। কিষান-কিষানির বুক ভরা আশার সার্থক রূপায়ন হতে চলেছে এ-মৌসুমে।

এখন ভরা বৈশাখ। এ-সময়টা বোরো ধানের। বোরো ধান দেশের খাদ্যচাহিদার অন্তত ৫৫ শতাংশ মিটিয়ে থাকে। দেশের হাওরভুক্ত ৭টি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরে এই বোরোর চাষ বেশি হয়ে থাকে। এই ধান অতিবৃষ্টি, বন্যা ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে দেশের খাদ্যচাহিদায় ঘাটতি পড়ে না। তাই এই ধান চাষ থেকে শুরু করে ঘরে ফসল তোলা পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া, বিশেষ করে রোদের উপস্থিতি অতি জরুরি। বর্তমানে সে পরিস্থিতি চলছে।

সিলেট অঞ্চলের মানুষ বলে এই অঞ্চলের মানুষের চাওয়া-পাওয়া, হতাশা-উচ্চাশার সঙ্গে আমি পরিচিত। তাদেরকে উদাহরণ হিসেবে টানছি। তাদের সঙ্গে থেকে জেনেছি, বোরো মৌসুমে নির্বিঘ্নে ঘরে ফসল তোলা কতটা জরুরি। গবাদি পশুর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে জরুরি খড় সংরক্ষণও। তীব্র রোদ এখানে সমস্যার নয়, এটা বরং আনন্দের। কারণ এই রোদ গা পোড়ালেও বুক ভরা আশার সার্থক বাস্তবায়নের পথ দেখায়। দেশের যে খাদ্যচাহিদা, যে খাদ্যনিরাপত্তা সেটা এই বোরো ধানের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাই চাষ থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে দরকার হয় প্রকৃতির সহায়তা। এবার এখন পর্যন্ত সে সহায়তা আছে, যদিও এ মাসের শুরুর দিকে একবার ঝড়বৃষ্টিসহ শঙ্কার কালমেঘ হাতছানি দিয়েছিল। সেটা আপাতত দূরে সরেছে।

কিষান-কিষানির দরকার এখন তীব্র রোদ। তারা এটা পাচ্ছে। দেশে তীব্র তাপদাহ। এখানেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবু তারা এই রোদের প্রার্থনায় রয়েছে। বৃষ্টি এখন তাদের কাছে দুর্যোগ-সম। কারণ এই বৃষ্টি এবং অতি-বৃষ্টিসৃষ্ট বন্যা তাদের স্বপ্নসাধ গুঁড়িয়ে ভাসিয়ে নিতে পারে সব। ২০১৭ সালের দুঃসহ স্মৃতি এখনও বিস্মৃত হয়নি সুনামগঞ্জের কৃষকেরা। সে বছর সুনামগঞ্জের ছোট-বড় ১৩৭ হাওরের ফসল বন্যায় এবার ভেসে গিয়েছিল। গতবার কৃষক নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলেছেন। এরআগের বছর অন্তত ২০টি হাওরের ফসলহানি হয়েছিল বন্যায়।

প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল ক্ষেতের ফসল, দেশের খাদ্যনিরাপত্তা। এখানে প্রচণ্ড তাপদাহ তাই প্রভাব ফেলে সামান্যই। রোদে পুড়ে, প্রয়োজনে ছাতা মাথায় দিয়ে কিষান-কিষানিরা স্বপ্ন তোলেন ঘরে। তারা বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা না করে বরং রোদ আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখার প্রার্থনায় বসেন। কৃষকেরা পরিমিত বৃষ্টি চায় চৈত্র মাসে, বৈশাখে চায় খাঁ খাঁ রোদ্দুর, কারণ এই রোদে সোনালী ধান ঘরে ওঠে। লোককথার প্রচলিত, ধান তোলার মৌসুমে ঝড়বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য হাওরবাসীরা তন্ত্রসাধক বা ‘হিরাল’ ও ‘হিরালি’-দের আমন্ত্রণ জানাতেন। তারা এসে মন্ত্রপাঠ করে ঝড়বৃষ্টি থামানোর জন্য চেষ্টা করতেন। লোকায়ত বিশ্বাস থেকে আগেকার মানুষজন এমন আচার পালন করতেন। এসবে সত্যি কাজ হতো কিনা সেটা বিতর্ক এবং ব্যক্তি-বিশ্বাসসাপেক্ষ, তবে এই হিরাল-হিরালিদের আমন্ত্রণ বলে বৈশাখে একদম বৃষ্টি চায় না হাওরের কৃষক।

হাওরপারের মানুষেরা যখন রোদ অব্যাহত থাকার প্রার্থনায়, তখন দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহে পুড়তে থাকা মানুষেরা আছেন বৃষ্টিপ্রার্থনায়। দেশের জায়গায়-জায়গায় বৃষ্টি প্রার্থনায় ইস্তিস্কার নামাজ পড়া হচ্ছে, গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ আসছে এর। কোথাও প্রবল বিশ্বাসে কেউ কেউ ‘ব্যাঙের বিয়ে’ দিচ্ছেন, এটাও বৃষ্টি প্রার্থনায়। সামাজিক মাধ্যমে গরমের তীব্রতার আঁচ মিলছে, বৃষ্টি নাকি ধান—কোনটা জরুরি এই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। কেবল তাই নয়, বাংলাদেশের প্রচণ্ড তাপদাহ নিয়ে বিশ্বমিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে দেশের মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া। গণমাধ্যমগুলো বলছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে টানা দ্বিতীয় বছর বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের ঘোষণাও এসেছে। বৃষ্টি-প্রার্থনায় নামাজের আয়োজনের কথাও এসেছে বিশ্বমিডিয়ায়।

একদিকে প্রচণ্ড তাপদাহ, অন্যদিকে খাদ্যনিরাপত্তার প্রধান উপকরণ ধান ঘরে তোলার অনিশ্চয়তা—তবু অনেকের কাছে সাময়িক স্বস্তিই যেন মুখ্য। অথচ আর দিন দশেক বেরো আবাদ-এলাকায় বৃষ্টি না নামলে ধানগুলো ঘরে ওঠত কৃষকের। নিশ্চিত হতো খাদ্যনিরাপত্তার।

প্রকৃতির ওপর আমাদের হাত নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই; তবু মনে করি আমাদের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশে কৃষকদের গুরুত্ব থাকা উচিত। আমাদের চাওয়ায় হয়তো প্রকৃতির রীতি বদলাবে না, তুমুল রোদ্দুরের দেশে হঠাৎ বৃষ্টি নামবে না, তবে ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত রোদ্দুর কামনায় কৃষক স্বস্তি পাবে; ভাবতে পারবে এই দেশ আছে তাদের সঙ্গে।

কৃষকের জয় হোক। অন্তত বোরো-এলাকায় প্রকৃতি কৃষকের সঙ্গে থাকুক।

;

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;