করোনার থাবায় কর্মক্ষম মানুষ!



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
করোনার থাবায় কর্মক্ষম মানুষ/ছবি: সংগৃহীত

করোনার থাবায় কর্মক্ষম মানুষ/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন তথ্য-পরিসংখ্যান প্রতিদিনই দেশবিদেশে প্রকাশ পাচ্ছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যার পাশাপাশি জানা যাচ্ছে সুস্থ হওয়া মানুষদের সংখ্যাও। এসবের বাইরে অঞ্চল, শ্রেণি, বয়স, লিঙ্গ ভেদে করোনার গতি-প্রকৃতি শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে তথ্য-পরিসংখ্যানের মাধ্যমে।

প্রথম দিকে প্রাপ্ত পূর্বাভাসে করোনায় শিশু ও বৃদ্ধরা অধিকতর আক্রান্তের ঝুঁকিপূর্ণ, এমন একটি কথা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সমীক্ষায় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে, বিশ্বে কর্মক্ষম জনসংখ্যার এক বৃহৎ অংশই করোনায় কো-মর্বিডিটির শিকার। এই তথ্যে করোনার গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে নতুন ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা আরো জানিয়েছেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ায় কর্মক্ষম জনসংখ্যা অধিক। কর্মক্ষম জনশক্তি বলতে ধরা হয় ২৫ থেকে ৬৫ বছরের বয়সসীমার মানুষদের, যা উৎপাদনশীলতা নিরিখে ইতিবাচক, যারা রয়েছেন করোনার ঝুঁকিতে।

ভয়ের বিষয় হলো, এই কর্মক্ষম মানুষেরা করোনার থাবার বাইরে নেই। কারণ বিশ্বের নানা দেশে, বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলেতে কর্মক্ষম জনসংখ্যা যে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, এমন বলা চলে না। সকল নাগরিকের মতো কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীও সাধারণ স্বাস্থ্যগত সমস্যার শিকার। করোনা তাদেরকে সুযোগ পেলেই আক্রান্ত করছে।

সর্বসাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর অনেকেই ত্রিশের কোঠা পার না হতেই অকালবার্ধক্যের শিকার হয়ে পড়েন। পেশা ও লাইফস্টাইলের কারণে বিভিন্ন অনিয়ম হেতু তাদের শরীরে বাসা বাঁধে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি ও হৃদরোগের মতো নানা অসুখ।

আরেকটি মারাত্মক তথ্যও সবার নজরে এসেছে। তা হলো, কোভিডের কারণে ইউরোপ-আমেরিকায় শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় সেসব দেশে বসবাসকারী দক্ষিণ এশীয়দের মৃত্যুহার প্রায় ২০ শতাংশ অধিক। কারণ হিসেবে ডায়াবেটিসকেই প্রাথমিক ভাবে দায়ী করা হয়েছে। দেখা গেছে, করোনাক্রান্ত শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় অশ্বেতাঙ্গদের গড় বয়স কম এবং তাদের অন্যান্য জটিল অসুখও কম। কিন্তু তাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ অত্যধিক বা তারা কমবেশি ডায়াবেটিস আক্রান্ত।

বিশেষজ্ঞদের তথ্যানুযায়ী, উত্তর গোলার্ধে বসবাসকারী প্রায় ৪০ শতাংশ দক্ষিণ এশীয়ই টাইপ-ওয়ান অথবা টাইপ-টু ডায়াবেটিসের শিকার। করোনার ন্যায় মহামারির ক্ষেত্রে এসব অসুখ মৃত্যুহার অন্তত ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন। করোনায় দক্ষিণ এশিয়া ও অন্যান্য অনুন্নত দেশেও মধ্যবয়সীদের অধিক মৃত্যুহার পরিলক্ষিত হওয়ায় বিশেষজ্ঞদের সতর্কতামূলক পূর্বাভাস বাস্তবেও দেখা যাচ্ছে।

ফলে করোনা প্রতিরোধের পটভূমিতে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর ব্যাপারে মনোযোগী হওয়ার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষত, বিশেষজ্ঞদের সতর্কবাণী অনুযায়ী কর্মক্ষম মানুষদের নিয়মিত নজরদারিতে রেখে কো-মর্বিডিটির আশঙ্কা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে।

অবশ্য এক্ষেত্রে বাস্তবতা বেশ বিরূপ। কারণ, করোনার তীব্র প্রকোপে সম্পূর্ণ চিকিৎসা পরিকাঠামোই রাতারাতি মহামারি প্রতিরোধ কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। করোনা সংক্রমণ-আতঙ্কে বন্ধ বহু হাসপাতালের বহির্বিভাগ, চিকিৎসকের চেম্বার। গৃহবন্দি রোগীরাও রক্তচাপ, শর্করার নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন না।

তদুপরি লকডাউন বা সামাজিক দূরত্বের কারণে অত্যাবশ্যক ওষুধের সরবরাহেও বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। দীর্ঘ লকডাউনে নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো প্রাত্যহিক খরচ বাঁচাতে রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের পরীক্ষা ও ওষুধ ক্রয় কমিয়ে দিতেও বাধ্য হচ্ছে। এমনই আত্মঘাতী পরিস্থিতিতে নীরব ঘাতক রূপে কিছু কিছু রোগ মানুষের শরীরে বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা করোনায় আক্রান্তের ক্ষেত্রে অধিকতর বিপদের সম্মুখীন।

এসব মানুষের মধ্যে পেশাজীবী ও কর্মক্ষম মানুষই বেশি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাছাড়া বিশেষজ্ঞরা অল্পবয়সীদের মধ্যে ‘ক্রনিক মর্বিডিটি’-র অত্যধিক বৃদ্ধির আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন। এসব রোগ যে নিঃশব্দ ঘাতক, তা সবার জানা। জাতিসংঘের ইএসসিএপি-র গবেষণাপত্রেও তেমনই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। অথচ চলমান মহামারির সময় এসব বিষয়ে বাড়তি স্বাস্থ্য বিষয়ক সতর্কতা গৃহীত হয়নি।

এ কথা সবার জানা, করোনার মধ্যে ক্রমে ক্রমে পেশাগত ও আর্থিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মক্ষম মানুষদের কাজের প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যেতেই হবে। তখন সংক্রমণের আশঙ্কাও তাদের ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পাবে, মৃত্যুহার ও আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়বে, এমনই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

ফলে করোনার বিরুদ্ধে চলমান অতি জরুরি স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য নীরবঘাতক রূপী রোগ, যথা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যার ব্যাপারে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। ঘরে-বসা চিকিৎসকদের পেশায় তৎপর করে সাধারণ ক্লিনিক-হাসপাতালের নৈমিত্তিক কাজ পুনরায় সচল করতে হবে। ঢাকা, চট্টগ্রামের মতো বড় বড় শহর এবং মফস্বল ও গ্রামাঞ্চলে এসব নীরব ঘাতক নামে চিহ্নিত রোগের চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা-পর্যবেক্ষণকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এজন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী, টেকনিশিয়ান না থাকলে নতুন নিয়োগের ব্যবস্থাও করতে হবে।

বাস্তবতা হলো এই যে, স্বাস্থ্যখাতের সবাই করোনাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন ও উত্তেজিত বলে অপরাপর রোগের জন্য স্বাস্থ্যসেবার হাল নাজুক, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়ানক জটিল করবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তখন করোনার মতোই অন্যান্য রোগে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যেতে পারে।

বিশেষত কর্মক্ষম জনসংখ্যা সকল দেশের জন্যেই অমূল্য সম্পদ। তারা অধিকহারে আক্রান্ত হলে দেশের চালিকা শক্তির কাঠামো ভেঙে পড়বে। এতে যে আর্থিক-সামাজিক প্রভাব পড়বে, তা হবে অতি ভয়াবহ। ফলে এদেরকে অন্যান্য রোগের নিয়মিত চিকিৎসা সুযোগ দিয়ে সুস্থ-সবল এবং করোনার বিপদমুক্ত রাখাও বিদ্যমান স্বাস্থ্য-চিকিৎসা কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ বলে বিবেচনা করা কর্তব্য।

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;