মাস্ক মুক্ত জীবনে ফিরেছে ইতালি
মহামারী করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে ইতালি। গতকাল সোমবার (২৮ জুন) ছিল ইতালির জন্য একটি বিশেষ দিন। কারণ এদিন প্রায় দীর্ঘ দেড় বছর পর দেশটিতে মাস্ক মুক্ত হয়ে নাগরিকদের বাইরে যাওয়ার অনুমতি মেলেছে। একই সাথে দেশটিতে এদিন 'নিম্ন-ঝুঁকিপূর্ণ' অঞ্চল হিসাবেও উদযাপিত হয়েছে।
এ যেন এক নতুন স্বাধীনতা! প্রায় দেড় বছর পর মাস্ক ছাড়াই বাইরে বের হতে পেরেছে ইতালির নাগরিকরা। মৃত্যুনগরী' থেকে ফিরে আসা এমন একটি জাতির জন্য এদিনটি নাটকীয় মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
কারণ, করোনা ভাইরাস কয়েক ধাপে আছড়ে পড়ে ইতালিকে মৃত্যু নগরীতে পরিণত করেছিল। ইতালির বার্গামো শহরে রাস্তায় সারি সারি লাশের গাড়ি ও উপচে পড়া মর্গে কফিন পরিবহনের সেনাবাহিনীর ছবি বিশ্বজুড়ে ভয় দেখিয়েছিল।
করোনা ভয়াল থাবায় দেশটিতে ধাপে ধাপে দেয়া হয়েছিল লকডাউন। ইতালি সরকারের নৈপুণ্য পারদর্শিতায় করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হতে থাকায় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে ইতালি। প্রাণ ফিরে আসে জনজীবনে। ধাপে ধাপে সরকারের দেয়া বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। চালু করা হয় সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
দীর্ঘ দেড় বছরের সংগ্রাম শেষে কোভিড জয়ের পথে ইতালি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত একমাত্র মাস্ক পরার ওপরই বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু সেটাও সোমবার শিথিলতার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে সর্বত্র মাস্কের ওপর বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়া হয়নি। ঘর থেকে বের হলে মাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে জনগণকে। যেন তারা বের হলে অতিরিক্ত ভিড়ের মধ্যে, সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এবং বিশাল জনসমাগমে মাস্ক পরে নিজেকে সুরক্ষা রাখতে পারে।
সোমবার (২৮ জুন) কার্যকর হওয়া এক আদেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রথমবারের মতো ইতালির ২০টি অঞ্চলকে হোয়াইট জোনে শ্রেণীবদ্ধ করেছে। ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দেশিটিতে এখন পর্যন্ত কোভিড টিকা নিয়েছে এক-তৃতীয়াংশ নাগরিক।
ইতালিতে করোনায় গত রবিবার পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ জন আর আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫৬ জন।
ইতালির বিভিন্ন শহরে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার বাংলাদেশির বসবাস। করোনায় আক্রান্ত হয়ে কয়েকজন বাংলাদেশিও প্রাণ হারিয়েছেন। তবে পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হতে থাকায় বেশ উচ্ছসিত ইতালিতে বসবাসরত বাংলাদেশি। তারা আশা করছেন খুব শিগগিরই ইতালি পুরোপুরি করোনামুক্ত হবে।