রায়ডাক তীরের বৈষ্ণব সত্র



ড. রূপ কুমার বর্মণ
রায়ডাক তীরের বৈষ্ণব সত্র

রায়ডাক তীরের বৈষ্ণব সত্র

  • Font increase
  • Font Decrease

পূর্ব ভারত, বাংলাদেশ ও উত্তরপূর্ব ভারতের বৈষ্ণব সংস্কৃতি একুশ শতকের বিশ্বায়িত ভোগবাদী জীবনযাত্রার মধ্যেও অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। মধ্যযুগে বিশেষ করে পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতকে চৈতন্য দেব (১৪৮৬-১৫৩৪) ও তাঁর শিষ্য-প্রশিষ্যদের নিরবিচ্ছিন্ন প্রয়াসে তৎকালীন বাংলা, মল্লভূমি ও উড়িষ্যায় বৈষ্ণব সংস্কৃতির প্লাবন বয়ে গিয়েছিল। নদিয়ার নবদ্বীপ, পূর্ব বাংলার শ্রীহট্ট( সিলেট বা সুরমা অববাহিকা), রাঢ় অঞ্চলের বিষ্ণুপুর ও উড়িষ্যার পুরী হয়ে উঠেছিল বৈষ্ণব দর্শন ও জীবনচর্চার পূণ্যভূমি। একই সঙ্গে শ্রীহট্টের অদূরে অবস্থিত উত্তরপূর্ব ভারতের মণিপুরের রাজসভা আপ্লুত হয়েছিল বৈষ্ণব ধর্মের মানবতাবাদী ধারায়। এমনকি বাংলার বৈষ্ণব ধর্মের প্রভাবে  মণিপুরী ভাষায় বঙ্গ লিপির ব্যবহারও শুরু হয়েছিল এসময় থেকেই।

মধ্যযুগের মল্লভূমি ও মণিপুরের মতোই বৈষ্ণব সংস্কৃতির ধারায় অবগাহন করেছিল নিম্নআসাম ও উত্তরবঙ্গের হিমালয় সংলগ্ন কোচবিহার রাজ্য। বৈষ্ণব গুরু শ্রীমন্ত শঙ্করদেব (১৪৪৯-১৫৬৪) ও তাঁর শিষ্যদের (মাধবদেব, দামোদরদেব, অনন্ত কন্দলী, প্রমুখ) অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এখানকার মানুষ বৈষ্ণব ধর্মে সিক্ত হয়েছিলেন। উত্তর ভারত থেকে শঙ্করদেবের পূর্বপুরুষগন গৌড় হয়ে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় তাঁদের বসতি স্থাপন করেছিলেন। মেধাশক্তি ও প্রযুক্তিগত কৌশলের সহায়তায় তাঁরা আসামের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় নিজেদের ভূঁইঞা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। কিন্তু হাতি শিকার উপলক্ষে আসাম রাজ শুহুংমাং দিহিংগিয়া রাজার (১৪৯৭-১৫৩৯) সঙ্গে ভূঁইঞাদের সংঘাতের বাতাবরন তৈরি হলে শঙ্করদেবের পরিবার কোচরাজ্যের অধিপতি মহারাজা নরনারায়নের (১৫৪৫-১৫৪৭) শরণাপন্ন হন।তাঁরা উচ্চআসামের নগাঁও এর আলিপুখুরি ছেড়ে কোচরাজ্যের বড়াপেটার পাটবাউশীতে (বর্তমান আসামের বরপেটা জেলা) আশ্রয় গ্রহন করেন। পরবর্তীকালে মহারাজ নরনারায়ন ও কোচ মহাসেনাপতি চিলারায়ের (শক্লধ্বজ) সঙ্গে শঙ্করদেবের পরিবারের আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল। শঙ্করদেব ব্রহ্মপুত্র তীরের পাটবাউশীতে থেকে তাঁর ধর্মপ্রচার শুরু করলেও ক্রমশ তিনি কোচবিহার রাজ্যের মূলকেন্দ্রের দিকে বৈষ্ণব মতবাদ প্রচারে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।

ভাগবত পুরানের উপর আধারিত শঙ্করদেবের বৈষ্ণব মতবাদের (যা নয়া বৈষ্ণববাদ নামেও পরিচিত) কয়েকটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল ‘শ্রবণ’ (ঈশ্বরের নাম শ্রবণ করা), ‘কীর্তন’( ঈশ্বরের গুণগান করা) ও ‘স্মরণ’ (ঈশ্বরের নাম স্মরণ করা)। ঈশ্বরসাধনার জন্য শঙ্করদেবের এই সরলীকৃত মতবাদ কোচবিহার রাজ্যের সাধারণ জনগন এমনকি শাসকগোষ্ঠীর মধ্যেও বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল। কোচ মহাসেনাপতি চিলারায়  সপরিবারে শঙ্করদেবের শিষ্যত্ব গ্রহন করেন। মহারাজা নরনারায়ন হয়ে ওঠেন শঙ্করদেবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। কোচ শাসকগোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষকতায় শঙ্করদেব ও তাঁর শিষ্যগন কোচবিহার রাজ্যের বিভিন্নস্থানে গড়ে তোলেন অনেকগুলি সত্র (বৈষ্ণব মন্দির ও আশ্রম) ও ‘নামঘর’। কোচবিহারের মধুপুর সত্র থেকেই শঙ্করদেব রচনা করেছিলেন তাঁর বেশ কয়েকটি মূল্যবান গ্রন্থ।   

কোচরাজ্যে শঙ্করদেবের বৈষ্ণব ধর্মের প্রভাব এতটাই বেশি ছিল যে নরনারায়নের (মল্লদেব) সময় থেকে কোচ রাজাদের পদবি হয়ে গেল ‘নারায়ণ’( যদিও কোচ রাজ্যের মূল স্থাপয়িতা বিশ্বসিংহ ও তাঁর রাজ্যরক্ষক ভ্রাতা শিষ্যসিংহ উভয়েই ‘সিংহ’ উপাধি গ্রহণ করেছিলেন)। এমনকি কোচ রাজ্যের মুদ্রার নাম হয়ে ওঠে ‘নারায়ণী টঙ্কা’। কালক্রমে কোচবিহার রাজ্যের সেনাবাহিনী নাম হয়েছিল ‘নারায়ণী সেনা’। পশ্চিমবঙ্গের ২০২১ এর বিধানসভার প্রাক্কালে এই ‘নারায়ণী সেনার’ প্রসঙ্গটি সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে উঠে এসেছিল।

লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো যে শঙ্করদেবের নয়া বৈষ্ণববাদের প্রতিষ্ঠানগুলির বেশিরভাগই তৈরি হয়েছিল ব্রহ্মপুত্র ও কোচবিহার রাজ্যের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত বিভিন্ন নদীর তীরে। নৌ-চলাচলের উপযুক্ত কেন্দ্রগুলোতে স্থাপিত সত্রগুলির অনেকগুলিই কালক্রমে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আবার বেশকিছু সত্র তাদের অস্তিত্ব আজও টিকিয়ে রেখেছে।

তোর্ষা নদী তীরের মধুপুর সত্র বা কালজানির তীরের বৈকুণ্ঠপুর সত্রের মতোই রায়ডাক তীরের দুই পাড়ে বেশ কয়েকটি সত্র গড়ে উঠেছিল শঙ্করদেবের সময় থেকে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল রামরায়কুটি সত্র।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ১নং রায়ডাক নদীর বাম তীরে অবস্থিত রামরায়কুটি সত্রটি ষোড়শ শতকের মধ্যভাগে স্থাপন করেছিলেন শঙ্করদেবের জ্ঞাতি ভাই জগদানন্দ (বা রামরায়)। রামরায়ের কন্যা ভুবনেশ্বরীর সঙ্গে কোচ মহাসেনাপতি চিলারায়ের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছিল এই সত্রতে। শঙ্করদেব ব্রহ্মপুত্র নদী দিয়ে পাটবাউশী থেকে নৌকাযোগে এখানে এসেছিলেন। শঙ্করদেবের এই আগমনকে স্মরণীয় করার জন্য এই অঞ্চলের নামকরন করা হয়েছিল “আগমনী” (বর্তমানে ৩১এ জাতীয় সড়কের উপর অবস্থিত আসাম রাজ্যের ধুবরি জেলার আগমনী)। অন্যদিকে রায়ডাক তীরে অবস্থিত চিলারায় দুর্গ (ফুলবাড়ি বা তুফানগঞ্জ) থেকে মহারাজা নরনারায়ন তাঁর সেনাপতি ভ্রাতা চিলারায়কে নিয়ে রায়ডাক নদী বেয়ে রামরায়কুটি সত্রে পৌঁছেছিলেন। এই বিবাহকে স্মরণীয় করার জন্য নরনারায়ন রামরায়কুটি সত্রকে ১৩০০ বিঘা জমি দান করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই রামরায়কুটি সত্র কোচরাজ্যের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি উল্লেখযোগ্য বৈষ্ণব ধামে পরিণত হয়েছিলো।

রামরায়কুঠি সত্র থেকে ২০ কিমি উত্তরে ১নং রায়ডাকের তীরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল হরিপুর সত্র (বর্তমানে ৩১এ জাতীয় সড়কের উপর অবস্থিত হরিপুর, তুফানগঞ্জ, কোচবিহার)। শঙ্করদেবের অন্যতম শিষ্য হরিহর আতা প্রতিষ্ঠিত মূল সত্রটি রায়ডাক নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তীকালে (১৯১২ খ্রিঃ) হরিপুর সত্রটি পুননির্মিত হয়েছে। হরিপুর সত্রের কাছাকাছি ফুলবাড়িতে (বর্তমান তুফানগঞ্জ, কোচবিহার) স্থাপিত হয়েছিল আরোও বেশ কয়েকটি সত্র। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কুঠিবাড়ি সত্র, মাধপুর সত্র, ফুলবাড়ি সত্র, দোলাগোবিন্দ ধাম সত্র, হরিরধাম সত্র, চিলারায়কোট সত্র, ইত্যাদি। এই সত্রগুলি চিলারায় দূর্গের (চিল্রারায় গড়) সঙ্গে জলপথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলত।

ষোড়শ ও সপ্তদশ দশকের রায়ডাক তীরে (১নং রায়ডাক, ২নং রায়ডাক ও মরা রায়ডাক নদী) আরোও বেশ কিছু সত্রের অস্তিত্ব ছিল। ক্ষেত্রসমীক্ষায় প্রাপ্ত ও চরিতপুঁথিতে বর্ণিত এই সত্রগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল শালবাড়ি সত্র (শালবাড়ি, তুফানগঞ্জ, কোচবিহার), মরা রায়ডাক তীরের কামাক্ষ্যাগুড়ি সত্র (কামাক্ষ্যাগুড়ি, আলিপুরদুয়ার) ও ২নং রায়ডাক তীরের ভানুকুমারী সত্র (বক্সিরহাট, কোচবিহার)। শালবাড়ি বা কামাক্ষ্যাগুড়িতে সত্রের অস্তিত্ব বর্তমানে না থাকলেও শালবাড়ির ‘ভকতপাড়া’ ও কামাক্ষ্যাগুড়ির ‘হরিবাড়ি’ এখনও শঙ্করদেবের বৈষ্ণব ধর্মের প্রভাবের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। এছাড়াও হরিপুর থেকে কামাক্ষ্যাগুড়ির মধ্যে বেশকিছু গ্রাম ও প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে হরিহর আতার যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।

বর্তমানে বৈষ্ণব মতবাদ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। দক্ষিণ এশিয়ার গণ্ডী অতিক্রম করে বাংলার বৈষ্ণব ধর্ম সমগ্র এশিয়া, আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় ক্রমশই বিকশিত হচ্ছে। নদিয়ার মায়াপুর-কেন্দ্রিক ইসকন, মনিপুরের বৈষ্ণব ধর্ম বা সিলেটের বৈষ্ণবীয় রীতির ‘ধামাইল’ লোকসঙ্গীত আজ সমগ্র বিশ্বকে মাতিয়ে রেখেছে। পাশাপাশি আসামে শঙ্করদেবের নামে গড়ে ওঠেছে বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। একই সঙ্গে কোচবিহারের মধুপুর সত্র ও বৈকুণ্ঠপুর সত্র ‘কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট’ ও আসাম সরকারের সহযোগিতা পেয়ে থাকে। কিন্তু রামরায়কুঠি সত্র বা হরিপুর সত্র এখনও প্রচারের আলোয় আসেনি। রায়ডাক তীরের এই সত্রগুলির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গুরুত্ব প্রচারিত হলে পূর্বভারত, উত্তরপূর্ব ভারত ও বাংলাদেশের বৈষ্ণব ভাবধারায় নতুন অনুভব যোগ করবে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

ড. রূপ কুমার বর্মণ, কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও আম্বেদকর চর্চা কেন্দ্রের সমন্বয়ক । 

   

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চট্টগ্রামের আকবর



কুয়েত করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুয়েত
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আকবর হোসেন নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার রহমতপুর গ্রামের আদর্শ পাড়া হাদির গো বাড়ির সুলতান আহমদের ছেলে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাতে কুয়েতের রাবিয়া নামক স্থানে ইশারা আল কাসেমিতে রাস্তা পারাপারের সময় গাড়ির ধাক্কা লেগে এই দুর্ঘটনায় ঘটে।

নিহতের আত্মীয় সাখাওয়াত হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'বেশ কিছুদিন যাবৎ তিনি মানসিকভাবে চাপের মধ্যে ছিলেন। শুক্রবার রাতে রাস্তা পারাপার করতে গেলে দুর্ঘটনার শিকার হয়।এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি।'

বর্তমানে মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে তার মরদেহ দ্রুত দেশে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।

;

দেশের ইলিশের টানে লন্ডন থেকে গ্লাসগো



ড. হাসিন মাহবুব চেরী, সিনিয়র স্পেশালিস্ট সায়েন্টিস্ট, ইউকে
দেশের ইলিশের টানে লন্ডন থেকে গ্লাসগো

দেশের ইলিশের টানে লন্ডন থেকে গ্লাসগো

  • Font increase
  • Font Decrease

একটা বয়সের পরে আমরা আটকা পড়ি শুধুই মায়ার টানে। কোন মানুষটা আমাদের মন থেকে মায়া করে, এটাই সব কিছুর ঊর্ধ্বে বিবেচ্য হয় আমাদের কাছে (অন্তত আমার কাছে ব্যাপারটা এখন তাই)।

কারণ, আমরা বুঝতে শিখি যে, আমাদের আশেপাশে বন্ধুরূপী অসংখ্য মুখের ভিড়ে শুধু মাত্র সেই মুখগুলোই মূল্যবান - যার কাছে আমি মূল্যবান। আর ঠিক একারণেই সুদূর বিলাতের বিভূঁই পরিবেশে ফারহানা হোসেন আপু যখন বললো দেশ থেকে আসা ইলিশ তোমাকে আর Rumana Newlands কে ছাড়া খাবো না বলে তুলে রেখেছি, কবে আসবে? মনে হলো এই ভালোবাসার ডাক পাবার মতো ভাগ্য আসলে ক'জনেরই বা হয়? তাই প্রচন্ড ব্যস্ত সময়ের মধ্যেই হুট করে একবেলার জন্যে লন্ডন থেকে গ্লাসগো উড়ে চলে গেলাম।

এই ঝটিকা সফর বহু কারণেই স্মরণীয় হয়ে থাকবে, তবে অর্ধেক দিনের এই মেমরি আমাকে আবার শেখালো:

Life is not about quantity, it`s all about quality. So it doesn`t matter what you have in life, but who you have only matters.

আর জীবনে নিজের পরিবারের মানুষ ছাড়াও কারো সত্যিকারের ভালোবাসা পাওয়া আসলেই বিশাল ভাগ্যের ব্যাপার। ফারহানা আপু এবং সাজ্জাদ ভাইয়ার আন্তরিকতায় আবারো মুগ্ধ হতে হতে তাই ভাবছিলাম, যদিও আমি সবসময় সবার থেকে ভালো জিনিস গুলো শেখার চেষ্টা করি তবে কিছু কিছু কোয়ালিটি আসলে মানুষের মধ্যে আসে 'ইন বিল্ট' হয়ে, যেটা অন্য কেউ হয়তো হাজার চেষ্টা করেও আয়ত্ত্ব করতে পারে না!

অন্যকে স্পেশাল এবং গুরুত্বপূর্ণ ফিল করানোও ঠিক সেরকমই একটা ইন বিল্ট কোয়ালিটি যেটা বেশিরভাগ মানুষের মধ্যেঔ অনুপস্থিত। যেমন আপু এবং ভাইয়া (আমার দেখা দুই অন্যতম ব্রিলিয়ান্ট এবং down to earth মানুষ) যেভাবে ওয়ার্কিং ডে 'র শেষে আমাকে এয়ারপোর্ট থেকে পিক করা থেকে শুরু করে নিজের হাতে রান্না করা বহু পদের মুখরোচক খাবার এবং নিজের হাতে বানানো মিষ্টি'র আয়োজন করলেন, স্কটল্যান্ডে এসে আমার ভাইয়ের সাথে দেখা হবে না বলে আমার ভাই কেও আবেরডিন থেকে ডেকে নিয়ে আসলেন, এবং আসবার পথে একগাদা খাবার প্যাক করে ব্যাগে নিজের হাতে ঢুকিয়ে দিয়ে একদম এডিনবরা এয়ারপোর্ট এর সিকিউরিটি পর্যন্ত এসে বিদায় দিয়ে গেলেন - এই আন্তরিকতাটা বোধহয় একেবারে মনের গভীর থেকে না আসলে করা সম্ভব নয়।

আসলে জীবনে আমরা বহু অপাত্রে আমাদের ভালোবাসা এবং সময় দান করে নষ্ট করি, বহু মানুষের ব্যবহার দেখে মনে হয় সত্যিই বোধহয় স্বার্থপর না হওয়াটাই আজকাল বোকামি। তবে পরমুহূর্তেই আবার যখন এরকম সুন্দর মনের মানুষ গুলোর আন্তরিকতায় অবাক এবং মুগ্ধ হই, তখন মনে হয় এই সুন্দর মনের মানুষগুলোর উপস্থিতির জন্যেই আসলে জীবনটা এতো সুন্দর। আর এরকম মানুষের উপস্থিতি আমাদের ঠিক একইভাবে ওনাদের মতোই অন্য কারো জীবনেও নিজের উপস্থিতি দিয়ে তার জীবনের কিছু সুন্দর মুহূর্ত উপহার দিতে অনুপ্রেরণা যোগায়।

;

শেখ হাসিনার সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দৃঢ় করবে: থাই সরকারের মুখপাত্র



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাউথ-ইস্ট এশিয়া (ব্যাংকক, থাইল্যান্ড)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ পর থাইল্যান্ডে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী বুধবার (২৪ এপ্রিল) তিনি থাইল্যান্ডে এসে পৌঁছাবেন। পাঁচদিনের সফর শেষে সোমবার (২৯ এপ্রিল) তিনি দেশে ফিরে যাবেন।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) থাই সরকারের মুখপাত্র চাই ওয়াচারানক স্থানীয় গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রেত্থা থাবিসিন এর আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডে আসছেন।

শেখ হাসিনার ভ্রমণের সময় উভয় দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি এবং এমওইউ স্বাক্ষর হবে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সফরসঙ্গীদের জন্য গভর্মেন্ট হাউজে দুপুরের খাবারের আয়োজন করেছেন শ্রেত্থা থাবিসিন।

চাই ওয়াচারানক জানান, ২০০২ সালের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এটি প্রথম থাইল্যান্ড সফর। এই সফরে দুই দেশের কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে দ্বি-পাক্ষীক সম্পর্ক শক্তিশালী করতে আলোচনা করতে পারবেন। এছাড়াও বিভিন্ন খাতে সহযোগীতা বৃদ্ধি, বিশেষত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এছাড়াও যোগাযোগ, পর্যটন এবং দুই দেশের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে শেখ হাসিনার এই সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান থাই সরকারের মুখপাত্র। 

;

আমিরাতে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব



তোফায়েল আহমেদ পাপ্পু, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পহেলা বৈশাখ বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বে বসবাসরত বাঙালিরা দিনটি সাড়ম্বরে পালন করে থাকে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবার ঈদের ছুটি অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ ছিল। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পহেলা বৈশাখ। যা প্রবাসী বাংলাদেশিদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। লোকায়ত সংস্কৃতির ডালা সাজিয়ে বর্ণিল উৎসব আয়োজনের মধ্যদিয়ে দেশটিতে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব উদযাপিত হয়েছে।

ভিনদেশের মাটিতেও বাঙালি সংস্কৃতির চিরায়ত পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হলো নানা অনুসঙ্গে। দেশটিতে বসবাসরত বাঙালিদের মধ্যেও ছিল আনন্দের কলরব। আর এই আনন্দ উচ্ছ্বাসকে সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে প্রবাসী সনাতনি ঐক্য পরিষদের চমৎকার আয়োজনের মধ্য দিয়ে এক নতুন মাত্রা পেয়েছে।


রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আমিরাতের সারজায় আল জায়েদ ফার্ম হাউজে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের শুরুতে পহেলা বৈশাখ ১৪৩১ বাংলা নববর্ষ বরণ করে নিতে সকাল সাড়ে ১০টায় মঙ্গল শোভযাত্রা র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। পরে নাচ, গান, মধ্যাহৃভোজ ও নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে বর্ষবরণ উদযাপন করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

একাকী প্রবাসজীবনে পরিবার পরিজন, বন্ধুবান্ধব থেকে দূরে থাকা, দেশীয় স্বাদ ও আমেজের জন্য সারাবছর লালায়িত থাকা এই প্রবাসীরা হাজার মাইলের দূরত্ব কষ্ট ভুলে গিয়েছিল পহেলা বৈশাখ উদযাপন অনুষ্ঠানে। আমিরাতের আবুধাবী, দুবাই, আজমান ও বিভিন্ন শহর থেকে প্রবাসীরা পরিবার নিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।


অনুষ্ঠান শেষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই লেডিস গ্রুপের সভাপতি আবিদা হোসেন, বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই ও উত্তর আমিরাতের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর আশীষ কুমার সরকার, প্রবাসী সনাতনী পরিষদের সিনিয়র উপদেষ্টা বিশ্বনাথ দাশ, সভাপতি অজিত কুমার রায়, সহ সভাপতি অজিত চৌধুরী মিঠু, সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার সরকার, অর্থ সম্পাদক কার্তিক সাহা, দপ্তর সম্পাদক দেবব্রত তালুকদার, ফুজাইরাহ বাংলাদেশ সমিতির সভাপতি বাবু তপন সরকার, জাতীয় হিন্দু মহাজোট ইউএই’র সিনিয়র উপদেষ্টা মিনাল কান্তি ধর প্রমুখ।

প্রবাসী সনাতনী পরিষদের সভাপতি অজিত কুমার রায় জানান, প্রবাসের মাটিতে বেড়ে ওঠা তরুণ প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতির ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আগামীতে আরও বড় পরিসরে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেয়া হবে।

 

 

;