আমিরাতে ব্যবসায় সাফল্য পাচ্ছেন প্রবাসীরা



তোফায়েল আহমেদ (পাপ্পু), দুবাই করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। ব্যবসা বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে মধ্য প্রাচ্যের দেশটি। বিশ্ব বাণিজ্যের চাহিদা পূরণের অন্যতম স্থান হিসেবে পরিণত হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা থাকায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বৃত্তশালীরা বিনিয়োগ করছেন এখানে। দেশটিতে ব্যবসায়ে বিনিয়োগে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশিরাও।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আনাগোনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। দেশটিতে বড় একটি অংশ বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত। মেধা ও শ্রম দিয়ে দেশে বিনিয়োগের পাশাপাশি আমিরাতেও গড়ে তুলেছেন হাইপার মার্কেট, হোটেল-রেস্তোরা, স্বর্ণের দোকান, মোবাইল দোকান, সেলুন, সুপার মার্কেট, পারফিউমস ফ্যাক্টরি, রিয়েল এস্টেট, মুদি দোকান, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, রেডিমেড গার্মেন্টস ট্রেডিং, বোরকার দোকান, এমব্রয়ডারি, স্টিল ওয়ার্কশপ, গ্যারেজ, প্রিন্টিং প্রেসসহ ছোট-বড় নানা রকম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এগুলো কর্মদক্ষতা ও সততায় বেশ সুনাম ও সাফল্যের সাথে তারা পরিচালনা করে যাচ্ছেন বাংলাদেশি প্রবাসী ব্যবসায়ীরা। তবে গিফট আইটেম, স্যুভেনির, কর্পোরেট গিফট, এওয়ার্ড, ই-কমার্স ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসায় কিছুটা পিছিয়ে রয়েছেন তারা।

আমদানি-রপ্তানি ছাড়াও দ্রুত অগ্রগামী অর্থনীতির এই দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায় জড়িত রয়েছেন আরব আমিরাতে বসবাসরত বহু অভিবাসী। ভারত, চীন, মিশর, পাকিস্তান, ইরানের নাগরিকদের পাশাপাশি এই তালিকায় পিছিয়ে নেই বাংলাদেশিরাও।

আবুধাবির বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, প্রায় ৩০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি সেখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা করছেন। আবার তাদের এসব প্রতিষ্ঠানে আরো প্রায় ১ লাখ বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।

চাকুরির পাশাপাশি এক বা একাধিক প্রবাসীরা মিলে একটি কোম্পানি লাইসেন্স করে এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন। সামর্থ থাকলে কেউ কেউ আবার নিজেরাই গড়ে তুলছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। একদিকে যেমন ব্যবসায়ে বিনিয়োগ বাড়ছে অন্যদিকে বাংলাদেশি প্রবাসীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।

চট্টগ্রামের সামসুদোহা মজুমদার একজন সফল ব্যবসায়ী। আমিরাতের দুবাইতে ট্যাক্সি কোম্পানিতে চাকুরি করতেন। ২০১৮ সালে চাকুরি ছেড়ে তিনি এবং তার বন্ধু মিলে ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে তার ৩টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশিসহ শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের ৭ থেকে ৮ জন কাজ করছেন।

হবিগঞ্জের মাওলানা শেখ ফজলুর রহমান গড়ে তুলেছেন নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ৩০ হাজার দিরহাম বিনিয়োগে শুরু করেন বোরকার ব্যবসা। বর্তমানে তার বোরকার গার্মেন্টস রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশি ৮ জন লোক কাজ করেন। মধ্যপ্রাচ্যের নানা দেশ থেকে এখন তার প্রতিষ্ঠানে ক্রেতা আসেন।
তাদের মতো অনেকেই জীবিকার সন্ধানে প্রবাসে এসে কেউ সরাসরি বিনিয়োগ করেন, কেউ বা কয়েক বছর চাকুরি করার পর পেশা পরিবর্তন করে ব্যবসা শুরু করেন। এসব প্রতিষ্ঠান যেমন নিজেদের ব্যবসায়িক সাফল্য আনার পাশপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। অন্যদিকে দেশীয় শ্রমিকের চাহিদা থাকায় নতুন কর্মসংস্থানেরও সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর কামরুল হাসান বলেন, প্রবাসে অনেকে চাকরি করতে এলেও পরে নিজেদেরকে ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত করছেন। গড়ে তুলছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান। এসব ব্যবসা যখন বৃহৎ আকার ধারণ করবে, তখন নিজেদের আত্মসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণ করেও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর বলেন, আমিরাতে প্রায় ১০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশির মধ্যে ব্যবসায়ী রয়েছেন প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজারের মতো। শুধু ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নয়, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা আরও অন্তত লক্ষাধিক প্রবাসী বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন। ক্রমান্বয়ে প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশি নিয়োগ করেছেন তারা। প্রবাসীরা ব্যবসা বাণিজ্যের পাশাপাশি সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

সরকারের পক্ষ থেকে সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলে আগামীতে বড় ধরনের বিনিয়োগ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের রেমিটেন্স-প্রবাহ অব্যাহত রাখতে ভিসা জটিলতার বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে মনোযোগী হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

   

আমিরাতের আবুধাবিতে ঋণের দায়ে প্রবাসীর আত্মহত্যা



সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই), করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে ঋণেয় দায়ে আত্মহত্যা করেছেন এক বাংলাদেশি প্রবাসী। নিহত মোহাম্মদ শিবলি সাদিক (৩৮) লক্ষীপুর জেলার লক্ষীপুর সদরের বাঞ্ছানগর গ্রামের মৃত মো. হারুন উর রশিদের ছেলে।

নিহতের প্রতিবেশী চাচাতো ভাই মোহাম্মদ মনির জানায়, শিবলি দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কিছুদিন আগে দেশ থেকে ঋণ নিয়ে এখানে রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন। সাম্প্রতিক তার ব্যবসায়ী পার্টনার রিয়েল এস্টেট এ বিনিয়োগ করা সকল অর্থ হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ঋণের চাপ ও পার্টনার কর্তৃক প্রতারিত হয়ে হতাশয় ভুগছিলেন তিনি।

পরে হতাশাগ্রস্থ হয়ে আত্মহননের মত কঠিন সিদ্ধান্ত নেন শিবলি। এখন পর্যন্ত মৃতের ব্যাবসায়ী পার্টনার প্রতারকের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

তিনি আরো জানান, মৃত শিবলি একই গ্রামের মো. আবুল কাশেমের মেয়ে তানজিনা আফরিনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। ব্যক্তি জীবনে নিঃসন্তান ছিলেন তিনি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ দূতাবাস আবুধাবিতে নিযুক্ত শ্রম কাউন্সেলর লুৎফুন নাহার নাজীম বলেন, মৃত্যুর খবর আমারা জেনেছি। মরদেহ এখন বানিয়াছ এর কেন্দ্রীয় মর্গে রয়েছে।

দেশটির আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মরদেহ দেশে পৌঁছাতে দূতাবাস দ্রুত পদক্ষেপ নিবে এবং প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্টস তৈরির বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ, গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) দেশটির রাজধানী আবুধাবির শেখ হামদান সড়কে তার বাসস্থল বিল্ডিং এর ছাদ থেকে লাফ দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে জানায় আবুধাবি পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।


তোফায়েল আহমেদ পাপ্পু

;

বঙ্গবন্ধুর জীবন-দর্শন নতুন প্রজন্মকে জানানোর আহবান



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, সংগ্রাম ও রাজনৈতিক দর্শন সম্পর্কে প্রবাসী বাংলাদেশি ও নতুন প্রজন্মকে আরো ভালোভাবে জানানোর জন্য সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

তিনি একই সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ যে অসাধারণ আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অর্জন করেছে তা দেশে-বিদেশে তুলে ধরার জন্যও তাদের প্রতি অনুরোধ জানান।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলস সিটিতে ৭ম আন্তর্জাতিক বঙ্গবন্ধু সম্মেলন উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, জাতির দীর্ঘ আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সারাজীবন সংগ্রাম ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং তার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। তিনি বলেন, জাতির পিতার এই সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ প্রবাসীদের ও নতুন প্রজন্মকে আরো ভালোভাবে অবহিত করা আমাদের সকলের কর্তব্য।

অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে গত দেড় দশকে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, এই অসাধারণ সাফল্য তুলে ধরা এবং ২০৪১ সালের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মানে আমাদের সকলকে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সকালে শুরু হয় দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান। পরে জাতির পিতার জীবন, সংগ্রাম ও রাজনৈতিক দর্শনের ওপর অনুষ্ঠিত হয় সিরিজ আলোচনা।

অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক ছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন সম্মেলনের সম্মানিত অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ভোরের কাগজ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, লস এঞ্জেলেসস্থ বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল সামিয়া আঞ্জুম, ক্যালিফোর্নিয়ার প্যারিস সিটি মেয়র মাইকেল ভার্গাস, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মুহাম্মদ ফজলুর রহমান এবং সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক নজরুল আলম।

যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ড. নুরুন নবী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রানা হাসান মাহমুদ। ডঃ নুরুন নবীর সভাপতিত্বে ‘বঙ্গবন্ধুর বৈদেশিক নীতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাস্তবসম্মত বাস্তবায়ন” শীর্ষক এক বিশেষ সেমিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ওপর নির্মিত একাধিক তথ্যচিত্র প্রদর্শন, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও শিশু-কিশোরদের জন্য বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ওপর বক্তৃতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড সোলসের একক সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে দিনব্যাপী এ সম্মেলনের শেষ হয়।

এ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সন্মান জানানো হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন এবং বোস্টন গ্লোবের ফটোজার্নালিস্ট ডঃ উইলিয়াম ফিংকেলকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা হয়।

আগামী তিনটি সম্মেলন যথাক্রমে ওয়াশিংটন ডিসি, মিশিগান এবং জর্জিয়াতে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ডঃ নুরুন নবী।

;

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চট্টগ্রামের আকবর



কুয়েত করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুয়েত
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আকবর হোসেন নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার রহমতপুর গ্রামের আদর্শ পাড়া হাদির গো বাড়ির সুলতান আহমদের ছেলে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাতে কুয়েতের রাবিয়া নামক স্থানে ইশারা আল কাসেমিতে রাস্তা পারাপারের সময় গাড়ির ধাক্কা লেগে এই দুর্ঘটনায় ঘটে।

নিহতের আত্মীয় সাখাওয়াত হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'বেশ কিছুদিন যাবৎ তিনি মানসিকভাবে চাপের মধ্যে ছিলেন। শুক্রবার রাতে রাস্তা পারাপার করতে গেলে দুর্ঘটনার শিকার হয়।এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি।'

বর্তমানে মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে তার মরদেহ দ্রুত দেশে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।

;

দেশের ইলিশের টানে লন্ডন থেকে গ্লাসগো



ড. হাসিন মাহবুব চেরী, সিনিয়র স্পেশালিস্ট সায়েন্টিস্ট, ইউকে
দেশের ইলিশের টানে লন্ডন থেকে গ্লাসগো

দেশের ইলিশের টানে লন্ডন থেকে গ্লাসগো

  • Font increase
  • Font Decrease

একটা বয়সের পরে আমরা আটকা পড়ি শুধুই মায়ার টানে। কোন মানুষটা আমাদের মন থেকে মায়া করে, এটাই সব কিছুর ঊর্ধ্বে বিবেচ্য হয় আমাদের কাছে (অন্তত আমার কাছে ব্যাপারটা এখন তাই)।

কারণ, আমরা বুঝতে শিখি যে, আমাদের আশেপাশে বন্ধুরূপী অসংখ্য মুখের ভিড়ে শুধু মাত্র সেই মুখগুলোই মূল্যবান - যার কাছে আমি মূল্যবান। আর ঠিক একারণেই সুদূর বিলাতের বিভূঁই পরিবেশে ফারহানা হোসেন আপু যখন বললো দেশ থেকে আসা ইলিশ তোমাকে আর Rumana Newlands কে ছাড়া খাবো না বলে তুলে রেখেছি, কবে আসবে? মনে হলো এই ভালোবাসার ডাক পাবার মতো ভাগ্য আসলে ক'জনেরই বা হয়? তাই প্রচন্ড ব্যস্ত সময়ের মধ্যেই হুট করে একবেলার জন্যে লন্ডন থেকে গ্লাসগো উড়ে চলে গেলাম।

এই ঝটিকা সফর বহু কারণেই স্মরণীয় হয়ে থাকবে, তবে অর্ধেক দিনের এই মেমরি আমাকে আবার শেখালো:

Life is not about quantity, it`s all about quality. So it doesn`t matter what you have in life, but who you have only matters.

আর জীবনে নিজের পরিবারের মানুষ ছাড়াও কারো সত্যিকারের ভালোবাসা পাওয়া আসলেই বিশাল ভাগ্যের ব্যাপার। ফারহানা আপু এবং সাজ্জাদ ভাইয়ার আন্তরিকতায় আবারো মুগ্ধ হতে হতে তাই ভাবছিলাম, যদিও আমি সবসময় সবার থেকে ভালো জিনিস গুলো শেখার চেষ্টা করি তবে কিছু কিছু কোয়ালিটি আসলে মানুষের মধ্যে আসে 'ইন বিল্ট' হয়ে, যেটা অন্য কেউ হয়তো হাজার চেষ্টা করেও আয়ত্ত্ব করতে পারে না!

অন্যকে স্পেশাল এবং গুরুত্বপূর্ণ ফিল করানোও ঠিক সেরকমই একটা ইন বিল্ট কোয়ালিটি যেটা বেশিরভাগ মানুষের মধ্যেঔ অনুপস্থিত। যেমন আপু এবং ভাইয়া (আমার দেখা দুই অন্যতম ব্রিলিয়ান্ট এবং down to earth মানুষ) যেভাবে ওয়ার্কিং ডে 'র শেষে আমাকে এয়ারপোর্ট থেকে পিক করা থেকে শুরু করে নিজের হাতে রান্না করা বহু পদের মুখরোচক খাবার এবং নিজের হাতে বানানো মিষ্টি'র আয়োজন করলেন, স্কটল্যান্ডে এসে আমার ভাইয়ের সাথে দেখা হবে না বলে আমার ভাই কেও আবেরডিন থেকে ডেকে নিয়ে আসলেন, এবং আসবার পথে একগাদা খাবার প্যাক করে ব্যাগে নিজের হাতে ঢুকিয়ে দিয়ে একদম এডিনবরা এয়ারপোর্ট এর সিকিউরিটি পর্যন্ত এসে বিদায় দিয়ে গেলেন - এই আন্তরিকতাটা বোধহয় একেবারে মনের গভীর থেকে না আসলে করা সম্ভব নয়।

আসলে জীবনে আমরা বহু অপাত্রে আমাদের ভালোবাসা এবং সময় দান করে নষ্ট করি, বহু মানুষের ব্যবহার দেখে মনে হয় সত্যিই বোধহয় স্বার্থপর না হওয়াটাই আজকাল বোকামি। তবে পরমুহূর্তেই আবার যখন এরকম সুন্দর মনের মানুষ গুলোর আন্তরিকতায় অবাক এবং মুগ্ধ হই, তখন মনে হয় এই সুন্দর মনের মানুষগুলোর উপস্থিতির জন্যেই আসলে জীবনটা এতো সুন্দর। আর এরকম মানুষের উপস্থিতি আমাদের ঠিক একইভাবে ওনাদের মতোই অন্য কারো জীবনেও নিজের উপস্থিতি দিয়ে তার জীবনের কিছু সুন্দর মুহূর্ত উপহার দিতে অনুপ্রেরণা যোগায়।

;