মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ভারতের জয়, চীনের পরাজয়



রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারত-চীন কৌশলগত দ্বন্দ্ব বেশ পুরনো। কৌশলগত ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে এই অঞ্চলের দেশগুলোতে নিজেদের মিত্রদের ক্ষমতায় দেখতে চায় এশিয়ার দুই সুপার পাওয়ার ভারত ও চীন। সে ধারাবাহিকতায় মালদ্বীপ নিয়েও ভারত ও চীনের মধ্যে ছায়াযুদ্ধ ছিল। যাতে শেষ পর্যন্ত ভারতের জয় হয়েছে।

সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চীনপন্থী আব্দুল্লাহ ইয়ামিনকে হারিয়ে দিয়েছেন ভারতপন্থী বিরোধী দলীয় নেতা ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ। নির্বাচনে ৫৮.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ইব্রাহিম সলিহ। নির্বাচনে নিজেদের মিত্র জয়ী হওয়ায় ভারতও দারুণ খুশি।

নির্বাচনের প্রাথমিক ফল ঘোষণার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেন, ‘দেশটির তৃতীয় প্রেসিডেন্টশিয়াল ইলেকশনের সফলতাকে আমরা স্বাগত জানাই।’

‘নির্বাচনে বিজয় লাভ করায় ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহকে উষ্ণ অভিনন্দন জানাই।’

এদিকে নির্বাচনের প্রাথমিক ফল প্রকাশের পর চীন এখনো কোন প্রতিক্রিয়া দেয় নি। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ নিয়ে গঠিত মালদ্বীপ নির্বাচনের পর কোনদিকে যায় সেটি দেখতে চায় বেইজিং।

২০১৩ সালে ইয়ামিন যখন ক্ষমতায় আসে তখন থেকেই চীন ও মালদ্বীপের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নতুন গতি লাভ করে। কিন্তু তার প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের যে ঐতিহ্যগত জোট রয়েছে-সেটিও আরো উন্নত হয়।

২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং মালদ্বীপ সফর করেন। মালদ্বীপের রাজধানী মালের পার্শ্ববর্তী হুলহুয়েতে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণে চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেশটির চুক্তি হয়।

একই সঙ্গে চীন সেখানে ১.৪ কি.মি দীর্ঘ সংযোগ সেতু নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে, যেটি চলতি বছরের ৩০ আগস্ট শেষ হয়। সেতুটি হুলহুলে ও মালেকে সংযুক্ত করেছে।

শি জিংপিংয়ের সফরের দুইমাস পর ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে মালদ্বীপ চীনা প্রেসিডেন্ট শি’র স্বপ্নের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।

বিআরআই প্রকল্পের অংশ হিসেবে বিমানবন্দর, সংযোগসেতুর মত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা শুরু হয়েছিল।

২০১৭ সালে প্রায় ৩ লাখ চীনা পর্যটক মালদ্বীপ ঘুরে গেছেন। যেটা বিশ্বের আর যেকোনো দেশের পর্যটকের চেয়ে বেশি। মোট কথা সবদিক দিয়েই চীন-মালদ্বীপ অর্থনৈতিক সম্পর্ক ইয়ামিনের শাসনামলে দারুণ উন্নতি হয়।

শুধু  তাই নয় কৌশলগত দিক দিয়েও সম্পর্ক বৃদ্ধিতে দুই দেশ এগিয়ে এসেছিল। চলতি বছরের শুরুর দিকে দুই দেশ যৌথভাবে ভারত মহাসাগরের মাকুনুদোহতে ‘জয়েন্ট ওশেন অবজারভেশন স্টেশন’ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিল।

তখন টাইমস অব ইন্ডিয়াতে একজন বিশ্লেষক লেখেন, ‘প্রস্তাবিত প্রকল্পের মধ্যদিয়ে চীন ভারত মহাসাগরে শিপিং রুট হিসেবে ব্যবহারের উপযুক্ত জায়গা পাবে। সেই সঙ্গে ভারতের বিরুদ্ধে চীনা নৌবাহিনীর সম্মুখ অবস্থান আরো কার্যকর  করবে।’

এখন আদৌ বিষয়টা সেটা কি না-অথবা গুরুত্বপূর্ণ শিপিং লাইনে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য চীনাদের সরল চিন্তাভাবনা কি না-সেটিও দারুণ কৌতুহলের জন্ম দেয়।

কিন্তু মালদ্বীপের বিরোধীদলীয় ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি), যারা সাম্প্রতিক নির্বাচনে সলিহ’র জোটের অন্তর্ভুক্ত, তারা তখন বলেছিল, এ প্রকল্প সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে। এই প্রকল্প দিয়ে ভারত-চীন সম্পর্কের কৌশলগত রেড লাইন সেদিন চীন অতিক্রম করেছিল যেটি ভারতের প্রত্যাশিত নয়। কিন্তু  এর  পাল্টা জবাব হিসেবে ভারত কি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে তখন দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকরা পরিষ্কার করে কিছু বলেন নি।

আয়তন ও জনসংখ্যা বিবেচনায় মালদ্বীপ ক্ষুদ্র রাষ্ট্র। মাত্র ৪ লাখ ১৭ হাজার মানুষের বসবাস।তবে মাত্র ২৯৮ একর ভূমি থাকলেও হাজারেরও অধিক প্রবাল দ্বীপের দেশটিকে বিশাল সমুদ্র সীমার মালিক করে দিয়েছে।

ভারতের সঙ্গে ভৌগলিক নৈকট্যের কারণে নয়াদিল্লী সবসময় দেশটিতে প্রভাব বজায় রাখার চেষ্টা করে আসছে। যা দ্বীপ দেশটির অস্থিরতা দূর করতে অতীতের ভারতীয় হস্তক্ষেপগুলো দেখলে বোঝা যায়।

১৯৯৮ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে ভারতের ১৬০০ সৈন্য মালদ্বীপে প্রেরণ করেছিল। শ্রীলঙ্কা থেকে আগত তামিল বিদ্রোহীরা তখন দেশটির সরকার উৎখাত করে বিদ্রোহীদের আস্তানা গড়ে তুলতে চেয়েছিল বিধায় মালদ্বীপ সরকারের সহায়তায় ঐ সৈন্য প্রেরণ করা হয়।

তিন দশকের অধিক সময় ধরে- ১৯৭৮ থেকে ২০০৮- মালদ্বীপ মামুন আব্দুল গাইয়ুমের স্বৈরশাসনে ছিল। মামুন ছিল ইয়ামিনের সৎভাই। গাইয়ুমের শাসনামলে দেশটি তাদের পর্যটন খাতের ব্যাপক উন্নয়ন করে। জীবনমানের উন্নয়ন ঘটানো হয়।

কিন্তু সে সময়টা দুর্নীতির জন্যও বিখ্যাত। ২০০৮ সালে দেশটির প্রথম সত্যিকারের গণতান্ত্রিক নির্বাচনে গাইয়ুম হেরে যায়, যা ছিল অনেকের কাছে আশ্চর্যজনক। নির্বাচনে রাজনৈতিক বন্দী, বিরোধী দলীয় তরুণ রাজনীতিবিদ মোহামেদ নাশিদ ক্ষমতায় আসেন।

ক্ষমতায় আসার পর তিনি দেশটির রাজনৈতিক ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ধরে রাখেন কিন্তু সেই সঙ্গে আরও দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মন দেন। কিন্তু ২০১২ সালে বিতর্কিত পরিস্থিতিতে নাশিদকে বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করে ২০১৫ সালে জেলে যেতে হয়। তখন ইয়ামিন ক্ষমতায় ছিলেন।

নাশিদের গ্রেফতার নিয়ে তখন যে পরিস্থিতি ছিল সেটাকে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ‘রাজনৈতিক প্রভাবিত’ এবং এ জন্য তারা ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিন্দা করেন।

২০১৬ সালে নাশিদকে দেশত্যাগ করে ব্রিটেনে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়, যেখানে তাকে রাজনৈতিক আশ্রয়ের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছিল। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে, মালদ্বীপে ‘রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি’ দেওয়ার প্রস্তাব প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন ফিরিয়ে দেয়ার পর যখন দেশে রাজনৈতিক সংকট চলছিল তখন নাশিদ ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রকে সেখানে সামরিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানায়।

ভারতকে ‘সামরিক বাহিনীর সমর্থনে’ সেখানে যাওয়ার জন্য ‘যথেষ্ট দাঙ্গাপুলিশ বেষ্টিত’ একজন কর্মকর্তা পাঠানোর আহ্বান জানান তিনি।

নাশিদ সম্ভবত ভারত ও পশ্চিমা বিশ্বের সহমর্মিতা পাওয়ার চেষ্টায় তখন সংকটের জন্য চীনের দিকে আঙ্গুল তোলেন। সামরিক প্রয়োজনে চীনের বিরুদ্ধে দ্বীপ দেশটির ভূমি দখলের অভিযোগ তোলেন তিনি। তার বক্তব্য সংকটকে আরো ঘনীভূত করে।

মালেতে থাকা চীনা দূতাবাস অভিযোগ অস্বীকার করে বিবৃতিতে বলেন, ‘এধরনের বক্তব্য এ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরু ‘। ‘চীনা জনগণের আবেগকে আহত করেছে এ ধরনের বক্তব্য’।

১৩ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্র পরিচালিত চীনা ট্যাবলয়েড পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস খবরের শিরোনাম করে, ‘মালদ্বীপে ভারতীয় সামরিক আগ্রাসন রুখে দেবে চীন’- কিন্তু কিভাবে সেটা করা হবে খবরে বলাও হয় নি- জাতিসংঘের সমর্থন ছাড়া ‘উপযুক্ত কারণ’ ব্যতীত সামরিক হস্তক্ষেপের কোন পরিস্থিতিও সে সময় সেখানে ছিল না।

তাই ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে যখন সংকট ছিল তখন ভারত সামরিক হস্তক্ষেপের চাইতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করাকেই শ্রেয় মনে করে।

যখন নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়, তখন শ্রীলঙ্কায় নির্বাসনে থাকা নাশিদ সেখানকার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের হাতে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন।

নাশিদ এখনো এমডিপি চেয়ারম্যান। এমডিপিসহ আরো তিনটি রাজনৈতিক দল ইয়ামিনের বিপক্ষে নির্বাচনে লড়ার জন্য সলিহকে সমর্থন দিয়েছিল। এদিকে আগামী নভেম্বরের আগে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হস্তান্তর হচ্ছে না। ক্ষমতা হস্তান্তরের এ বিলম্বের জন্য শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।

ইয়ামিনের শাসনামলে যে ভারতের প্রভাব দেশটিতে কমতে শুরু করেছিল তারা অবশ্যই চাইবে যেন সলিহ শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল পরিবেশের মধ্যদিয়ে নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা গ্রহণ করতে পারে।

ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক স্বার্থে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠা দ্বীপ দেশটির নির্বাচনে সলিহর বিজয়ের পর, চীনের ক্ষতির মাত্রা বুঝতে হলে বেইজিংয়ের প্রতিক্রিয়া দেখা ছাড়া ভিন্ন উপায় নেই।

   

নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১৭



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ। এ যুদ্ধে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর সংখ্যা। শেষ খবর পাওয়া অনুযায়ী গাজা ভূখণ্ডের নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

এছাড়া উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েল বিমান হামলা চালানোর পর অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছেন।

রোববার (১৯ মে) এই তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নুসেইরাতের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত এবং আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে।

আল জাজিরা আরও জানিয়েছে, উত্তর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

;

বৈশ্বিক প্লাস্টিক দূষণের তালিকায় কোক-পেপসি শীর্ষে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বজুড়ে প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে ব্র্যান্ডেড প্লাস্টিক দূষণের অর্ধেকেরও বেশির জন্য দায়ী ৫৬টি কোম্পানি। ৫ বছর ব্যাপী চালানো নতুন গবেষণায় প্লাস্টিক বর্জ্যের পেছনে দায়ী কোম্পানিগুলি নথিভুক্ত করেছে৷

গবেষণায় দেখা গেছে, সমস্ত ব্র্যান্ডেড প্লাস্টিক দূষণের ২০ ভাগের জন্য মাত্র ৪টি কোম্পানী দায়ী। এর মধ্যে শীর্ষ কোম্পানিগুলো হলো— কোকা-কোলা (১১ শতাংশ), পেপসিকো (৫ শতাংশ), নেসলে (৩ শতাংশ) এবং ড্যানোন (২ শতাংশ)।

ডালহৌসি ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে সারা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায়, ৫ বছরের ধরে ৮৪টি দেশে প্লাস্টিক দূষণের উপর পরিক্ষা নিরীক্ষার উপর ভিত্তি করে 'সায়েন্স অ্যাডভান্স' জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটি হয়।


ডালহৌসির স্কুল ফর রিসোর্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজের অধ্যাপক টনি ওয়াকার বলেছেন, "বিশ্বের কয়েকটি বৃহত্তম কর্পোরেশন তারা গ্রহের প্রতিটি দেশে পৌঁছে গেছে।"

তথ্য সংগ্রহের জন্য বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্লাস্টিক 'নিরীক্ষা' পরিচালনা করেছেন। তারা সতর্কতার সাথে সমুদ্র সৈকত, পার্ক, নদী এবং অন্যান্য এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে প্লাস্টিকের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করেছেন। তারা প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রতিটি অংশ পরীক্ষা করে দৃশ্যমান ব্র্যান্ড বা ট্রেডমার্ক চিহ্নিত করেছে। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ব্রেক ফ্রি ফ্রম প্লাস্টিক নামের সংস্থাটি ১ হাজার ৫শ ৭৬টি নিরীক্ষা সমন্বয় করেছে।

গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে প্লাস্টিকের উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে, ২০০০ সালে ২০০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন থেকে থেকে ২০১৯ সালে ৪০০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন হয়েছে।

একটি বিবৃতিতে, কোকা-কোলা বলেছে ২০২৫ সালের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী শতভাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্যাকেজিং ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি ২০৩০ সালের মধ্যে কোম্পানিটি ৫০ শতাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপাদান ব্যবহার করতে চায় প্যাকেজিংয়ের জন্য।

পেপসিকো জানিয়েছে, কোম্পানিটি প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় একটি বৈশ্বিক নীতি কাঠামোর পক্ষে এবং এমন একটি অর্থনীতি গড়ে তুলতে কাজ করছে যেখানে প্লাস্টিক পুনরায় ব্যবহার করা সম্ভব।

কোম্পানি আরও জানায়, "প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় সহায়তা করার জন্য একটি বড় এবং বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক নীতি কাঠামোর পক্ষে কাজ করছে। এবং তাদের অন্যদেরও এটি করার সুযোগটি কাজে লাগাতে আহ্বান জানিয়েছে তারা।"

এক বিবৃতিতে, নেসলে স্বীকার করেছে যে প্লাস্টিক দূষণ একটি "গুরুতর সমস্যা এবং এটি সমাধানের জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি" - এবং এটি বিশ্বব্যাপী আইনিভাবে বাধ্যতামূলক নিয়ন্ত্রণকে সমর্থন করে৷ এটি ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়া, উত্তর আমেরিকা এবং লাতিন আমেরিকায় বর্জ্য সংগ্রহ, বাছাই এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য স্কিমগুলি বিকাশের জন্য নেসলের চলমান প্রকল্পগুলিরও উল্লেখ করেছে।

এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য জানায়নি ফ্রান্সভিত্তিক বহুজাতিক খাদ্যসামগ্রী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ড্যানোন।

ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ সায়েন্সের অধ্যাপক প্যাট্রিসিয়া করকোরান বলেছেন, বিশ্বব্যাপী করা গবেষণাটি "অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ"।

করকোরান গ্রেট লেকের সৈকতে প্লাস্টিক দূষণ পরীক্ষা করার অনুরূপ গবেষণায় কাজ করেছে। গবেষণায়, "খাদ্য এবং পানীয়ের বর্জ্যই সেখানে রয়েছে - এটি কোনও আশ্চর্যের বিষয় নয় বলে তিনি জানিয়েছেন"।

তিনি বলেন, "আপনি যদি সবচেয়ে বড় উৎপাদককে হাইলাইট করেন...তাহলে হয়তো এটি কোম্পানির সচেতনতা বাড়াবে এবং কোম্পানি এটি সম্পর্কে কিছু করতে পারে।"

সমীক্ষায় দেখা গেছে যে উদ্ধারকৃত প্লাস্টিক আইটেমগুলির ৫০ শতাংশেরও বেশি সূর্য, পানি এবং বাতাসের সংস্পর্শে আসার পরে কোনও স্পষ্ট ব্র্যান্ডিং এর লেবেল ছিল না।

গবেষকরা বলেছেন যে তাদের গবেষণায় প্লাস্টিক পণ্য এবং প্যাকেজিংয়ের উৎপাদন এবং লেবেলিংয়ের বিষয়ে বৃহত্তর স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তারয়েছে, যাতে দূষণ কারা করছে তা বের করা সহজ হয় এবং সংস্থাগুলিকে জবাবদিহি করা যায়।

তারা একটি আন্তর্জাতিক, ওপেন-অ্যাক্সেস ডাটাবেস তৈরির জন্য যুক্তি দেখান, যেখানে কোম্পানিগুলি তাদের পণ্য, প্যাকেজিং এবং ব্র্যান্ডগুলি পরিবেশে পরিমাণগতভাবে ট্র্যাক করতে এবং রিপোর্ট করতে বাধ্য।

কানাডার পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী স্টিভেন গিলবিউল্ট একটি নতুন রেজিস্ট্রি ঘোষণা করেছিলেন, যেখানে কোম্পানিগুলিতে কতটা প্লাস্টিক উত্পাদিত হচ্ছে এবং এটি কোথায় গিয়ে শেষ হবে তার বিশদ সরবরাহ করতে হবে।

গিলবিউল্ট কানাডার নতুন প্লাস্টিক রেজিস্ট্রির পরিকল্পনা এবং অটোয়াতে জাতিসংঘের প্লাস্টিক দূষণ চুক্তির আলোচনার বিশদ বিবরণ সম্পর্কে বলেছেন। তিনি আলোচনার লক্ষ্য ১৭০টিরও বেশি দেশের জন্য প্লাস্টিক দূষণের জন্য একটি আন্তর্জাতিক আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক চুক্তি নিয়ে আসার পরামর্শও দিয়েছিলেন।

;

রোমানিয়ায় কার্গো জাহাজ ডুবে নিখোঁজ ৩



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রোমানিয়ার উপকূলে একটি কার্গো জাহাজ ডুবে ওই জাহাজে থাকা তিন সিরীয় নাবিক নিখোঁজ হয়েছেন। তাদের খুঁজতে কৃষ্ণ সাগরে অভিযান চালাচ্ছে দেশটির নৌবাহিনী

শনিবার (১৮ মে) সকালে ‘মোহাম্মদ জেড’ নামের তানজানিয়ার পতাকাবাহী জাহাজটি রোমানিয়ান শহর সান্তু জর্জে থেকে ২৬ নটিক্যাল মাইল দূরে ডুবে যায়। ওই সময় জাহাজটিতে ১১ জন ক্রু ছিলেন। যার মধ্যে নয়জন সিরিয়ার এবং দুজন মিসরের নাগরিক ছিলেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে রোমানিয়ার নৌবাহিনী।

তারা আরও জানিয়েছে, ভোর ৪টার দিকে দুর্ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে নৌ সেনা ও পুলিশ সদস্যদের পাঠানো হয়। ওই সময় কাছাকাছি থাকা দুটি বাণিজ্যিক জাহাজও উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়।

জাহাজের ৮ নাবিককে কাছে থাকা একটি বাণিজ্যিক জাহাজই উদ্ধার করে। কিন্তু তিনজন নিখোঁজ হয়ে যান। এই তিনজনের সবাই সিরিয়ার নাগরিক। কী কারণে জাহাজটি ডুবে গেলো সেই তথ্য এখনো জানা যায়নি।

;

ইরানে দুই নারীসহ ৭ জনের ফাঁসি কার্যকর



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত দুই নারীসহ সাতজনের ফাঁসি কার্যকর করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরান।

শনিবার (১৮ মে) তাঁদের এ দণ্ড কার্যকর করা হয়। খবর এএফপি। 

নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে আইএইচআর বলেছে, ফাঁসি কার্যকর করা দুই নারীর মধ্যে একজন হলেন পারভিন মুসাভি। ৫৩ বছর বয়সী এই নারী দুই সন্তানের জননী। তাকে মাদক-সংক্রান্ত মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। আরেক নারী হলেন ফাতেমেহ আবদুল্লাহি (২৭)। স্বামীকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মুসাভি চার বছর ধরে কারাগারে ছিলেন। মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে, পাঁচ কেজি পরিমাণ মাদকের একটি প্যাকেজ বহন করার জন্য এই নারীকে ১৫ ইউরোর সমপরিমাণ অর্থ দেওয়া হয়েছিল।

আইএইচআর জানিয়েছে, এ বছর ইরানে এখন পর্যন্ত ২২৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এর মধ্যে চলতি মাসে অন্তত ৫০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

;