ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা জুড়ে ইসরায়েলি হামলায় আরও ৫৮ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। এনিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৩১৭ জনে।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যাম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় দুটি পৃথক বিমান হামলায় আল-মাওয়াসিতে সাতজনকে হত্যা করেছে। অনেকে এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। তাদের উদ্ধারে কাজ করছে কর্মীরা। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা জুড়ে ইসরায়েলি হামলায় ৫৮ জন নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ সংস্থার প্রধান গাজায় স্কুল এবং হাসপাতালে ইসরায়েলের এমন হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
অবরুদ্ধ উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক বলেছেন, গাজা ত্যাগে ইসরায়েল যে নির্দেশ দিয়েছে তা মান্য করা সম্ভব না। কারণ, শিশুসহ প্রায় ৪০০ জন বেসামরিক মানুষ ভেতরে চিকিৎসাধীন আছে। যাদের অক্সিজেন এবং ইনকিউবেটর প্রয়োজন। এই মূহুর্তে তাদের বের করা সম্ভব না।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পুনর্বাসন বিভাগ জানিয়েছে, গাজা-ইসরায়েল সংঘাতকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৫০০ জন ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য আহত হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৫০০ জন দু’বার আহত হয়েছে। আহত সৈন্যদের ৩৭ শতাংশ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আঘাতে ভুগছেন, যাদের বেশিরভাগই হাড়ে আঘাত পেয়েছে। এছাড়া, প্রায় ৫ হাজার ২০০ জন মানসিক রোগে ভুগছেন।
গাজায় বর্বর হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েলি হামলায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৫ হাজার ৩১৭ জন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ৭ হাজার ৭১৩ জন।
অন্যদিকে, ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়েছে। বন্দি রয়েছে ২০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি নাগরিক।