পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রিসভায় তপশিলি জাতির প্রতিনিধিত্ব



ড. রূপকুমার বর্মণ
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা। সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা। সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ-ভারতের বিভাজনের পর ভারত ও পাকিস্তানের দুদেশের দুই আইন মন্ত্রীই ছিলেন দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। ভারতের আইন ও ন্যায়বিচার দপ্তরের মন্ত্রী ড. বি. আর. আম্বেদকর (১৯৪৭-১৯৫১) এবং পাকিস্তানের আইন, ন্যায়বিচার ও শ্রম দপ্তরের মন্ত্রী যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল (১৯৪৭-১৯৫০) উভয়েই স্বাধীন রাষ্ট্রের মন্ত্রণালয়ে তথাকথিত পিছিয়ে পড়া জনগণের প্রতিনিধিত্বের দাবি করেছিলেন যাতে করে তাদের অভাব-অভিযোগ শোনার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। কিন্তু ড. আম্বেদকর ও মণ্ডল ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে কায়েমি স্বার্থের বাঁধার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে দুজনেই স্বাধীন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর থেকে পদত্যাগ করেছিলেন।

ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে দেখা যাবে যে ঔপনিবেশিক শাসনকালে বিভিন্ন প্রদেশ (বিশেষ করে অবিভক্ত বাংলা) ও কেন্দ্রিয় সরকারের তপশিলি জাতির প্রতিনিধিগণ তাঁদের অভাব–অভিযোগ ও দাবি তুলে ধরতে কুণ্ঠিত হননি। কিন্তু ভারতের স্বাধীনতা-পরবর্তী কালে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রিসভায় তপশিলি জাতির অবস্থা কখনই শক্তিশালী হয়নি। সরকারে তাঁদের দুর্বল অবস্থার বীজ বপিত হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের যাত্রার সময় থেকেই (১৯৪৭)। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ র নির্বাচন-পূর্ব সময়ে পশ্চিমবঙ্গে তপশিলি জাতির কেবল মাত্র দুজন মন্ত্রীর অস্তিত্ব ছিল (হেমচন্দ্র নস্কর ও মোহিনীমোহন বর্মন)।

বিধান চন্দ্র রায় ১৯৫২ র নির্বাচনের পরে হেমচন্দ্র নস্কর (কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্প) ছাড়াও শ্যামাপ্রসাদ বর্মন (রাজবংশী সম্প্রদায়ের বিধায়ক: শুল্ক দপ্তর) ও সতীশ চন্দ্র সিংহরায়কে (রাজবংশী জাতির বিধায়ক:পরিবহন দপ্তরের উপমন্ত্রী) তাঁর সরকারে স্থান দিয়েছিলেন। কিন্তু মন্ত্রিসভা [মোট = ১৪, উচ্চবর্ণীয় হিন্দু:-১১, তপশিলি:২, মুসলিম:১] ও উপমন্ত্রকের [মোট =১৫, উচ্চবর্ণীয় হিন্দু: ১২, তপশিলি জাতি:-১, তপশিলি জনজাতি: ১, মুসলিম: ১] তপশিলি জাতির উপস্থিতি ছিল যথাক্রমে ১৪% ও ৬% (যেখানে উচ্চবর্ণীয় হিন্দুরা ৭৮% ও ৮০% মন্ত্রক দখলে রেখেছিলেন)।

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার দ্বিতীয় নির্বাচনের পরেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারে তপশিলি জাতির প্রান্তিক অবস্থানের খুব একটা পরিবর্তন ঘটেনি। ১৯৫৭ থেকে ১৯৬২ র মধ্যে পূর্বে উল্লেখিত তিনজন মন্ত্রী ছাড়াও পৌণ্ড্র জাতির বিধায়ক শ্রীঅর্ধেন্দু শেখর নস্করকে স্বাস্থ্য দপ্তরের উপমন্ত্রী করা হয়েছিল। সার্বিকভাবে মন্ত্রিসভায় তপশিলি জাতির উপস্থিতি ছিল মাত্র ১৩.৭৯% পক্ষান্তরে উচ্চবর্ণীয় হিন্দু ও মুসলমানগণ যথাক্রমে ৭৫.৮৬% ও ১০.৭৯% মন্ত্রক দখলে রেখেছিলেন। এখানে আরোও লক্ষণীয় বিষয় হল যে পশ্চিমবঙ্গের মাত্র দুটো তপশিলি জাতি (রাজবংশী ও পৌণ্ড্র) ছাড়া অন্য সম্প্রদায়গুলোর কোন প্রতিনিধিত্ব ছিলনা।

বিধানসভার তৃতীয় নির্বাচনের পর পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রিসভায় (১৯৬২ – ৬৭) তপশিলি জাতির কোন পূর্ণমন্ত্রী ছিলেননা। প্রথম দিকে (১১ই মার্চ – ৮ই জুলাই, ১৯৬২) তপশিলি জাতির কেবল দুজন মন্ত্রী [অর্ধেন্দু শেখর নস্কর ও প্রমথরঞ্জন ঠাকুর (নমঃশুদ্র বিধায়ক তথা মতুয়া মহাসংঘের প্রতিষ্ঠাতা)] ও একজন উপমন্ত্রীকে স্থান দেওয়া হয়েছিল যা ১৯৬৩ র ডিসেম্বর পর্যন্ত বজায় ছিল। কিন্তু এরপর থেকে ১৯৬৭ র নির্বাচন পর্যন্ত কেবলমাত্র অর্ধেন্দু শেখর নস্কর ছাড়া আর কোন তপশিলি জাতির বিধায়ককে মন্ত্রিসভায় দেখা যায়নি। তাই তৃতীয় বিধানসভার (১৯৬২ -১৯৬৭) শেষপর্যায়ে মন্ত্রিসভায় তপশিলি জাতির উপস্থিতি ৬% বেশি ছিল না যেখানে উচ্চবর্ণীয় হিন্দুরা ৮১% মন্ত্রককে নিজেদের দখলে রেখেছিলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে রাজবংশী সম্প্রদায়ের বদলে এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রিসভায় নমঃশুদ্র সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটে।

মন্ত্রিসভায় নমঃশুদ্রদের উপস্থিতি প্রথম যুক্তফ্রন্ট সরকারের (২২ মার্চ – ২০ নভেম্বর, ১৯৬৭) সময়কালেও বজায় ছিল। এমনকি নমঃশুদ্র সম্প্রদায়ের চারুমিহির সরকারই (বাংলা কংগ্রেসের হাঁসখালি বিধানসভার বিধায়ক) অজয় মুখার্জীর নেতৃত্বধীন সরকারে একমাত্র তপশিলি জাতির মন্ত্রী ছিলেন (যা ছিল মন্ত্রিসভার মাত্র ৫%)। পিডিএফ (২১ নভেম্বর ১৯৬৭ – ১৪ই জানুয়ারি১৯৬৮) ও কংগ্রেস-পিডিফ (১৫ই জানুয়ারী – ১৯ ফ্রেব্রুয়ারি ১৯৬৮) সরকারের আমলেও তপশিলি জাতির রাজনৈতিক প্রান্তিকতার কোন পরিবর্তন ঘটেনি। কেবলমাত্র জগদানন্দ রায়কে (ফালাকাটার রাজবংশী সম্প্রদায়ের বিধায়ক) তপশিলি জাতি ও উপজাতি কল্যাণ দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

অজয় মুখার্জীর নেতৃত্বে দ্বিতীয় যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠিত হলে (১৯৬৯) মন্ত্রিসভার গঠনে প্রথম যুক্তফ্রন্টের পুনরাবৃত্তি ঘটে। চারুমিহির সরকারকে পুনরায় সমষ্টি উন্নয়নের দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ‘বাগদি-বাউরি-ডোম-মুচি অধ্যুষিত অঞ্চল’ থেকে নির্বাচিত কৃষ্ণচন্দ্র হালদারকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হয়েছিল। তা সত্বেও মন্ত্রিসভার গঠনের নিরিখে তপশিলি জাতির সংখ্যা ৬% এর বেশি ছিলনা। তপশিলি জাতির জনসংখ্যার তুলনায় এটা নেহাৎই বেমানান।

১৯৬৯ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অস্থিরতা তপশিলি জাতির ক্ষমতায়নে খুব বেশি পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারেনি। ১৯৭২ এ সিদ্ধার্থশংকর রায়ের নেতৃত্বে পশিমবঙ্গে কংগ্রেসের স্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও ২৯ সদস্যের মন্ত্রিসভায় [২৯ জন পূর্ণমন্ত্রী, ৯ জন রাষ্ট্রমন্ত্রী ও ৪ জন উপমন্ত্রী] তপশিলি জাতির কোন পূর্ণমন্ত্রী ছিলেন না। কেবলমাত্র নমঃশুদ্র সম্প্রদায়ের আনন্দমোহন বিশ্বাস (কৃষি ও সমষ্টি উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী) ও পৌণ্ড্র সম্প্রদায়ের গোবিন্দ চন্দ্র নস্কর (শিক্ষাদপ্তর) কে রাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে বসার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এখানে লক্ষণীয় যে পশ্চিমবঙ্গের সরকারের এখানকার সর্ববৃহৎ তপশিলি (রাজবংশী) সম্প্রদায়ের  কোন উপস্থিতি ছিলনা। মন্ত্রিসভায় রাজবংশীদের অনুপস্থিতি ১৯৭০ র দশক থেকে তাদের মনে আঞ্চলিকতার বীজ বপন করেছিল।

১৯৭৭ এ পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের আবির্ভাব ভারত তথা বহির্বিশ্বে বহুআলোচিত বিষয়। জ্যোতি বসুর নেতৃত্বে বামফ্রন্টের যাত্রা পশ্চিমবঙ্গের সরকার গঠনে বহুবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়। প্রথমত, উপমন্ত্রীর পদ তুলে দেওয়া হয়। দ্বিতীয়ত, বামফ্রন্টের শরিক দলগুলোকে সন্তুষ্ট রেখে মন্ত্রিসভার গঠন ও মন্ত্রক বিতরণ অত্যন্ত কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়ায়। তৃতীয়ত, ভারসাম্য রক্ষার রাজনীতির মধ্যে সরকারে তপশিলি জাতির প্রবেশ করার সুযোগ হয়ে পড়ে খুবই সীমিত। তপশিলি জাতির আসনে বামফ্রন্টের অভূতপূর্ব সাফল্য লাভ হলেও একমাত্র কান্তি বিশ্বাস [নমঃশুদ্র সম্প্রদায়ের বিধায়ক; যুব ও পাসপোর্ট মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী] ছাড়া আর কোন তপশিলি জাতির বিধায়ককে মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হয়নি। ৩০ সদস্যের মন্ত্রিসভার মধ্যে এটা ছিল ৩.৩% যা পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত গঠিত মন্ত্রিসভার মধ্যে সর্বনিম্ন। এ প্রসঙ্গে একথা বলাও অযৌক্তিক হবে না যে মন্ত্রিসভায় দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের তপশিলি জাতির প্রতিনিধিত্ব সম্পূর্ণভাবে লোপ পেয়েছিল।

পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের দ্বিতীয় মন্ত্রিসভাতেও (১৯৮২ -৮৭ ) তপশিলি জাতির অবস্থানের আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। যদিও ১৯৮২ র নির্বাচন তপশিলি জাতির সংরক্ষিত আসনের ৯১.৫২% দখল করেছিল বামফ্রন্ট কিন্তু মন্ত্রিসভায় তারা মাত্র ৪.৪৪% পদ পেয়েছিলেন যা তাঁদের আসন বা জনসংখ্যার তুলনায় অত্যন্ত কম। তবে এই মন্ত্রিসভায় নমঃশুদ্র জাতির শ্রীকান্তি বিশ্বাস প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তরের দায়িত্ব পেয়েছিলেন আর রাজবংশী জাতির বনমালী রায় পেয়েছিলেন তপশিলি জাতি ও আদিবাসী কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রক।

মন্ত্রকপ্রাপ্তির নিরিখে তপশিলি জাতির অবস্থান খানিকটা উন্নত হয়েছিল বামফ্রন্টের তৃতীয় মন্ত্রিসভায় (১৯৮৭ -৯১)। পূর্বতন দুজন ছাড়াও শ্রীদীনেশ চন্দ্র ডাকুয়া (রাজবংশী জাতির বিধায়ক) মন্ত্রিসভার স্থান পেয়েছিলেন। চতুর্থ বামফ্রন্ট মন্ত্রিসভায় (১৯৯১ -১৯৯৬) দুজন রাজবংশী জাতির মন্ত্রী ছাড়াও এই প্রথম ‘বাউড়ি-বাগদি অঞ্চল’ থেকে দুজন [১জন বাউড়ি ও ১জন বাগদি] তপশিলি জাতির বিধায়ক মন্ত্রিত্ব পাওয়ায় তাদের শতকরা হার একটু বেড়েছিল। এই বৃদ্ধির হার আরেকটু বেড়েছিল পঞ্চম বামফ্রন্ট মন্ত্রিসভায় (১৯৯৬–২০০১) যেখানে তপশিলি জাতির উপস্থিতির হার ছিল ১০% [ কান্তি বিশ্বাস (নমঃশুদ্র), দীনেশ চন্দ্র ডাকুয়া ও যোগেন চন্দ্র বর্মন (রাজবংশী), নিমাই চন্দ্র মাল (মাল), ও বিলাশি বালা সহিস]। মন্ত্রিসভায় তপশিলি জাতির এই অবস্থান বজায় ছিল মুখ্যমন্ত্রীত্ব থেকে জ্যোতি বসুর পদত্যাগের (২০০০) পরও।

মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদের ভট্টাচার্যের শাসনকালে বামফ্রন্ট মন্ত্রিসভায় তপশিলি জাতির অবস্থান ও গুরুত্ব অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল। ষষ্ঠ (২০০১-২০০৬) ও সপ্তম বাম মন্ত্রিসভায় (২০০৬-২০১১) তপশিলিদের হার ছিল ১৬.৬৬% (পাঁচ জন পূর্ণমন্ত্রী ও ৩ জন রাষ্ট্রমন্ত্রী)। অবশ্য মোট জন সংখ্যা, আসন সংখ্যা ও গুরুত্বের নীরিখে তা কোনভাবেই উচ্চবর্ণীয়দের সঙ্গে তুলনীয় ছিল না।

বামফ্রন্টের দীর্ঘ শাসনকালে (১৯৭৭-২০১১) তপশিলি জাতির বিধায়কগণ প্রায় সম্পূর্ণভাবেই বামদলগুলোর সঙ্গে ছিলেন কিন্তু ক্ষমতায়নের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা তাঁদের প্রান্তিক অবস্থানের উন্নয়ন ঘটাতে পারেননি। এই অবস্থানের কোন রকম হেরফের হয়নি বাম-পরবর্তী ডান-শাসিত মন্ত্রিসভায় (২০১১-২০১৬ ও ২০১৬ –২০২১)। মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন প্রথম ও দ্বিতীয় তৃণমূল মন্ত্রিসভায় তপশিলি জাতির অংশ মাত্র ৬% থেকে ১০%। এটা কোন ভাবেই তাঁদের মোট আসন (৬৮ =২৩%) এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

তবে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অসংরক্ষিত আসনে তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায় থেকে তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থী চয়নের মানসিকতা। পৌণ্ড্র, রাজবংশী ও সাঁওতাল সম্প্রদায়ের কয়েকজন প্রার্থী অসংরক্ষিত আসন থেকে জয়ী হয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় প্রবেশ করেছেন । আর এদের মধ্যে মন্ত্রিত্বও জুটেছে একজনের ভাগ্যে। কিন্তু শ্রীমতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃতীয় মা-মাটি-মানুষের সরকারে সংরক্ষিত আসন থেকে নির্বাচিত ৮৪ জন বিধায়ক থেকে মাত্র ছয় জন মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন। এই ছয় জনের মাত্র তিন তপশিলি জাতির বিধায়ক [শিউলি সাহা (নমঃশূদ্র): পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর, পরেশ চন্দ্র অধিকারী (রাজবংশী): বিদ্যালয় শিক্ষা ও দিলিপ মণ্ডল (পৌন্ড্র): পরিবহন দপ্তর] রাষ্ট্রমন্ত্রীর মর্যাদা পেয়েছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্যনীয় যে ২০২১ এর নির্বাচনে তপশিলি জাতির একটা বড় অংশ ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেওয়ায় তাঁদের থেকে মন্ত্রক প্রাপ্তির সুযোগ অনেকটাই কমে গেছে। তবে উত্তরবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আগামী দিনে তপশিলি জাতির  আরোও দুয়েকজন মন্ত্রী হবেন বলে আশা করা যায়!

গুরুত্বের বিচারে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রিসভায় তপশিলি বিধায়কদের অবস্থান কখনই প্রান্তিকতার মাত্রাকে অতিক্রম করতে পারেনি। যে কয়েকটি সম্প্রদায় [রাজবংশী, নমঃশুদ্র, পৌণ্ড্র, বাগদি, মাল, বাউড়ি, ইত্যাদি] মন্ত্রিত্ব করার সুযোগ পেয়েছেন তাঁরা আসলে তপশিলি জাতির প্রতিনিধিত্ব করার বদলে উচ্চবর্ণীয় নিয়ন্ত্রিত রাজনৈতিক দলগুলোর একান্ত আস্থাভাজন অনুগামীর ভূমিকা পালন করে চলেছেন।

ড. রূপ কুমার বর্মণ, কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও আম্বেদকর চর্চা কেন্দ্রের সমন্বয়ক ।

   

তাপ বাড়ছে লন্ডনে, জনগণকে ‘নতুন বাস্তবতা’ মেনে নেওয়ার আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লন্ডনে গ্রীষ্মকালে স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক থিঙ্কট্যাংক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এনভায়র্নমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলেপমেন্ট (আইআইইডি)। এমন অবস্থায় শহরের মানুষদেরকে 'নতুন বাস্তবতার' সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

বুধবার (১ মে) আইআইইডির প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রবন্ধের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, লন্ডনের মানুষ গত তিন দশকে (১৯৯৩-২০২৩) ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা ছিল এমন ১১৬ দিন পার করছে। এর মধ্যে ৫৯ দিন ছিল গত ১০ বছরে। আর ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখছে ৭ দিন। যার ৫ দিন ছিল গত পাঁচ বছরের মধ্যে। 

১৯৯০ থেকে ২০০০— এই দশ বছরের প্রতি বছরই গ্রীষ্মকালে অস্বাভাবিক উষ্ণ দিনের সংখ্যা বেড়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রবন্ধে। কিন্তু এ সময়সীমায় টানা উষ্ণতা বা তাপপ্রবাহের তেমন কোনো রেকর্ড পাওয়িা যায়নি। কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে গ্রীষ্মকালগুলোতে টানা তিন বা তারও বেশি দিন ধরে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখছে লন্ডনবাসী।

গবেষণা প্রবন্ধে আরও বলা হয়, এমন তাপমাত্রায় মানুষের স্বাস্থ্যের অবনতির পাশাপাশি হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনাও রয়েছে। এমনকি কাজের ক্ষেত্রে মানুষ বাধার সম্মুখীন হতে পারে।

আইআইইডির জ্যেষ্ঠ গবেষক টাকার ল্যান্ডসমান এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘লন্ডনের জলবায়ু দিন দিন অধিকতর উষ্ণ হয়ে উঠেছে এবং জনগণ যেন পরিবর্তিত তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে, সেজন্য সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

এমন পরিস্থিতিতে পরিবর্তিত সেই ‘নতুন বাস্তবতার’ সঙ্গে জনগণকে খাপ খাইয়ে নিতে আহ্বান জানিয়েছে তিনি।

;

গাজা গণহত্যায় মার্কিন সমাজে প্রতিবাদের জাগৃতি



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
গাজা গণহত্যায় মার্কিন সমাজে প্রতিবাদের জাগৃতি

গাজা গণহত্যায় মার্কিন সমাজে প্রতিবাদের জাগৃতি

  • Font increase
  • Font Decrease

ক্যাপিটালিজমের কেন্দ্রস্থল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বব্যাপী শোষণ, যুদ্ধবাজী ও দাদাগিরির জন্য অভিযুক্ত করা হলেও সে দেশের সমাজে মানবাধিকার, মুক্তচিন্তা ও প্রতিবাদের বহু স্মৃতি বিদ্যমান। গাজা গণহত্যায় মার্কিন সমাজে প্রতিবাদের সেই স্মৃতি আবার জাগ্রত হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে।

দৃশ্যত মার্কিন প্রশাসনের মদদে ও ছত্রছায়ায় আগ্রাসী ইসরায়েল চলমান-একতরফা আক্রমণে গাজায় প্রায় ৩৫ হাজার সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে, যাদের অধিকাংশই নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ ও নিন্দার মুখেও মার্কিন প্রকাশন হন্তারক ইসরায়েলের অব্যাহত গণহত্যার বিষয়ে ‘মানবিক অবস্থান‘ গ্রহণ করেনি। এই যখন পরিস্থিতি, ঠিক তখনই গর্জে উঠে মার্কিন যুব প্রজন্ম। অগ্নিগর্ভ আকার ধারণ করে সেখানকার নামজাদা বিশ্ববিদ্রালয়গুলো, যা বিগত শতাব্দীর ষাটের দশকে ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, জার্মানিরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রআন্দোলনের উত্তাল দিনগুলোকে মনে করিয়ে দেয়।

প্রধান প্রধান মার্কিন গণমাধ্যমসহ বিশ্বমিডিয়া মার্কিন ক্যাম্পাসগুলোর প্রতিবাদমুখর পরিস্থিতি তুলে ধরছে। মার্কিন সিভিল সমাজ ও বুদ্ধিজীবীগণ ছাত্রআন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে। তারা বলছেন, ছাত্রআন্দোলন অহিংস বিধায় তাতে কোনরূপ বাধা দেওয়া যাবে না। তবে কোথাও কোথাও ছাত্রদের বিরুদ্ধে কঠোরতা প্রদর্শন করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ও গাজা-গণহত্যার প্রতিবাদে সূচিত মার্কিন ছাত্রআন্দোলনের কয়েকটি দিক অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

১. মার্কিনসহ ইউরোপের দেশগুলোতে অন্যায় করার পরেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কিছুই না বলার আইনগত ও সংস্কৃতিগত প্রতিরোধ ভেঙে দিয়েছে ছাত্রআন্দোলন।

২. মার্কিন গণতান্ত্রিক সমাজের মর্মমূলে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের যে ধ্বনি, তাকে পুনরায় প্রতিধ্বনিত করেছে ছাত্রসমাজ।

৩. মুসলমানদের পক্ষে ন্যায়সঙ্গত কারণে কথা বললেও তাকে ইসলামফেবিয়া লেবেল দেওয়ার পাশ্চাত্য কৌশল প্রত্যাখ্যাত হয়েছে ছাত্রআন্দোলনের মাধ্যমে।

৪. ক্রমশ কর্তৃত্ববাদী হওয়ার পক্ষে ক্রমঅগ্রসরমান মার্কিন নীতি, নেতৃত্ব ও রাজনীতিকে চপোটাঘাত করেছে এই প্রতিবাদ।

৫. বিশ্বের মানবিক বিবেক যে অবলুপ্ত হয়নি, তা প্রমাণ করেছে মার্কিন দেশের এই তীব্র ছাত্রআন্দোলন।

৬. ছাত্র-যুব সমাজের প্রতিবাদের শক্তি ও অন্যায়ের বিরোধিতার স্পৃহা আবার ফিরিয়ে এনেছে এই আন্দোলন।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ও গাজা-গণহত্যার প্রতিবাদে সূচিত মার্কিন ছাত্রআন্দোলনের ফলে মার্কিন নেতৃত্ব ও প্রশাসন আগের মতো অন্ধভাবে ইসরায়েলের গণহত্যার সমর্থন করতে, অস্ত্র সাহায্য করতে বা জাতিসংঘে ইসরায়েলের নারকীয়তার পক্ষে দাঁড়াতে দুইবার ভাববে। কারণ, সামনেই মার্কিন নির্বাচন। জনমত প্রো-ইসরায়েল থেকে অ্যান্টি-ইসরায়েলের দিকে চলে গেলে এককভাবে নেতাদের পক্ষে ইসরায়েলের জন্য কাজ করা সহজ হবে না। এই আন্দোলন ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন নীতি তথা বৃহত্তর অর্থে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে নিশ্চয় কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির পথ অনেকটা মসৃণ হবে বলেও আশা করা যায়।

অতীতে তীব্র ছাত্রআন্দোলনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ভিয়েতনামে বর্বরতা প্রদর্শনের নীতি থেকে ফিরিয়ে এনেছিল। মার্কিন আক্রমণে ভিয়েতমান যখন মৃতদের এক ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশে পরিণত হতে চলেছিল, ঠিক তখনই ফুঁসে উঠে মার্কিন ছাত্রসমাজ। তীব্র প্রতিবাদ ও আন্দোলনে মার্কিন প্রশাসন কোণঠাসা হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পরাজয় ও ভুল স্বীকার করে ভিয়েতনাম থেকে নত মুখে ফিরে আসতে বাধ্য হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

শুধু ভিয়েতনাম নয়, মার্কিন ছাত্রআন্দোলন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী শাসনের অবসানে ও নেলসন ম্যান্ডেলার মুক্তির জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বর্ণবাদ ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে এবং অভিবাসী মানুষের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রেও ছাত্রআন্দোলনের দৃশ্যমান অবদান মার্কিন দেশের ইতিহাসে লিপিবদ্ধ রয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও অতীতের নানা পর্যায়ে ইউরোপের দেশে দেশে ছাত্রআন্দোলন ইতিহাসের বদল ঘটিয়েছে। এবং ছাত্রআন্দোলন কখনোই পরাজিত হয় নি। শেষ বিজয় তাদেরই হয়েছে।

মার্কিন দেশেও তেমনই হবে। কারণ, সেখানকার বর্তমান আন্দোলন দাবানলের মতো এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। প্রশাসন যেখানে দমন করার চেষ্টা করছে, সেখানেই আন্দোলন আরো তীব্র হচ্ছে। ছাত্রদের পাশে শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও নাগরিক সমাজ এসে দাঁড়াচ্ছে। বলা যায়, ক্রমেই এই আন্দোলন বৃহত্তর সামাজিক আন্দোলনের চরিত্র ধারণ করছে।

বিশেষ করে, মার্কিন দেশের মিডিয়া, বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশাসনে প্রবল শক্তিশালী ইসরায়েলি লবি সব সময়ই আরব ও মুসলিমদের চরিত্রহনন করে আসছে। এমনকি, হাজার হাজার গাজাবাসীকে হত্যা করার মতো নৃশংস গণহত্যাকেও বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছে তারা। তাদের কারসাজিতে মার্কিন তথা পশ্চিমা জনমনে ইসরায়েলের প্রতি অন্ধ সহানুভূতি ও আরব-মুসলিমদের প্রতি অহেতুক বিদ্বেষ বিরাজমান। এমন একটি পরিস্থিতি ভেঙে মার্কিন ছাত্রসমাজ মানবিকতা ও সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোর ঘটনা প্রমাণ করে, কোনো ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারই প্রকৃত সত্যকে আড়াল করতে পারে না। প্রায় ৩৫ হাজার নিরীহ মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও মার্কিন ছাত্রসমাজের চোখ খুলে দিয়েছে এবং তাদেরকে মানবিক সত্যের মিছিলে সমবেত ও আন্দোলন মুখর করেছে।

;

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দাদের আশ্রয় দেবে যুক্তরাষ্ট্র



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রায় সাত মাস চলমান। এ অবস্থায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন গাজার ১৭ লাখেরও বেশি বাসিন্দা। মানবিক সংকটে অনেকেই গাজা থেকে পালিয়ে জীবন রক্ষা করতে চাইছেন। এ পরিস্থিতিতে বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে চাইলে তাদের আশ্রয় দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছে তারা।

বুধবার (১ মে) সিবিএস নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন সরকারের অভ্যন্তরীণ নথিগুলোতে দেখা গেছে, মার্কিন নাগরিকদের সঙ্গে সংযুক্ত গাজা থেকে পালিয়ে আসা ফিলিস্তিনিদের ‘মার্কিন রিফিউজি অ্যাডমিশন প্রোগ্রাম’র মাধ্যমে আশ্রয় দেয়ার সম্ভাব্য বিকল্প উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি কেন্দ্রীয় সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সংক্রান্ত প্রস্তাবও পেশ করেছেন।

নথি অনুসারে, মার্কিন কর্মকর্তারা গাজা থেকে অতিরিক্ত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দেয়ার কথাও বিবেচনা করছেন। তবে প্রস্তাবটি মিশরের সঙ্গে সমন্বয়ের ওপর নির্ভর করবে। কারণ দেশটি এতদিন ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দিতে রাজি ছিল না।

মঙ্গলবার রাতে সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৮শ' টিরও বেশি আমেরিকান নাগরিক এবং তাদের পরিবারকে গাজা ছেড়ে যেতে সহায়তা করেছে। যাদের মধ্যে অনেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নির্দেশে আমরা এ সহায়তা করেছি। এছাড়াও কিছু বিশেষভাবে দুর্বল ব্যক্তিদের, যেমন গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন এবং ক্যান্সারের চিকিৎসা নিচ্ছে এমন শিশুদের এই অঞ্চলের নিকটবর্তী হাসপাতালে যত্ন নেওয়ার মতো সহায়তা আমরা করেছি এবং এটি অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। প্রায় সাত মাস ধরে চলা এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

;

ই-মেইলে বোমার হুমকি, দিল্লির ১০০ স্কুল বন্ধ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ই-মেইলের মাধ্যমে বোমার হুমকি পাওয়ায় ভারতের রাজধানী দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী নয়ডা শহরের প্রায় ১০০ স্কুল খালি করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তল্লাশি শুরু করেছে। তবে এখন পর্যন্ত সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।

বুধবার (১ মে) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

দেশটির বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সন্তানদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য দিল্লি ও নয়ডাজুড়ে স্কুলগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে অপক্ষো করছেন অভিভাবকরা। স্কুলগুলোতে পুলিশের বিশেষ দল, ডগ স্কোয়াড ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট তল্লাশি পরিচালনা করেছে।

দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র সুমন নালওয়া এনডিটিভিকে বলেন, যেসব স্কুলে বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে সেখানে আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি অভিভাবকদের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। এখন পর্যন্ত সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।

আরেক পুলিশ অফিসার বলেন, এটা ভুয়া বলে মনে হচ্ছে। আতঙ্ক ছড়াতে এত বড় পরিসরে সব স্কুলে মেল পাঠানো হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। দিল্লির শিক্ষামন্ত্রী অতিশী লোকজনকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন অনুযায়ী অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ করবে।

দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনা বলেন, পুলিশ বোমার হুমকি ই-মেলের উত্স খুঁজে পেয়েছে। এটি একটি প্রতারণা বলে মনে হচ্ছে। আমি দিল্লির নাগরিকদের আশ্বস্ত করছি এই বিষয়ে পুলিশ সতর্ক রয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দিল্লি ও নয়ডার স্কুলে বোমার হুমকি দিয়ে করা ই-মেইলের উৎস রাশিয়া বলে জানিয়েছেন দিল্লির এক কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ভিপিএন ব্যবহার করে রাশিয়া থেকে ই-মেইল করা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। 

 

;