কাশ্মীরে হত্যা: ছড়াচ্ছে জঙ্গিবাদের শঙ্কা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কাশ্মীরের প্রধান শহর শ্রীনগরের একটি রেস্তোরাঁয় যাচ্ছিলেন ৪০ বছর বয়সী সিদ্ধার্থ বিন্দ্রু। হঠাৎ বেজে উঠল মুঠোফোন। অপর প্রান্ত থেকে শুনলেন দুঃসংবাদটি। জানলেন ‘বাবা আর নেই’। ওই অঞ্চলের বিখ্যাত এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট হিসেবে পরিচিত সিদ্ধার্থ বিন্দ্রু খবরটি শুনে বড় ধাক্কা খেলেন। জানতে পারলেন কিছু লোক তাদের পারিবারিক ওষুধের দোকানে ঢুকে তার বাবা মাখন লাল বিন্দ্রুকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। তাকে মোট তিনটি গুলি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ অক্টোবর।

মাখন লাল বিন্দ্রু (৬৮) কাশ্মীরের বিখ্যাত চিকিৎসক রাখেশ্বর নাথ বিন্দ্রুর ছেলে। এই পরিবারটি বিখ্যাত ফার্মেসি চেইন শপ পরিচালনা করে থাকে। কাশ্মীর অঞ্চলে বিভিন্ন জীবন রক্ষাকারী ওষুধ বিক্রির জন্য পরিচিত এটি।

কাশ্মীরে স্থানীয়ভাবে ‘পণ্ডিত’ হিসেবে পরিচিত কাশ্মীরি ভাষাভাষী যে ৮০০ হিন্দু পরিবার আছে, বিন্দ্রুরা তাদের মধ্যে অন্যতম। নব্বইয়ের দশকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এ অঞ্চলটিতে যখন সশস্ত্র জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে তখন হাজারো হিন্দু ওই এলাকা ছেড়ে ভারতের অন্য শহরগুলোতে চলে যায়। তবে বিন্দ্রুরা সেখানে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই সশস্ত্র বিদ্রোহীরা মূলত ভারতের কাছ থেকে স্বাধীনতা চায়। তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন এখানকার সংখ্যালঘু হিন্দুরা। তাদের বিরুদ্ধে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীকে সহযোগিতার অভিযোগ তোলে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা।

মঙ্গলবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত-নিয়ন্ত্রিত এই কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সময়ে বেসামরিক মানুষজনকে হত্যার ফলে আবারও ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে এই অঞ্চলের সংখ্যালঘু লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বেড়ে গেছে।

যেদিন মাখন লাল বিন্দ্রু খুন হন ওই দিনই আরও দুজন বেসামরিক ব্যক্তি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এর মধ্যে একজন ভারতের বিহার থেকে আসা হিন্দু ফেরিওয়ালা ও একজন মুসলিম ক্যাবচালক। তাদের দুজনকেই অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা গুলি করে হত্যা করে। এর আগে গত ২ অক্টোবর একই কায়দায় দুজন কাশ্মীরি মুসলিম নাগরিককে হত্যা করা হয়।

এর দুই দিন বাদেই আবার বন্দুকধারীরা শ্রীনগরের বিচ্ছিন্ন সংগম এলাকার একটি সরকারি স্কুলে হামলা চালিয়ে সেখানকার শিখ প্রধান শিক্ষক ও হিন্দু একজন শিক্ষককে হত্যা করে। কাশ্মীরের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে বেছে বেছে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে এভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এর ফলে অনেক হিন্দু পরিবার এখন উত্তেজনাপূর্ণ এ অঞ্চল ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিকে নব্বইয়ের দশকের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে।

ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই কাশ্মীরকে নিজেদের বলে দাবি কর। কিন্তু পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী এই দুই দেশের কাছে কাশ্মীরের অংশ বিশেষ রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক সব সময় উত্তেজনাপূর্ণ। কিন্তু ২০১৯ সালে কাশ্মীরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দিল্লি তুলে নিলে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়।

এই পদক্ষেপের পরে কয়েক মাস ধরে কাশ্মীরে সড়ক অবরোধ এবং প্রশাসনিক পরিবর্তন ঘটতে থাকে। স্থানীয়দের ভাষায়, ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে জনসংখ্যাতাত্ত্বিক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে দিল্লি এই পরিবর্তন এনেছিল।

গত সপ্তাহে নিহত স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুপিন্দার কাউরের স্বামী রামেশপাল সিং বলেন, স্ত্রীর মৃত্যুর পর দুই দিন পর্যন্ত তিনি কোনো কথা বলতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘স্ত্রীকে মৃত দেখেছি। আমার কাছে আর সবকিছুর কোনো অর্থ নেই।’

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বন্দুকধারী হামলাকারী স্কুলে ঢুকে সবাইকে একসঙ্গে জড়ো করে পরিচয় জানতে চান। পরে প্রধান শিক্ষক ও আরেক শিক্ষককে আলাদা করে গুলি করা হয়।

সুপিন্দারের প্রতিবেশী মাজিদ বলেন, ‘তিনি ছিলেন বোনের মতো। তিনি এতটাই উদার ছিলেন যে, এক মুসলিম এতিম মেয়েকে দত্তক নিয়েছিলেন। তার বেতনের কিছু অংশ মেয়েটির ভরণপোষণের জন্য ব্যয় করতেন।’

গত দুই দশকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের হত্যাকাণ্ডের তালিকায় মাখন লাল ও সুপিন্দারের নামও নতুন করে যুক্ত হলো। এর আগে গত বছরের মার্চ মাসে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা অনন্তনাগ জেলায় ৩৫ জন ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে। তারা সবাই ছিলেন শিখ। ২০০৩ সালে পুলওয়ামা জেলার নন্দীমার্গে ২০ জনের বেশি কাশ্মীরি পণ্ডিত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

সম্প্রতি এক সপ্তাহের মধ্যে সেখানে সাতজনের বেশি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এই হত্যাকাণ্ড এমন এক সময়ে ঘটেছে যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন সরকারের ৭০ জনের বেশি মন্ত্রী কাশ্মীর সফর করছেন। এসব মন্ত্রীকে ভারতীয় সংবিধান থেকে ‘৩৭০ অনুচ্ছেদ’ বাতিল করার সুবিধা তুলে ধরতে পাঠানো হয়েছিল।

৩৭০ অনুচ্ছেদ অনুসারে, কাশ্মীরের নিজস্ব সংবিধান থাকবে। এ ছাড়া সামরিক, যোগাযোগ ও পররাষ্ট্রনীতি ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে রাজ্য সরকারের অনুমোদন লাগবে। এর অর্থ হলো, আলাদা আইনকানুন দিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের জনগণের নাগরিকত্ব, সম্পদের মালিকানা, মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করা হচ্ছিল এত দিন। এ কারণেই অন্য রাজ্যের অধিবাসীরা সেখানে জমি কিংবা সম্পদ কিনতে পারতেন না। এ ছাড়া ভারতের সংবিধানের যে ভাগে ৩৭০ অনুচ্ছেদ যুক্ত, সেই ভাগে ‘অস্থায়ী, অন্তর্বর্তী এবং বিশেষ বিধানের’ বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে। এই বিশেষ বিধানের জন্যই বিশেষ মর্যাদা পেয়েছিল জম্মু-কাশ্মীর।

স্থানীয় রাজনীতিবিদরা বলছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থেকে অনেক দূরে। কেউ কেউ একে নব্বইয়ের দশকের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করছেন। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি এ হত্যাকাণ্ডগুলোকে শান্তি ও স্বাভাবিক পরিস্থিতির মিথ্যা দাবির বিরুদ্ধে ‘জোর আওয়াজ’ বলে মন্তব্য করেছেন।

কাশ্মীরের পুলিশ প্রধান বিজয় কুমার বলেছেন, এ বছর কাশ্মীরে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের হাতে অন্তত ২৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন স্থানীয় হিন্দু ও শিখ সম্প্রদায়ের এবং দুজন পৃথক রাজ্য থেকে আসা শ্রমিক।

নিহতদের অধিকাংশই মুসলিম সম্প্রদায়ের হলেও চলতি সপ্তাহে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হত্যায় ধর্মীয় উত্তেজনার আশঙ্কা ছড়িয়েছে।

জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের মহাপরিচালক দিলবাগ সিং বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ড সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার একটা চেষ্টা।

পুলিশ বলছে, আক্রমণকারীদের ধরতে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। সূত্র বলছে, জামিনে বাইরে থাকা শত শত সাবেক সশস্ত্র বিদ্রোহী এবং বিক্ষোভকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। তবে কাশ্মীরি পণ্ডিতরা বলছেন, তারা ভয় পাচ্ছেন। অনেকেই এলাকা ছাড়ার চিন্তাভাবনা করছেন।

কাশ্মীরি পণ্ডিতদের একটি সংগঠনের প্রধান সঞ্জয় টিকো (৫৩) বলেন, ‘বেশ কিছু পরিবার সম্প্রতি কাশ্মীর ছেড়েছে এবং অনেকেই ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। আমি আতঙ্কে থাকা পণ্ডিত পরিবার থেকে ফোনকল পাচ্ছি। কর্তৃপক্ষ আমাকে শ্রীনগরের বাড়ি থেকে সরিয়ে হোটেলে রেখেছে। এ ধরনের ভয়ার্ত পরিবেশে আমরা কীভাবে বাস করব?’

শ্রীনগরে বিন্দ্রুদের বাড়িগুলোতে এখন ব্যাপক নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করে এ ধরনের একটি বাড়ির একজন বাসিন্দা বলেন, ‘অনেক পরিবার চলে গেছে। আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছি। কোনো ঘটনা ঘটলে সরকারি কর্মকর্তারা এখানে এসে আমাদের সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু তারা কীভাবে সব স্কুল ও অফিসে নিরাপত্তা দেবে?

ভয় আর আতঙ্ক শুধু কাশ্মীরি এ পণ্ডিতদেরই গ্রাস করেনি, বরং তা পুরো উপত্যকাজুড়েই ছড়িয়ে পড়েছে।

১৯৯১ সালে ‘ক্রসফায়ারে’ স্বজন হারানো ছুতার মিস্ত্রি মুহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘নব্বইয়ে দশকে পণ্ডিতদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ছিল হৃদয়বিদারক। আবার সে রকম ঘটনা দেখা যাচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুরো ভেঙে পড়েছিল আমি সেই দিনগুলো স্মরণ করতে ভয় পাই। এমনটা যেন আর না হয়।’

কিন্তু সব কাশ্মীরি পণ্ডিত এলাকা ছাড়তে চান না। বিন্দ্রুরা বলছেন, তারা ফিরে যাবেন। মাখন লাল বিন্দ্রুর মেয়ে শ্রদ্ধা বিন্দ্রু বলেন, ‘আমরা কাশ্মীরের বাসিন্দা, আমরা কাশ্মীরি, মাখন লালের রক্ত আমাদের শরীরে।’

শ্রদ্ধা বলেন, তার বাবার মৃত্যুর পর যেসব মানুষ তাঁদের বাড়িতে গেছেন তার ৯০ শতাংশের বেশি মুসলমান। তার ভাষ্য, ‘আমার মনে হয় না, এ জায়গা ছাড়ার কোনো কারণ আমাদের আছে। আমাদের লোকজন আমাদের চারপাশে আছেন।’

   

গাজায় যা ঘটছে তা গণহত্যা নয়: বাইডেন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জোরালোভাবে ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে কথা বলেছেন। ফিলিস্তিনপন্থি প্রতিবাদকারীদের সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেছেন, গাজায় হামাসের ‘জঙ্গিদের’ বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে ইসরায়েলি বাহিনী গণহত্যা সংঘটিত করছে না।

সোমবার (২০ মে) হোয়াইট হাউজে ‘ইহুদি আমেরিকান হেরিটেজ মাস’ অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেন, গাজায় যা ঘটছে তা গণহত্যা নয়। আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি।

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাইডেন নিয়মিত ফিলিস্তিনপন্থি বক্তাদের প্রতিবাদের মুখোমুখি হচ্ছেন। ইসরায়েলের পক্ষে তার অবিচল সমর্থনের জন্য এসব প্রতিবাদকারীরা বাইডেনকে ‘গণহত্যা জো’ তকমা দিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

বাইডেন বলেন, ইসরায়েলের নিজেই হামাস ‘জঙ্গিদের’ হামলার ভুক্তভোগী। ৭ অক্টোবর ইসরায়েল দক্ষিণাঞ্চলে হামাস ‘জঙ্গিরা’ হামলা চালিয়ে ১২০০ জনকে হত্যা আর কয়েকশ জনকে জিম্মি করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ‘লৌহদৃঢ়’।

সিনওয়ার ও হামাসের বাকি কসাইদের অপসারণ করতে ইসরায়েলের পাশে আছি আমরা। আমরা হামাসের পরাজয় চাই। এটি করার জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে কাজ করছি আমরা, বলেন তিনি।

গাজায় হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের মধ্যে যারা অসুস্থ, বয়স্ক ও আহত তাদের মুক্তির জন্য ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলা আলোচনা স্থবির হয়ে আছে, কিন্তু বাইডেন তাদের মুক্তির চেষ্টায় ক্ষান্ত না দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।

তিনি বলেন, যত কঠিনই হোক না কেন আমরা তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছি, বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছি। বাইডেন গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিরও আহ্বান জানিয়েছেন।

;

মিয়ানমার সংঘাত

দক্ষিণে ব্যাপক সংঘর্ষ, সরকারি কর্মীদের সরাচ্ছে জান্তা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমারে আরাকান আর্মি ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। এ পরস্থিতিতে দক্ষিণাঞ্চলের শহরগুলো থেকে সরকারি কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে জান্তা সরকার।

সোমবার (২০ মে) সংবাদ মাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কাচিন রাজ্যে জান্তা সেনাদের ঘাঁটি টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি। ব্যাপক সহিংসতার কারণে গত সপ্তাহ ধরে থান্ডওয়ে থেকে সরকারি কর্মকর্তা- কর্মচারীদের সরিয়ে নিচ্ছে মিয়ানমার জান্তা সরকার। বাসিন্দারা জানান, বড় বড় ট্রাকে করে সরকারি সব অফিস থেকে আসাবপত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

থান্ডওয়ের একজন বাসিন্দা বলেছেন, 'জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের যন্ত্রপাতি এবং সরকারি কর্মীদের ওই এলাকার একটি ধর্মীয় হলে রাখা হয়েছিল। তাদের সরানো হচ্ছে। আমি তাদের ইয়াঙ্গুনে গাড়ি চালাতে দেখেছি। আমি এখন পর্যন্ত ৪৮টি ভারী যন্ত্রপাতির ইউনিট এখানে এসেছে।'

এর আগে গত ১৩ এপ্রিল টাউনশিপে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে থান্ডওয়েতে সরকার এবং আরাকান আর্মির মধ্যে কমপক্ষে ১০ বার সংঘর্ষ হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে রাখাইন রাজ্যে শুরু হওয়া সংঘর্ষে দেশটিতে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। বিদ্রোহীদের হামলার মুখে একের পর এক ঘাঁটি হাতছাড়া হচ্ছে সেনাদের। রাখাইন, কাচিন রাজ্য, বাগো অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে জান্তা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।

এছাড়াও, ভারত সীমান্তবর্তী আরও দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিদ্রোহীরা। সোমবার ইরাবতি জানায়, চীন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের সিখা ও টনজ্যং শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী চীন ন্যাশনাল আর্মি। অঞ্চলটিতে গেলো কয়েকদিন ধরে জান্তা সেনাদের সঙ্গে বিদ্রোহীদের ব্যাপক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।

;

তাবরিজ শহরে রাইসির মরদেহ, দাফন হবে মাশাহাদে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম ইসিসহ নিহত সবার মরদেহ সোমবার থেকে ইরানের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলের তাবরিজ শহরেই রাখা হয়েছে। সেখানে প্রথম জানাজা শেষে রাইসির মরদেহ নেওয়া হবে রাজধানী শহর তেহরানে।

ইরানের ইসলামিক প্রোপাগেশন অর্গানাইজেশনের তাবরিজ দপ্তরের পরিচালক হোজ্জাতোলেসলাম মাহমুদ হোসেইনি জানিয়েছেন, তাবরিজের কবরস্থানে প্রেসিডেন্ট রাইসিসহ বাকিদের মরদেহ রাখা হবে। মঙ্গলবার (২১ মে) সেখানে জানাজা হবে। এরপর তাবরিজের মানুষ প্রয়াত প্রেসিডেন্টকে শেষবিদায় জানাবেন। 

এই কর্মকর্তা আরও জানান, বুধবার (২২ মে) তেহরানে রাইসির জানাজা হওয়ার কথা রয়েছে। সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি তাতে অংশ নেবেন। এর একদিন পর জন্মশহর মাশাহাদে রাইসিকে দাফন করা হতে পারে। 

এদিকে তেহরানের শহরতলিতে রাইসির স্মরণে একটি আয়োজন চলছে। সেখানে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে প্রয়াত প্রেসিডেন্টকে স্মরণ করছেন, শোক জানাচ্ছেন।

রোববার আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় গত দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানসহ অন্য কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।

প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর সোমবার ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজের খবরে বলা হয়, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি দেশটির জনগণের জন্য তার দায়িত্ব পালন করার সময় একটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। তিনি শহীদ হয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানসহ বাকিরাও নিহত হয়েছেন।

;

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২৮ জুন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হয়েছেন হেলিপকপ্টার দুর্ঘটনায়। তার মৃত্যুর পর দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা ইরনা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচন প্রক্রিয়ার সময় বিবেচনা করার পর দেশটির প্রধান ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা আগামী ২৮ জুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ৩০ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত প্রার্থীদের নিবন্ধন করা হবে; আর প্রচার-প্রচারণা চলবে ১২ থেকে ২৭ জুন।

দেশটির সংবিধানের ১৩১ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রেসিডেন্টের পদ শূন্য হওয়ার পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। ফলে দেশটিতে আগামী ২৯ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

রোববার (১৯ মে) আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে দুদেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করেছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা।

পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে রাইসিকে বহনকারী বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। এতে রাইসিসহ ওই হেলিকপ্টারের সব যাত্রী নিহত হন। অবশ্য অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।

;