তেলে নিষেধাজ্ঞা দিলে গ্যাস বন্ধের হুমকি মস্কোর
ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর কারণে পশ্চিমারা রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে তারা জার্মানির প্রধান গ্যাস পাইপলাইন বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডা নোভাক সোমবার (৭ মার্চ) এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। খবর বিবিসির।
‘রাশিয়ান তেলের প্রত্যাখ্যান বিশ্ব বাজারের জন্য বিপর্যয়কর পরিণতি ঘটাবে। সরবরাহ ব্যাহত হলে ইউরোপীয় বাজারে দ্রুত রাশিয়ার তেলের বিকল্প খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। যার ফলে দাম দ্বিগুণেরও বেশি অর্থাৎ প্রতি ব্যারেল প্রতি ‘‘তিনশো’’ ডলার বেড়ে যাবে। সোমবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে রুশ উপপ্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আলেক্সান্ডার নোভাক আরও বলেন, ‘পশ্চিমাদের রাশিয়ার তেলের বিকল্প খুঁজে পেতে কয়েক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে এবং সেটি ইউরোপীয় ক্রেতাদের জন্য অনেক ব্যয়বহুলও হবে। আর নিষেধাজ্ঞার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় দেশগুলোই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর নর্ড স্ট্রিম ২ নামে রাশিয়া-জার্মানির মধ্যে সংযোগকারী একটি নতুন গ্যাস পাইপলাইনের অনুমোদন স্থগিত করেছিল বার্লিন। জার্মানির সেই সিদ্ধান্তের দিকে ইঙ্গিত করে রুশ উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে এর প্রতিশোধ হিসেবে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে পারে মস্কো।
পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক হামলা আর পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপিত একের পর এক নিষেধাজ্ঞা বেড়েই চলছে। কঠোর সব নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত মস্কোর পিছু হটার কোনো লক্ষণ নেই। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা করার খবর সামনে আসে।
আর এরপরই বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠে। অপরিশোধিত তেলের দাম সোমবার এশিয়ার বাজারে ব্যারেল প্রতি ১৩৯ মার্কিন ডলারে পৌঁছায়। সর্বশেষ ২০০৮ সালে তেলের দাম এই পর্যায়ে উঠেছিল।
বিবিসি বলছে, ইউরোপেীয় ইউনিয়ন (ইইউ) তার মোট গ্যাসের প্রায় ৪০ শতাংশ এবং মোট তেলের ৩০ শতাংশ রাশিয়া থেকে পেয়ে থাকে এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা বা অন্য কোনো কারণে এই তেল-গ্যাসের সরবরাহ ব্যাহত হলে এর কোনো সহজ বিকল্প নেই।
উল্লেখ্য, সারা বিশ্বের মধ্যে রাশিয়া প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনে শীর্ষে এবং অপরিশোধিত তেল উৎপন্নে দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ। আর তাই ইউক্রেনে সামরিক অভিযান পরিচালনার কারণে রাশিয়ার তেলের ওপর পশ্চিমা বিশ্ব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে সেটি রুশ অর্থনীতিকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।