যুবরাজ সালমানের ওপর নাখোশ সত্ত্বেও বাইডেন কেন সৌদিতে



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্য সফরে ইসরায়েল হয়ে শুক্রবার সৌদি আরব গেছেন জো বাইডেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে বিশ্বজুড়ে আলোচিত সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতা পেয়েও মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেন সৌদিতে গেলেন। এই নিয়ে খোদ যুক্তরাষ্ট্রে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

তার দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরেই একটি অংশ বাইডেনের সৌদি আরব সফরে প্রচণ্ড নাখোশ। তাদের কথা- প্রেসিডেন্ট তার নীতি-নৈতিকতার সাথে আপোষ করলেন।

সৌদি আরব আগাগোড়া মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার প্রধান একটি মিত্র দেশ। অনেক দিন ধরেই আমেরিকার নতুন যেকোনো প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা নিয়ে প্রথম যেসব দেশে যান তার একটি সৌদি আরব। তাহলে এখন কেন এই বিতর্ক?

কারণ, প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে-পরে তার কথা, অঙ্গীকারের সাথে বাইডেনের এই সফরের কোনো সামঞ্জস্য নেই।

ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে সৌদি আরবের ভূমিকা নিয়ে আমেরিকার বহু মানুষের মতো জো বাইডেনও ক্ষুব্ধ। এরপর সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডে তিনি যুবরাজ সালমান ও সৌদি রাজপরিবারের ওপর এতটাই নাখোশ হয়েছিলেন যে নির্বাচনী প্রচারণায় ঘোষণা দেন ক্ষমতায় গেলে তিনি এই সৌদি শাসকদের একঘরে করে ছাড়বেন।

আমেরিকা দশকের পর দশক ধরে প্রধানত জ্বালানি তেলের স্বার্থে মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে সৌদি রাজপরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখেছে। কিন্তু বাইডেন ক্ষমতায় এসে বলতে শুরু করেন বাইরের যে কোনো দেশের সাথে তার সরকারের সম্পর্কের ভিত্তি হবে মানবাধিকার।

এরপর নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় গিয়েও তিনি সৌদি যুবরাজ সালমানের সাথে দেখা করতে বা কথা বলতে অস্বীকার করেন। সৌদি যুবরাজ তার সাথে কথা বলতে কয়েকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি স্থগিত করেন বাইডেন।

সৌদি আরব সফরের খবর নিশ্চিত হওয়ার পরও অর্থাৎ গত মাসেও বাইডেন বলেন, যুবরাজ সালমানের সাথে তার কোনো কথা হবে না। কিন্তু পরে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় দু’জনের মধ্যে জেদ্দায় কথা হবে।

ক্ষমতা নেওয়ার ১৮ মাসের মাথায় এসে কেন উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করলেন বাইডেন?

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাস্তবতার কাছে মাথা নত করছেন বা মেনে নিচ্ছেন ৭৯ বছরের এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর এর পেছনে প্রধানত কাজ করছে ইউক্রেন যুদ্ধ। গত কয়েক দিন ধরে নিজেই তার মত বদলের পক্ষে যুক্তি তুল ধরার চেষ্টা করছেন বাইডেন।

কয়েক দিন আগে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় নিজের লেখা এক নিবন্ধে তিনি বলেছেন, সৌদি আরবকে ব্ল্যাংক চেক দে্য়ারর নীতি তিনি বদলে দিয়েছেন ঠিকই কিন্তু ইউরোপে যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের ও সৌদি আরবের গুরুত্ব তিনি অনুধাবন করছেন।

বাইডেন লিখেছেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসনের পাল্টা ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে। চীনের সাথে প্রতিযোগিতায় আমাদের শক্ত অবস্থান প্রয়োজন.... এ কারণে সেসব দেশের সাথে আমাদের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে যারা আমাদের চেষ্টায় সাহায্য করতে পারে। সৌদি আরব তেমন একটি দেশ।’

জেরুজালেমে বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিডের সাথে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন সৌদি যুবরাজের সাথে বৈঠকে তিনি খাশোগি হত্যাকাণ্ডের কথা তুলবেন কিনা। ওই প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে বাইডেন আবারও যুক্তি তুলে ধরেন, কেন তিনি সৌদি আরব যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ‘অশান্ত মধ্যপাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য এবং এই অঞ্চল যেন চীন ও রাশিয়ার প্রভাব বলয়ে ঢুকে না পড়ে সেজন্য সৌদি আরবের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘খাশোগির ব্যাপারে আমার অবস্থান সুস্পষ্ট। আমি কখনই মানবাধিকারের প্রশ্নে চুপ থাকবো না। কিন্তু আমি সৌদি আরব যাচ্ছি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থে, মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের প্রভাব সংহত করার এটি একটি সুযোগ।’

বাইডেন সরাসরি বলেন, আমেরিকা যখন বিশ্বে তাদের প্রভাব ধরে রাখতে চীন ও রাশিয়ার সাথে লড়াইয়ে লিপ্ত, সেখানে সৌদিদের অবজ্ঞা করলে আমেরিকার স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে।

এ ছাড়াও তিনি বলেন, ‘এর সাথে এখন আমেরিকার স্বার্থ জড়িত। এই অঞ্চলে আমেরিকার নেতৃত্ব অক্ষত থাকুক আমি তা নিশ্চিত করতে চাই। এমন কোনো শূন্যতা যেন এখানে তৈরি না হয়, যেখানে রাশিয়া এবং চীন তা পূরণ করে ফেলে।’

এটা অনস্বীকার্য যে, গত ১৮ মাস ধরে হোয়াইট হাউজের সাথে সম্পর্ক শীতল হয়ে যাওয়ায় সৌদিরা চীন ও রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক বাড়িয়েছে। চীনের সাথে সৌদি আরবের ব্যবসা ক্রমাগত বাড়ছে। পুতিনের সাথে যুবরাজ সালমানের সম্পর্ক বেশ উষ্ণ।

তাছাড়া, আমেরিকা অবজ্ঞা করলেও দেশের ভেতর ক্ষমতা সংহত করতে তাকে তেমন কোনো বেগ পেতে হচ্ছে না। আমেরিকা চায় বা না চায় তিনিই যে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই দেশের বাদশাহ হচ্ছেন তা নিয়ে তেমন কোনো সন্দেহ আর নেই।

বাইডেন প্রশাসনের একাংশের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই যুবরাজ সালমান ও সৌদি আরব নিয়ে প্রেসিডেন্টের অবস্থানের পরিণতি নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হচ্ছিল।

ইউক্রেন সঙ্কটের পর যুক্তরাষ্ট্রের তেলের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়ায় অস্বস্তি বেড়ে যায়। বাইডেনও বুঝতে পারছেন বাড়তি সৌদি তেল এখন আমেরিকার জন্য জরুরি।

ওয়াশিংটনে গবেষণা সংস্থা মিডল-ইস্ট ইন্সটিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান কাটুলিস ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘ছেলেমানুষি কাটিয়ে বাইডেনের প্রশাসন অভিজ্ঞ হতে হতে শুরু করেছে। বিষয়টা এমন নয় যে আপনি এই ব্যক্তিকে (যুবরাজ সালমান) ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবেন। ফলে, জটিল এই পরিস্থিতি যতটা সম্ভব সামাল দিয়ে নিজের স্বার্থ দেখা ... মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার এমন নীতির ভুরিভুরি নজির রয়েছে।’

অর্থাৎ সৌদি আরবের ব্যাপারে আমেরিকার গতানুগতিক বিদেশ নীতির পথে ফিরে গেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। কিন্তু অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন, এর রাজনৈতিক মূল্য দিতে হতে পারে তাকে।

আমেরিকাতে এখন সবার নজর শুক্রবার বাইডেন আর যুবরাজ সালমানের মধ্যে কথা কী হলো, তারা হাত মিলিয়েছেন কিনা অথবা বৈঠকে মুড কেমন ছিল- সেসব বিষয়ে।

ডেমোক্র্যাটিক পার্টির একাংশ চায়, বাইডেন যেন সৌদি আরবে বিরোধীদের মুক্তির জন্য চাপ দেন। খাসোগজি হত্যাকাণ্ডের বিচারের কথা তোলেন। ইয়েমেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য চাপ দেন। নতুন করে অস্ত্র বিক্রির কোনো প্রতিশ্রুতি যেন না দেন।

এগুলো না করলে দলের ভেতর চাপে পড়বেন বাইডেন।

তার সমালোচকরা বলছেন, তিনি আবার প্রমাণ করছেন আমেরিকার ক্ষমতার রাজনীতির মূলে রয়েছে সম্পদ ও তেল। মানবাধিকারকে বিদেশ নীতির মূলে রাখার যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন তা মিথ্যা প্রমাণিত করছেন। এরপর কীভাবে তিনি একনায়কদের সমালোচনা করবেন?

গত সপ্তাহে কংগ্রেসের সিনিয়র ডেমোক্র্যাট আ্যাডাম শিফ বলেন বাইডেনের জায়গায় থাকলে তিনি সৌদি আরবে এই সফর করতেন না বা যুবরাজ সালমানের সাথে দেখা করতেন না।

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রকাশক ফ্রেড রায়ান এক নিবন্ধে লিখেছেন, ‘বাইডেন এখন জেদ্দায় হাঁটু গেড়ে একঘরে মানুষটির রক্তে রঞ্জিত হাতে হাত মেলাবেন।’

একই পত্রিকায় খাশোগির বাগদত্তা হাতিস চেনগিজ একটি উপ-সম্পাদকীয়তে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, ‘আপনি বিরোধীদের নির্যাতন করার জন্য, ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের জন্য রাশিয়াকে নিন্দা করেন। সৌদি আরবও একই রকম ভয়ঙ্কর মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। তাদের কেন আপনি ছাড় দিচ্ছেন? তেলের জন্য?’

গত দেড় বছর ধরে হোয়াইট হাউজের কাছ থেকে অবজ্ঞায় যথারীতি নাখোশ ক্ষমতাধর সৌদি যুবরাজ। সে কারণেই ইউক্রেন যুদ্ধের পর পুতিনকে একঘরে করা আমেরিকার চেষ্টায় তেমন সাড়া দেয়নি সৌদি আরব। তেলের উৎপাদন কিছুটা বাড়িয়েছে কিন্তু বলার মতো তেমন নয়।

এপ্রিলে গবেষণা-ধর্মী সাময়িকী দি আটলান্টিকের সাথে এক সাক্ষাৎকারে বাইডেনের সাথে তার ঠাণ্ডা সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নে সৌদি যুবরাজের উত্তর ছিল- ‘আমার তাতে বিন্দুমাত্র আসে যায় না।’

তিনি বলেন, সৌদি আরবকে অবজ্ঞা করলে আমেরিকার জন্য তা হবে দুর্ভাগ্য এবং চীনের জন্য সৌভাগ্য।

গবেষণা সংস্থা ওয়াশিংটন ইন্সটিটিউট অব নিয়ার ইস্ট পলিসির ডেনিস রস ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকাকে বলেন, ‘সৌদি আরবে ক্ষমতার বিভিন্ন স্তরে কথা বলে তার মনে হয়েছে তাদের রাগ যে আমেরিকা কিছু চাইলে সাথে সাথে তারা সাথে সাথে ফোন করে, আমরা কিছু চাইলে তারা ফোনই ধরে না।’

গবেষণা সংস্থা আটলান্টিক কাউন্সিলের গবেষক ও সাবেক গোয়েন্দা জনাথন পানিকফ বিবিসিকে বলেন, ‘সৌদিরা বাইডেন প্রশাসনের কাছ থেকে তাদের অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা চায়। গত ১৮ মাস ধরে কেউই জানে না এই সম্পর্ক কোন দিকে যাবে। এটা একেবারেই সৌদি আরব পছন্দ করছে না।’

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের সাথে শান্তি মীমাংসা শুরুতে সৌদি আরব রাজি হয়েছে কিন্তু বদলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে বাঁচতে শক্তিধর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চায়।

এই সফরের ঠিক আগের দিন ইসরায়েলি বাণিজ্যিক বিমানের জন্য তাদের আকাশপথ উন্মুক্ত করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। যার ফলে, তিনি হলেন প্রথম কোনো আমেরিকান প্রেসিডেন্ট যিনি সরাসরি তেল আবিব থেকে সৌদি আরবে গেলেন।

কিন্তু সৌদি আরবের জন্য বাইডেনের এই সফরের গুরুত্ব প্রধানত রাজনৈতিক।

সফরে কী হয় তার চেয়ে বড় কথা তার দেশে এসে বাইডেন তার সাথে কথা বলছেন- এমন একটি ছবি যুবরাজ সালমানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সৌদি আরবকে সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছামতো যেভাবে পরিবর্তন করতে চাইছেন তিনি বাইডেনের সফরকে তার একটি স্বীকৃতি হিসেবে দেখছেন সৌদি যুবরাজ। এরপর তিনি নিশ্চিতভাবে ভাবতে শুরু করবেন তাকে ও তার দেশকে অবজ্ঞা করা অমেরিকার পক্ষেও সম্ভব নয়। সূত্র- বিবিসি বাংলা।

   

মধ্যস্থতার জন্য ইতিবাচক হলে দোহায় থাকবে হামাস নেতারা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কাতার মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) জানিয়েছে, হামাসের রাজনৈতিক নেতারা ততক্ষণ দোহায় থাকবেন, যতক্ষণ তাদের উপস্থিতি গাজা যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে মধ্যস্থতা প্রচেষ্টার জন্য ইতিবাচক হবে।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা সবসময় বলেছি, ততক্ষণ তারা দোহায় থাকবেন, যতক্ষণ তাদের উপস্থিতি মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় কার্যকর এবং ইতিবাচক হবে।’

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরসহ মধ্যস্থতাকারীরা রমজান মাসে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে ব্যর্থ হওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানি গত সপ্তাহে বলেছেন, ‘কাতার তার ভূমিকা পুনর্মূল্যায়ন করছে।’

এই ঘোষণার ফলে হামাস নেতাদের গ্যাসসমৃদ্ধ উপসাগরীয় রাষ্ট্রটি ছেড়ে দিতে বলা হতে পারে বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল।

সেই গুঞ্জন অবসানে আনসারি নিশ্চিত করে বলেন, ‘কাতার তার মধ্যস্থতা ভূমিকার পুনর্মূল্যায়ন চালিয়ে যাচ্ছে এবং দোহাতে হামাস সদস্যদের উপস্থিতির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না।’

রয়টার্স জানিয়েছে, এই অঞ্চলের বৃহত্তম মার্কিন সামরিক ঘাঁটি পরিচালনাকারী কাতারের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুসহ ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতার প্রচেষ্টার সকল সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

আনসারি মঙ্গলবার বলেন, ‘সবাই জানে যে, মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় কাতারের ভূমিকা কী।’

প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে সফলভাবে গাজা যুদ্ধের একমাত্র বিরতির মধ্যস্থতা করেছে কাতার।

;

ইউক্রেনের জন্য সর্ববৃহৎ সামরিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করবেন সুনাক



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইউক্রেনকে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করার জন্য তার সর্ববৃহৎ সামরিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য।

ব্রিটেন মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক পোল্যান্ড সফরের সময় ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ডের ওই সামরিক প্যাকেজের বিস্তারিত বিবরণ দেবেন।

রাশিয়ার বাহিনী সামনের সারিতে অগ্রসর হতে শুরু করায় এবং তাদের বিমান হামলা বাড়ানোর কারণে বর্ধিত সাহায্যের জন্য মরিয়া হয়ে আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন।

হোয়াইট হাউস প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের যুক্তরাষ্ট্র থেকে দীর্ঘ বিলম্বিত সহায়তা প্যাকেজের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় যুক্তরাজ্য এই ঘোষণা দিয়েছে।

ব্রিটিশ সরকার বলেছে, চলতি অর্থবছরে ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাজ্যের মোট সামরিক সহায়তাকে ৩ বিলিয়ন পাউন্ডে নিয়ে যাবে তারা।

নতুন প্যাকেজের আওতায় গোলাবারুদ, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ড্রোন এবং প্রকৌশল সহায়তার জন্য অর্থায়ন করবে যুক্তরাজ্য।

ব্রিটিশ মিডিয়া অনুসারে আল জাজিরা জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের সর্ববৃহৎ এই প্যাকেজে ৬০টি নৌযান এবং ১,৬০০টিরও বেশি আক্রমণ ও প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি স্টর্ম শ্যাডো নামের দূর-পাল্লার নির্ভুল-নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

এ ছাড়াও ১৬২টি সাঁজোয়া যানসহ ৪০০টিরও বেশি যানবাহনের পাশাপাশি ৪ মিলিয়ন রাউন্ড ছোট অস্ত্রের গোলাবারুদও সরবরাহ করা হবে এই প্যাকেজে।

সুনাক বলেছেন, ‘রাশিয়ার নৃশংস উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে রক্ষা করা আমাদের নিরাপত্তা এবং সমগ্র ইউরোপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যদি পুতিনকে এই আগ্রাসনের যুদ্ধে সফল হতে দেওয়া হয়, তবে পোল্যান্ডও ছাড়বেন না।’

এদিকে, সুনাক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্কের সঙ্গে ও ইউরোপীয় নিরাপত্তা এবং ইউক্রেনের জন্য সমর্থন নিয়ে আলোচনা করতে ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গের সঙ্গে ওয়ারশতে
দেখা করার কথা রয়েছে। এরপর জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের সঙ্গে দেখা করতে জার্মানি যাবেন তিনি।

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা সচিব গ্রান্ট শ্যাপস বলেছেন, ‘প্যাকেজটি ইউরোপে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইউকে সর্বপ্রথম এনএলএডব্লিউ ক্ষেপণাস্ত্র প্রদান করবে। এ ছাড়াও সর্বপ্রথম আধুনিক ট্যাংক এবং সর্বপ্রথম দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রদান করা হবে।’

সুনাক বলেন, ‘এখন আমরা আরও এগিয়ে যাচ্ছি। ইউক্রেন যে অস্তিত্বের লড়াই চালাচ্ছে, তা আমরা বিশ্বকে কখনোই ভুলতে দেব না এবং আমাদের স্থায়ী সমর্থনে তারা জয়ী হবে।’

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, পোল্যান্ডের জন্যও সুনাকের একটি প্রস্তাব রয়েছে। সেটি হলো, আগামী বছর পোল্যান্ডে ন্যাটোর বিমান পুলিশিং চালানোর জন্য একটি ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ারফোর্সের টাইফুন স্কোয়াড্রন মোতায়েন করা।

;

‘এই গ্রীষ্মে অপ্রত্যাশিত এলাকায় হামলা চালাবে রাশিয়া’



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইউক্রেনের ন্যাশনাল গার্ডের কমান্ডার ওলেক্সান্ডার পিভনেঙ্কো মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বলেছেন, রাশিয়ার সেনারা যখন ইউক্রেনে তাদের গ্রীষ্মকালীন আক্রমণ পরিচালনা করবে, তখন তারা ফ্রন্টের অপ্রত্যাশিত অংশে হামলা চালাবে এবং তারা উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করতে পারে।

রয়টার্স জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন দ্বারা হামলা চালানো হয়েছে।

তবে ওলেক্সান্ডার পিভনেঙ্কো বলেছেন, কিয়েভের বাহিনী মস্কোর যেকোনো আক্রমণকে ব্যর্থ করতে প্রস্তুত থাকবে।

তিনি ইউক্রেনের নিউজ আউটলেট রিগা ডট নেট-কে বলেন, ‘আমরা প্রস্তুত হচ্ছি। হ্যাঁ, শত্রুরা আমাদের অপ্রীতিকরভাবে চমক দেবে। তারা এমন এলাকায় হামলা করবে, যেখানে আমরা আশা করি না। কিন্তু, তারা লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না।’

এদিকে, রাশিয়া পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে শুরু করেছে। কিন্তু, দীর্ঘ বিলম্বিত মার্কিন সামরিক সহায়তা অবশেষে এই সপ্তাহে অনুমোদিত হবে এবং শীঘ্রই ইউক্রেনে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ওই সহায়তার আওতায় গোলাবারুদের ঘাটতি দূর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা বিশ্বাস করেন যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত বিজয় দিবস মস্কো ৯ মে’র মধ্যে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পূর্বাঞ্চলীয় শহর চসিভ ইয়ার দখল করতে চাইবে।

পিভনেঙ্কো বলেন, তিনি কিয়েভের সেনাদের কিছু অসুবিধা আগে থেকেই দেখেছেন। তবে, রাশিয়ান বাহিনী জয় লাভ করতে পারবে না।

তিনি বলেন, ‘রাশিয়া সম্ভবত তাদের লক্ষ্যের ১০-১৫% পূরণ করতে সক্ষম হতে পারে। কিন্তু, এটি কৌশলগত বিজয় হবে না।’

তিনি আশা করেন যে, রাশিয়ার সেনারা খারকিভের বেসামরিক অবকাঠামোতে আঘাত হানবে, যার বেশিরভাগই ইতিমধ্যে রাশিয়ান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

;

ইসরায়েলের দুটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে হিজবুল্লাহর হামলা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লেবাননের ইরান-সমর্থিত গ্রুপ হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা ইসরায়েলের হামলার প্রতিশোধ নিতে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ইসরায়েলের দুটি ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েলের ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়া হিসাবে তারা ওই হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। ইসরায়েলের ওই ড্রোন হামলায় দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর এক যোদ্ধা নিহত হয়।

জবাবে মঙ্গলবার, হিজবুল্লাহ একরির উত্তরে দুটি ইসরায়েলি ঘাঁটি লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালায়।

গ্রুপটি একটি বিবৃতিতে বলেছে, লেবাননে মঙ্গলবার ইসরায়েলের হামলায় ইরান-সমর্থিত ওই যোদ্ধা নিহত হন। ওই যোদ্ধা গাড়িতে করে যাওয়ার সময় ইসরায়েলের হামলার শিকার হন।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার মধ্যদিয়ে গাজা যুদ্ধের সূত্রপাত হওয়ার পর থেকে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই আন্তঃসীমান্ত গুলি বিনিময় হচ্ছে।

এএফপি’র এক সাংবাদিক জানান, সীমান্ত থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে উপকূলীয় তায়ার নগরীর কাছে আবু আল-আসওয়াদ এলাকায় সর্বশেষ এ হামলার ঘটনা ঘটে।

সূত্রটি এএফপিকে জানায়, নিহত যোদ্ধা হিজবুল্লাহর বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনীর একজন প্রকৌশলী ছিলেন।

লেবাননের রাষ্ট্রায়ত্ত জাতীয় বার্তা সংস্থা জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী তার গাড়ি লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালায়। এএফপি’র এক সাংবাদিক জানান, ওই ড্রোন হামলায় গাড়িটি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়।

খবরে বলা হয়, হিজবুল্লাহ সাম্প্রতিক সময়ে ইসরাইলি লক্ষ্যবস্তুতে তাদের রকেট হামলা জোরদার করেছে এবং রবিবার সন্ধ্যায় তারা ইসরাইলের একটি ড্রোনকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে।

এএফপির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর থেকে লেবাননে ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ৩৭৭ জন নিহত হয়েছে। এদের বেশিরভাগই
হিজবুল্লাহ যোদ্ধা। তবে নিহতদের মধ্যে ৭০ জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছে।

এদিকে ইসরায়েল বলছে, তাদের দেশের সীমান্তে হিজবুল্লাহ গ্রুপের বিভিন্ন হামলায় ইসরায়েলের ১১ সেনা ও আটজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।

;