যুবরাজ সালমানের ওপর নাখোশ সত্ত্বেও বাইডেন কেন সৌদিতে



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্য সফরে ইসরায়েল হয়ে শুক্রবার সৌদি আরব গেছেন জো বাইডেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে বিশ্বজুড়ে আলোচিত সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতা পেয়েও মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেন সৌদিতে গেলেন। এই নিয়ে খোদ যুক্তরাষ্ট্রে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

তার দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরেই একটি অংশ বাইডেনের সৌদি আরব সফরে প্রচণ্ড নাখোশ। তাদের কথা- প্রেসিডেন্ট তার নীতি-নৈতিকতার সাথে আপোষ করলেন।

সৌদি আরব আগাগোড়া মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার প্রধান একটি মিত্র দেশ। অনেক দিন ধরেই আমেরিকার নতুন যেকোনো প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা নিয়ে প্রথম যেসব দেশে যান তার একটি সৌদি আরব। তাহলে এখন কেন এই বিতর্ক?

কারণ, প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে-পরে তার কথা, অঙ্গীকারের সাথে বাইডেনের এই সফরের কোনো সামঞ্জস্য নেই।

ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে সৌদি আরবের ভূমিকা নিয়ে আমেরিকার বহু মানুষের মতো জো বাইডেনও ক্ষুব্ধ। এরপর সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডে তিনি যুবরাজ সালমান ও সৌদি রাজপরিবারের ওপর এতটাই নাখোশ হয়েছিলেন যে নির্বাচনী প্রচারণায় ঘোষণা দেন ক্ষমতায় গেলে তিনি এই সৌদি শাসকদের একঘরে করে ছাড়বেন।

আমেরিকা দশকের পর দশক ধরে প্রধানত জ্বালানি তেলের স্বার্থে মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে সৌদি রাজপরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখেছে। কিন্তু বাইডেন ক্ষমতায় এসে বলতে শুরু করেন বাইরের যে কোনো দেশের সাথে তার সরকারের সম্পর্কের ভিত্তি হবে মানবাধিকার।

এরপর নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় গিয়েও তিনি সৌদি যুবরাজ সালমানের সাথে দেখা করতে বা কথা বলতে অস্বীকার করেন। সৌদি যুবরাজ তার সাথে কথা বলতে কয়েকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি স্থগিত করেন বাইডেন।

সৌদি আরব সফরের খবর নিশ্চিত হওয়ার পরও অর্থাৎ গত মাসেও বাইডেন বলেন, যুবরাজ সালমানের সাথে তার কোনো কথা হবে না। কিন্তু পরে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় দু’জনের মধ্যে জেদ্দায় কথা হবে।

ক্ষমতা নেওয়ার ১৮ মাসের মাথায় এসে কেন উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করলেন বাইডেন?

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাস্তবতার কাছে মাথা নত করছেন বা মেনে নিচ্ছেন ৭৯ বছরের এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর এর পেছনে প্রধানত কাজ করছে ইউক্রেন যুদ্ধ। গত কয়েক দিন ধরে নিজেই তার মত বদলের পক্ষে যুক্তি তুল ধরার চেষ্টা করছেন বাইডেন।

কয়েক দিন আগে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় নিজের লেখা এক নিবন্ধে তিনি বলেছেন, সৌদি আরবকে ব্ল্যাংক চেক দে্য়ারর নীতি তিনি বদলে দিয়েছেন ঠিকই কিন্তু ইউরোপে যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের ও সৌদি আরবের গুরুত্ব তিনি অনুধাবন করছেন।

বাইডেন লিখেছেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসনের পাল্টা ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে। চীনের সাথে প্রতিযোগিতায় আমাদের শক্ত অবস্থান প্রয়োজন.... এ কারণে সেসব দেশের সাথে আমাদের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে যারা আমাদের চেষ্টায় সাহায্য করতে পারে। সৌদি আরব তেমন একটি দেশ।’

জেরুজালেমে বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিডের সাথে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন সৌদি যুবরাজের সাথে বৈঠকে তিনি খাশোগি হত্যাকাণ্ডের কথা তুলবেন কিনা। ওই প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে বাইডেন আবারও যুক্তি তুলে ধরেন, কেন তিনি সৌদি আরব যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ‘অশান্ত মধ্যপাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য এবং এই অঞ্চল যেন চীন ও রাশিয়ার প্রভাব বলয়ে ঢুকে না পড়ে সেজন্য সৌদি আরবের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘খাশোগির ব্যাপারে আমার অবস্থান সুস্পষ্ট। আমি কখনই মানবাধিকারের প্রশ্নে চুপ থাকবো না। কিন্তু আমি সৌদি আরব যাচ্ছি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থে, মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের প্রভাব সংহত করার এটি একটি সুযোগ।’

বাইডেন সরাসরি বলেন, আমেরিকা যখন বিশ্বে তাদের প্রভাব ধরে রাখতে চীন ও রাশিয়ার সাথে লড়াইয়ে লিপ্ত, সেখানে সৌদিদের অবজ্ঞা করলে আমেরিকার স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে।

এ ছাড়াও তিনি বলেন, ‘এর সাথে এখন আমেরিকার স্বার্থ জড়িত। এই অঞ্চলে আমেরিকার নেতৃত্ব অক্ষত থাকুক আমি তা নিশ্চিত করতে চাই। এমন কোনো শূন্যতা যেন এখানে তৈরি না হয়, যেখানে রাশিয়া এবং চীন তা পূরণ করে ফেলে।’

এটা অনস্বীকার্য যে, গত ১৮ মাস ধরে হোয়াইট হাউজের সাথে সম্পর্ক শীতল হয়ে যাওয়ায় সৌদিরা চীন ও রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক বাড়িয়েছে। চীনের সাথে সৌদি আরবের ব্যবসা ক্রমাগত বাড়ছে। পুতিনের সাথে যুবরাজ সালমানের সম্পর্ক বেশ উষ্ণ।

তাছাড়া, আমেরিকা অবজ্ঞা করলেও দেশের ভেতর ক্ষমতা সংহত করতে তাকে তেমন কোনো বেগ পেতে হচ্ছে না। আমেরিকা চায় বা না চায় তিনিই যে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই দেশের বাদশাহ হচ্ছেন তা নিয়ে তেমন কোনো সন্দেহ আর নেই।

বাইডেন প্রশাসনের একাংশের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই যুবরাজ সালমান ও সৌদি আরব নিয়ে প্রেসিডেন্টের অবস্থানের পরিণতি নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হচ্ছিল।

ইউক্রেন সঙ্কটের পর যুক্তরাষ্ট্রের তেলের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়ায় অস্বস্তি বেড়ে যায়। বাইডেনও বুঝতে পারছেন বাড়তি সৌদি তেল এখন আমেরিকার জন্য জরুরি।

ওয়াশিংটনে গবেষণা সংস্থা মিডল-ইস্ট ইন্সটিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান কাটুলিস ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘ছেলেমানুষি কাটিয়ে বাইডেনের প্রশাসন অভিজ্ঞ হতে হতে শুরু করেছে। বিষয়টা এমন নয় যে আপনি এই ব্যক্তিকে (যুবরাজ সালমান) ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবেন। ফলে, জটিল এই পরিস্থিতি যতটা সম্ভব সামাল দিয়ে নিজের স্বার্থ দেখা ... মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার এমন নীতির ভুরিভুরি নজির রয়েছে।’

অর্থাৎ সৌদি আরবের ব্যাপারে আমেরিকার গতানুগতিক বিদেশ নীতির পথে ফিরে গেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। কিন্তু অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন, এর রাজনৈতিক মূল্য দিতে হতে পারে তাকে।

আমেরিকাতে এখন সবার নজর শুক্রবার বাইডেন আর যুবরাজ সালমানের মধ্যে কথা কী হলো, তারা হাত মিলিয়েছেন কিনা অথবা বৈঠকে মুড কেমন ছিল- সেসব বিষয়ে।

ডেমোক্র্যাটিক পার্টির একাংশ চায়, বাইডেন যেন সৌদি আরবে বিরোধীদের মুক্তির জন্য চাপ দেন। খাসোগজি হত্যাকাণ্ডের বিচারের কথা তোলেন। ইয়েমেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য চাপ দেন। নতুন করে অস্ত্র বিক্রির কোনো প্রতিশ্রুতি যেন না দেন।

এগুলো না করলে দলের ভেতর চাপে পড়বেন বাইডেন।

তার সমালোচকরা বলছেন, তিনি আবার প্রমাণ করছেন আমেরিকার ক্ষমতার রাজনীতির মূলে রয়েছে সম্পদ ও তেল। মানবাধিকারকে বিদেশ নীতির মূলে রাখার যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন তা মিথ্যা প্রমাণিত করছেন। এরপর কীভাবে তিনি একনায়কদের সমালোচনা করবেন?

গত সপ্তাহে কংগ্রেসের সিনিয়র ডেমোক্র্যাট আ্যাডাম শিফ বলেন বাইডেনের জায়গায় থাকলে তিনি সৌদি আরবে এই সফর করতেন না বা যুবরাজ সালমানের সাথে দেখা করতেন না।

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রকাশক ফ্রেড রায়ান এক নিবন্ধে লিখেছেন, ‘বাইডেন এখন জেদ্দায় হাঁটু গেড়ে একঘরে মানুষটির রক্তে রঞ্জিত হাতে হাত মেলাবেন।’

একই পত্রিকায় খাশোগির বাগদত্তা হাতিস চেনগিজ একটি উপ-সম্পাদকীয়তে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, ‘আপনি বিরোধীদের নির্যাতন করার জন্য, ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের জন্য রাশিয়াকে নিন্দা করেন। সৌদি আরবও একই রকম ভয়ঙ্কর মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। তাদের কেন আপনি ছাড় দিচ্ছেন? তেলের জন্য?’

গত দেড় বছর ধরে হোয়াইট হাউজের কাছ থেকে অবজ্ঞায় যথারীতি নাখোশ ক্ষমতাধর সৌদি যুবরাজ। সে কারণেই ইউক্রেন যুদ্ধের পর পুতিনকে একঘরে করা আমেরিকার চেষ্টায় তেমন সাড়া দেয়নি সৌদি আরব। তেলের উৎপাদন কিছুটা বাড়িয়েছে কিন্তু বলার মতো তেমন নয়।

এপ্রিলে গবেষণা-ধর্মী সাময়িকী দি আটলান্টিকের সাথে এক সাক্ষাৎকারে বাইডেনের সাথে তার ঠাণ্ডা সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নে সৌদি যুবরাজের উত্তর ছিল- ‘আমার তাতে বিন্দুমাত্র আসে যায় না।’

তিনি বলেন, সৌদি আরবকে অবজ্ঞা করলে আমেরিকার জন্য তা হবে দুর্ভাগ্য এবং চীনের জন্য সৌভাগ্য।

গবেষণা সংস্থা ওয়াশিংটন ইন্সটিটিউট অব নিয়ার ইস্ট পলিসির ডেনিস রস ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকাকে বলেন, ‘সৌদি আরবে ক্ষমতার বিভিন্ন স্তরে কথা বলে তার মনে হয়েছে তাদের রাগ যে আমেরিকা কিছু চাইলে সাথে সাথে তারা সাথে সাথে ফোন করে, আমরা কিছু চাইলে তারা ফোনই ধরে না।’

গবেষণা সংস্থা আটলান্টিক কাউন্সিলের গবেষক ও সাবেক গোয়েন্দা জনাথন পানিকফ বিবিসিকে বলেন, ‘সৌদিরা বাইডেন প্রশাসনের কাছ থেকে তাদের অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা চায়। গত ১৮ মাস ধরে কেউই জানে না এই সম্পর্ক কোন দিকে যাবে। এটা একেবারেই সৌদি আরব পছন্দ করছে না।’

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের সাথে শান্তি মীমাংসা শুরুতে সৌদি আরব রাজি হয়েছে কিন্তু বদলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে বাঁচতে শক্তিধর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চায়।

এই সফরের ঠিক আগের দিন ইসরায়েলি বাণিজ্যিক বিমানের জন্য তাদের আকাশপথ উন্মুক্ত করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। যার ফলে, তিনি হলেন প্রথম কোনো আমেরিকান প্রেসিডেন্ট যিনি সরাসরি তেল আবিব থেকে সৌদি আরবে গেলেন।

কিন্তু সৌদি আরবের জন্য বাইডেনের এই সফরের গুরুত্ব প্রধানত রাজনৈতিক।

সফরে কী হয় তার চেয়ে বড় কথা তার দেশে এসে বাইডেন তার সাথে কথা বলছেন- এমন একটি ছবি যুবরাজ সালমানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সৌদি আরবকে সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছামতো যেভাবে পরিবর্তন করতে চাইছেন তিনি বাইডেনের সফরকে তার একটি স্বীকৃতি হিসেবে দেখছেন সৌদি যুবরাজ। এরপর তিনি নিশ্চিতভাবে ভাবতে শুরু করবেন তাকে ও তার দেশকে অবজ্ঞা করা অমেরিকার পক্ষেও সম্ভব নয়। সূত্র- বিবিসি বাংলা।

পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে রাশিয়ায় শি জিনপিং



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন আদালত (আইসিসি)। এমন পরিস্থিতিতে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করতে মস্কো গেলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

সোমবার (২০ মার্চ) স্থানীয় সময় দুপুরে চীনের প্রেসিডেন্ট মস্কোয় পৌঁছায় বলে জানিয়েছে মস্কো রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো।

অন্য দিকে, জিনপিং মস্কোয় যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ক্রেমলিন জানিয়েছে, মস্কোর বৈঠকে আলোচনার বিষয়বস্তু হবে যুদ্ধ। রাশিয়া-ইউক্রেনের সংঘাত সমাধানে চীনের বেশ কিছু প্রস্তাব রয়েছে। তা নিয়ে বৈঠক করবেন দু’দেশের প্রধান।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার অবস্থান জানাবেন পুতিন।

উল্লেখ্য, কোনও দেশের প্রধান হিসেবে জিনপিংই প্রথম যিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন আদালতের ঘোষণার পর পুতিনের সঙ্গে হাত মেলাতে তারই দেশে গেলেন। চীনের প্রেসিডেন্ট মস্কোয় পা দেওয়ার আগেই আন্তর্জাতিক আদালতের ঘোষণাকে আবারও কটাক্ষ করেছে মস্কো।

পাশাপাশি, ইউক্রেন নিয়ে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করা হচ্ছে বলে আমেরিকাকে দায়ী করেছে পুতিন প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে পুতিন ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করেন। পরে যা যুদ্ধের রূপ নেয়। এক বছর পেরিয়ে গিয়েও সেই যুদ্ধ এখনও চলছে। এর সরাসরি প্রভাব এসে পড়েছে রাশিয়ার অর্থনীতিতে।

অন্যদিকে, ওই যুদ্ধে হত্যা এবং শিশু-নির্যাতনের ‘অপরাধে’ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। রাশিয়া অবশ্য গোটা বিষয়টিকে হেসে উড়িয়ে দিয়েছে।

ক্রেমলিন জানিয়েছে, ওই কোর্টকে তারা মানে না। রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ আইসিসি-র রায়কে ‘টয়লেট পেপারের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন।

;

মঙ্গলবার গ্রেফতার হতে পারি: ডোনাল্ড ট্রাম্প



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাবেক এক পর্ন তারকাকে অর্থ প্রদানের অভিযোগের মামলায় গ্রেফতারের আশঙ্কা করছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

শনিবার (১৮ মার্চ) ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, আগামী মঙ্গলবার তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। সমর্থকদের প্রতি তিনি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানান।

ট্রাম্পকে গ্রেফতার করা হলে, এটি হবে কোনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আনা প্রথম ফৌজদারি মামলা।

বিবিসি জানায়, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে মুখ বন্ধ রাখার জন্য অর্থ প্রদানের অভিযোগ রয়েছে।

গত ৫ বছর ধরে নিউইয়র্কের প্রসিকিউটররা এ অভিযোগ তদন্ত করছেন।

স্টর্মি ড্যানিয়েলসের অভিযোগ, ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে তাদের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়ে নীরব থাকার বিনিময়ে তাকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন।

যদিও ট্রাম্প এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, তাদের মধ্যে কোনো যৌন সম্পর্ক ছিল না এবং মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

এ বিষয়ে জেলা অ্যাটর্নি কার্যালয় এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

ট্রাম্পের আইনজীবী সুসান নেচেলেস সিবিএস নিউজকে জানান, মিডিয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পোস্ট দিয়েছেন।

এর ফলে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প রিপাবলিকান মনোনীত প্রার্থী হওয়ার জন্য যে প্রচারণা চালাচ্ছেন তাতে গুরুতর প্রভাব পড়বে।

৭৬ বছর বয়সী এই সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বর্তমানে অনেকগুলো মামলার তদন্ত চলছে। যদিও কোনোটিকে এখনো অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

;

মিয়ানমারে মঠে সন্দেহভাজন গণহত্যায় নিহত ২২



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত সপ্তাহে মধ্য মিয়ানমারে তিন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীসহ অন্তত ২২ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ওই ঘটনার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সামরিক শাসনের বিরোধীরা, এ ঘটনাকে সেনাবাহিনী পরিচালিত বেসামরিক গণহত্যা বলে আখ্যা দিয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

যদিও মায়ানমারের জান্তার মুখপাত্র বলেন, “সৈন্যরা দক্ষিণ শান রাজ্যের পিনলাউং অঞ্চলে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িত ছিল কিন্তু কোন বেসামরিক লোকের ক্ষতি করেনি।”

এক বিবৃতিতে জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন বলেন, “স্থানীয় জনগণের মিলিশিয়াদের নিরাপত্তা দিতে সরকারি বাহিনী আসার পর কারেনি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স (কেএনডিএফ) এবং অন্য একটি বিদ্রোহী দল নান নিন গ্রামে প্রবেশ করে। যখন সন্ত্রাসী দলগুলো হিংস্রভাবে গুলি চালায়... কিছু গ্রামবাসী নিহত ও আহত হয়।”

তবে এ বিষয়ে আরও মন্তব্যের জন্য রয়টার্স একাধিকবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাতে সাড়া দেননি জাও মিন তুন।

কেএনডিএফ-এর একজন মুখপাত্র বলেন, “তার সৈন্যরা রবিবার নান নিন্টে প্রবেশ করে এবং একটি বৌদ্ধ বিহারে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মৃতদেহ দেখতে পায়।”

কেএনডিএফ এবং অন্য একটি গ্রুপ, কারেনি রেভোলিউশন ইউনিয়নের (কেআরইউ) দেওয়া ভিডিও ও ছবিতে মরদেহের মাথা ও মাথায় বুলেটের ক্ষত এবং মঠের দেয়ালে বুলেটের ছিদ্র দেখা গেছে।

তবে রয়টার্স স্বাধীনভাবে কোনো দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

চিকিৎসক ইয়ে জাওয়ের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, “২২ জনকে হত্যা করার জন্য খুব কাছ থেকেই গুলি করা হয়েছিল। নিহতদের মধ্যে তিনজন জাফরান পরিহিত সন্ন্যাসীও ছিলেন।”

ইয়ে জাও বলেন, “যেহেতু বাকি মরদেহগুলোতে কোনো সামরিক ইউনিফর্ম, সরঞ্জাম এবং গোলাবারুদ পাওয়া যায়নি, তাই এটি স্পষ্ট যে তারা বেসামরিক ছিল। যেহেতু নান নিন মঠের কম্পাউন্ডের মধ্যে সমস্ত মৃতদেহ পাওয়া গেছে, এটা স্পষ্ট যে এটি একটি গণহত্যা ছিল।”

কথিত গণহত্যার স্থান নান নিনে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ ধরে লড়াই চলছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি সংকটে পড়েছে। নোবেল বিজয়ী অং সান সু চির নেতৃত্বের প্রশাসনকে সরিয়ে দিয়ে গণতন্ত্রের দিকে এক দশকের অস্থায়ী পদক্ষেপের অবসান ঘটিয়েছে।

জাতীয় ঐক্য সরকারের মানবাধিকার-বিষয়কমন্ত্রী অং মিও মিন বলেন, “গত দুই সপ্তাহে অন্তত চারটি ঘটনায় জান্তা যুদ্ধ অভিযান বাড়িয়েছে এবং নিরস্ত্র বেসামরিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে।”

তিনি একটি অনলাইন মিডিয়া সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, “এটা স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে, জান্তার কৌশল হলো বেসামরিক মানুষকে টার্গেট করা, যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।”

জান্তা বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার কথা অস্বীকার করে বলেছে, “তার সেনারা শুধু সন্ত্রাসীদের আক্রমণের জবাব দেয়।”

রাজনৈতিক বন্দিদের নিয়ে কাজ করা একটি অলাভজনক সহায়তা সংস্থার মতে, অভ্যুত্থানের পর থেকে সামরিক দমনে মিয়ানমারে অন্তত ৩,১৩৭ জন নিহত হয়েছে।

জাতিসংঘও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে।

;

পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

শুক্রবার (১৭ মার্চ) নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের একজন বিচারক এই আদেশ দেন। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।

ইউক্রেন থেকে শিশুদের বেআইনিভাবে রাশিয়ায় নির্বাসনসহ যুদ্ধাপরাধের জন্য পুতিন ও রাশিয়ার শিশু অধিকার কমিশনার মারিয়া আলেক্সিয়েভনা লভোভা-বেলোভার দায়ী বলে অভিযোগ করেছে আদালত।

এক বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে ব্যাপক আক্রমণ চালিয়ে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনও পাল্টা জবাব দিচ্ছে। শুরু থেকেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ করে আসছে ইউক্রেন ও তাদের পশ্চিমা মিত্ররা। যদিও রাশিয়া সেই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।

তবে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও তাকে গ্রেফতার করার কোনো ক্ষমতা আইসিসির নেই। কারণ শুধুমাত্র সেই দেশগুলোর মধ্যেই আইসিসি তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে যারা আদালত স্থাপনের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। রাশিয়া সেই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী নয়।

;