মণিপুরে ফের সহিংসতা, নিহত ৬

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মণিপুরে সহিংসতার চিত্র। ছবি : সংগৃহীত

মণিপুরে সহিংসতার চিত্র। ছবি : সংগৃহীত

ভারতের মণিপুরে গত ২৪ ঘণ্টার সহিংসতায় নতুন করে পিতা-পুত্রসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন।

এ ছাড়াও গতকাল শনিবার সকাল থেকে বিষ্ণুপুর-চুরাচাঁদপুর সীমান্ত এলাকায় দিনব্যাপী ওই সংঘর্ষে প্রায় ১৬ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

বিজ্ঞাপন

ওই সংঘর্ষের পর ভারতীয় সেনাবাহিনী ওই এলাকায় বড় আকারের চিরুনি অভিযান শুরু করেছে। ওই অভিযানে গুলিতে আহত এক বিদ্রোহীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে আজ রবিবার ইম্ফল পূর্ব এবং ইম্ফল পশ্চিম জেলাগুলোতে কারফিউ শিথিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

মণিপুরে গত ১৫ দিনের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক দিনগুলোর মধ্যে একটি ছিল শনিবার। কারণ, এদিন বিষ্ণুপুর-চুরাচাঁদপুর সীমান্তের বেশ কয়েকটি জায়গায় দিনব্যাপী মর্টার, গ্রেনেড হামলা এবং উভয় পক্ষের গুলি বিনিময়ের খবর পাওয়া গেছে ।

গতকাল বিষ্ণুপুর জেলার কোয়াকতা এলাকায় একটি গ্রামে ভোরের আগে হামলায় পিতা-পুত্রসহ তিন নিরস্ত্র গ্রামবাসী নিহত হয়।

ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র জানা গেছে, দুজনকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এরপর তাদের খুব কাছাকাছি থেকে গুলি করা হয়।

এরপরই প্রতিশোধমূলক আক্রমণ শুরু হয়। সশস্ত্র বিদ্রোহীরা কুয়াকতার দুটি প্রতিবেশী গ্রাম, ফুজাং এবং সোংডোতে চালায় এবং মর্টার শেল এবং গ্রেনেড নিয়ে হামলা চালায়।

বিষ্ণুপুর জেলার তেরখাংসাংবিতে একযোগে হামলায় একজন নিহত এবং একজন পুলিশ কমান্ডোসহ তিনজন গুলিতে আহত হয়েছেন।

ইম্ফল পূর্ব জেলার সানসাবি এবং থামনাপোকপি গ্রামে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের গুলি করার খবরও পাওয়া গেছে।

অজ্ঞাত পরিচয় উত্তেজিত জনতা ইম্ফল পশ্চিম জেলার ল্যাংগোলে বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে ইম্ফলেও।

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের জামাতা বিজেপি বিধায়ক রাজকুমার ইমো সিং শনিবারের সংঘর্ষের জন্য কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে আক্রমণ করেছেন।

তিনি বলেছেন, ওই সংষর্ষের নেপথ্যে রয়েছে বিশাল নিরাপত্তা ত্রুটি এবং আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদেরদের কর্তব্যে অবহেলা।

মণিপুর পুলিশ গত শুক্রবার বলেছে, যৌথবাহিনী সংঘর্ষবিধ্বস্ত রাজ্যের ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রান্তিক এলাকায় অনুসন্ধান অভিযান পরিচালনা করেছে এবং বিভিন্ন জেলাজুড়ে নতুন সহিংসতা শুরু হওয়ার পরে সাতটি অবৈধ বাঙ্কার ধ্বংস করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৩ মে থেকে জাতিগত সহিংসতার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও তা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং ও কাংপোকপি জেলার অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে।

ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো মৈতৈ জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছে তাদের তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দিতে হবে। তাদের এ দাবির প্রতি বিরোধ জানিয়েছে স্থানীয় আদিবাসীরা।

এ অবস্থার মধ্যে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়।

এদিকে তফসিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে রাজ্যটিতে। এ পরিস্থিতিতে গত এপ্রিলে এ চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডার্স ফোরামের সদস্যরা।