হাওয়াইয়ে দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮০

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে লাহাইনা। ছবি : সংগৃহীত

দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে লাহাইনা। ছবি : সংগৃহীত

হাওয়াই দ্বীপের মাউইতে দাবানলে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা। বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই রাজ্যের ওই দাবানলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা হাওয়াইয়ের ঐতিহাসিক শহর লাহাইনাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। তাদের ভাস্যমতে, লাহাইনা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। এই লাহাইনায় প্রতি বছর প্রায় দুই মিলিয়ন পর্যটকের আগমন ঘটে।

বিজ্ঞাপন

কর্তৃপক্ষ কীভাবে দাবানল মোকাবিলা করছে তার একটি বিস্তৃত পর্যালোচনা ঘোষণা করেছেন হাওয়াইয়ের অ্যাটর্নি জেনারেল।

কর্মকর্তারা বাসিন্দাদের সময় মতো সতর্ক করেছিলেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ওই পর্যালোচনা প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

উচ্ছেদ হওয়া লাহাইনার বাসিন্দারা জানান, তারা বিশ্বাস করেন যে, তাদের বাড়িতে লুটপাট চালানো হয়েছে। যদিও ওই অভিযোগ নিশ্চিত করেনি পুলিশ।

লাহাইনার ২৬ বছর বয়সি বাসিন্দা ব্রায়ান আগুইরান ভয়াবহ ওই দাবানলের মধ্যেলাহাইনায় থেকে যান। তিনি বড় বালতি ভরে পানি দিয়ে আগুনের সঙ্গে লড়াই করে অলৌকিকভাবে তার পরিবারকে বাঁচিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ‘যতবার আমি চোখ বন্ধ করি, ততবার আমি আগুন দেখি। আমি ঘুমাতে পারি না। লাহাইনা কখনই আগের মতো হবে না।’

পশ্চিম মাউই, যেখানে লাহাইনা এবং কানাপালি অবস্থিত, এখনও বিদ্যুৎ এবং পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এবং অনুসন্ধান কর্মীরা এখনও এলাকায় দাবানলে মৃতদের সন্ধান করছেন।

স্থানীয় কোস্টগার্ড জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত শহরের বন্দর থেকে ১৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছেন এবং সকলের অবস্থা স্থিতিশীল।

কিন্তু, মাউইয়ের এক ট্যুর অপারেটরের মালিক গাবে লুসি বিবিসিকে বলেছেন, তিনি ভয়ঙ্কর বিবরণ শুনছেন।

তিনি বলেন, ‘লোকেরা পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ছিল এবং আমি মনে করি তাদের অনেকের জন্য আগুন এত দ্রুত চারপাশে আবৃত হয়ে গিয়েছিল যে, পালানোর একমাত্র উপায় ছিল পানির কিনারায় নেমে যাওয়া।’

মাউই দ্বীপে দাবানলের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি মেরামত করতে অনেক বছর সময় লাগবে বলে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ। শুধু লাহাইনায় এক হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

গভর্নর জোশ গ্রিন শুক্রবার হাওয়াইয়ানদের সতর্ক করে বলেছেন, ‘লাহাইনা একটি বিধ্বস্ত অঞ্চল। তারা নিজ এলাকায় ফিরে এমন ধ্বংস দেখতে পাবে যা তারা তাদের জীবনে কখনও দেখেনি। তাই খুব নিরাপদে থাকুন, খুব সতর্ক থাকুন।’

বাস্তুচ্যুতদের জন্য মাউইতে ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে এবং কর্মকর্তারা বলেছেন যে তারা হোটেল এবং পর্যটক ভাড়ার সম্পত্তিতে তাদের থাকার একটি পরিকল্পনা তৈরি করছেন।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সেখানে বিনিয়োগের ঢল নেমেছে। এই দ্বীপে আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসসহ অনেক ধনী লোকের বাসস্থান। তিনি এবং তার সঙ্গী লরেন সানচেজ আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপ এবং বিগ আইল্যান্ডে দাবানল শুরু হয়। হারিকেনের বাতাস এবং শুষ্ক আবহাওয়া আগুনে ওই দাবানল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।