পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের জন্য রাশিয়া যাচ্ছেন কিম
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের জন্য ভ্লাদিভোস্টকের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন।
এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যম জানিয়েছে, কিম বিদেশ সফরের জন্য যে সাঁজোয়া ট্রেনটি ব্যবহার করেন, সেটি পিয়ংইয়ং ছেড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে পুতিন ও কিমের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে ক্রেমলিনও নিশ্চিত করেছে যে, কিম রাশিয়া সফর করবেন।
পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক যদি হয়, তবে এটি হবে উত্তর কোরিয়ার নেতার চার বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথম আন্তর্জাতিক ভ্রমণ।
এর আগে একজন মার্কিন কর্মকর্তা সিবিএসকে বলেছিলেন, দুই নেতা সম্ভবত উত্তর কোরিয়ার ইউক্রেনের যুদ্ধকে সমর্থন করার জন্য মস্কোকে অস্ত্র সরবরাহ করার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ আলোচনার বন্ধের পর কিমের শেষ বিদেশ সফরও ছিল ২০১৯ সালে।
কিম ২০১৯ সালে ট্রেনে ভ্লাদিভোস্টক ভ্রমণ করেছিলেন। এবার ভ্লাদিভোস্টকে পৌঁছাতে তার পুরো দিন লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কিমের রাশিয়া সফরের খবরে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে অস্ত্র সমঝোতা সক্রিয়ভাবে অগ্রসর হওয়ার নতুন তথ্য পাওয়ার পরে সম্ভাব্য বৈঠকটি হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি এর আগে বলেছিলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু সাম্প্রতিক উত্তর কোরিয়া সফরের সময় পিয়ংইয়ংকে রাশিয়ার কাছে আর্টিলারি গোলাবারুদ বিক্রি করতে রাজি করানোর চেষ্টা করেছিলেন।
কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের বিশ্লেষক অঙ্কিত পান্ডার মতে, শীর্ষ সম্মেলনটি এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়া উভয়ের কাছেই এমন কিছু রয়েছে, যা একে অন্যের কাছে চায়।
তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘এখন যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, উভয় পক্ষ যদি উপযুক্ত মূল্য পায়, তবে তারা একে অপরের সহায়তার জন্য সবকিছু করতে ইচ্ছুক।’
অঙ্কিত পান্ডার ধারণা, রাশিয়া সম্ভবত উত্তর কোরিয়ার কাছে খাদ্য ও কাঁচামালের বিনিময়ে আর্টিলারি শেল এবং রকেট আর্টিলারি যুদ্ধাস্ত্রসহ প্রচলিত অস্ত্র এবং জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক ফোরামে অব্যাহত সমর্থন চাইবে।
তিনি বলেন, ‘ওই বৈঠক রাশিয়ার কাছে উত্তর কোরিয়ার আরও অত্যাধুনিক অস্ত্র স্থানান্তর করার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করতে পারে, যাতে মস্কো তার নিজস্ব প্রচলিত অস্ত্রের মজুদ বজায় রাখতে পারে।’
এটা মনে করা হয় যে, রাশিয়ার ১২২ মিমি এবং ১৫২ মিমি শেল প্রয়োজন হতে পারে। কারণ, এর স্টক কম চলছে।
গত জুলাই মাসে কিম এবং শোইগুয়ের মধ্যে বৈঠকে প্রদর্শিত অস্ত্রগুলোর মধ্যে হাওয়াসং আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত ছিল।
শোইগুয়ের সফল উপলক্ষ্যে কোভিড মহামারীর পর এই প্রথম কিম বিদেশী অতিথিদের জন্য তার দেশের দরজা খুলে দিয়েছিলেন।