চীনা রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়েছে তালেবান
২০২১ সালে তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম আফগানিস্তানে নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ঝাও জিং’কে নিয়োগ দিয়েছে চীন।
তালেবান সরকার চীনের নতুন রাষ্ট্রদূতকে আফগানিস্তানে স্বাগত জানিয়েছে। ঝাও জিং-এর নিয়োগ চীনের সাথে আফগানিস্তানের সম্পর্ক স্থাপনের প্রতীক হিসেবে দেখছে দলটি।
ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম কোনো রাষ্ট্রদূতের নাম ঘোষণা করার মাধ্যমে চীন এই অঞ্চলে একটি প্রভাবশালী বলয় প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ এশিয়া উদ্যোগের পরিচালক ফারওয়া আমের বলেন, এটি একটি সম্ভাব্য কূটনৈতিক নমনীয়তা। বিশেষ করে যখন অনেক পশ্চিমা দেশ এখনও তালেবানের সাথে জড়িত হতে দ্বিধাবোধ করছে, চীন এ অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যেই আগাচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।
গত বুধবার ( ১৩ সেপ্টম্বর) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, তাঁরা আফগানিস্তানের সাথে সংলাপ ও সহযোগিতার অগ্রগতি অব্যাহত রাখবে এবং দেশটির প্রতি চীনের নীতি সুস্পষ্ট ও ধারাবাহিক। মিঃ ঝাও এর নিয়োগ আফগানিস্তানে চীনা রাষ্ট্রদূতদের স্বাভাবিক সম্পর্কেরই উদাহরণ।
উল্লেখ্য, তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে চীন আফগানিস্তানে যাবতীয় কার্যক্রম বজায় রাখার জন্য রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজনীয় ছিল। তবে এই নিয়োগ তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার বৃহত্তর পদক্ষেপের অংশ কিনা তা সম্পর্কে বেইজিং কোনো ইঙ্গিত দেয়নি।
এখনও পর্যন্ত বিশ্বের কোনো দেশ তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিভিন্ন দিক লঙ্ঘনের অভিযোগে এবং নারীর অধিকারকে অস্বীকার করার কারণে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে তালেবান।
তালেবান নেতারা বুধবার রাজধানী কাবুলের রাষ্ট্রপতির বাসভবনে মিঃ ঝাও জিং’কে একটি জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ এবং ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি উপস্থিত ছিলেন।
আফগানিস্তানের একটি অঞ্চলের কেন্দ্রে রয়েছে বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড অবকাঠামো উদ্যোগের চাবিকাঠি। বেইজিং এর আগে আফগানিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদে বিশেষ করে তামা, লিথিয়াম এবং সোনা ইত্যাদিতে বিনিয়োগ করতে চায় বলে জানিয়েছে।
চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলের সাথে আফগানিস্তানের সীমান্তে জঙ্গিরা অতীতে অনেক হামলা চালিয়েছে। কখনও চীনা প্রকল্পগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে, কখনও কখনও উইঘুরদের মতো মুসলিম সংখ্যালঘুদের সাথে বেইজিংয়ের দুর্ব্যবহারের প্রতিশোধ হিসাবে এসব হামলা পরিচালিত হয়।
চীন এবং আফগানিস্তানের সম্পর্ককে সহনীয় রাখতে এবং তালেবানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে চীনা সরকার এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।