উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কোনও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি : রাশিয়া

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কিম জং-উন ও ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি : সংগৃহীত

কিম জং-উন ও ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি : সংগৃহীত

চলতি সপ্তাহে কিম জং-উনের রাশিয়া সফরের সময় রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সামরিক বিষয়ে বা অন্য কোনও ক্ষেত্রে কোনও চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি বলে শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) নিশ্চিত করেছে ক্রেমলিন।

এনডিটিভি জানিয়েছে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, কিমের সফরের সময় কোনও আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা ছিলও না। এই সফরে কিম রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন মাত্র।

বিজ্ঞাপন

কিম এখনও রাশিয়ায় রয়েছেন এবং শুক্রবার তিনি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকা রাশিয়ার একটি ফাইটার জেট কারখানা পরিদর্শন করেছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে ওয়াশিংটন এবং তার মিত্ররা আশঙ্কা করছে যে, কিমের সফর ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে এবং পিয়ংইয়ংয়ের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে শক্তিশালী করতে পারে।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, চার বছরের মধ্যে প্রথম মুখোমুখি বৈঠকের পর কিম জং-উনের উত্তর কোরিয়া সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

আল-জাজিরা জানিয়েছে, রাশিয়া সফরের মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিন জোটকে শক্তিশালী করতে তাদের ক্রমবর্ধমান সমর্থনকে ফের বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছেন উত্তর কোরিয়ার এই নেতা।

এ ছাড়াও পিয়ংইয়ংয়ের সামরিক বাহিনীকে আধুনিকীকরণে মস্কোর সহযোগিতা কাম্য করেছেন কিম। কিম পুতিনকে একটি সুবিধাজনক সময়ে উত্তর কোরিয়া সফর করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

দুই নেতা বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) চার ঘন্টারও বেশি সময় আলাপ-আলোচনা করেন এবং ভোস্টোচনি কসমোড্রোম মহাকাশ কেন্দ্রে ভ্রমণ করেন।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দেশটির সরকারি নামের সংক্ষিপ্ত নাম ‘ডিপিআরকে’ ব্যবহার করে বলেছে, ‘পুতিন আনন্দের সঙ্গে উত্তর কোরিয়া সফরের আমন্ত্রণটি গ্রহণ করেছেন এবং রাশিয়া-ডিপিআরকের বন্ধুত্বের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে অবিচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার তার ইচ্ছা পুনর্নিশ্চিত করেছেন।’

যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, কিম মস্কোর কাছে সম্ভবত প্রযুক্তির বিনিময়ে ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য অস্ত্র বিক্রি করতে প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে, যা তার সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।

রাশিয়া সফরে কিমের প্রতিনিধি দলে তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী, তার শীর্ষ সামরিক কমান্ডার এবং দেশটির যুদ্ধাস্ত্র বিভাগের পরিচালকও রয়েছেন।

সিউলের ইওয়া ওমেনস ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অধ্যাপক লেইফ-এরিক ইজলি বলেছেন, ‘কিমের প্রতিনিধি দলের গঠনই বলে দেয় যে, উত্তর কোরিয়া সামরিক প্রযুক্তির বিনিময়ে রাশিয়ার কাছে অস্ত্র পাঠাতে পারে। রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় মহাকাশ বন্দরে বৈঠক করা পুতিন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশনেকে বুড়ো আঙুল দেখানোর সমতুল্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই সফরের কারণে পিয়ংইয়ংয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার প্রচেষ্টাকে দ্বিগুণ করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে জাতিসংঘের অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে প্রধাণ বিষয় হওয়া উচিত।’

কেসিএনএ তার প্রতিবেদনে বলেছে, দুই নেতা সাম্রাজ্যবাদীদের সামরিক হুমকি, উস্কানি ও অত্যাচার মোকাবেলায় কৌশলগত সহযোগিতা আরও জোরদার করতে সম্মত হয়েছেন।