রাশিয়া সফর শেষে ড্রোন উপহার পেলেন কিম
রাশিয়া সফরে দেশটির এক আঞ্চলিক গভর্নরের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাঁচটি বিস্ফোরক ড্রোন, একটি রিকনেসান্স ড্রোন এবং একটি বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পেয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন।
তিনি শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ভ্লাদিভোস্টকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন, যেখানে তিনি হাইপারসনিক মিসাইল সিস্টেমসহ অত্যাধুনিক অস্ত্র পরিদর্শন করেন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস উত্তর কোরিয়ার আনুষ্ঠানিক নাম ব্যবহার করে বলেছে, ডিপিআরকে নেতা কিম উপহার হিসাবে পাঁচটি কামিকাজে ড্রোন এবং একটি জেরান-২৫ ভারটিক্যাল টেকঅফসহ একটি রিকনাইসেন্স ড্রোন পেয়েছেন।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, তাসের প্রতিবেদনে যোগ আরও বলা হয়েছে, চীন ও উত্তর কোরিয়ার সীমান্তবর্তী প্রাইমোরি অঞ্চলের গভর্নরও কিম জং-উনকে বুলেটপ্রুফ ভেস্ট এবং থার্মাল ক্যামেরা দ্বারা সনাক্ত করা যায় না এমন বিশেষ পোশাক উপহার দেন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভ্লাদিভোস্টক বন্দরের উত্তরে অবস্থিত আর্টিওম শহরে তার সাঁজোয়া ট্রেনে চড়ে কিম তার রাশিয়া সফর শেষ করেন এবং দীর্ঘ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন।
কিম রাশিয়ায় ছয় দিন কাটিয়েছেন এবং ভস্টোচনি মহাকাশ বন্দরে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
কোভিড মহামারির পর এটাই কিমেরর প্রথম সরকারি বিদেশ সফর, যা পশ্চিমাদের ভয়কে উস্কে দিয়েছে।
পশ্চিমাদের দাবি, মস্কো এবং পিয়ংইয়ং নিষেধাজ্ঞা অমান্য করবে এবং একটি অস্ত্র চুক্তি করবে। এ ছাড়াও মস্কো ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উত্তর কোরিয়ার গোলাবারুদ কিনতে আগ্রহী বলে মনে করছে পশ্চিমা শক্তি।
পশ্চিমাদের আরেকটি দাবি এই যে, পিয়ংইয়ং তার আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিকাশে রাশিয়ার সাহায্য চাইবে।
কিন্তু ক্রেমলিন জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে কোনও চুক্তিই স্বাক্ষরিত হয়নি।
উত্তর কোরিয়ার বার্তা সংস্থা কেসিএনএ কিমের সফরের সময় পরিবেশকে উত্তেজনাপূর্ণ এবং উষ্ণ বলে বর্ণনা করে বলেছে, উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়ার মধ্যে বন্ধুত্ব, সংহতি ও সহযোগিতার একটি নতুন যুগ শুরু হচ্ছে।
আল জাজিরার ফ্লোরেন্স লুই, সিওল থেকে জানিয়েছেন, মহামারির পর বন্ধু হিসাবে পুতিনকে প্রথম বিদেশী নেতা হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন কিম, যেটি গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।
লুই বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ও যুদ্ধে প্রকাশ্যে সমর্থন করে এমন কয়েকটি দেশের মধ্যে উত্তর কোরিয়া অন্যতম। কিম বলেছেন, তিনি এই যুদ্ধকে একটি ন্যায়পরায়ণ প্রচেষ্টা বলে মনে করেন এবং তিনি এটাও বলেছেন যে, রাশিয়ার সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে প্রস্তুত উত্তর কোরিয়া।
অন্যদিকে, উত্তর কোরিয়ার উপর নতুন নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতায় চীনের সঙ্গে যোগ দিয়েছে রাশিয়া। চীন-রাশিয়া জোট ২০০৬ সালের পর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে প্রকাশ্যে বিভক্ত করেছে।