চার মাস নিখোঁজ থাকার পর বাড়ি ফিরলেন ইমরান রিয়াজ খান
চার মাসেরও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ থাকা পাকিস্তানের বিশিষ্ট সাংবাদিক ইমরান রিয়াজ খান সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) শিয়ালকোট শহরে তার নিজ বাড়িতে ফিরেছেন।
তার পরিবার ও পুলিশ এ খবর নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা।
সাংবাদিক ও সাবেক টিভি সংবাদ উপস্থাপক ইমরান রিয়াজ খান, যার ইউটিউবে ত্রিশ লাখেরও বেশি ফলোয়ার, তিনি গত মে মাসে ওমান যাওয়ার পথে শিয়ালকোট বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন বলে জানা গেছে।
গত ১১ মে গ্রেপ্তারের পরপরই এক্স-এ পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় ৪৭ বছর বয়সি এই সাংবাদিক বলেছিলেন, ‘দেশে কথা বলার জায়গা সংকুচিত হচ্ছে এবং আমাকে নিশ্চুপ হতে বাধ্য করা হচ্ছে।’
কারাবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কট্টর সমর্থক এই সাংবাদিক বলেন, ‘আমি দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছি, যাতে আমি কথা বলতে পারি।’
তার ছোট ভাই উসমান রিয়াজ খান আল-জাজিরাকে বলেছেন, ‘ইমরান রিয়াজ খান সোমবার সকালে নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছেছেন।’
এক্স-এ একটি পোস্টে শিয়ালকোট পুলিশ জানিয়েছে, ইমরান রিয়াজ খানকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে এবং এখন তার পরিবারের সঙ্গে আছেন।
তবে কোথা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে, এতোদিন তিনি কোথায় ছিলেন-তা জানায়নি পুলিশ।
তার আইনজীবী মিয়া আশফাক আলী আল-জাজিরাকে বলেছেন, ‘অগণিত সমস্যা এবং দুর্বল বিচার ব্যবস্থার কারণে তার মক্কেলের ফিরে আসতে দীর্ঘ সময় লেগেছে।’
সাংবাদিকের মুক্তির বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন তথ্যমন্ত্রী মুর্তজা সোলাঙ্গির সঙ্গে যোগাযোগ করেও তার কাছ থেকে কোনও সাড়া পায়নি আল-জাজিরা।
দুর্নীতির অভিযোগে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে পাকিস্তানজুড়ে মারাত্মক সহিংসতা শুরু হওয়ার দুই দিন পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
গ্রেপ্তারের চার দিন পর লাহোরের একটি আদালতে পুলিশ জানায়, ‘আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইমরান রিয়াজ খানকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। পরে পুলিশ তাকে হেফাজতে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছিল, তার কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।’
তার নিখোঁজ হওয়ার জন্য কেউ দায় স্বীকার করেনি। তবে, অনেকেই বিশ্বাস করেন, দেশের শক্তিশালী সেনাবাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তা সংস্থা তাকে অপহরণ করেছিল।
তার পরিবার তাকে খুঁজে বের করার জন্য সর্বশেষ লাহোর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। একাধিক শুনানির পর ২০ সেপ্টেম্বর আদালত নিখোঁজ সাংবাদিককে মঙ্গলবারের মধ্যে হাজির করতে পুলিশের প্রতি শেষ সতর্কতা জারি করে।
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে পাকিস্তানের একটি বাজে রেকর্ড রয়েছে। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার (আরএসএফ) দ্বারা প্রকাশিত ২০২৩ সালের ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে দেশটির অবস্থান ১৫০তম স্থানে।