ইসরায়েল সমর্থনের কারণে কোন পথে বাইডেনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ?
ইসরায়েল-হামাসের চলমান সংঘাতকে শুরু থেকেই কুটনৈতিকভাবে সমর্থন জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ২০২৪ সালেই অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন। এর মাঝেই বাইডেনের এমন ইসরায়েল সমর্থনকে সমালোচনা করে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে এক হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমরা।
সম্প্রতি করা এক জরিপে দেখা গেছে, আরব-আমেরিকান মুসলিমদের মধ্যে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন বাইডেন। ২০২০ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম তাকে সমর্থন করতেন। কিন্তু বিগত চার বছরের মধ্যেই এতে বড় ধস নেমেছে। এখন মাত্র ১৭ শতাংশ মুসলিম বাইডেনকে সমর্থন করেন।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় ইসরাইলের নৃশংসতায় সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার প্রশাসন। তার এ কর্মকাণ্ডের ফলে ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমরা। এই কারণে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে মুসলিমদের এক হওয়ার ডাক দিচ্ছেন নেতারা।
২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি অঙ্গরাজ্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এসব রাজ্যের ভোটারদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ মুসলিম ও আরব-আমেরিকান। তারা আসন্ন নির্বাচনে বাইডেনের জয়ের পথে বড় বাধা হয়ে উঠতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের নাগরিক অধিকার রক্ষায় কাজ করে কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর) নামে একটি সংগঠন। সংগঠনটির মিনেসোটা শাখার পরিচালক জায়লানি হুসেইনকে বাইডেনের বিকল্প নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। এতে তিনি বলেন, আমাদের কাছে অনেক বিকল্প প্রার্থী আছে।
প্রসঙ্গত ২০২৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনে নির্বাচনে লড়বেন বাইডেন। তাই আসন্ন নির্বাচনে বাইডেনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে মুসলিমদের একত্রিত করবেন তারা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুসলিমরা কাকে সমর্থন দেবে, সেটি অবশ্য তারা স্পষ্ট না করলেও বাইডেন প্রশাসনের প্রতি তাদের তীব্র ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে।
সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েল হামলা বন্ধে এবং যুদ্ধবিরতির পক্ষে সোচ্চার হন আমেরিকার মুসলিমরা। কিন্তু বাইডেন এতে সাড়া না দেওয়ায় মিনেসোটা থেকে ‘#অ্যাবানডন বাইডেন’ নামে একটি প্রচারাভিযান শুরু হয়। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে মিশিগান, অ্যারিজোনা, উইসকনসিন, পেনসিলভানিয়া ও ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যেও।
আমেরিকার মুসলিমরা বলছেন, জো বাইডেনকে প্রত্যাখ্যান করার কারণ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন আনতে হলে এটাই তাদের একমাত্র উপায়।
এমন পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালের নির্বাচনে উল্লিখিত ৬টি অঙ্গরাজ্যের রাজনীতির প্রভার পড়তে পারে বাইডেনের ক্ষমতায়। ইসরায়েল-গাজা ইস্যুতে বাইডেন এখন কী ধরনের কুটনৈতিক অবস্থান নেয় তাই দেখার বিষয়।