দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মাখোঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবেন মোদি
নতুন বছরের শুরুতেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে নয়াদিল্লিতে। দেশটির প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হওয়ার পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও সারবেন এই দুই রাষ্ট্রনেতা।
এনডিটিভি জানিয়েছে, মোদির চলতি মেয়াদে এটি তার সঙ্গে কোনও গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রনেতার শেষ পর্যায়ের বৈঠক। কারণ, ফেব্রুয়ারি মাসটিই তারপর হাতে থাকছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, মার্চ মাস থেকেই শুরু হবে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ফ্রান্স যে ক্রমশ ধারাবাহিকভাবে ইউরোপে ভারতের ঘনিষ্ঠতম মিত্র হয়ে উঠছে, এই সফর তারই প্রমাণ দেবে। গত জুলাই মাসে ফ্রান্সে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফ্রান্সের জাতীয় দিবস অর্থাৎ বাস্তিল দিবসের উদযাপনে অতিথি হিসাবে ছিলেন তিনি। এবার মাখোঁ আসছেন ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের অতিথি হয়ে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কাশ্মীর, পরমাণু শক্তি পরীক্ষা বা চীন প্রশ্নই হোক-বহু দশক ধরেই ফ্রান্সকে পাশে পেয়েছে ভারত। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের সমর্থনে ফ্রান্সই প্রথম ভেটো দিয়েছিল।
তাছাড়া ১৯৭৪ ও ১৯৯৮ সালে ভারতের পরমাণু শক্তি পরীক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ পশ্চিমা দেশগুলো যখন নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তখন তাতে যোগ দেয়নি ফ্রান্স।
শুধু তাই নয়, ২০২০ সালে চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদের সময় ফ্রান্সই প্রথম ভারতকে সামরিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিল।
অন্যদিকে, গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের প্রতি সম্মান বজায় রেখে দুই দেশই কখনও পরস্পরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেনি।
প্রসঙ্গত, মোদি যখন ফ্রান্স সফরে গিয়েছিলেন তখন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট মণিপুরের সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকারের সমালোচনার প্রস্তাব নেয়। সে প্রস্তাব কূটনৈতিকভাবে অসঙ্গত না হলেও ফ্রান্সের বৈঠকে তা আলোচিত হয়নি।
একইভাবে ফ্রান্সে সহিংসতার কারণে আলজেরীয় অভিবাসী তরুণের মৃত্যুর প্রসঙ্গও উত্থাপন করেনি ভারত। বরং দুই দেশের যৌথ বিবৃতিতে প্রতিরক্ষা, মহাকাশ এবং পারমাণবিক শক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক
বন্ধন আরও জোরালো করার কথাই বলা হয়েছে।
মোদি তার চলতি মেয়াদে জানুয়ারির শেষ বৈঠকটিতে ফ্রান্সের ওই অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য মাখোঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবেন। পাশাপাশি এই আশ্বাসও দেবেন যে, এরপর ফের সরকার গঠন হলে প্রতিরক্ষা থেকে মহাকাশ-সব বিষয়েই সহযোগিতার হার আরও বাড়ানো হবে।