ইসরায়েলি সেনারা ভুলবশত জিম্মিদের হত্যা করে : তদন্ত প্রতিবেদন
এক সামরিক তদন্তে বলা হয়েছে, গাজার একটি ভবনে প্রবেশ করার সময় সাহায্যের জন্য তিন জন জিম্মির কান্নাকাটি ভুলবশত উপেক্ষা করেছিল ইসরায়েলি সেনারা।
রয়টার্স জানিয়েছে, ওই সামরিক তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) প্রকাশিত হয়।
ইসরায়েলি সেনারা গত ১০ ডিসেম্বর হিব্রু ভাষায় জিম্মিদের চিৎকারও শুনেছিল। কিন্তু তারা বলেছেন, শেজাইয়া শহরের গাজা সিটি জেলার ভবনে জিম্মিদের ওই কান্নাকে তারা হামাস যোদ্ধাদের ফাঁদ হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন।
তারা আরও বলেছেন, বিল্ডিংটি বিস্ফোরক দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে বলে তারা বিশ্বাস করেন। তারা ভবনটি থেকে বেরিয়ে আসেন এবং পালানোর চেষ্টা করা পাঁচ হামাস সদস্যকে হত্যা করেন।
এরপর জিম্মিরাও ভবনটি থেকে পালিয়ে যায় এবং ১৫ ডিসেম্বর ইসরায়েলি সেনারা ভুলবশত তাদের হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়।
তিনজন জিম্মি ছিল শার্টবিহীন এবং একজনের হাতে সাদা পতাকা ছিল বলে জানা গেছে।
সেনাপ্রধান হার্জি হালেভি তদন্তের প্রতিবেদনের সঙ্গে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী ওই ঘটনায় জিম্মিদের উদ্ধারে তার মিশনে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু, তিনটি প্রাণহানি প্রতিরোধ করা যেত।’
জিম্মিদের হত্যার ঘোষণার পর পরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমার এবং পুরো জাতির হৃদয় ভেঙ্গেছে।’
এদিকে, ইয়োটাম হাইম, অ্যালোন শামরিজ এবং সামের এল-তালকা নামে ওই তিন জিম্মির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। তিন জনের বয়সই ২০ বছরের মধ্যে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, ওই তিন জিম্মির মৃত্যু তেল-আবিবে বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে হামাস। ওই হামলার ফলে প্রায় ১,১৪০ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
এর পর হামাসকে ধ্বংস করার এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে হামাসের বিরুদ্ধে বিশাল সামরিক আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল।
গাজার হামাস সরকার বলেছে, ওই যুদ্ধে কমপক্ষে ২১,৩২০ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু।