হামাস নেতা সালেহ আল-আরৌরির উত্থান ও বর্তমান ফিলিস্তিন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার পশ্চিম তীরের হামাসের সামরিক শাখা ইজ আদ-দিন আল-কাসাম ব্রিগেডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াহের একজন সহকারী সালেহ আল-আরৌরি। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে পরিচালিত নৃশংস হামলার সাথে জড়িত হামাসের অন্যতম নেতা তিনি। লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন। হামাসের কার্যালয় লক্ষ্য করে পরিচালিত এই ড্রোন হামলার লক্ষ্যবিন্দুতে ছিলেন আরৌরি।

স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর উপপ্রধান সালেহ আল-আরৌরি ১৫ বছর ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী থাকার পর ২০০৭ সালে মুক্ত হয়েছিলেন। সম্প্রতি ইসরায়েলে ড্রোন হামলা সম্পর্কে তাকে প্রশ্ন করা হলেও কোনো উত্তর দেননি তিনি। এমনকি হামাসের বিরুদ্ধে আনা কোনো অভিযোগেরও জবাব দেননি। তবে হামাসের উল্লেখিত টার্গেট তালিকার অন্যতম নাম ছিল আল-আরৌরি। ৭ অক্টোবরের হামলার অন্যতম ব্যক্তি হিসেবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা তার নাম উল্লেখ করে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে (হামাস) ধ্বংস করার চেষ্টা হিসেবে হামাস নেতাদের টার্গেট করে পরিচালিত এক হামলাতেই মৃত্যু হয় আরৌরির।

২০০৭ সালের ২৫ মার্চ সালেহ আল-আরৌরির সরাসরি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন তখনকার টাইমসের এবং বর্তমান রয়টার্সের আন্তর্জাতিক সম্পাদক এবং লেখক ব্রনওয়েন ম্যাডক্স। সংবাদমাধ্যম চ্যাথাম হাউসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তিনি তার সেই সাক্ষাৎকারের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ইসরায়েলি সৈন্যরা অক্টোবরের শেষের দিকে রামাল্লার পশ্চিম তীরের পাহাড়ের উঁচুতে অবস্থিত অরোর গ্রামে আল-আরৌরির পারিবারিক বাড়িটি ধ্বংস করে। অনুসন্ধান করে সেখান থেকেই তার নামটি নিয়েছিল ইসরায়েলি সেনারা। তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার মাথার জন্য ৫মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্য ট্যাগ নির্ধারণ করেছিল।

কারাগারে থাকা অবস্থায় পশ্চিম তীর বা গাজায় ফিলিস্তিনিদের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা ছিল কিনা- এমন প্রশ্ন করা হলে, আল-আরৌরি প্রশ্নটি খারিজ করে দেন। তিনি দাবি করেন যে আদৌ এমন কিছু ছিল না। আল-আরৌরি যে কৌশল নির্ধারণ করেছিলেন তা বিজনেস স্কুলের পাঠ্যপুস্তকের মতোই স্পষ্ট। আল-আরৌরি যে কৌশল নির্ধারণ করেছিলেন তা বিজনেস স্কুলের পাঠ্যপুস্তকের মতোই স্পষ্ট। ইসরায়েলদের প্রতি সবসময় ফিলিস্তিনিদের মনোভাব যেন নেতিবাচক থাকে সেজন্যই প্রয়াস ছিল তার।

তিনি বলেন, আল-আরৌরি তখন মন্তব্য করেছিলেন, ‘আমাদের কাজ হল ফিলিস্তিনিদের উগ্রবাদী রাখা, তাদের রাগান্বিত রাখাটা দরকার ছিল। তাদের বেশিরভাগই শান্তির জন্য মুহুর্তের মধ্যেই স্থির হতে চাইবে, কিছু চুক্তি দিয়ে তারা জীবন চালিয়ে নিতে চাইবে। কিন্তু তাদের রাগ থাকলে এমনটা তারা করতে রাজি হবেনা।’

তিনি আরও বলেন, গাজার স্কুলগুলোতে পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েলবিরোধী মতাদর্শ শেখানোর বিষয়টি স্বীকার করেছিলেন তিনি। সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ক্ষুব্ধ রাখতে ইসরায়েলের চেয়েও ভালোভাবে ফিলিস্তিন পরিচালনার বিষয়গুলোকে বারবার সামনে নিয়ে আসতেন তারা। তিনি ১৯১৭ সালের বেলফোর ঘোষণার কথা উল্লেখ করে বৃটিশদের ওপর তার সমস্ত রাগের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।

হামাসের পক্ষে ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব মেনে নেওয়ার সময় এসেছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি দেশটির বৈধতা অস্বীকার করে বলে জানন ব্রনওয়েন ম্যাডক্স। তিনি বলেন, এই প্রসঙ্গে আল-আরৌরি জোর দাবি করে বলেন, ‘হামাস ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, শেষ পর্যন্ত জয়ীও হবে। আমরা ১ হাজার বছরের জন্য পরিকল্পনা করছি, এর মধ্যেই ইসরায়েল পরাজিত হবে’।

ম্যাডক্স বলেন, এরপর আর কথা বলতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি তিনি। সেই বছরেরই শেষের দিকে আল-আরৌরিকে আবার গ্রেফতার করা হয় এবং ২০১০ সালে ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। তারপর থেকেই সিরিয়া এবং লেবানন অঞ্চল থেকে তিনি হামাসের অন্যতম প্রধান মুখপাত্র হয়ে ওঠেন। ২০১১ সালে ইসরায়েলি সেনা গিলাত শালিতের মুক্তির বিনিময়ে বহু ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্ত করার শর্তারোপ করে ফিলিস্তিনি বন্দী উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর আগেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন।

তার হত্যাকাণ্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে বলে মন্তব্য করেন ব্রনওয়েন ম্যাডক্স। একটি হল- ড্রোন হামলা লেবাননে হিজবুল্লাহর সাথে ইসরায়েলের উত্তেজনা বাড়াবে কিনা?

ইসরায়েলের সেই ‘দ্বিতীয় ফ্রন্ট’ খোলার আপাতত কোনো ইচ্ছা নেই। এরই মধ্যে গাজা থেকে কিছু ইসরায়েলি সেনাও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। হামাসের সাথেই তাদের মূল লড়াই এবং হামাস নেতাদের ও হামাসকে নির্মূল করতেই বদ্ধ পরিকর তারা। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মার্ক রেগেভ স্পষ্টভাবে বলেছেন, লেবানন বা হিজবুল্লাহর ওপর হামলা করছেননা তারা। তাদের উদ্দেশ্য হামাস নির্মূল করা। তাই হিজবুল্লাহ- ইসরায়েল উত্তেজনা বাড়াতে এ ঘটনা ততটা প্রভাব ফেলবে না।

আরৌরির মৃত্যু আরেকটি প্রশ্নের জন্ম দিতে পারে তা হলো- গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের গতিবিধি লেবাননের বুদ্ধিমত্তার চেয়ে শক্তিশালী কিনা?

আরেকটি যুদ্ধবিরতি গ্রহণ করার আগে ইসরায়েলের একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য প্রয়োজন। এখনও অনেক হামাস নেতারা মুক্ত রয়েছেন এবং এর তিনজন শীর্ষ নেতা কাতারে বসবাস করছেন। এই প্রেক্ষিতে আল-আরৌরির একা মৃত্যু ইসরায়েলের প্রতিশ্রুতির চিহ্ন ব্যতীত সংগঠনের উপর খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না।

তিনি বলেন, ২০০৭ সালে তার সাথে কথা বলার পর থেকে এখন পর্যন্ত এতোটা সময়ে ফিলিস্তিনের একটি নতুন প্রজন্ম সেসব স্কুল দ্বারা অনেকটাই উগ্রবাদী হয়ে উঠেছে। ফিলিস্তিনিদের উগ্র মনোভাব ধরে রাখতে তিনি যে কৌশল নির্ধারণ করেছিলেন তা সমৃদ্ধ হচ্ছে। বর্তমানে তাই ইসরায়েলের পক্ষে একা হামাসকে নির্মূল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ ফিলিস্তিনিদের বাইরেও বিশ্বজুড়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ইসরায়েল সমালোচনার সেই ফাঁদ ৭ অক্টোবরের হামলার মধ্য দিয়েই শুরু করেছে হামাস।

সূত্র: চ্যাথাম হাউস থেকে অনুদিত, অনুবাদক: আসমা ইসলাম

   

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় নিহত বেড়ে ৩৪৬০০



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গাজায় নিহতের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৩৪ হাজার ৬০০ জনে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে এবং গত ২৪ ঘণ্টায় তাদের বর্বর হামলায় অন্তত আরও ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং ৫১ জন আহত হয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার ওই অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন এবং উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
আনাদোলু বলছে, আন্তর্জাতিক আদালতের অস্থায়ী রায়কে উপেক্ষা করে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় তার আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর চলা নিরলস এই হামলায় কমপক্ষে ৩৪ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৫ হাজার ৮১৫ জন আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ কোনও ধরনের আশ্রয় ছাড়াই বসবাস করছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ত্রাণবাহী ট্রাক এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েল গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত। চলতি বছরের জানুয়ারিতে অন্তর্বর্তীকালীন এক রায়ে আদালত তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।

 

 

;

আমেরিকানদের বিক্ষোভের অধিকার আছে, সহিংসতা নয়: বাইডেন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আমেরিকানদের বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার আছে, তবে সহিংসতা ছড়ানোর অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

গাজা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের বিষয়ে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক চাপের মধ্যে বৃহস্পতিবার (০২ মে) হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ মন্তব্য করেন।

বাইডেন বলেন, বিক্ষোভ করার অধিকার সবার আছে, কিন্তু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অধিকার কারও নেই।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থিরা বিক্ষোভ করে আসছেন। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে শতাধিক শিক্ষার্থীকে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাইডেন প্রশাসনের উদ্যোগের সমালোচনা করছেন অনেকে। বৃহস্পতিবারের আগ পর্যন্ত তিনি মুখপাত্রের মাধ্যমে মন্তব্য করে আসছিলেন।

আগামী নভেম্বরে পুনরায় নির্বাচিত হতে প্রত্যাশী বাইডেন খুব সতর্কতার সঙ্গে মন্তব্য করেছেন। তার মন্তব্যে ইহুদিবিদ্বেষকে খারিজ করলেও তরুণদের বিক্ষোভের অধিকারের পক্ষ নিয়েছেন। দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক ক্ষতি এড়াতে তিনি এমন অবস্থান নিয়েছেন।

বাইডেন বলেছেন, উভয়পক্ষের যৌক্তিক পয়েন্ট রয়েছে। গণতন্ত্রে শান্তিপূর্ণ ভিন্নমত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সহিংসতা মেনে নেওয়া হবে না।

বাইডেন বলেন, বিক্ষোভ করার অধিকার সবার আছে, কিন্তু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অধিকার কারও নেই।

তিনি বলেন, সম্পদ ধ্বংস করা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ নয়। এটি আইনের পরিপন্থি। ভাঙচুর, অনুপ্রবেশ, জানালা ভাঙা, ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেওয়া, ক্লাস বাতিল করতে বাধ্য করা– এর কোনোটাই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ নয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র নয় যা সমালোচকদের চুপ করে করিয়ে দেবে। তবে শৃঙ্খলা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।

দুই সপ্তাহ আগে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই শুরু হয়েছিল ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ। পরে তা আমেরিকার অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে কমপক্ষে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলন হচ্ছে।

;

গাজা ইস্যুতে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করল তুরস্ক



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজা যুদ্ধের জেরে অবৈধ দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে তুরস্ক।

তুর্কি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বৃহস্পতিবার (২ মে) এ তথ্য জানিয়েছে।

তুর্কি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েল গাজায় নিরবচ্ছিন্ন এবং পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তার অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।

বিবিসি জানায়, ২০২৩ সালে ইসরায়েল ও তুরস্কের মধ্যে বাণিজ্য হয়েছে প্রায় ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানকে স্বৈরশাসকের মতো আচরণ করছেন বলে অভিযোগ ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।

ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে লিখেছেন, এরদোগান তুর্কি জনগণ ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থকে উপেক্ষা করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি ভঙ্গ করছেন।

তুরস্ক বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়ায় বিকল্প হিসেবে অন্য দেশগুলো থেকে পণ্য আমদানি এবং স্থানীয়ভাবে পণ্য উৎপাদনের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দখলদার ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি লিখেছেন, তুরস্কের সঙ্গে বাণিজ্যের বিকল্প খুঁজে বের করতে আইএমএফ-এর মহাপরিচালককে সংশ্লিষ্ট পার্টির সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ শুরুর নির্দেশনা দিয়েছি। এছাড়া তাকে স্থানীয় উৎপাদন এবং অন্যান্য দেশ থেকে পণ্য আমদানির জন্য বলেছি। ইসরায়েল শক্তিশালী ও ভয়ঙ্কর অর্থনীতি হিসেবে আবির্ভূত হবে। তারা হারবে আমরা জিতব।

১৯৪৯ সালে তুরস্ক ছিল প্রথম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ যারা ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।

২০১০ সালে ইসরায়েলি কমান্ডোদের সঙ্গে সংঘর্ষে দশ ফিলিস্তিনিপন্থী তুর্কি কর্মী নিহতের জেরে তুরস্ক ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।

;

ইউক্রেনে নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছে রাশিয়া: যুক্তরাষ্ট্র



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইউক্রেনে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত নিষিদ্ধ রাসায়নিক ‘ক্লোরোপিকরিন’ ব্যবহার করছে রাশিয়া বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার (২ মে) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেনে এই অস্ত্রটি দিয়ে হামলা ‘বিচ্ছিন্ন’ কোনো ঘটনা নয়। রাশিয়া হরহামেশাই তা ব্যবহার করছে।

তবে ক্রেমলিন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ ভিত্তিহীন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মস্কোতে সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়া রাসায়নিক অস্ত্রবিষয়ক কনভেনশনের (সিডব্লিউসি) বাধ্যবাধকতা বজায় রেখেছে।

সিডব্লিউসি অনুযায়ী, কোনো যুদ্ধে ক্লোরোপিকরিনের ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা (সিডিসি) বলছে, তেল চিটচিটে এই রাসায়নিকটি ব্যবহারের ফলে মানুষের ফুসফুস, চোখ ও ত্বকে প্রদাহ হয়। এতে বমি, বমি বমি ভাব ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য অনুযায়ী, সুরক্ষিত অবস্থান থেকে ইউক্রেনের সেনাদের পিছু হটাতে ক্লোরোপিকরিন ব্যবহার করেছে রাশিয়া।

ইউক্রেনে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে এর আগে রাশিয়াকে সতর্ক করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইউক্রেনে হামলা শুরুর কয়েক সপ্তাহ পর ২০২২ সালের মার্চে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছিলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যদি রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেন, তাহলে এর জন্য তাকে ‘চড়া মূল্য’ দিতে হবে।

এরপরও ইউক্রেনে রাসায়নিক অস্ত্র দিয়ে মস্কো হামলা চালিয়েছে বলে একাধিকবার অভিযোগ উঠেছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত রাসায়নিক দিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ এনেছেন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যালরি স্টেওয়ার্ট। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় রাসায়নিক হামলার শিকার হওয়ার কথা বলেছেন ইউক্রেনের সেনারাও।

;