জার্মান কেন ফিলিস্তিন বিদ্বেষী- জাতীয় স্বার্থ নাকি ইহুদিপ্রীতি?



আসমা ইসলাম, আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জার্মানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হিটলার অসংখ্য ইহুদি নিধনের সাথে জড়িত থাকলেও বর্তমান জার্মানকে সবসময়ই দেখা যায় ফিলিস্তিনিদের ঘোর বিরোধিতা করতে। এরা সবসময় ইসরায়েলের সমর্থনে কথা বলে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে ইসরায়েল স্বার্থ রক্ষায় বিভিন্ন দাবি তোলে। এর নেপথ্যে কারণ কী হতে পারে-জাতীয় স্বার্থ এবং রাষ্ট্রীয় নীতি নাকি ইসরায়েল এবং ইহুদিপ্রীতি? 

২০২৩ এর ৭ অক্টোবরে গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে জার্মানি দৃঢ়ভাবে মিত্র ইসরায়েলের পাশে দাঁড়ায়। এমনকি গণহত্যার বিষয়ে আন্তজার্তিক মহলে ইসরায়েলের সমালোচনা ও সতর্কতা বৃদ্ধি পেলেও, জার্মান সরকার মিত্র সমর্থনে পিছ পা হয়নি। ১২ অক্টোবর দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ ঘোষণা করেন জার্মানি শুধুমাত্র ইসরায়েলের পাশেই অবস্থান করবে, এ সমর্থন থেকে সরবে না। জার্মান সরকার ইসরায়েলি বাহিনীকে শুধু যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থনই দিয়েছে তা নয়। বরং ফিলিস্তিনের বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার সুবিধার্থে দ্রুত অস্ত্র রপ্তানিও করেছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে জার্মান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের অবস্থান ছিল ঘোর বিরোধী। কঠোরভাবে তারা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের দাবির পুনরাবৃত্তি করে বারবার ফিলিস্তিন বিদ্বেষী মনোভাব তুলে ধরেছে দেশটি। ফিলিস্তিনে বিদ্যমান কয়েক দশকের এই বৈষম্য এবং জাতিগত নির্মূলকে উপেক্ষা করেই চলেছে জার্মানি। তোয়াক্কা করছে না আন্তর্জাতিক আইনেরও।

জার্মান রাজনৈতিক অভিজাতরা একসময়ের ইহুদি নিধনের অপরাধবোধের কথিত অনুভূতির কারণেই কি ইসরায়েলকে এতো সমর্থন করে? অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে কী ইসরায়েলের অবস্থানকে ন্যায্যতা দিয়ে চলেছে? না, মূলত এসবের আড়ালে জার্মান রাজনীতিবিদ এবং কর্মকর্তারা আরব-বিরোধী এবং মুসলিম-বিরোধী মতবাদকে আরও স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন। অভিবাসন-বিরোধী নীতিকে আরও কঠোরভাবে ন্যায্যতা দিতে চাইছেন। জার্মান-সেমিটিজমদের মধ্যকার বিরোধিতাকে কমিয়ে আনতে চাইছেন।

রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে ফিলিস্তিনের বিরোধীতা

ফিলিস্তিনিদের প্রান্তিককরণ এবং ফিলিস্তিনিপন্থী সক্রিয়তাকে দমন করা জার্মানিতে নতুন কোনো ঘটনা নয়। ৭ অক্টোবরের অনেক আগে থেকেই, জার্মান কর্তৃপক্ষের ফিলিস্তিন-বিরোধী কৌশল বাড়তে থাকে। ফিলিস্তিনপন্থী কণ্ঠস্বরকে চুপ করিয়ে দেওয়ার জন্য বহুবার বিদ্রোহীদের বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করা হয়, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। সাম্প্রতিক সময়গুলোতেও দেশটিতে ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভ এবং পুলিশি সহিংসতার বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন বেড়েছে। অসংখ্য বিক্ষোভ নিষিদ্ধও করা হয়েছে।

গাজায় ইসরাইল যুদ্ধ শুরু করার পর প্রথম সপ্তাহে কয়েকশ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়। অনেকজনকে পুলিশি সহিংসতার সম্মুখীন হতে হয় অতবা উস্কানি দেওয়ার অপরাধে তদন্তের আওতায় আনা হয়।

ফিলিস্তিনিপন্থী সক্রিয়তার ক্ষেত্রে বাক স্বাধীনতাকেও দমন করা হয়েছে জার্মানে। সম্প্রতি, ফেডারেল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি’ স্লোগানটিকে ইসরায়েলকে ধ্বংস করার মন্ত্র বিবেচনায় করে নিষিদ্ধ করেছে। বাভারিয়া রাজ্য এই শব্দগুচ্ছটিকে ‘সন্ত্রাসবাদের প্রতীক’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে।

জার্মানির অন্যতম নেতৃস্থানীয় দল খ্রিস্টান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) স্পষ্ট করে বলে, জার্মানিতে ‘ফ্রী প্যালেস্টাইন’ শব্দের কোনও স্থান নেই। তাদের একমাত্র গণতন্ত্র ইহুদি রাষ্ট্রের বিলুপ্তির চেতনা, যা জার্মান কখনও সমর্থন করেনা।

জার্মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও কোনো ফিলিস্তিনপন্থী মন্তব্য করা যায়না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও সরকারের ইসরায়েলপন্থী অবস্থান অনুসরণ করতে হয়। এর ফলে বিক্ষোভকারী অনেক শিক্ষার্থী পুলিশি সহিংসতা এবং মিডিয়ার শ্লীলতাহানির শিকার হয়। কিছু প্রতিষ্ঠান ফিলিস্তিনপন্থী প্রতীক, যেমন কেফিয়াহ স্কার্ফ নিষিদ্ধ করে। বার্লিনের একটি স্কুলে একজন শিক্ষক ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলনকারী এক ছাত্রকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করেছেন। ফিলিস্তিনপন্থী সক্রিয়তার এমন পদ্ধতিগত দমন জার্মানির ডাইস্টোপিয়ান-সদৃশ বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে। গণহত্যার বিরোধিতা না করে অপরাধকেই বরং সমর্থন করে যাচ্ছে রাষ্ট্রটি।

জার্মান কর্তৃপক্ষ স্পষ্টভাবে ফিলিস্তিন- বিরোধীতাকে জাতীয় স্বার্থ এবং রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তারা সর্বান্তকরণে ইসরায়েলের অস্তিত্বকে সমর্থন করে। ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্রমাগত সহিংসতা প্রয়োজন বলে মনে করে তারা। এটি অবশ্য জার্মানির নিজস্ব গণহত্যার ইতিহাস এবং ক্রমাগত বৈষম্যের ব্যতিক্রম নয়।

জার্মানে অভিবাসন কমানো এবং আরববিরোধী চিন্তার প্রসারের উদ্দেশ্যে ইসরায়েল সমর্থন 

গাজার গণহত্যাকে ইস্যু করে ইতিমধ্যেই জেনোফোবিক এবং বর্ণবাদী অনুভূতিকে আরও শক্তিশালী করেছে জার্মান কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে মুসলিম ও আরবদেরকে জার্মান সমাজের জন্য বিপজ্জনক হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে তারা।

৮ নভেম্বর, জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনমায়ার ফিলিস্তিনি এবং আরব বংশোদ্ভূত জার্মান নাগরিকদের ইহুদি বিরোধীতা থেকে নিজেদের দূরে রাখার আহ্বান জানান। কারণ ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ আন্দোলনকে জার্মান রাষ্ট্র একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসাবে মনোনীত করেছে।

এর এক সপ্তাহ পরে, জার্মান নাগরিকত্বকে ‘ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকার’ এর আনুষ্ঠানিক প্রতিশ্রুতির সাথে আবদ্ধ করে জার্মান পার্লামেন্টে একটি খসড়া আইন পেশ করা হয়। এক মাস পরে, স্যাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্য তার নিজস্ব মন্তব্য জারি করে বলেন, যারা এই রাজ্যের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবে তারা  ‘ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকার’ এর জন্য সমর্থন করতে হবে। নভেম্বরে, ফেডারেল বিচারমন্ত্রী মার্কো বুশম্যান একটি সাক্ষাত্কারে বলেন ‘আমরা চাই না ইহুদি বিরোধীরা জার্মানের নাগরিক হোক।’

ফিলিস্তিনি অভিবাসীরা সন্ত্রাসের ঝুঁকি তৈরি করে। তারা  ইহুদি-বিদ্বেষ বহন করে এবং ছড়িয়ে দেয়। এমন দাবি তুলে জার্মান দেশটির অভিবাসন এবং শরণার্থীনীতি পরিবর্তন করার বিষয়টিকে ন্যায্য হিসাবে প্রচার করে। সিডিইউ নেতা ফ্রেডরিখ মার্জ বলেছেন, জার্মানি গাজা থেকে আর কোনো শরণার্থীদের স্থান দিতে পারবে না।

ইতিমধ্যেই অভিবাসন কমাতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে দেশটিতে। অক্টোবরে, ফেডারেল সরকার নির্বাসন নীতির অনুমতি দিয়ে একটি খসড়া আইন সমর্থন করে। এই আইন আশ্রয়প্রার্থীদের বহিষ্কার ও আবেদন প্রত্যাহারকে আরও সহজ করে তুলবে।

গত এক দশকে আরব উদ্বাস্তুদের আগমনের কথা উল্লেখ করে দেশটির ডানপন্থী ট্যাবলয়েড ‘বিল্ড’ সংবাদপত্রটি জার্মানিতে কী অনুমোদনযোগ্য বা কী গ্রহণযোগ্য নয় সে বিষয়ে ৫০ টি নির্দেশনা দিয়েছে।সেখানে বলা হয়, ইশতেহারে ইসলামোফোবিয়ার কথা আপাতভাবে বেশি। শ্বেতাঙ্গ জার্মানদের জন্য আরবরা হুমকির কারণ বলে জোর প্রচারণা তাদের। ফিলিস্তিনি জনগণ যখন তাদের নিজ দেশেই গণহত্যার সম্মুখীন হচ্ছে, সে সময়ে এমন অযৌক্তিক ভাবনাকে প্রতিফলিত করছে দেশটি।

এমন কার্যকলাপ জার্মান সমাজে শ্বেতাঙ্গদের আধিপত্যকেও উন্মোচিত করে। প্রকৃতপক্ষে, গাজায় যা ঘটছে তা নিয়ে জার্মান কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া দেখে বোঝা যায়, তারা জার্মান সমাজে বর্ণবাদী শ্রেণিবিন্যাসকে শক্তিশালী ও দৃঢ় করতে চায় যেখানে শীর্ষে শ্বেতাঙ্গ জার্মানদের এবং নিচে ইসরায়েলি সহিংসতার শিকারসহ তৃতীয় বিশ্বের নাগরিকরা থাকবে।

জার্মানির নৃশংস, ইহুদি-বিরোধী ইতিহাস ঢেকে রাখার নিমিত্তে ফিলিস্তিনের সমালোচনা

নৃশংস, ইহুদি-বিরোধী ইতিহাসকে অস্পষ্ট করার জন্য এবং বিশ্বের কাছে তাদের ইহুদিপ্রীতিকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যেও ক্রমাগত ফিলিস্তিনবিরোধী অবস্থানে থাকছে জার্মান। ইহুদিদের দুর্ভোগের জন্য যেন জার্মানের উপর থেকে নজর সরে যায় বিশ্বের। তারা ফিলিস্তিনিদের উপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে ইউরোপীয় বর্ণবাদী, সেটলার-ঔপনিবেশিক শাসনের ইতিহাসকে ঢেকে দিতে চায়।

এরকম ইসরায়েল সমর্থন বর্তমানের ইহুদি-বিরোধী চেতনাকেও ঢেকে রাখে। ইহুদি বিরোধী মনোভাব এখনও জার্মানিতে টিকে আছে। সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে, নথিভুক্ত বেশিরভাগ ইহুদি-বিরোধী ঘটনা সংঘটিত হয় এখানে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পরিচালিত জরিপ অনুসারে, এখানে ইহুদি-বিরোধী ঘটনার হার বর্তমানে ২৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

জায়নবাদ এবং বিষাক্ত জার্মান জাতীয়তাবাদের এই সংমিশ্রণটি ইহুদি সম্প্রদায়সহ সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী সহিংসতাকে আরও ইন্ধন দিতে পারে। জার্মানির ফিলিস্তিন বিরোধীতাকে ইসরায়েলের সাথে হওয়া অপরাধের প্রতিক্রিয়া হিসেবে নয়, বরং জার্মানির ধারাবাহিক আচরণ হিসেবে দেখা উচিত। ফিলিস্তিনকে মোড়ক করে বিশ্বের কাছে নিজেদের ইহুদি-বন্ধু হিসেবে পরিচিত হতে মরিয়া জার্মান বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং কুটনৈতিক সুবিধার জন্য এমনটা করছে কিনা সেটাও দেখার বিষয়। তবে ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েল দ্বন্দ্ব সমাধানে জার্মানকে এমন মতাদর্শ থেকে অবশ্যই সরে আসা উচিত।

সূত্র: আল জাজিরা  

   

ত্রিমুখী ঝুঁকির সম্মুখীন ইউরোপ: ম্যাক্রোঁ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আধুনিক ইউরোপের অস্তিত্ব ত্রিমুখী হুমকির সম্মুখীন বলে মন্তব্য করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, এসব হুমকি মোকাবেলার জন্য একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও ধারণার প্রয়োজন।

শুক্রবার (৩ মে) ব্রিটিশ সাপ্তাহিক ‘দ্য ইকোনমিস্ট’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ এ কথা বলেন।

ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘এটি আমাদের ইউরোপের জন্য ত্রিবিধ অস্তিত্বের ঝুঁকি। একটি সামরিক ও নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং একটি আমাদের সমৃদ্ধির জন্য অর্থনৈতিক ঝুঁকি এবং অভ্যন্তরীণ অসঙ্গতি ও আমাদের গণতন্ত্রের কার্যকারিতা ব্যাহত হওয়ার অস্তিত্বের ঝুঁকি।’ 

তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই তিনটি ঝুঁকি ত্বরান্বিত হয়েছে। খুব দৃঢ়ভাবে হয়েছে, এতে কোন সন্দেহ নেই। অধিকন্তু, করোনা মহামারির পর আমরা এই উদ্বেগের বিষয়গুলোকে অবমূল্যায়ন করেছি। যদিও ইউরোপ তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছিল, কিন্তু খুব ভীতু বা কখনও কখনও একটু দেরি করে।’

ম্যাক্রোঁর মতে, ‘এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার ইউরোপের জন্য একটি নতুন ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক দৃষ্টান্ত প্রয়োজন। প্রেসিডেন্ট মনে করেন প্রথমত, ইউরোপকে অবশ্যই নিজের নিরাপত্তার যতœ নিতে হবে। বিশেষত জ্বালানি, উপকরণ এবং বিরল সম্পদের ক্ষেত্রে ইউরোপের কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে হবে। একইসাথে মূল দক্ষতা এবং প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও।’

অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটিং-এর মতো উন্নত প্রযুক্তির বিকাশে কোম্পানিগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। এ ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা ভোগ করছে।

ম্যাক্রোঁ বলেন, অবশেষে ইউরোপকে ‘সামাজিক নেটওয়র্ক এবং আমাদের সমাজের ডিজিটালাইজেশন এবং গণতন্ত্র যেভাবে কাজ করে তার সৃষ্ট দুর্বলতাগুলোকে মোকাবেলা করতে হবে।’

এই ঝুঁকি কি ধীরে ধীরে মৃত্যু ঘটাবে, নাকি এটি একটি আকস্মিক মৃত্যু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘বিষয়গুলো খুব দ্রুত ভেঙে যেতে পারে। ইউরোপে এবং অন্য সব জায়গায় তারা ক্ষোভ ও অসন্তোষের জন্ম দিচ্ছে।’

;

পাকিস্তানে বাস খাদে পড়ে ২০ জনের প্রাণহানি



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পাকিস্তানের গিলগিট বালতিস্তানের ডায়মার জেলায় যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে ২০ জন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২১ জন। 

শুক্রবার (৩ মে) সকাল সাড়ে ৫টার দিকে দিয়ামের কারাকোরাম হাইওয়ের যশোখাল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশ জানিয়েছে, বাসটি রাওয়ালপিন্ডি থেকে গিলগিটের দিকে যাচ্ছিল। চিলাস শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ওভারস্পিডিং বা বাঁক নেওয়ার সময় বাসটি দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়। আহত ব্যক্তি ও মরদেহ চিলাসের একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক জানান, নিহতদের মধ্যে তিনজন নারী রয়েছেন।

দিয়ামেরের জেলা প্রশাসক ফাইয়াজ আহমেদ জিও নিউজকে বলেন, যে কমপক্ষে পাঁচজন আহত যাত্রীর অবস্থা গুরুতর এবং দুজনকে গিলগিট শহরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযানে সেনা হেলিকপ্টারও অংশ নিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শাহবাজ শরিফ বাস দুর্ঘটনায় ক্ষতির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আহতদের সম্ভাব্য সব ধরনের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

;

তাইওয়ানকে ঘিরে রেখেছে চীনের ২৬ বিমান-৫ জাহাজ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তাইওয়ানের চারপাশ ঘিরে রেখেছে চীনের ২৬ টি বিমান ও পাঁচটি জাহাজ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্ব-শাসিত দ্বীপের চারপাশে চীনের এই টহল শনাক্ত করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণলয়। 

শুক্রবার (৩ মে) সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাইওয়ানের নতুন প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের অভিষেক হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে এই অভিযান চালিয়েছে চীন। আগামী ২০ মে তাইওয়ানের রাষ্ট্র পরিচালনায় অভিষেক করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রপন্থি এই নেতা। বেইজিং লাই কে একজন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে বিবেচনা করে।
দ্বীপটির চারপাশে টহল দেওয়া এসব বিমানের অন্তত ১৭ টি বিমান তাইওয়ান প্রণালি সীমান্ত আদিজে প্রবেশ করেছে বলে অভিযোগ করেছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রায় ১৮০ কিলোমিটার বিস্তৃত এই প্রণালীটি তাইওয়ানকে চীন থেকে পৃথক করেছে। তাইওয়ান নিজেকে স্বার্বভৌম রাষ্ট্র দাবি করলেও তা নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি চীনের। এমন দাবিতে কয়েক বছরে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে চীনের বিমান বাহিনী। তাইওয়ানের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন চীনের দাবি প্রত্যাখ্যান করায় উত্তেজনা চরমে ওঠে বেইজিং এবং তাইপের। জানুয়ারিতে তার ভাইস-প্রেসিডেন্ট লাই এবারের নির্বাচনে দ্বীপটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় এই উত্তেজনা আরো বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। 

 

;

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় নিহত বেড়ে ৩৪৬০০



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গাজায় নিহতের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৩৪ হাজার ৬০০ জনে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে এবং গত ২৪ ঘণ্টায় তাদের বর্বর হামলায় অন্তত আরও ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং ৫১ জন আহত হয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার ওই অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন এবং উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
আনাদোলু বলছে, আন্তর্জাতিক আদালতের অস্থায়ী রায়কে উপেক্ষা করে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় তার আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর চলা নিরলস এই হামলায় কমপক্ষে ৩৪ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৫ হাজার ৮১৫ জন আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ কোনও ধরনের আশ্রয় ছাড়াই বসবাস করছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ত্রাণবাহী ট্রাক এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েল গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত। চলতি বছরের জানুয়ারিতে অন্তর্বর্তীকালীন এক রায়ে আদালত তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।

 

 

;