ফিলিস্তিন ইস্যুতে দ্বন্দ্বে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র!
গাজায় বর্বর হামলা বন্ধ ও নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের জন্য আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলের মিত্রদেশগুলো। তবে, একে ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
বৃহম্পতিবার( ১৮ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনের বিরোধীতা করে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বলে দিয়েছেন যে, গাজায় যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ফিলিস্তিনিদের জন্য রাষ্ট্র গঠনের যে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে তা যেন করা না হয়।
গাজায় সম্পূর্ণরূপে বিজয় না আসা পর্যন্ত হামলা চালিয়ে যাবেন বলেও অঙ্গিকার করেন তিনি। এছাড়াও হামাসকে ধ্বংস করা ও বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে আরও কয়েক মাস সময় লেগে যাবে বলে জানান নেতানিয়াহু।
দীর্ঘদিন থেকেই দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের বিষয়ে তেল আবিবকে কূটনৈতিক চাপ দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরাইলের মিত্রদেশগুলো। কিন্তু বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বলেন, ফিলিস্তিনের সকল ভূ-খন্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে ইসরাইলকে।
ফিলিস্তিনের নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ থাকবে ইসরাইলের হাতে। এবং এটা ফিলিস্তিনের জন্য একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাহলে কি করতে হবে? আমি আমাদের মার্কিন বন্ধুদের বলেছি ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয় এমন চিন্তা থেকে সরে আস।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সংঘাত একটি (ফিলিস্তিন) রাষ্ট্রের অনুপস্থিতি নিয়ে নয় বরং ইহুদি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নিয়ে।
নেতানিয়াহু সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন যে ইসরায়েলি যেসব রাজনীতিকরা তার পদত্যাগ দাবি করছেন তারা মূলত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের জন্য বলছেন।
তিনি বলেন, যারা নেতানিয়াহুর পরবর্তী দিনের কথা বলছেন তারা আসলে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন।
নেতানিয়াহুর মন্তব্যের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, আমি তার বক্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না। কিন্তু আমি বলব যে ইসরায়েলকে তার প্রতিষ্ঠার পর থেকে যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে তার থেকে বের হওয়ার একটি ঐতিহাসিক সুযোগ তৈরি রয়েছে। তাই আমরা আশা করি দেশটি সেই সুযোগটি গ্রহণ করবে।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, নেতানিয়াহুর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রত্যাখ্যানের বিষয়টির চূড়ান্ত হিসেবে দেখছেন না।
নেতানিয়াহুর মন্তব্যের বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, আমরা যদি এই ধরনের বক্তব্যকে চূড়ান্ত শব্দ হিসেবে গ্রহণ করি, তাহলে গাজায় কোনো মানবিক সহায়তা দেওয়া হবে না এবং কোনো জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে না।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর এ নিয়ে গাজায় ২৪ হাজার ৬২০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬১ হাজার ৮৩০ জন। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন ৮ হাজারের বেশি।