ইরান-পাকিস্তানের উত্তেজনা সীমান্তের বিবাদ মধ্যপ্রাচ্যের নয়



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি চলছে পাকিস্তান-ইরানের মধ্যে। উভয় পক্ষের সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে ইতিমধ্যে কূটনৈতিক অচলাবস্থা শুরু হয়েছে। ইরানের হামলার মধ্য দিয়েই মূলত এর শুরু তবে সেই উত্তেজনা কিছুটা কমার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে ইতিবাচক বার্তা বিনিময় করেছে দেশ দুটি। উভয়দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার পরে সবাই ধারণা করেছিলো এই উত্তেজনা মধ্যপ্রাচ্যে চলমান যুদ্ধাবস্থার আগুনে ঘি ঢালবে। তবে দুই দেশের সহাবস্থানের ইঙ্গিত এই উত্তেজনা কমার বার্তাই দিচ্ছে। 

ইরান মঙ্গলবার দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানে কট্টরপন্থী সুন্নি মুসলিম জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে এই অঞ্চলের চারপাশে শকওয়েভ পাঠিয়েছে। দুই দিন পরে, পাকিস্তান প্রতিশোধ হিসাবে আক্রমণ করে বলেছিল যে এটি ইরানের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি ছিল। ১৯৮০-৮৮ ইরান-ইরাক যুদ্ধের পর এটি ইরানের মাটিতে যুদ্ধবিমান দ্বারা প্রথম বিমান হামলা। পাকিস্তান ও ইরান দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ৯০০ কিলোমিটারের বেশি সীমান্ত রয়েছে।

মঙ্গলবারের (১৬ জানুয়ারি) স্ট্রাইক ছিল পাকিস্তানের সুন্নি জঙ্গি জইশ আল-আদল গ্রুপের উপর ইরানের সবচেয়ে কঠিন আন্তঃসীমান্ত হামলার মধ্যে একটি। ইরান বলছে ইসলামিক স্টেটের সাথে তাদের সম্পর্ক রয়েছে। জইশের অনেক সদস্য পূর্বে জান্দাল্লাহ নামে পরিচিত একটি অধুনালুপ্ত জঙ্গি গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ছিল যারা ইসলামিক স্টেটের প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার করেছিল।

অক্টোবরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ছড়িয়ে পড়া মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ আরও গভীর করেছে এই পদক্ষেপ। ইয়েমেন থেকে লেবানন পর্যন্ত ইরান-মিত্র হুথিরা গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে লোহিত সাগরে জাহাজীকরণ সহ মার্কিন ও ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা শুরু করেছে।

ইরান ইরাক এবং সিরিয়ায় হামলা শুরু করার একদিন পরেও বলেছিল যে যথাক্রমে ইসরায়েলি গুপ্তচরবৃত্তি এবং ইসলামিক স্টেট অপারেশনকে লক্ষ্য করে তারা হামলা চালিয়েছে। কিন্তু ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে আঘাত হানা সেই যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অনেক দূরে, প্রত্যন্ত সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এবং ইসলামি জঙ্গিরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে, পাকিস্তান ও ইরানের কর্মকর্তারা প্রায়ই একে অপরের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ করে।

ইরাক, সিরিয়া ও পাকিস্তানে ইরানের সব হামলার পেছনেই ছিল নিজেদের মাটিতে বা নিজেদের স্বার্থ আক্রান্ত হওয়ার জেরে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা।

গত মঙ্গলবার তেহরান সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানায়, যা ছিল গত ৩ জানুয়ারিতে ইরানের প্রভাবশালী নেতা কাসেম সুলেইমানির মৃত্যুবার্ষিকীর ভিড়ে আত্মঘাতী হামলার প্রতিশোধ। সেই হামলার দায় স্বীকার করেছিল ইসলামিক স্টেট। এর জেরেই মূলত ইরানের এই দেশে দেশে হামলার সিদ্ধান্ত।

অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন সেনা কর্মকর্তা ওয়েসলি ক্লার্ক বলেন, ইরান মধ্যপ্রাচ্যের নেতা হিসেবে তার ভূমিকাকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ইরানের হামলা ঘিরে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক টানাপোড়েন। এর মধ্যে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করেছে পাকিস্তান। জবাবে তেহরানে পাকিস্তানের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করেছে ইরান। আশপাশের দেশেও এর প্রভাব পড়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা এমন একটি বিষয়, যা দুই দেশের জন্যই উদ্বেগের। আরও বলা হয়েছে যে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থান অটুট রয়েছে। আর ভারত বুঝতে পারছে, যে ঘটনা ঘটেছে, দেশগুলো তা করেছে নিজেদের আত্মরক্ষার্থে। চীন দুই দেশকে সংযম দেখাতে ও উত্তেজনা কমাতে বলেছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কাজ করছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাট মিলার সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথা বলেছেন।

বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে নিঃশেষ করার কথা বলে নিজেদেরকে যেভাবে পরস্পরের স্থায়ী শত্রুতে পরিণত করে চলেছে ইরান ও পাকিস্তান, তার শেষটা কোথায় গিয়ে শেষ হবে, তা অজানা। পরস্পরের মধ্যে বৈরীতা আরো বাড়বে কি-না, সে সম্পর্কেও কেবল এই দুই দেশই ভালো বলতে পারবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, উভয় দেশই মুখে যা বলছে, তার চেয়ে করে দেখাচ্ছে বেশি! একটি করে হামলার ঘটনা ঘটছে এবং সেই হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই অন্য পক্ষের মাটিতে আছড়ে পড়ছে বোমার আঘাত।

পরিস্থিতি যেন আর উত্তপ্ত না হয়—এমনটাই দেখার আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়ে আসছে দুই দেশ। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইরানকে একটি ‘ভ্রাতৃত্বপূর্ণ দেশ’ বলে অভিহিত করেছে। শুধু তাই নয়, ‘সম্মিলিত সমাধান’ খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছে। একই ধরনের কথা বলেছে তেহরানও। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পাকিস্তান একটি ‘বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ’। তিনি আরো বলেছেন, ‘আমাদের হামলা কেবল জঙ্গিদের নিধন করার জন্যই।’

এরই মধ্যে পাকিস্তানের অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব রহিম হায়াত কোরেশি ও ইরানের অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব সৈয়দ রাসুল মৌসাভির মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা হয়েছে। তাদের আলোচনায় দুপক্ষের মধ্যে কিছু ইতিবাচক বার্তা বিনিময় হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ইরানের পররাষ্ট্র সচিব সৈয়দ রসুল মৌসাভি মাইক্রো ব্লগিং সাইটে এক্সে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, আমি বিশ্বাস করি যে দুই দেশের বিদ্যমান উত্তেজনা সমাধানে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শেষ আশ্রয়স্থল। দুই দেশের নেতা ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও জানেন যে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা থেকে শুধু সন্ত্রাসী ও শত্রুরা লাভবান হবে।

তার সেই পোস্টের জবাবে দেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব রহিম হায়াত কোরেশি। তিনি তার ইরানের পররাষ্ট্র সচিবকে ‘প্রিয় ভাই’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, পাকিস্তান-ইরানের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ইতিবাচক আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধানে দুই দেশকে এগিয়ে যেতে হবে। দুপক্ষের মধ্যে আস্থা ও ভরসা পুনরুদ্ধার করা গুরুত্বপূর্ণ। এ আস্থা ও ভরসা সব সময় দুই দেশের সম্পর্ক নির্ধারণ করে। সন্ত্রাসবাদসহ আমাদের অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন।’

পশ্চিমা ও আঞ্চলিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, তেহরান ইসলামাবাদের সাথে সংঘর্ষে জড়াবে না, যদিও তাদের প্রক্সি বাহিনী ওই অঞ্চলে নানা শত্রু লক্ষ্যে হামলা চালিয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে একটি মাত্র ভুলও বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। আপাতদৃষ্টিতে এই উত্তেজনা দুই দেশের সীমান্তের মধ্যেই চলমান তা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পরার মতো বিবাদ নয় ।

   

যুক্তরাষ্ট্রে গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান ঘিরে রণক্ষেত্র হতে পারে ক্যাম্পাসগুলো



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে। গত শনিবার (৪ মে) ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরও অন্তত ২৫ ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ।

আল-জাজিরা জানিয়েছে, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ক্যাম্পাসগুলো থেকে আড়াই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হলো। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানের সময় ঘনিয়ে আসছে।

আগামী দিনগুলোয় স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭ বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। গত ১৭ এপ্রিল থেকে চলছে এই বিক্ষোভ। শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভ দমনে শুরু থেকেই পুলিশ অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে এসেছে।

এভাবে বিক্ষোভ দমন ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন অধিকারকর্মীরা। শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

বিক্ষোভে উত্তাল চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি সপ্তাহের শেষে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে। বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি মাসে অথবা আগামী জুনে এই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে বাধা দিতে পারেন বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা। এ কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার উদ্যোগ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা হুমকি দিয়েছেন, তাদের দাবি মানা না হলে এসব আয়োজন বর্জন ও অনুষ্ঠানস্থল থেকে বেরিয়ে আসাসহ বিকল্প কর্মসূচি নিয়ে ভাবছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে এসব অনুষ্ঠান বাতিল করেছে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়। কোনো কোনোটি পিছিয়ে দিচ্ছে।

গত শনিবার সকাল পর্যন্ত ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চলছিল। ওই সময় একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ ক্যাম্পাসের লন থেকে কয়েক বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীকে আটক করছে।

এ ছাড়া বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ রাসায়নিক স্প্রে ব্যবহার করছে। এর পরই বিক্ষোভ একরকম দাঙ্গায় রূপ নেয়।

এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট জিম রায়ান বলেন, গত শুক্রবার রাতে বিক্ষোভকারীরা তাঁবু গেড়ে বিক্ষোভ করবে-এমন খবরে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার বিষয়টি পুলিশকে জানালে বিক্ষোভকারীদের আটক করা হয়। তবে আটকদের মধ্যে ঠিক কতজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তা স্পষ্ট নয়।

মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানস্থলে মঞ্চের সামনে বিক্ষোভ করেন ফিলিস্তিনপন্থিরা। তবে এই বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ। ক্যাম্পাস পুলিশ দ্রুত বিক্ষোভকারীদের ঘিরে ফেলে স্টেডিয়ামের পেছনের অংশে নিয়ে যায়। তবে পতাকা, কাফিয়াহ এবং গ্র্যাজুয়েশন ক্যাপ পরে কয়েক ডজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্নাতক অনুষ্ঠান পণ্ড করেন।

এর এক দিন পর গতকাল রোববার নর্থ ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি এবং ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটিতে সমাপনী অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও সূচনা অনুষ্ঠান ব্যাহত হয়।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও এই বিক্ষোভ এখন নতুন নতুন দেশে ছড়িয়েছে। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভে নেমেছেন ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, ভারত, লেবানন, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও মেক্সিকোর শিক্ষার্থীরা।

;

ব্রুনাইয়ের আদালতে বাংলাদেশীকে ৫১ লাখ টাকা জরিমানা



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অবৈধ সিগারেট চোরাচালানের অপরাধে এক বাংলাদেশী অভিবাসীকে ৬২ হাজার ব্রুনাই ডলার বা প্রায় ৫১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ব্রুনাইয়ের আদালত।

৬৩ কার্টন সিগারেট চোরাচালানের অভিযোগে গত শুক্রবার (৩ মে) এই রায় দিয়েছেন আদালত।

নির্বাহী বিচারক আজিম বিন ওসমান এই জরিমানা করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

অনাদায়ে বাংলাদেশি নাগরিক হাদিউল ইসলামকে (৪৩) ১৬ মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

কাস্টমস প্রসিকিউটর আদালতে প্রকাশ করেন যে, আসামীর কাছ থেকে ৬৩ কার্টন চোরাচালান করা সিগারেট, একটি মোবাইল ফোন, ২ হাজার ২৪৩ ব্রুনাই ডলার এবং ৫৩ সিঙ্গাপুর ডলার নগদ পাওয়া গেছে।

এর আগে গত ২৪ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টায় কাম্পং পাঞ্চোর মেংকুবাউ এলাকায় দেশটির কাস্টমস বিভাগের অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে হাদিউলের কোয়ার্টার থেকে এই চোরাচালানের সিগারেট উদ্ধার করা জয়।

আদালত মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন এবং সিগারেটগুলো ধ্বংসের আদেশ দিয়েছেন।

;

ইনস্টাগ্রামে ছবি দেখে অবস্থান শনাক্ত, আততায়ীর হাতে ইনফ্লুয়েন্সার খুন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ল্যান্ডি প্যারাগা গয়বুরোর

ল্যান্ডি প্যারাগা গয়বুরোর

  • Font increase
  • Font Decrease

ইনস্টাগ্রামে দেওয়া একটি ছবিই কাল হয়ে দাঁড়াল ইকুয়েডরের বিখ্যাত ইনফ্লুয়েন্সার ল্যান্ডি প্যারাগা গয়বুরোর (২৩) জীবনে। পোস্ট দেওয়া ওই অবস্থানের সূত্র ধরেই তাকে খুন হতে হয় দুজন বন্দুকধারীর হাতে। ইনস্টাগ্রামে তার প্রায় পৌনে ২ লাখ অনুসারী। খবর এনডিটিভি। 

তার মৃত্যুর বিষয়ে পুলিশ জানায়, খুন হওয়ার আগে ল্যান্ডি দুপুরের খাবারের জন্য একটি রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তিনি ওই খাবারের ছবি পোস্ট করেন তার ইনস্টাগ্রাম একাউন্টে। ওই ছবি দেখে ল্যান্ডির অবস্থান চিহ্নিত করেছিলেন খুনিরা। এরপর সেখানে গিয়ে নৃশংসভাবে খুন করেন জনপ্রিয় এ ইনফ্লুয়েন্সারকে।

তারা আরও জানায়, ল্যান্ডিকে খুন করতে ওই রেস্তোরাঁয় দুজন বন্দুকধারী গিয়েছিলেন। তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পুরো ঘটনা সেখানে থাকা ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।

ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা যায়, ল্যান্ডি ওই রেস্তোরাঁয় খাওয়ার সময় একজনের সাথে কথা বলছিলেন। হঠাৎ ওই স্থানে অজ্ঞাত দুই বন্দুকধারী প্রবেশ করে গুলি ছোড়েন।

এ ঘটনার পর মুহূর্তের মধ্যেই রেস্তোরাঁর পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা। গুলিবিদ্ধ হয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন ল্যান্ডি। এরপর পালিয়ে যান বন্দুকধারীরা। দেখা যায়, সাবেক বিউটি কুইন (সুন্দরী প্রতিযোগিতায় বিজয়ী) ল্যান্ডির রক্তাক্ত দেহ রেস্তোরাঁর ভেতর পড়ে আছে।

তদন্তকারীরা বলছে, তার খাবারের ছবির সূত্র ধরেই বন্দুকধারীরা রেস্তোরাঁয় পৌঁছায়। তারপর তারা সেখানে এসে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়।

তবে এখন পর্যন্ত এই খুনের পিছনের কারণ সম্পর্কে জানা যায়নি। এ নিয়ে কিছু গুঞ্জন ছড়িয়েছে। যেমন কেউ বলছেন, স্থানীয় একজন কুখ্যাত গ্যাং লিডারের সঙ্গে ল্যান্ডির সম্পর্ক ছিল। কেউ বলছেন, সংগঠিত অপরাধে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের দুর্নীতিসংশ্লিষ্ট একটি তদন্তের ফাঁদে জড়িয়ে পড়ায় খুন হতে হয়েছে তাকে।

এমন গুঞ্জনও রয়েছে যে একজন মাদক সম্রাটের সঙ্গে ল্যান্ডির সম্পর্ক ছিল। তাই ওই ব্যবসায়ীর বিধবা স্ত্রী ল্যান্ডিকে খুন করিয়ে থাকতে পারেন।

;

লেবাননে ইসরায়েলের বিমান হামলায় এক পরিবারের ৪ সদস্য নিহত



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্ত ঘেষা মেইস আল জাবালে গ্রামে ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে এক পরিবারের চার সদস্য নিহত হয়েছেন।

রোববার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) হামলায় ওই চার লেবানিজ নিহত হয়েছেন বলে দেশটির বেসামরিক প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সূত্র ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে গাজায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েল এবং ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ গ্রুপের মধ্যে নিয়মিত গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটছে। এতে মেই আল জাবালের গ্রামসে বাসিন্দারা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

এদিকে এক বিবৃতিতে, হিজবুল্লাহ জানায়, তারা প্রতিশোধ হিসেবে লেবাননের সীমান্তের নিকটবর্তী ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর কিরিয়াত শমোনা শহরে দশটি কাতিউশা রকেট নিক্ষেপ করেছে।

অক্টোবর থেকেই বিক্ষিপ্তভাবে পাল্টাপাল্টি বিমান হামলা এবং গোলাবর্ষণ চালিয়ে আসছে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি বাহিনী। তবে উভয়পক্ষ সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়ানো থেকে বিরত রয়েছে।

অক্টোবর থেকে লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় ২৫০ জনেরও বেশি হিজবুল্লাহ সদস্য এবং ৭৫ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলের একাধিক সূত্র বলেছে, লেবানন থেকে ছোড়া হিজবুল্লাহর রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলি অন্তত এক ডজন সৈন্য নিহত ও বেশ কয়েকজন বেসামরিক আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৬০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। অন্যদিকে ইসরায়েলের এক হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ২৫২ জন হামাসের হাতে জিম্মি রয়েছেন বলেও জানায় ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ।

;