তিন ইসরায়েলি নারী জিম্মির ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস
ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যাতে গত ৭ অক্টোবরের হামলার পর জিম্মি করা তিন ইসরায়েলি নারীকে দেখানো হয়েছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে পাঁচ মিনিটের ভিডিওতে যে নারী রা উপস্থিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে দুজন বলেছেন তারা ইসরায়েলি সেনা এবং তৃতীয়জন বলেছেন তিনি একজন বেসামরিক।
অফিসিয়াল ও কমিউনিটি সোর্স ব্যবহার করে ওই তিন নারীকে শনাক্ত করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
ওই তিন নারী জিম্মি বলেছেন, তাদের ১০৭ দিন ধরে আটকে রাখা হয়েছে। ভিডিওটি গত রবিবার ধারণ করা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, গাজায় গণহত্যা ঠেকাতে ইসরায়েলের যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিত বলে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতের রায়ের পরপরই ভিডিওটি প্রকাশ করা হলো।
আদালত তার রায়ে গত ৭ অক্টোবর হামলার সময় অপহৃত জিম্মিদের অবিলম্বে এবং নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বানও জানিয়েছেন।
ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে এএফপির তথ্য অনুযায়ী, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের নজিরবিহীন হামলার ফলে ইসরায়েলে প্রায় ১,১৪০ জন নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।
সেদিন হামাস যোদ্ধারা প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে। ইসরায়েল দাবি করেছে তাদের মধ্যে প্রায় ১৩২ গাজায় রয়ে গেছে, যার মধ্যে কমপক্ষে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে হামাস সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে, ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ এবং স্থল আক্রমণে গাজা উপত্যকায় অন্তত ২৬,০৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের প্রায় ৭০ শতাংশ নারী, ছোট শিশু এবং কিশোর-কিশোরী।
অন্যদিকে, গাজায় সামরিক অভিযানের বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) কর্তৃক ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জরুরি ব্যবস্থা জারির অনুরোধের পক্ষে রায় দেওয়ার পরে শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) ওই রায়কে ‘আইনের শাসনের বিজয়’ বলে অভিহিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
রয়টার্স জানিয়েছে, আইসিজে শুক্রবার এক রায়ে ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা রোধ করতে এবং বেসামরিকদের সাহায্য করার জন্য আরও কিছু করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে, গাজায় গণহত্যার বিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার করা মামলার মূল বিষয়ে এখনও রায় দেননি ওই আদালত।
এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগকে ‘মিথ্যা’ এবং ‘বিকৃত’ বলে অভিহিত করেছে ইসরায়েল।
দেশটির কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে।
দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আজকে আন্তর্জাতিক আইনের শাসনের বিজয় সূচিত হয়েছে এবং এই দিনটি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য ন্যায়বিচারের সন্ধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক চিহ্নিত হয়ে থাকবে।’
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা আন্তরিকভাবে আশা করে যে, ওই আদেশের প্রয়োগকে এড়িয়ে যাওয়ার মতো কাজ করবে না ইসরায়েল। দেশটি আইসিজের আদেশ সম্পূর্ণরূপে মেনে চলার জন্য কাজ করবে, যেমন এটি করতে বাধ্য।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষার জন্য বৈশ্বিক প্রশাসনের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা।