মহাশূন্যে যাবে জাপানের তৈরি কাঠের স্যাটেলাইট



বিজ্ঞান ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মহাশূন্যে উৎক্ষেপণের জন্য কাঠের স্যাটেলাইট তৈরি করেছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা। এটি স্পেসএক্স থেকে মহাশূন্যে উৎক্ষেপণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

বুধবার (২৯ মে) ইয়েমেনের বার্তাসংস্থা সাবা এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

খবরে জানানো হয়, জাপানের কিয়েটো বিশ্ববিদ্যালয় ও সুমিটোমো ফরেস্ট্রি ফাউন্ডেশন বিশেষজ্ঞেরা ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চার বছরের চেষ্টায় এই স্যাটেলাটটি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।

বুধবার কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিজ্ঞানীরা ৪ বছরের কঠোর পরিশ্রম করে কাঠের তৈরি স্যাটেলাইটটি তৈরি করেছেন। এই স্যাটেলাইটের নামকরণ করা হয়েছে, ‘লিগনোস্যাট’ (LignoSat)। এটি পৃথিবীর সর্বপ্রথম কাঠের তৈরি স্যাটেলাইট। পরিবেশের কথা চিন্তা করে এই স্যাটেলাইটটি তৈরি করা হয়েছে। এটি যখন তার অভিযান শেষ করে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে, তখন এটি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যাবে।

বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ‘লিগনোস্যাট’ স্যাটেলাইটির আকৃতি ১০ সেন্টিমিটার। এটির পুরুত্ব ৪ থেকে ৫.৫ মিলিমিটার। তবে এটির ভেতরের স্তর হবে অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি এবং এর ভেতরে একটি সোলার প্যানেল থাকবে। সবমিলিয়ে এটার ওজন হবে মাত্র এক কেজি। এই স্যাটেলাইট সম্পূর্ণ সনাতনী জাপানি পদ্ধতিতে কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এতে কোনো ধরনের ‘অ্যাডহেসিভ’ (আঠা) ব্যবহার করা হয়নি।

জাপানি বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, ‘লিগনোস্যাট’ স্যাটেলাইটটি স্পেসএক্স থেকে এ বছরই উৎক্ষেপণ করা হবে। তারা আরো জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে এটি পৃথিবীর বাইরে পরীক্ষামূলকভাবে উড়াল সম্প্ন্ন করেছে। স্যাটেলাইটটি কী কাজে ব্যবহার করা হবে, তা অবশ্য জানানো হয়নি।

   

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে উড়োজাহাজ সমান এক গ্রহাণু



বিজ্ঞান ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে উড়োজাহাজ সমান এক গ্রহাণু। সোমবার (২৪ জুন, রোববার দিনগত রাতে) বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৯ মিনিটে এটি পৃথিবীর কাছাকাছি আসবে বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাশূন্য গবেষণা সংস্থা- নাসা।

তবে এটি পৃথিবীর জন্য হুমকিস্বরূপ নয় বলেও জানানো হয়েছে নাসার পক্ষ থেকে। এটি পৃথিবীর পাশ ঘেঁষে ৫০ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটার দূরত্ব বজায় রেখে চলে যাবে।

নাসা জানায়, পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা গ্রহাণুটি ৮৮ ফুট লম্বা এবং এটি একটি উড়োজাহাজের সমান। এটির নামকরণ করা হয়েছে, ২০২৪ কেএন১। এটির গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬ হাজার ৫শ কিলোমিটার।

নাসা থেকে জানানো হয়, এসব গ্রহাণু সূর্য থেকে উৎপন্ন হয়েছে। ৩০ হাজার গ্রহাণুর মধ্যে কিছু কিছু গ্রহাণু ৮শ ৫০ কিলোমিটার লম্বা এবং এক কিলোমিটার প্রস্থে।

যে সব গ্রহাণু পৃথিবীর কাছ ঘেঁষে চলে যায়, তাদের ‘পৃথিবীর কাছাকাছি বস্তু’ (Near Earth Objects-NEO) বলা হয়। পৃথিবীর প্রতি হুমকিস্বরূপ এমন গ্রহাণুর প্রতি সব সময় নজর রাখে নাসা।

সংস্থাটি জানায়, সূর্য থেকে উৎপন্ন বিভিন্ন গ্রহাণু বিভিন্ন আকৃতির হয়ে থাকে। কারণ, এগুলো সূর্যের বিভিন্ন দূরত্বের স্থান থেকে উৎপন্ন হয়। তবে কোনোটি আরেকটির মতো হয় না। কোনো কোনো গ্রহাণু বিভিন্ন ধরনের পাথর, মাটি বা ধাতব বস্তু থেকে উৎপন্ন হতে পারে। এর মধ্যে নিকেল এবং লোহাও রয়েছে।

;

বিশ্বের গঠনপ্রণালী বুঝতে গামা রশ্মির সন্ধান করবে চীন-ফ্রান্স



বিজ্ঞান ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের গঠনপ্রণালী ভালোভাবে বোঝার জন্য পৃথিবীর কক্ষপথে স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে চীন ও ফ্রান্স। দুই দেশের মহাশূন্য গবেষকেরা যৌথভাবে এই স্যাটেলাইটটি তৈরি করেছেন। এতে ফ্রান্সের দুটি এবং চীনের দুটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি রয়েছে।

শনিবার (২২ জুন) স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় (০৭০০ জিএমটি) চীনের দক্ষিণপশ্চিম প্রদেশ সিচুয়ানের বেসস্টেশন থেকে পৃথিবীর কক্ষপথে পাঠানো হয়।

দুই দেশের বিজ্ঞানীরা যৌথভাবে একট ‘দ্য স্পেস ভেরিয়েবল অবজেক্টস মনিটর’ (এসভিওএম) তৈরি করেছেন। এই মনিটর বিস্ফোরণের পর যে গামা রশ্মি বিলিয়ন বিলিয়ন আলোকবর্ষ পথ পাড়ি দিয়ে পৃথিবীতে পৌঁছেছিল, তার সন্ধান চালাবে।

এই গামা রশ্মির বিস্ফোরণের (Gamma-Ray Bursts-GRBs) ফলে একটি ফিউশন হয়। এ বিস্ফোরণের সময় ছিল খুবই অল্প সময়ের। এতে অসংখ্য তারকারাজির সৃষ্টি হয়। এ সব তারকা আমাদের সৌরমণ্ডলের সূর্যের (সূর্যও একটি তারকা/নক্ষত্র) চেয়েও ২০ গুণ বড়।

এই অতি উজ্জ্বল মহাজাগতিক রশ্মি যে শক্তি উৎপন্ন করেছিল, তা বিলিয়ন বিলিয়ন সূর্যের উৎপন্ন শক্তির সমান।

মার্কিন যু্ক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ফ্ল্যাটিরন ইনস্টিটিউটের সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিকসের জ্যোতির্বিদ ওরে গোটলিয়েব বলেন, এসভিওএম অতীতে তারকারাজি থেকে সৃষ্টি হওয়া যে আলোক রশ্মি পৃথিবীতে এসে পৌঁছেছে, তা পর্যবেক্ষণ করবে।

মহাবিশ্বের বিভিন্ন উজ্জ্বল তারকারাজি, ছবি- সংগৃহীত

বিভিন্ন রহস্য

গামা রশ্মি বিলিয়ন বিলিয়ন আলোকবর্ষ পথ পাড়ি দিয়ে পৃথিবীতে আসার আগে বিভিন্ন গ্যাসের মেঘ এবং বিভিন্ন গ্যালাক্সির চিহ্ন বয়ে নিয়ে এনেছে।

জ্যোতির্বিদ ওরে গোটলিয়েব বলেন, দ্য স্পেস ভেরিয়েবল অবজেক্টস মনিটর-এসভিওএম গামা রশ্মির তথ্য বিজ্ঞানীদের বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বিবর্তন ও ইতিহাস আরো ভালোভাবে বুঝতে সহায়তা করবে।

ওরে গোটলিয়েব বলেন, গামা রশ্মির বিস্ফোরণের ফলে দূর মহাবিশ্বের প্রান্তে যে বস্তুগুলির সৃষ্টি হয়েছে, এসভিওএম সেগুলিও চিহ্নিত করতে সহযোগিতা করবে।

ওরে গোটলিয়েব আরো বলেন, বিগ ব্যাং বা মহাপ্রসারণের ৬শ ৩০ মিলিয়ন বছর পর মহাবিশ্বের প্রান্তের এ সব বস্তু সৃষ্টি হয়। তখন আমাদের ইউনিভার্স বা বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির শৈশবে ছিল মাত্র।

ইনস্টিটিউট ডি’অ্যাস্ট্রোফিজিকস ডে প্যারিসের জ্যোতির্বিদ ফ্রেডেরিক ডায়াগনে বলেন, গামা রশ্মির বিস্ফোরণ ছিল ভীষণ তীব্র। বিভিন্ন তারকারাজির মৃত্যুর বিভিন্ন বিষয়ও এসভিওএম আমাদের বুঝতে সহায়তা করবে।

তিনি বলেন, এসভিওএমের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত আমাদের পদার্থ বিজ্ঞানের এমন সব তত্ত্ব বুঝতে সক্ষম করবে যা, ল্যাবরেটরিতে পুনরুৎপাদন করা সম্ভব নয়। এ উপাত্ত মহাশূন্যের গঠন, গ্যাসের মেঘের গতি কিংবা বিভিন্ন গ্যালাক্সি সম্পর্কে আরো সম্যক ধারণা লাভ করতে সহজ হবে।

পৃথিবীর ৬শ ২৫ কিলেমিটার (৩শ ৮৮ মাইল) উচ্চতার কক্ষপথে পাঠানো এই স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে তথ্য পাঠাবে। সে তথ্য চীন এবং ফ্রান্সের বিজ্ঞানীরা তা বিশ্লেষণ করবেন।

যেহেতু, গামা রশ্মির স্থিতিকাল ছিল খুবই সামান্য, সে কারণে সময়ের বিপরীতে সেসব তথ্য সংগ্রহ করা বিজ্ঞানীদের সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়েছে।

যদি গামা রশ্মির এই বিস্ফোরণ শনাক্ত করা যায়, তাহলে এসভিওএম প্রতি মুহূর্তে তার তথ্য-উপাত্ত পৃথিবীতে পাঠাবে। পৃথিবীত স্থাপিত টেলিস্কোপের মাধ্যমে তা পাঁচ মিনিটের মধ্যে এ তথ্য পাবেন বিজ্ঞানীরা।  সূত্র- এএফপি ও ফ্রান্স২৪.কম

;