লোকসভা নির্বাচনে ৩০০ আসনে এগিয়ে বিজেপি

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের সাত ধাপের ভোট গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার (৪ জুন) শুরু হয়েছে ভোট গণনা। অর্ধেকের বেশি আসনের ফলাফল প্রকাশের পর স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে আছে ক্ষমতাসীন বিজেপির জোট এনডিএ বা ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স। বিপরীতে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইন্ডিয়া জোট বেশ খানিকটা পিছিয়ে আছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির দেওয়া তথ্য অনুসারে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিজেপির এনডিএ জোট এগিয়ে রয়েছে ৩০০টি আসনে এবং ইন্ডিয়া জোট ২১২টি আসনে। এই ফলাফল থেকে অনুমান করা যাচ্ছে যে শেষ পর্যন্ত টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছে মোদির বিজেপি।

বিজ্ঞাপন

এদিকে ভোট গণনা শুরুর পর নিজের আসনে প্রাথমিক ফলাফলে এগিয়ে রয়েছেন দেশটির নরেন্দ্র মোদি। বারাণসী লোকসভা আসনে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। এছাড়া অমিত শাহ, রাহুল গান্ধী ও অখিলেশ যাদবও তাদের নিজ নিজ আসনে প্রাথমিক ফলাফলে এগিয়ে রয়েছেন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, ভারতে ছয় সপ্তাহব্যাপী ম্যারাথন নির্বাচনের পর মঙ্গলবার ভোট গণনা শুরু হয়েছে স্থানীয় সময় সকাল ৮ টায়। ভোট নেওয়া হয়েছে, ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম দিয়ে, যার ফলে ভোট গণনা খুব দ্রুত শেষ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বের সব চেয়ে বড় নির্বাচন বলে পরিচিত এই প্রক্রিয়ায় প্রায় ১০০ কোটি মানুষ ভোটার ছিলেন, যার মধ্যে ৬৪ কোটি ২০ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছেন বলে দেশটির নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।

ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ ৫৪৩ আসন বিশিষ্ট লোকসভার জন্য ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। যে দল বা জোট ২৭২ বা তার বেশি আসন পাবে, তারা দেশের পরবর্তী সরকার গঠন করবে।

এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে মূলত দুটি জোটের মধ্যে- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ এবং বিরোধী কংগ্রেসের মিত্রদের নিয়ে গঠিত ‘ইন্ডিয়া’ জোট।

এনডিএ জয়লাভ করলে মোদি টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হবেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু ‘ইন্ডিয়া’ জোট জয়ী হলে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। বিরোধী জোট নির্বাচনী প্রচারণার সময় কোনও নেতাকেই তাদের ‘প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী’ হিসেবে উপস্থাপন করেনি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির দেওয়া তথ্য অনুসারে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিজেপির এনডিএ জোট পেয়েছে ২৭৭টি আসন এবং ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২০৩টি আসন। অন্যান্য দল পেয়েছে ১৬টি আসন। এই ফলাফল থেকে অনুমান করা যাচ্ছে যে শেষ পর্যন্ত টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছে মোদির বিজেপি। 

টানা ৪৪ দিন ধরে চলা সাত ধাপের ভোট শেষে ফলাফল ঘোষণা হতে যাচ্ছে আজ। এই নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ভারতের প্রায় ৬৪ কোটি মানুষ। তবে যে বা যারাই জিতুক না কেন, সেখানে ব্যবধান গড়ে দেবে ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য। আর সেগুলো হলো-বাংলাদেশসংলগ্ন ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, বিহার, তেলেঙ্গানা, ওডিশা, অন্ধ্র প্রদেশ, কর্ণাটক ও উত্তর প্রদেশ। এ ছাড়া, বিজেপি ভারতের দক্ষিণের অন্যান্য রাজ্যগুলোতে কতটা ভালো করে, তারা ওপরও অনেক কিছুই নির্ভর করছে। 

এর আগে এই গণনায় ক্ষমতাসীন বিজেপি ব্যাপক কারচুপির চেষ্টা চালাবে বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেসসহ অন্যান্য বিরোধী দল। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভোট গণনার প্রক্রিয়াটির ওপর এবার বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে বিরোধী দলগুলো। গণনায় যেন কোনো কারচুপি না হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে শেষ ভোটটি গণনার আগ পর্যন্ত নেতাকর্মীদের মাটি কামড়ে পড়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছে অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি (এআইসিসি)। নেতাকর্মীদের আরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সকাল থেকে টেলিভিশনের পর্দায় গণনার খবর না দেখে তারা যেন পার্টি অফিসে গিয়ে সময় কাটায় এবং গোলযোগের খবর পেলেই যেন সদর দপ্তরকে জানায়। 

ভোট গণনার এক দিন আগে সোমবার বিকেলে কংগ্রেসের সদর দপ্তর থেকে সবগুলো রাজ্য কংগ্রেসকে ওই নির্দেশনা পাঠানো হয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকালেই দলের নেতাকর্মীরা যেন রাজ্য ও জেলার পার্টি অফিসে উপস্থিত থাকেন। এ জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় নেতৃত্বকে বলা হয়েছে। 

নির্দেশনায় দুটি ফোন নম্বরও উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষ কোনো গণনাকেন্দ্রে গোলযোগের খবর পেলেই যেন ওই নম্বরে যোগাযোগ করে জানায়। শুধু কংগ্রেস নয়, সব বিরোধী দলই মঙ্গলবারের গণনাকে বিগত ভোটের থেকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানা গেছে।

শনিবার দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাড়িতে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে সব নেতাই আশঙ্কা করেছিলেন, বুথফেরত জরিপে বিজেপির বিপুল জয়ের সমীক্ষা প্রকাশ করে বিরোধী নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। পরে গণনাকেন্দ্রে কারচুপি করবে বিজেপি।