স্মৃতিকে হটিয়ে আমেথিতে ফিরছে কংগ্রেস
অবশেষে হারানো আসন ফিরে পেতে চলেছে ভারতের রাজনৈতিক দল কংগ্রেস। এনডিটিভি জানিয়েছে, উত্তর প্রদেশের আমেথি লোকসভা কেন্দ্র এক সময় এই অমেঠী কংগ্রেসের গড় বলে পরিচিত ছিল। তবে ২০১৯ সালে পালাবদল ঘটে।
সেই বছর রাহুল গান্ধীকে হারিয়ে এই আসন থেকে জয় পান স্মৃতি ইরানি। পাঁচ বছর পর সেই ছবি আবার বদল হতে চলেছে কিশোরীলাল শর্মার হাত ধরে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, বিকাল ৪টা পর্যন্ত আমেথি কেন্দ্রে অনেকটাই এগিয়ে কংগ্রেস প্রার্থী কিশোরীলাল। এখনও পর্যন্ত তিনি তার নিকটতম বিজেপি প্রার্থী স্মৃতির থেকে এক লাখ ১৮ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ব্যবধান থেকেই স্পষ্ট, আমেথি আবারও কংগ্রেসেই ভরসা রাখল। খুব বড় অঘটন না ঘটলে জয় প্রায় নিশ্চিত কিশোরীলালের।
এদিকে, আমেথির সঙ্গে গান্ধী পরিবারের সম্পর্ক অনেক পুরনো। ১৯৭৭ সালে পূর্ব উত্তর প্রদেশের এই আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন রাজীব গান্ধীর ভাই সঞ্জয় গান্ধী।
দিল্লির মসনদে তখন ইন্দিরা গান্ধীর সরকার। তবে তার গদি ছিল টালমাতাল।
দেশজুড়ে তখন বইতে শুরু করেছে ইন্দিরা-বিরোধী হাওয়া। সেই হাওয়ায় ধাক্কা খেয়ে হেরে যান সঞ্জয়। তবে তিন বছর পর ১৯৮০ সালের লোকসভা নির্বাচনে আমেথির সাংসদ হন সঞ্জয়।
বিমান দুর্ঘটনায় সঞ্জয়ের অকাল মৃত্যুর পরে ১৯৮১ সালের উপনির্বাচন হয় সেখানে। সেই নির্বাচনে জয় পান রাজীব। ১
১৯৯১ সালের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্বের মাঝেই এলটিটিই-র বোমা হামলায় রাজীবের মৃত্যুর পরে আমেথি থেকে কংগ্রেস রাজীব-ঘনিষ্ঠ সতীশ শর্মাকে প্রার্থী করে এবং জয় পান তিনি।
এর পরে ১৯৯৬ সালের ভোটে আমেথি থেকে সতীশ জিতলেও ১৯৯৮ সালে হেরে যান। কিন্তু, এক বছর পর আবার হাওয়া বদলাতে শুরু করে আমেথিতে।
১৯৯৯ সালে আমেথিতে প্রার্থী হয়ে নির্বাচনী রাজনীতিতে পদার্পণ করেছিলেন রাজীব-পত্নী সোনিয়া গান্ধী। তারপর থেকে এই কেন্দ্রে টানা জয় পেয়েছে কংগ্রেস।
শুধু আমেথি নয়, উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলি লোকসভা কেন্দ্রেও কংগ্রেস তথা গান্ধী পরিবারের প্রভাব ছিল। আর এই দুই কেন্দ্রের সঙ্গে গান্ধী পরিবারের যোগসূত্র ছিলেন এই কিশোরীলাল।
১৯৯৯ সালে আমেথিতে সোনিয়ার ‘ইলেকশন ম্যানেজার’ ছিলেন কিশোরীলাল। তারপর থেকে আমেথির রাজনীতিতে ক্রমশ উজ্জ্বল হতে থাকেন তিনি।
সোনিয়ার পর আমেথি থেকে লড়েন রাহুল। ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস জয় পেয়েছে।
কিন্তু, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাহুলের বিরুদ্ধে এই আসনে জয় পান বিজেপির স্মৃতি। ভোটের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে আমেথিতে জয়ী বিজেপি প্রার্থী স্মৃতির সঙ্গে পরাজিত রাহুলের ব্যবধান ছিল ৫৫ হাজারেরও বেশি।
তাই এবার এই কেন্দ্রে রাহুল প্রার্থী হবেন কি না তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। প্রায় শেষ মুহূর্তে এই কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করে কংগ্রেস। রাহুল নয়, সেই কিশোরীলালের উপরই দায়িত্ব দেয় হাত শিবির।