মোদির মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে বিষোদগার শিবসেনা একাংশের
শিবসেনা দলের একাংশ শিবসেনা (ইউবিটি)’র নেতা সঞ্জয় রাউত মোদির মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন, মোদির মন্ত্রিসভায় নাইডু-নীতিশ ‘অতৃপ্ত আত্মা’। এছাড়া মন্ত্রিসভায় কোনো মুসলিম না রেখে সংবিধান বিরোধী কাজ করেছে বিজেপি।
টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়ে এবার নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ১৮তম লোকসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেনি। বিজেপি এককভাবে পেয়েছে ২শ ৪০টি আসন।
ভারতের সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় আসন সংখ্যা ৫শ ৪৩টি। এককভাবে সরকার গঠনের জন্য দরকার ২শ ৭২টি আসন। সে হিসাবে বিজেপির আসন সংখ্যার ঘাটতি ৩২টি আসন।
এই ৩২টি আসনের জন্য সরকার গঠন করতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ’র (ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স) নির্ভর করতে হয়েছে।
এতে করে আগের দুই ধাপের ২০১৪ ও ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করার শক্তি অর্জন করেছিল বিজেপি। কিন্তু ২০২৪ সালে সে অবস্থা আর নেই।
এবার সরকার গঠনের জন্য এনডিএ জোটের শরিক দল অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম (টিডিপি) এবং বিহারের নীতিশ কুমারের জনতা দল (সংযুক্ত)/জেডি (ইউ)-এর ওপর নির্ভর করতে হয়েছে বিজেপি নেতৃত্বকে। যদিও এই দুইজন জোট বদলে খুবই পারদর্শী নিকট অতীত সেটিই প্রমাণ করেছে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) মন্ত্রণালয় বণ্টন করা হয় শপথ গ্রহণকারী মন্ত্রীদের মধ্যে।
মন্ত্রণালয় বণ্টনের পর জানা যায়, নীতিশ কুমারের জেডি (ইউ) দলের লালন সিংকে পেয়েছেন পঞ্চায়েত, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। অপরদিকে, অন্ধ্র প্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি দলের কে রামমোহন নাইডু পেয়েছেন সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রণালয়। এছাড়া জেডি (এস) দলের নেতা এইচ ডি কুমারাস্বামী পেয়েছেন ভারী শিল্প ও স্টিল মন্ত্রণালয়।
এর পর পরই এ বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা সঞ্জয় রাউত মুম্বাইতে সাংবাদিকদের কাছে ‘চন্দ্রবাবু নাইডি ও নীতিশ কুমার ‘অতৃপ্ত আত্মা’ বলে মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, ইউনিয়ন ক্যাবিনেটে নীতিশ কুমার ও এন. চন্দ্রবাবু নাইডু ‘অতৃপ্ত আত্মা’!
তিনি এ সময় আরো মন্তব্য করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এনসিপি (এসপি) নেতা শারদ পাওয়ারকে ‘উৎসর্গকৃত আত্মা’ বলে অভিহিত করেছেন।
শারদ পাওয়ারকে ‘অস্থির আত্মা’ অভিহিত করে সঞ্জয় রাউত বলেন, বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার ও মহারাষ্ট্রের সরকার ক্ষমতাচ্যুত না হওয়া পর্যন্ত তিনি (শারদ পাওয়ার) ‘বিশ্রাম’ নেবেন না।
আরএসএস (রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘ) প্রধান মোহন ভগতের চিন্তাভাবনাকে উদ্ধৃত করে সঞ্জয় রাউত বলেন, মোহন ভগত যদি ভাবেন, এনডিএ সরকার দেশের স্বার্থ রক্ষা করছে না, তাহলে তার উচিত হবে, এ সরকারকে ফেলা দেওয়া।
সঞ্জয় রাউত বলেন, দুটি ‘অতৃপ্ত আত্মা’-কে (নীতিশ কুমার ও চন্দ্রবাবু নাইডু) পরিতৃপ্ত করতে হবে। তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করে মন্ত্রণালয় দিতে হবে। কিন্তু মনে হচ্ছে, তারা কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর অসন্তুষ্ট।
এ সময় বিজেপির সমালোচনা করে সঞ্জয় রাউত বলেন, বিজেপি সবকিছু নিজের কাছেই রেখেছে।
সংবিধানকে উদ্ধৃত করে শিবসেনার (ইউবিটি) এ নেতা বলেন, মোদির নেতৃত্বের মন্ত্রিসভায় কোনো মুসলিমকে রাখা হয়নি। এটি সংবিধান পরিপন্থি।
মোদি পরিষ্কারভাবে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে নির্বাচন করেছেন। মোদি মনে করেছেন, মুসলিমরা বিজেপিকে ভোট দেয়নি। সে কারণে মুসলিমদের মন্ত্রিসভায় রাখেননি তিনি।