ভারতের নির্বাচনে-সংসদে মুসলিমদের সংখ্যা কমছে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে এবং জাতীয় সংসদে মুসলিমদের সংখ্যা ক্রমশ কমছে বলে জানা গেছে। বুধবার (১২ জুন) ভয়েস অব আমেরিকার একটি প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভারতের সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ২৭ জন মুসলিম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও ২০২৪ সালে নির্বাচিত হয়েছেন ২৪ জন অর্থাৎ গত ২০১৯ সালের নির্বাচন থেকে ৩ জন কম।

২০১৯ সালে যত মুসলিম প্রার্থী দাঁড় করানো হয়েছিল ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তার থেকে ৪১ জন কম মুসলিম প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

ভারতে এবারের লোকসভায় সংসদে অংশ নেবেন ২৪ জন মুসলিম সংসদ সদস্য। এর মধ্যে জাতীয় কংগ্রেসের জন্য নির্ধারিত বেঞ্চে ৭ জন বসবেন। এরপরেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল থেকে নির্বাচিত ৫ সংসদ সদস্য।

উত্তরপ্রদেশের প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি থেকে নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন ৪ জন মুসলিম প্রার্থী। কেরালার ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ থেকে ৩ জন এবং কাশ্মিরের ন্যাশনাল কনফারেন্স থেকে ২ জন, হায়দ্রাবাদের অল ইন্ডিয়া মজলিস-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের সংখ্যা ১ জন এবং নির্দলীয় ২ জন। এছাড়া জাতীয় কংগ্রেস দল থেকে ১ জন সংসদে অংশ নেবেন।

জনসংখ্যার ১৪.২ শতাংশ, লোকসভার ৪.৪২
ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)-র ২শ ৯৩ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে মুসলিম, খ্রিস্টান বা শিখ সমাজের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সংসদ সদস্য একজনও নেই। উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশ থেকে বিজেপির এক বৌদ্ধ প্রার্থী এবারেও বিজয়ী হয়েছেন।

বিজেপি ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পরে লোকসভায় কখনোই মুসলিম জনপ্রতিনিধির সংখ্যা ৫ শতাংশের বেশি হয়নি।

ভারতে মুসলিম জনপ্রতিনিধি ১৯৫৭ এবং ১৯৯৯ সাল ছাড়া প্রতিবারই ছিল ৫ শতাংশের ওপরে। সর্বোচ্চ মুসলমান জনপ্রতিনিধি ছিল ১৯৮০ সালে ৯.০৪ শতাংশ এবং ১৯৮৪ সালেও ছিল ৮ শতাংশের ওপরে। এবারে তা নেমে এসেছে ৪.৪২ শতাংশে, যা ২০১৯-এর থেকেও বেশখানিকটা কম।

ভারতে ২০১১ সালের শেষ জনশুমারি অনুসারে দেশে মুসলিম জনসংখ্যা ১৪.২ শতাংশ অর্থাৎ ১শ ৭২ কোটি। ভারতে অতীতেও এই হারের ধারে কাছেও যায়নি লোকসভায় মুসলিম প্রতিনিধিত্ব। সেইসঙ্গে ২০১৪ সালের পর থেকে তো আরো দ্রুত কমছে।

মুসলিম প্রার্থী মনোনয়ন পাচ্ছেন না
মুসলিম সংসদ সদস্যের সংখ্যা ২৭ থেকে কমে ২৪ জনে এসে দাঁড়ালেও ২০২৪-এর নির্বাচনে সব দলই কমসংখ্যক মুসলিম প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে। অতীতে কখনোই এত কমসংখ্যক মুসলিম প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি।

১০ বছর আগে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সব দল মিলিয়ে ৩শ ২০ জন মুসলিম প্রার্থী ছিলেন, যা ২০১৯-এ নেমে আসে ১শ ১৫ জনে। এবারে তা কমে হয়েছে ৭৮ জনে অর্থাৎ প্রতি নির্বাচনে ভারতে মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা দ্রুত হারে কমছে।

সম্ভবত তার চেয়েও লক্ষণীয় বিষয় হলো, ভারতের স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে এই প্রথম কেন্দ্র সরকারে কোনো মুসলমান মন্ত্রী নেই। এটা ২০১৪ এবং ২০১৯ সালেও হয়নি। ১০ বছর আগে লোকসভায় মুসলমান সংসদ সদস্যের সংখ্যা ছিল অত্যন্ত কম, মাত্র ২৩ অর্থাৎ এবারের চেয়েও একজন কম। কিন্তু সে সময়েও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন নাজমা হেপতুল্লা।

বিজেপি ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৩শয়ের বেশি আসন পায় কিন্তু তখনও একজন মুসলমান মন্ত্রী ছিলেন সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। তার নাম মুখতার আব্বাস নাকভি। এর অর্থ দাঁড়ায় ২০২৪ সালে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও ভারতের রাজনীতি ক্রমশ ‘বহুত্ববাদী চরিত্র’ হারিয়ে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিকে আগাচ্ছে। শুধু তাই-ই নয়, হিন্দুত্ববাদী দক্ষিণপন্থী দলের শক্তি যাই হোক, বিজেপিবিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলো এখন আরো কমসংখ্যক মুসলিম প্রার্থী দিচ্ছে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, প্রধান বিরোধী দলগুলি, যারা নিজেদের ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ বলে দাবি করে, তাদের মধ্যে কংগ্রেস ২০১৯ সালে ৩৪ জন মুসলিম প্রার্থী দিয়েছিল। এবারে দিয়েছে মাত্র ১৯ জন। যদিও তখন তারা জিতেছিলেন ৪টি আসনে। এবারে কমসংখ্যক মুসলিম প্রার্থী দিয়ে জিতেছেন ৭টি আসনে।

তৃণমূল কংগ্রেস ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছিল ১৩ জন। এবার সেখানে দিয়েছে ৬ জন। সমাজবাদী পার্টি দিয়েছিল ৮ জন। এবার তারা দিয়েছে মাত্র ৪ জন। বিহারের রাষ্ট্রীয় জনতা দল দিয়েছিল ৫ জনকে এবং ২০২৪ সালে মনোনয়ন দিয়েছে ২ জন মুসলিম প্রার্থীকে। অর্থাৎ বিজেপি-বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিতেও মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে।

মুসলিম প্রার্থী কম দিলেও বেশি জিতলেন কেন
২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে কম প্রার্থী দিলেও শতাংশের হারে মুসলিম প্রার্থী জিতেছেন বেশি। এর কারণ ব্যাখ্যা করে কলকাতার প্রতীচী ইনস্টিটিউটের জাতীয় গবেষণা সমন্বয়ক এবং রাজনীতি বিশ্লেষক সাবির আহমেদ বলেন, গত ১০ বছরের ‘ট্রেন্ড’ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, বিজেপির আসন যত বাড়ছে, মুসলিম প্রতিনিধিত্ব লোকসভায় তত কমছে।

এবার এনডিএ এবং প্রধানত বিজেপির আসন হ্রাস পাওয়ার ফলে, মুসলিম প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বিরোধীরা আগের থেকে প্রার্থী অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছিল এবার। ফলে, একটা চিন্তার জায়গা তৈরি হয় যে, শেষপর্যন্ত কতজন মুসলিম প্রার্থী লোকসভায় যেতে পারবেন।

এবার বিরোধীরা যদি ২০১৯ সালের বা অতীতের মতো মুসলিম প্রার্থী দিতেন তবে মুসলিম প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির সম্ভাবনা অনেক বেশি ছিল বলে মনে হয়।

কলকাতার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রাজনীতি বিশ্লেষক মোহাম্মদ রিয়াজও মনে করেন, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার কারণেই লোকসভায় প্রতিনিধিত্ব আরো কমে গেছে।

আগামী দিনের ভারতের রাজনীতি সম্পর্কে এটি কী ইঙ্গিত দেয়, এ প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক রিয়াজ বলেন, ভারতের রাজ্য বিধানসভা বা লোকসভায় মুসলিমদের আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্ব কখনোই ছিল না। এর পরে আবার জোরালো হিন্দুত্ববাদী হওয়ার জেরে তারা আরও প্রান্তিক হয়েছেন বা বলা যায় লোকসভা থেকে কার্যত অদৃশ্য হয়ে গিয়েছেন।

এর প্রধান কারণ হিসেবে বিজেপি-বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে দায়ী করেন তিনি।

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেন, আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে, তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলি ধরেই নিয়েছে যে, মুসলিম ভোট তারাই পাবে, এই ধরে নেওয়ার রাজনীতি মুসলিম জনপ্রতিনিধির সংখ্যা ক্রমাগত কমাচ্ছে। যে সব আসনে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই, সেখানে তাদের জেতার সম্ভাবনাও ক্রমেই কমছে।

এটাকেই হিন্দুত্ববাদের সবচেয়ে বড় জয় বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা, যখন বিজেপি আসন কম পেলেও পরাজয়ের আশঙ্কায় ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলি মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা দ্রুত কমিয়ে দিচ্ছে।

   

কেজরিওয়ালের শুনানি পেছালো সুপ্রিম কোর্ট, অপেক্ষার নির্দেশ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল

ছবি: দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল

  • Font increase
  • Font Decrease

গত সপ্তাহে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পক্ষে নিম্ন আদালতের জামিনে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল দিল্লি হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন কেজরিওয়াল। তবে তার আবেদনের শুনানি পিছিয়ে দিয়ে হাইকোর্টের আদেশের জন্য অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত দিয়েছে ভারতের শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনার সময় কেজরিওয়াল বলেছেন, হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের আদেশ এবং যৌক্তিকতা সম্পূর্ণ বিবেচনা না করে তার জামিনে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।

হাইকোর্টের ওই রায় ভুল বলেও যুক্তি দিয়েছেন কেজরিওয়াল। নিম্ন আদালতের রায়ের বিপক্ষে রায় জারি করার পূর্বে হাইকোর্টের বিষয়টি আরো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন তিনি।

ৎকেজরিওয়ালের আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আমরা যদি এখনই কোনও রায় দেই তাহলে তা আগ বাড়িয়ে বিচার করার সামিল। ফলত কেজরিওয়ালকে হাইকোর্টের পরবর্তী নির্দেশ আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, শীর্ষ আদালত আগামী বুধবার শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন। মঙ্গলবার হাইকোর্ট পূর্ণাঙ্গ রায় দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শীর্ষ আদালত কেজরিওয়ালকে বলেছেন, হাইকোর্টের রায় প্রকাশের আগ পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবেন না তারা। তবে হাইকোর্টের রায়ে যে খুব তড়িঘড়ি ছিল সে বিষয়টি স্বীকার করেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মনোজ মিশ্র। 

তিনি বলেছেন, স্থগিতাদেশের ক্ষেত্রে আদেশ সংরক্ষিত থাকে না কিন্তু ঘটনাস্থলেই দ্রুতভাবে ওই রায় দেওয়া হয়েছে, সেখানে যা হয়েছে তা ‘অস্বাভাবিক’। 

সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। গত মার্চ মাসে মদ নীতির মামলায় কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করেছিলেন ইডির এই কর্মকর্তা। নিম্ন আদালতে কেজরিওয়ালের জামিন মঞ্জুর করা হলে তার বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন তিনি। সেসময় তিনি বলেছিলেন, হাইকোর্ট সম্ভবত ২০২৪ সালের মধ্যেই তার রায় ঘোষণা করবে। 

উল্লেখ্য, গত ২০ জুন আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া কেজরিওয়ালের জামিন মঞ্জুর করেছিল দিল্লির একটি নিম্ন আদালত। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী ওই প্রতিষ্ঠানের আবেদনের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্ট। ফলে আটকে যায় কেজরিওয়ালের জামিন। তখন নিম্ন আদালতের নির্দেশকে একপেশে বলে অভিযোগ করেছিল ইডি।

;

দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যাটারি কারখানায় আগুন: নিহতদের ১৮ জনই চীনের



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
লিথিয়াম ব্যাটারি কারখানায় অগ্নিকাণ্ড

লিথিয়াম ব্যাটারি কারখানায় অগ্নিকাণ্ড

  • Font increase
  • Font Decrease

দক্ষিণ কোরিয়ার একটি লিথিয়াম ব্যাটারি কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৮ জন চীনা নাগরিকসহ ২২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানায় দেশটির ফায়ার বিভাগ। অপর একজন লাওসের এবং একজন অজানা নাগরিকসহ ২২ জন শ্রমিক নিহত হন। 

সোমবার (২৪ জুন) সংগঠিত এ অগ্নিকাণ্ড নিয়ে সংস্থাটি বলেছে, বছরের মধ্যে দেশের সবচেয়ে খারাপ কারখানা বিপর্যয় এটি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার একটি লিথিয়াম ব্যাটারি উৎপাদন কারখানায় আগুন লেগেছে বলে দেশটির দমকল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এতে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২২ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছে কর্মকর্তারা।

অগ্নিনির্বাপক কিম জিন-ইয়ং সংবাদমাধ্যমকে জানান, কারখানায় ১০০ জনেরও বেশি লোক কাজ করছিলেন। শ্রমিকরা দ্বিতীয় তলা থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। সেখানে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিগুলো পরিদর্শন এবং প্যাকেজ করা হতো। সেখান  থেকেই এই ভয়াবহ আগুনের সূত্রপাত।

কিম বলেন, অগ্নিকাণ্ডে নিহত ২০ জনই বিদেশী নাগরিক ছিল। তন্মধ্যে শুধু চীন দেশেরই ১৮জন। একজন লাওসের এবং একজন অজানা নাগরিক বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, বেশিরভাগ মৃতদেহই পুড়ে গেছে তাই প্রত্যেককে শনাক্ত করতে একটু সময় লাগবে।

রাজধানী সিউলের দক্ষিণে হোয়াসিয়ংয়ে ব্যাটারি প্রস্তুতকারক অ্যারিসেল পরিচালিত একটি কারখানায় সোমবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অবশ্য আগুন ইতোমধ্যেই অনেকাংশে নিভে গেছে।

স্থানীয় দমকল কর্মকর্তা কিম জিন-ইয়ং বলেন, প্রায় ৩৫ হাজার ইউনিটের একটি গুদামের ভেতরে ব্যাটারি সেলের সিরিজ বিস্ফোরণের পর আগুনের সূত্রপাত হয়।

;

আফগানিস্তানে ভূমিধসে একই পরিবারের ৭ জন নিহত



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আফগানিস্তানের একটি প্রদেশে ভূমিধসে একই পরিবারের ৭ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দু’জন নারী এবং পাঁচজন শিশু রয়েছে।

সোমবার (২৪ জুন) আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাত দিয়ে আফগানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আমু টিভি এ খবর জানায়।

খবরে বলা হয়, রোববার শেষ রাতে পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিয়া প্রদেশের সমকানাই জেলায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এতে একটি পরিবারের সাতজন মাটিচাপা পড়ে মারা যান। এর মধ্যে দু’জন নারী এবং পাঁচজন শিশুও রয়েছেন। তবে খবরে বিস্তারিত আর কিছু জানানো হয়নি।

বেশ কয়েক মাস ধরে আফগানিস্তানে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা ঘটেই চলেছে। এর মধ্যে বন্যা, ভূমিকম্প এবং ভূমিধসের ঘটনা অন্যতম। এতে করে অনেক প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতির ঘটনাও ঘটেছে।

;

পাকিস্তানের পার্লামেন্টে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল প্রস্তাবে বাকবিতণ্ডা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: পাকিস্তানের পার্লামেন্ট

ছবি: পাকিস্তানের পার্লামেন্ট

  • Font increase
  • Font Decrease

সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে ‘আযমে ইশতেহকাম’ নামে নতুন সামরিক অপারেশন চালানোর পরিকল্পনা করছে পাকিস্তান। এ ইস্যুতে রোববার (২৩ জুন) পাকিস্তানের পার্লামেন্টে সরকার ও বিরোধী দল একে অন্যকে তীব্রভাবে আক্রমণ করে বক্তব্য দেয়। 

বিরোধী দল ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই)কে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখেন খাজা আসিফ। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে পিটিআই। এর জবাবে পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গওহর খান আপত্তি জানান। এ নিয়ে শুরু হয় হট্টগোল।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।  আযমে ইশতেহকামের তীব্র বিরোধিতা করেছে পিটিআই।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সন্ত্রাসবিরোধী এই অপারেশনের বিষয়ে পার্লামেন্টকে আস্থায় নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন পিটিআইয়ের এমপিরা । জবাবে সরকার তাদেরকে নিশ্চয়তা দেয় যে, তাদের উদ্বেগকে আমলে নেয়া হবে। 

পাকিস্তান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের অধিবেশন বিরোধী বেঞ্চের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে। বর্তমানে পার্লামেন্টের অধিবেশন চলছে বাজেট নিয়ে। অধিবেশন চলার এক ঘণ্টার মধ্যে ওয়াকআউট করেন পিটিআইয়ের এমপিরা। তারা পরে ফিরে আসেন। এরপরই পার্লামেন্টে ভাষণ দেয়া শুরু করেন তাদের নেতা। এ সময় দলীয় এমপিরা ‘অপারেশন বন্ধ করো’ এবং ‘আমরা শান্তি চাই’ স্লোগান দিতে থাকেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ নেতৃত্বাধীন সরকার শনিবার নতুন একটি সন্ত্রাসবিরোধী অপারেশনের ঘোষণা দেন। এক্ষেত্রে সামরিক, কূটনৈতিক,  লেজিসলেটিভসহ দেশের সব সম্পদ ব্যবহার করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। 

শেহবাজ শরীফ বলেন, ‘আযমে ইশতেহকাম’ এর মধ্যদিয়ে সন্ত্রাসীদের উৎখাত করা হবে। এই অপারেশনে অনুমোদন দিয়েছে সেন্ট্রাল অ্যাপেক্স কমিটি অন ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান (এনএপি)। এই কমিটিতে বর্তমানে সব প্রদেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা আছেন। এর মধ্যে আছেন খাইবার পখতুনখাওয়ায় পিটিআই সমর্থিত মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গন্ধপুর। কয়েক মাসে দেশে বেসামরিক ও নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে এই অভিযানের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এই সন্ত্রাসের উত্থানের জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোকে দায়ী করে পাকিস্তান সরকার। তারা বার বার আফগানিস্তানের কাছে আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে ওই দেশের মাটি ব্যবহার বন্ধের জন্য। কিন্তু কাবুল বার বারই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এরপরই রোববার প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, সন্ত্রাসীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে বিরোধীরা। তারা দেশের পক্ষে নেই। পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, শনিবারের মিটিংয়ে খাইবার পখতুনখাওয়ায় তাদেরই মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। তার সামনেই এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ সময় পিটিআইয়ের এমপিদের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করেন খাজা আসিফ। বলেন, পার্লামেন্টে তাদের প্রতিবাদ সন্ত্রাসীদের সমর্থন দেয়া এবং তাদের পক্ষে দাঁড়ানোর সমান। তারা পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও শহীদদের বিরুদ্ধে। তারা এখনো ৯ই মে’র সহিংসতার পক্ষে। 

পিটিআইয়ের শীর্ষ নেতা আসাদ কায়সার সাংবাদিকদের বলেন, যেকোনো সিদ্ধান্ত বা চুক্তি করার আগে তা অবশ্যই আগে পার্লামেন্টে আনতে হবে। তা ছাড়া কোনো অপারেশন আমরা সমর্থন করব না।

পার্লামেন্টে বক্তব্যকালে ব্যারিস্টার গওহর বলেন, যেখানেই অপারেশন পরিচালনা করা হোক, এর বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে পার্লামেন্টে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অনুমোদনের আগে এ ইস্যুটিকে পার্লামেন্টে আলোচনা করা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের। এমনকি এর আগে সামরিক নেতারাও এমপিদের ব্রিফ করেছেন। এই হাউজের ঊর্ধ্বে কোনো অ্যাপেক্স কমিটি নয়। 

তিনি আরও বলেন, খাইবার পখতুনখাওয়ায় এই অপারেশন নিয়ে তার দলের আপত্তি আছে। তিনি আরও বলেন, আযমে ইশতেহকাম অপারেশন নিয়ে এই হাউজকে আস্থায় নেয়া উচিত সামরিক নেতৃত্বের। যেকোনো অ্যাকশনের আগে এই হাউসের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এর জবাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, পিটিআই দলটির পুরো নেতৃত্ব আপস করেছে। তার ভাষায়, এটা আমার কথা নয়। এটা হলো শেহরিয়ার আফ্রিদির কথা। তারা এটা গ্রহণ করবেন না। তিনি আসাদ কায়সার, ওমর আইয়ুব, গওহর সবার নাম নিয়েছেন।

মাথা ঠাণ্ডা রাখার অনুরোধ জানিয়ে আইনমন্ত্রী আযম নাজির তারার বিরোধী সদস্যদের বলেন, তার সরকার তাদেরকে আস্থায় নেবেন। অথচ ইমরান খান যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন এটা করা হয়নি। আমার প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ এখানে উপস্থিত থাকবেন। পাল্টাপাল্টি তর্কে এদিন পার্লামেন্ট উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

;